লেখিকা মৌরি মরিয়মের “প্রেমাতাল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম Ebook |
২৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম (পর্ব - ২৮)
তিতির
শুয়ে
আছে
কিন্তু
ঘুম
আসছে
না।
পিউ
ওর
পাশে
শুয়ে
বিভিন্নরকম গল্প
জুড়ে
দিয়েছে। প্রত্যেকটা কথা
এত
আগ্রহ
নিয়ে
বলছে
যে
তিতির
হাসি
হাসি
মুখ
করে
শুনছে,
নিজের
অজান্তেই পিউয়ের
কথায়
তাল
মেলাচ্ছে। কিন্তু
একটা
শব্দও
তিতিরের কান
পর্যন্ত যাচ্ছে
না।
ওর
মাথায়
একটা
ব্যাপারই ঘুরছে!
মুগ্ধ
অপেক্ষা করছে
ওর
জন্য।
তখন
ডিনার
টাইম
হয়ে
গিয়েছিল আর
সবাই
জেগেও
ছিল
তাই
মুগ্ধ
তিতিরকে নিয়ে
তখনই
রুম
থেকে
বেড়িয়ে
এসেছিল। তারপর
খেয়েদেয়ে যাওয়ার
সময়
সুযোগ
বুঝে
বলেছিল,
-"শাড়িটা চেঞ্জ করোনা।
রাতে
পিউ
ঘুমিয়ে
পড়লে
আমার
ঘরে
পারলে
একবার
এসো।
ভেবো না, খেয়ে
ফেলব
না।
শুধু
দেখব,
দু'চোখ ভরে দেখবো,
প্রাণভরে দেখবো।
তখন
তোমাকে
দেখতেই
পারিনি। এসো
কিন্তু,
অপেক্ষা করবো।"
পিউ
ঘুমাচ্ছে না,
যাবে
কি
করে
ও?
এমন
সময়
মুগ্ধর
ফোন
এল।
তিতির
ধরলো
না।
পিউ
বলল,
-"আরে ধরো, কথা
বলো।
আমি
নাহয়
একটু
পরেই
বলি।
আমার
সামনে
অস্বস্তি লাগলে
বারান্দায় গিয়েও
কথা
বলতে
পারো।"
তিতির
বারান্দায় চলে
গেল।
ফোন
ধরে
হ্যালো
বলতেই
মুগ্ধ
দু'লাইন গাইল,
"আর কত রাত
একা
থাকবো?
চোখ
মেলে
দেখবো
না
তোমাকে,
স্বপ্নের রঙে
ছবি
আঁকব....
-"আমি কি করবো
বলো?
পিউ
তো
ঘুমাচ্ছে না।
ওর
সামনে
দিয়ে
যাওয়াটা কি
ঠিক
হবে?"
-"না না পাগল?
ছোট
বোন
না
আমার?"
-"সেটাই।"
-"কতক্ষণ আর, ঘুমিয়ে
পড়বে
একসময়।
তারপর
এসো।
আমি
জেগে
আছি,
নো
প্রব্লেম।"
-"আচ্ছা।"
-"শোন?"
-"কি?"
-"এই সারপ্রাইজিং প্ল্যান টা
কি
মায়ের
ছিল?"
-"হুম, নাহলে গয়নাগাটি কোথায়
পেতাম?
আর
আমি
তো
শাড়িও
পড়তে
পারিনা। মা
পড়িয়ে
দিয়েছে।"
-"ওহ। ওগুলো কি
মা
তোমাকে
একেবারে দিয়ে
দিয়েছে?"
-"হুম। কিন্তু আমি
বলেছি
এগুলো
এখন
মায়ের
কাছেই
থাকবে।
আমি
বউ
হয়ে
এলে
দিতে।
এখন
এগুলো
আমি
যত্ন
করে
রাখতে
পারব
না।
তাছাড়া
বাসায়
যাওয়ার
পর
আম্মু
জিজ্ঞেস করলে
বলবোই
বা
কি?"
-"ওহ, তাও ঠিক।"
-"সেজন্যই নেইনি। মাকে বুঝিয়ে
বলেছি,
মা
বুঝেছে।
-"দেখেছো আমার মা
কত
রোমান্টিক?"
-"হুম। সত্যি অনেক
অনেক
রোমান্টিক।"
-"আচ্ছা তিতির, তুমি
এখন
যাও
পিউ
কে
ঘুম
পাড়াও।"
তিতির
হেসে
ফোন
রেখে
দিল।
তিতির
ঘরে
ঢুকতেই
গল্প
কন্টিনিউ করলো
পিউ।
তিতির
চোখ
মেলে
দেখলো
পিউ
নেই
পাশে।
আলো
দেখে
কান্না
পেল
ওর।
সকাল
হয়ে
গেছে!
ঘড়ির
দিকে
তাকিয়ে
দেখলো
সকাল
৮
টা
বাজে।
কখন
ঘুমিয়ে
পড়েছিল
খেয়ালই
তো
নেই।
ফোনটা
হাতে
নিয়ে
দেখলো
মুগ্ধর
৩
টা
মিসড
কল
আর
২
টা
মেসেজ
জমে
আছে।
ফার্স্ট মেসেজটা ওপেন
করলো,
"Amar
ghumkumari ki amake opekkhay rekhe ghumiye porlo?"
রাত
২
টার
দিকে
এসেছে
এই
মেসেজ।
সেকেন্ড মেসেজ,
"Accha
ghumao tahole, bt amr ghumer 12 ta beje gese, tmr neel shari pora bou mukhta
chokhe vashche.. Good night.. ok?"
এই
মেসেজটা এসেছে
ভোর
সাড়ে
৪
টায়।
তিতির
এবার
আর
কান্না
আটকে
রাখতে
পারলো
না।
পিউ
রুমে
ঢুকে
দেখলো
তিতির
কাঁদছে। বলল,
-"ভাবী কি হয়েছে
তোমার?
কাঁদছ
কেন?"
তিতির
কান্না
থামাতে
চাইছে
কিন্তু
পারছে
না,
কিছুতেই কান্না
থামছে
না।
পিউ
বলল,
-"আরে বলোনা কি
হয়েছে?
প্লিজ
বলো।
আমার
খুব
খারাপ
লাগছে।"
তিতির
কি
বলবে
ভেবে
পেলনা।
সত্যিটা তো
আর
বলতে
পারবে
না।
তিতিরের হাতে
মোবাইল
দেখে
পিউ
জিজ্ঞেস করলো,
-"কোনো খারাপ খবর
পেলে
নাকি?"
তিতিরের মাথায়
কিছু
আসলো।
ও
বানিয়ে
বলল,
-"তোমার ভাইয়া অনেকগুলো কল
করেছিল,
অনেক
রাতে।
আমি
ঘুমিয়ে
ছিলাম
ধরতে
পারিনি। মাত্র
দেখলাম। ও
সারারাত জেগে
ছিল।"
পিউ
তিতিরকে জড়িয়ে
ধরে
বলল,
-"আহারে! ভাবী, ফোন
ধরতে
পারোনি
বলে
কাঁদছ!
তুমি
ভাইয়াকে এত্ত
ভালবাসো? "
তিতির
বলল,
-"না, ও সারারাত জেগে
আমাকে
কল
করেছে,
নিশ্চই
মিস
করছিল।
অথচ
আমি
এমন
মরা
ঘুম
দিয়েছি
যে
কিছু
টেরই
পাইনি।
ও
আমাকে
যেমনভাবে ভালবাসে আমি
কোনদিনও বোধহয়
সেভাবে
বাসতে
পারব
না।
আমি
খুব
খারাপ।"
পিউ
তিতিরের পিঠে
হাত
বুলিয়ে
দিতে
দিতে
বলল,
-"এই পাগলী! কান্না
করে
না।
ভাইয়া
রাতে
ঘুমায়নি তো
কি
হয়েছে?
এখন
তো
ঘুমাচ্ছে। ও
তো
এতক্ষণ
ঘুমায়
না,
ভোরবেলাই উঠে
যায়।
কাল
রাতে
ঘুমায়নি বলেই
হয়তো
এখনো
ঘুমাচ্ছে।"
কোন
কথায়
কাজ
হলোনা
তিতির কাঁদতেই থাকলো।
মা
পিউকে
ডাকতে
ডাকতে
ঘরে
ঢুকলো,
-"পিউ এই পিউ?
এতক্ষণ
লাগে
আসতে?
কি
করছিস
তুই?"
ঘরে
ঢুকতেই
মা
তাজ্জব
বনে
গেলেন।
কাছে
এসে
পিউকে
সরিয়ে
তিতিরের কাধে
হাত
রেখে
বললেন,
-"কি হয়েছে আমার
লক্ষী
আম্মুটার? কাঁদছে
কেন?"
তিতির
কিছু
বলল
না।
পিউ
সবটা
বলতেই
মা
হেসে
তিতিরকে জড়িয়ে
ধরে
বললেন,
-"বাহ! আমার ছেলে
দেখছি
খুব
ভাগ্যবান। এটুকুর
জন্য
বউ
এমনভাবে কাঁদছে!
বউটা
যদিও
একদম
ছেলেমানুষ, একদম
আনাড়ি!
কিন্তু
বুকে
প্রেম
আছে
গদগদ!
আজ
বুঝলাম
ছেলে
আমার
কি
করে
তোমার
জন্য
এত
পাগল
হলো!"
তিতির
এ
কথায়
লজ্জা
পেয়ে
গেল।
মা
তিতিরের চোখদুটো মুছে
বলল,
-"সত্যি এই দুদিন
আমি
তোমাকে
যতটুকু
দেখেছি
তাতে
আমি
বুঝে
গেছি,
আমার
ছেলে
তোমার
সাথে
ভাল
থাকবে।
এই
চুজি,
মুডি
ছেলেটাকে নিয়ে
আমি
খুব
চিন্তায় ছিলাম।
আজ
আমি
নিশ্চিন্ত! ওকে
সারাজীবন এমনভাবেই ভালবেসো মা।
কখনো
ওকে
একলা
ছেড়ো
না।
তোমার
আর
কিচ্ছু
করতে
হবে
না,
আর
কোনো দায়িত্ব নেই।
বাকী
সবকিছু
আমার
ছেলেই
সামলে
নেবে।"
তিতির
কিছু
বলল
না।
কিন্তু
কান্না
থামলো।
পিউ
বলল,
-"ভাবী তোমাদের বাস
যেন
কয়টায়?"
-"তোমার ভাইয়া তো
বলেছিল
১১
টায়।"
মা
বলল,
-"যাবেই যখন আরো
আগে
রওনা
দিলে
ভাল
হতো।
রাত
হয়ে
যাবে
না
যেতে
যেতে?"
পিউ
বলল,
-"ভাইয়া বুঝবে ওসব!
এসব
ব্যাপারে আমাদের
চেয়ে
ভাইয়ার
অভিজ্ঞতা অনেক
বেশি,
১১
টার
বাসে
যখন
যাচ্ছে
নিশ্চই
ভাল
বুঝেই
যাচ্ছে।"
তিতির
কিছু
বলল
না।
মা
বলল,
-"আচ্ছা মা, এখন
ওঠো।
শাড়ি
পালটে
নাও।
ফ্রেশ
হয়ে
নাও।"
-"আমি একেবারে গোসল
করে
ফেলব।
সারাদিন তো
জার্নি
করতে
হবে।"
-"ও হ্যা। ঠিকাছে
করো।"
মা
ঘর
বের
হবার
সময়
পিউকে
বলল,
-"মুগ্ধকে এখনি ডাকিস না।
সারারাত যখন
ঘুমায়নি আরেকটু
ঘুমাক।"
তিতির
গোসল
করে
ড্রইং
রুমে
আসতেই
মা
বলল,
-"তিতির নাস্তা করে
নাও।
আমরা
সবাই
অনেকক্ষণ আগেই
নাস্তা
করে
ফেলেছি।"
-"ও উঠুক, একসাথেই খাব।"
-"ওর তো উঠতে
দেরী
হতে
পারে।
তুমি
খেয়ে
নাও
না।"
-"দেরী হলেও সমস্যা
নেই।
আমার
খিদে
পায়নি।"
-"পাগলী।"
সাড়ে
নটার
দিকে
তিতির
পিউয়ের
ঘরে
বসে
শেষ
গোছগাছ
টা
সেড়ে
নিচ্ছিল। পেছন
থেকে
মুগ্ধ
বলল,
-"এইযে সুন্দরী! এভাবে
ছলনা
করলে
আমার
সাথে?
এটা
কি
ঠিক
হলো?"
তিতির
এক
মুহূর্ত অপেক্ষা না
করে
দৌড়ে
গিয়ে
মুগ্ধকে জড়িয়ে
ধরলো।
মুগ্ধও
ওকে
জড়িয়ে
ধরতেই
কেঁদে
ফেলল।"
-"আরে আরে! কি
হলো
এটা?
কাঁদছ
কেন?"
-"সরি, আমাকে মাফ
করে
দাও।"
-"মাফ এর কথা
আসছে
কোত্থেকে?"
-"তোমাকে আমি সারারাত অপেক্ষা করিয়েছি। তারপর
ভোম্বলের মত
ঘুমিয়েছি। আমি
খুব
খারাপ।
আমি
অমানুষ। আমি
জঘন্য।"
-"এই পাগলী, থামো।
নাহলে
চড়
মেরে
দাত
ফেলে
দেব।
কতবড়
সাহস!
আমার
বউকে
যা
তা
বলা!"
তিতির
থামছেই
না।
মুগ্ধ
তিতিরের মুখটা
তুলে
ভেজা
চোখে
চুমু
দিয়ে
বলল,
-"আজ রাতে তো
বাসে
একসাথেই থাকবো,
পুষিয়ে
দিও।"
তিতির
কিছু
বলল
না।
মুগ্ধ
বলল,
-"অনেক হয়েছে। এবার
থামো
আর
ব্রেকফাস্ট করতে
চলো।
আধাঘণ্টার মধ্যে
বের
হতে
হবে
নাহলে
বাস
মিস
করবো।"
ওরা
যখন
বের
হচ্ছিল
মুগ্ধর
মা
তিতিরকে জড়িয়ে
ধরলেন,
কপালে
চুমু
দিলেন।
পিউকেও
জড়িয়ে
ধরে
বিদায়
নিল
তিতির।
এদের
ছেড়ে
যেতে
কেন
জানি
কষ্ট
হচ্ছে,
এরা
যেন
পর
কেউনা।
শুধু
২/৩ দিন না
শতজনমের চেনা।
প্ল্যানমাফিক ওরা
১১
টার
বাসে
বান্দরবান রওনা
হল।
যদিও
১
ঘন্টা
লাগার
কথা
কিন্তু
প্রায়
১
টা
বেজে
গেল
পৌঁছতে। বাস
থেকে
নেমে
মুগ্ধ
বলল,
-"বান্দরবানে এখন আমাদের কাজ
হলো
খালি
খাওয়া।"
-"মানে? আসলেই এখানে
কি
প্ল্যান তার
কিছুই
বলোনি
আমাকে।"
-"বলবো কি করে?
এসব
ডিসকাশন বাসায়
বসে
করলে
প্রব্লেম না?"
-"হুম। এখন বলোনা
আমরা
কোথায়
কোথায়
যাব?
এই
নিলগিরি যাব?"
-"নাহ। নিলগিরি অনেক
দূর
রে
বাবা।
আমরা
এখন
আমার
প্রিয়
এক
রেস্টুরেন্টে ভাত
খাব।
তারপর
নীলাচল
যাব।
নীলাচল
থেকে
ফিরে
আবার
যাব
আরেকটা
প্রিয়
রেস্টুরেন্টে কাবাব
খেতে।
তারপর
১০
টার
বাসে
ঢাকা।"
-"নীলাচল কি নিলগিরির মতই
না?"
-"না নীলাচল ১৬০০
ফিট
উঁচু।
তবে
সৌন্দর্যের দিক
থেকে
কোন
অংশে
কম
না,
অস্থির
অস্থির।"
-"ওহ, ওয়াও।"
-"চলো চলো আগে
খেয়ে
নিই।
তারপর
নীলাচল
যাই।"
-"আমার অত খিদে
পায়নি।
এসেও
খেতে
পারি।"
-"না, তখন স্পেশাল আইটেম
গুলো
শেষ
হয়ে
যাবে
আর
নীলাচলেও বেশিক্ষণ থাকতে
পারব
না।"
-"আচ্ছা, তাহলে চলো।"
মুগ্ধ
একটা
রিক্সা
ডাকলো,
-"এই মামা, রাজার
মাঠ
যাবা?"
-"১৫ টাকা।"
-"হ্যা চলো।"
রিক্সায় উঠেই
মুগ্ধ
ফিসফিস
করে
তিতিরের কানে
কানে
বলল,
-"মজার ব্যাপার কি
জানো?
এখানকার রিক্সায় শহরের
মধ্যে
তুমি
যেখানেই যাওনা
কেন
ভাড়া
১৫
টাকা।"
-"সেটা কি করে
সম্ভব?"
-"সম্ভব কারন, শহরটাই
এমন
ছোট।
শহরের
বাইরে
আবার
ভাড়া
বেশি।"
-"ওহ।"
রিক্সা
থামলো
একটা
রেস্টুরেন্টের সামনে
নাম
"চড়ুইভাতি"।
অপজিটে
একটা
মাঠ।
তিতির
বলল,
-"এটাই রাজার মাঠ?"
-"হুম।"
ভেতরে
ঢুকতেই
ম্যানেজার হাত
বাড়িয়ে
বলল,
-"আরে মুগ্ধ ভাই
যে!"
মুগ্ধ
হ্যান্ডশেক করে
বলল,
-"কেমন আছেন রফিক
ভাই"
-"ভাল। অনেকদিন পর
এলেন।"
-"ওইতো ভাই আসলেই
দৌড়ের
উপর
ভেতরে
চলে
যাই।
শহরে
তো
থাকা
হয়না।"
এরপর
লোকটা
তিতিরকে দেখিয়ে
জিজ্ঞেস করলো,
-"ভাবী নাকি?"
-"হ্যা।"
-"বাহ! বসেন বসেন
কি
খাবেন
বলেন?"
মুগ্ধ
এক
নিঃশ্বাসে বলল,
-"বাঁশ কুরুইল, বেম্বো
চিকেন,
রুপচাঁদা ফ্রাই।
আর
ভর্তা
যা
আছে।"
তিতির
বলল,
-"এতকিছু কে খাবে?"
-"তুমি না খেতে
পারলেও
আমি
পারবো।
সো
ডোন্ট
ওরি।"
খাওয়া
শুরু
করতেই
তিতির
অবাক।
রেস্টুরেন্টে খাচ্ছে
মনেই
হচ্ছে
না।
একদম
বাসার
রান্নার মত।
এত
মজার
রুপচাঁদা ফ্রাই
তো
মাও
করতে
পারেনা
বাসায়।
আর
পাহাড়ী
আইটেম
দুটোর
তো
কোনো
তুলনাই
হয়না।
লাস্ট
মোমেন্টে মুগ্ধ
বলল,
-"কি বুঝলে?"
-"অসাধারণ!"
-"আর দুটো রুপচাঁদা নেই
কি
বলো?
ভাত
খাওয়ার
যায়গা
তো
আর
নেই
পেটে।
শুধু
মাছ
খাই?"
-"আমিই তোমাকে বলতে
চেয়েছিলাম যে
আরো
দুটো
মাছ
নাও।"
আরো
দুটো
মাছ
নেয়া
হলো
খাওয়াও
হলো।
আর
সবশেষে
কফি।
কফিতে
চুমুক
দিয়ে
তিতির
বলল,
-"কফিটাও জোস!"
-"হুম।"
রেস্টুরেন্ট থেকে
বেড়িয়ে
আবার
বাস
স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে রিক্সা
নিল
ওরা।
রিক্সায় উঠেই
তিতির
বলল,
-"তোমার সাথে থাকলে
আমি
পুরা
মটুস
হয়ে
যাব।
দেখো
৩
দিনে
কি
ফুলে
গেছি।"
-"ফুলে যাওনি। তবে
একটু
ভরা
ভরা
লাগছে।
বেশ
লাগছে,
অত
টিংটিঙে থাকার
চেয়ে
এই
ভাল।"
এতক্ষণে রিক্সা
চলে
এসেছে।
ভাড়া
মিটিয়ে
দুজনে
হাটছে।
মুগ্ধ
বলল,
-"নীলাচলের জন্য একটা কিছু
নিতে
হবে।"
তিতির
কিছু
বলতে
চাইছিল
কিন্তু
আর
বলা
হলো
না
তার
আগেই
মুগ্ধ
দৌড়
দিল।
তিতির
কিছুই
বুঝলো
না
মুগ্ধ
দৌড়
কেন
দিল!
কিছু
বুঝে
ওঠার
আগেই
দেখলো
মুগ্ধ
একজনকে
ধরে
মারতে
শুরু
করেছে।
মারতে
মারতে
রাস্তায় ফেলে
দিয়েছে। এখন
লাথি
মারছে।
উফ
কি
ভয়ঙ্কর!
কি
অকথ্য
ভাষায়
গালি
দিচ্ছে
মুগ্ধ!
লজ্জায়
তিতির
কান
চেপে
ধরলো।
একি
সত্যিই
মুগ্ধ
নাকি
অন্য
কেউ?
মুগ্ধ
এতটা
হিংস্র
কি
করে
হলো!
আর
ওর
মুখের
ভাষা
এতটা
নিচে
নামলো
কি
করে।
তিতির
দৌড়ে
চলে
গেল
ওদের
কাছে।
গিয়ে
দেখলো
মুগ্ধ
যে
ছেলেটাকে মারছে
সে
হাসু।
তিতির
বিস্ময়ে হাত
চেপে
ধরেছে
মুখে।
আশপাশ
থেকে
অনেক
লোক
এসে
ভীর
হয়ে
গেছে
কিন্তু
কেউ
এসে
থামাতে
সাহস
পাচ্ছে
না।
তিতির
কি
আগাবে?
এগিয়ে
থামাবে
ওকে?
বুঝতে
পারছে
না
কিছুই।
সিএনজি
মহাজন
এসে
বলল,
-"ভাই কি হইসে
আমাগো
একটু
কন।
এমনে
মারতাসেন ক্যান?"
মুগ্ধ
হাসুর
কলার
ধরে
দাঁড়
করিয়ে
বলল,
-"বল কি করিসিলি? বল?
তুই
না
বললেও
আমি
বলবো।
সব
প্রমাণও কিন্তু
আছে,
ডিসাইড
কর
কি
করবি।
তাড়াতাড়ি, হাতে
সময়
নাই।"
হাসু
মুগ্ধর
পা
জড়িয়ে
ধরে
বলল,
-"ভাইজান আমারে মাফ
কইরা
দেন।
খোদার
কসম
আর
জীবনে
এমুন
কাম
করুম
না।"
মুগ্ধ
ওকে
সজোরে
লাথি
মেরে
ফেলে
দিল
রাস্তায়। তারপর
বলল,
-"তোরে মাফ চাইতে
কেউ
বলে
নাই।
সেদিন
কি
করসিলি
সেইটা
বল
সবার
সামনে।"
মহাজন
হাসুকে
রাস্তা
থেকে
তুলে
জিজ্ঞেস করলো,
-"কিরে ভাইজান রে
চিনোস?
কি
করসিলি?
এমনে
মারতাসে ক্যান?
মুগ্ধ
ওকে
আবার
মারতে
যাচ্ছিল তার
আগেই
ও
গড়গড়
করে
সব
বলে
দিল।
কিভাবে
ডাকাতদের হেল্প করেছিল সব।
শেষে
আবার
মুগ্ধর
পা
জড়িয়ে
ধরে
বলল,
-"বিঃশ্বাস করেন ভাইজান আমার
এইসব
কাজ
করিনা।
কিন্তু
সেদিন
না
করলে
ওরা
আমারে
মাইরা
ফালাইতো। ভয়
দেখাইয়া আর
টাকার
লোভ
দেখাইয়া রাজী
হইতে
বাধ্য
করসে।"
মুগ্ধ
আবার
লাথি
মেরে
বলল,
-"ঘরে মা নাই?
বোন
নাই?
বউ
নাই?
তাদের
জন্য
চিন্তা
হয়
না?
অন্য
মেয়েরাও কারো
না
কারো
মা,
বোন,
বউ।
শালা
অমানুষের বাচ্চা।"
মহাজন
বলল,
-"ভাইজান এবার আপনেরে
আমি
চিনছি।
৪/৫ মাস আগে
অরেই
আমি
পাডাইসিলাম আপনের
লগে।
মাফ
কইরা
দিয়েন
ভাই।
অয়
যে
এমুন
আমি
আগে
জানতাম
না।"
তারপর
হাসুর
দিকে
তাকিয়ে
বলল,
-"আইজ থেকা তুই আর আমার
সিএনজি
চালাইতে পারবি
না।
ডাকাইতগো লগেই
কাম
কর
যাইয়া।
যা
দেনা-পাওনা আছে সাজের
বেলা
আইসা
নিয়া
যাইস।"
মুগ্ধ
আর
কোন
কথা
না
বলে
তিতিরের হাত
ধরে
বেড়িয়ে
এল
ভীর
কাটিয়ে।
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
২৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তরুণ লেখিকা মৌরি মরিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন