উপন্যাস : ভিলেন
লেখিকা : মনা হোসাইন
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল :
লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
![]() |
ভিলেন || মনা হোসাইন |
৫৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ৫৮)
আকাশঃ তুই যে কেমন ঝগড়া পারবি তা আমার জানা আছে।
তুই আমাকে প্যারা দেওয়া ছাড়া আর কিছু পারিস বলে আমার তো মনে হয় না।
মেঘলাঃ দিব... ১০০ বার প্যারা দিব হাজার দিব তোর তাতে কি..??বলে মেঘলা চলে গেল।
এদিকে জেনি ফন্দি আঁটছে কিভাবে আকাশের মন পাওয়া যায়।
জেনিঃ না এভাবে স্যারের মন পাওয়া সম্ভব না। আগে স্যার আর মেঘলার মাঝে ফাটল ধরাতে হবে তারপর স্যারের মন জয় করতে হবে যতদিন মেঘলা স্যারের সাথে আছে আমি যত কিছুই করি স্যারের ভাল লাগবে না।আগে ওদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করতে হবে।
এভাবে সরাসরি মেঘলার বিরোধিতা করলে কাজের কাজ কিছুই হবে না উল্টে আমাকে বাসা থেকে বের করে দিবে।
যা করার ভাল মানুষির মুখোশ পড়েই করতে হবে।চিন্তা করো না মেঘলা তুমাকে কিভাবে বিদায় করতে হয় আমি ভাল করেই জানি...
ভাবতে ভাবতে জেনি আকাশের রুমে গেল।
জেনিঃ আসতে পারি...??
আকাশঃ তুমি...??
জেনিঃ স্যার আমি সত্যিই দুঃখিত আমি বুঝতে পারি নি ব্যাপার টা এমন হয়ে যাবে মেঘলা এসব খায় না জানলে আমি ওর জন্য আলাদা রান্না করতাম।
আকাশঃ কোন ব্যাপার না যা হবার হয়ে গেছে। এর পর থেকে এমন কিছু করো না যা পরিবারের কারোর খারাপ লাগে।
জেনিঃ জ্বি স্যার আর এমন হবে না।
আকাশঃ ঠিক আছে এখন রুমে যাও।
।
।
।
।
কেটে গেল আরো কয়েকদিন এই কয়েকদিনে জেনি বাড়ির সব কাজেই সাহার্য্য করেছে। জেনির আচার-ব্যবহারে সবাই মোটামুটি সন্তুষ্ট। এই কয়দিনে আকাশের সাথেও জেনির মোটামুটি ভাল সম্পর্ক হয়েছে।জেনির সবার সাথে মিলামেশায় মেঘলার খারাপ লাগলেও কাউকে কিছু বলে নি মেঘলা।মেঘলা সারাদিনেই মন খারাপ করে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু সেটা দেখার মত সময় আকাশের নেই সে তার ব্যবসা নিয়ে খুব ব্যাস্ত হতে পড়েছে।নতুন ব্যাবসা তাই সেটা সামলায়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে আকাশ।জেনি আকাশের এসিস্ট্যান্ট হওয়ায় সে সারাক্ষনেই আকাশের সাথে সাথে থাকে তাই মেঘলা আকাশকে কিছু বলতে চাইলেও সুযোগ হয়ে উঠে না কারন জেনি বিভিন্ন অযুহাতে আকাশের সাথে থাকে।
রাত ১০.৪৫
আকাশের ফোনে এসমেস আসলো,এসমেসে লিখা,কিছু কথা বলতে চাই ১১ টায় ছাদে অপেক্ষা করব।
আকাশঃমেঘলার মাথায় কি গন্ডগোল দেখা দিয়েছে ছাদে যেতে ডাকছে কেন রুমে আসলে কি হয় পাগলি কোথাকার...
যদিও ১১ টা বাজে নি তবুও মেঘলা কি বলবে সেটা ভাবতে ভাবতে আকাশ ছাদের দিকে গেল।
ছাদে গিয়ে আকাশ অবাক হল মেঘলা আকাশের দেওয়া একটা জামা পড়ে চুল খুলে উল্টো ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে
আকাশঃ আজ মেডাম বেশ রোমান্টিক মোডে আছে মনে হচ্ছে।প্রেম করার জন্য ডেকেছে বাহ উন্নতি হয়েছে দেখছি...
আকাশ আর কিছু না ভেবে আস্তে করে গিয়ে পিছন থেকে মেঘলাকে জড়িয়ে ধরল। মেঘলাও নিঃশব্দে আকাশে স্পর্শ অনুভব করতে লাগল।২ জনের কারোর মুখেই কোন কথা নেই।
আকাশ এবার মেঘলার চুলে মুখ ডুবিয়ে দিল। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই আকাশ থমকে গেল।
আকাশঃ মেঘলার চুলে গন্ধ ত এমন না মেঘলা কি শ্যাম্পুর ব্র্যান্ড চেঞ্জ করেছে...??(মনে মনে)
ভাবতে ভাবতে আকাশ থমকে গেল তারপর একটানে মেঘলাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল।
আকাশ নিজেই নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না সে এতক্ষন মেঘলা ভেবে জেনিকে আদর করছিল।
আকাশ কি বলবে বুঝতে পারছে না তার নিজের উপড়ে রাগ হচ্ছে..আকাশ নিজেকে সামলে নিয়ে জেনিকে প্রশ্ন করল,
আকাশঃ এসবের মানে কি জেনি....?? তুমি এখানে কি করছো..?? মেঘলা কোথায়?
জেনিঃ মেঘলার কি এখানে থাকার কথা ছিল..?? ও তো রুমে আছে স্যার।
কিন্তু আপনি হটাৎ এসব কি করছিলেন...??
আকাশঃ আকাশ আমি যা করছিলাম সেটা যে স্বাভাবিক কিছু না সেটা নিশ্চুই তুমি বুঝতে পারছিলে?
আমি অস্বাভাবিক কিছু করতে চলেছি বুঝেও তুমি আমায় বাঁধা দিলে না কেন...??
জেনিঃ বাঁধা দিব মানে এত প্লেন করে মেঘলার ড্রেস পড়লাম নিচে আলোয় আমায় চিনে ফেলবেন তাই মেঘলার ফোন থেকে এসমেস করে ছাদের অন্ধকারে ডেকে আনলাম এসব কি বাঁধা দেয়ার জন্য..??? আপনাকে আমি যে করেই হোক আমার নিজের করে নিব। (মনে মনে)
আকাশঃ কি হল জবাব দিচ্ছনা কেন বলো এখানে কি করছিলে তুমি? আর আমাকে বাঁধাই বা দিলে না কেন?
জেনিঃ স্যার আসলে আমি ভয় পেয়েছিলাম বাঁধা দিলে যদি আপনি রেগে যান...
আকাশের ভিতরে অপরাধ বোধ কাজ করছে তাই জেনিকে কিছু বলতে পারছে না কারন ভুল টা সে নিজেই করেছে।
আকাশঃ আমি কি করে এত বড় ভুলটা করলাম...??ছি ছি ছি....(মনে মনে)আসলে আমি তোমাকে ভেবেছিলাম মেঘলা কিছু মনে করো না প্লিজ, তুমি আর কখনো মেঘলার জামা পরবে না ঠিক আছে।আর একটা কথা এখানে এখন যা ঘটল দয়া করে কাউকে বলো না প্লিজ।
বলে আকাশ সেখান থেকে চলে গেল।
জেনি সব কিছু প্লেন করে রেখেছিল যদিও ছাদে আবছা অন্ধকার ছিল কিন্তু সে নাইট মোডে সব ভিডিও করেছে তাতে সব স্পষ্ট ভিডিও হয়েছে।জেনি নিচে আসার আগে মেঘলার জামা বদলে নিয়ে রুমে গেল।
মেঘলা তখন পড়ছিল জেনি গিয়ে বিচানায় শুয়ে পড়ল মেঘলাও কিছুক্ষন পর এসে শুতে যাবে তখন জেনি ইচ্ছে করেই নিজের ফোন টা লোকানোর চেস্টা করল যাতে মেঘলা সেদিকে নজর দেয়।আর সেটাই হল মেঘলার সন্দেহ হল তাই সে বলল,
মেঘলাঃকি হয়েছে জেনি এভাবে ফোন টা আড়াল করলে কেন দেখি কি আছে ওতে বলে মেঘলা জেনির ফোনটা নিয়ে নিল।
জেনিঃ না না কিছু না তুমি দেখো না প্লিজ তুমি দেখলে স্যার আমাকে মেরে ফেলবে।
মেঘলাঃ স্যার মেরে ফেলবে মানে কি আছে দেখি...??
জেনিঃ তাহলে কথা দাও তুমি এই ব্যাপারে স্যারকে কিছু বলবে না।
মেঘলাঃ আচ্ছা বলব না দিলাম কথা।
জেনিঃ সত্যি তো..??
মেঘলাঃ আমি কথার খেলাফ করি না...
জেনি এবার ফোন টা দিল। ভিডিও টা দেখে মেঘলার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল... কিন্তু জেনিকে কথা দিয়েছে তাই আকাশের কাছে যেতে পারছে না...
মেঘলাঃ কতদিন ধরে চলছে এসব...??
জেনিঃ তুমি বোঝো না...??
মেঘলাঃ কি বুঝব...??
জেনিঃ কারোর জন্য এক্ট্রা মায়া না থাকলে কি তাকে নিজের বাসায় এনে রাখে...??
মেঘলাঃ বুঝলাম...তো মায়া গড়িয়ে ছাদে গেল কেন বেড রুম ছিল না...??
জেনিঃ ছিঃ কি যে বলো না আমি তেমন মেয়ে নই...
মেঘলাঃ তুমি কেমন মেয়ে সেটা আমার দেখা হয়ে গিয়েছে বলতে হবে না।অন্যজনের প্রেমিক নিয়ে টানাটানি কেমন মেয়েরা করে সে ব্যাপারে আমার ভালই জানা আছে।
জেনিঃ স্যার আমাকে পছন্দ করে তাতে কি তোমার খারাপ লাগছে..??
মেঘলাঃ না আমার খারাপ লাগবে কেন ঘুড়ি আকাশে যতই উড়ুক তার ক্ষমতা লাটাই এ সীমাবদ্ধ।
আকাশ যদি কো৷ উড়ন্ত ঘুড়ি হয় লাটাই টা কার হাতে আছে ভাল করেই জানো। ঘুড়ি যদি সুতা কেটে উড়ে যায় অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই নিচে পড়ে যায়।তাই ঘুড়ির সুতা কাটার চেষ্টা না করে লাটাই হওয়ার চেষ্টা করো।
বলে মেঘলা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে আকাশের ঘরে গেল...
মেঘলাকে দেখেই আকাশ নার্ভাস হয়ে পড়ল।
আকাশঃ ত ত তুই...???
মেঘলাঃ আসার আগে পারমিশন নেয়া উচিত ছিল বুঝি..??
আকাশঃ তা কেন আমি কি তাই বললাম...??
মেঘলাঃ যাইহোক গল্প করতে আসি নি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলতে পারব না সরাসরি বলছি তুই কি আমার সাথে কিছু করতে চাস...??
আকাশঃ কিছু করতে চাই মানে...??
মেঘলাঃনা বুঝার মত ত কিছু বলি নি তুই একটা ছেলে যথেস্ট বয়স ও হয়েছে মেয়ের সাথে রাত কাটানোর ইচ্ছে হতেই পারে তাই বল্লাম
আকাশঃ কিসব বলছিস মেঘলা
মেঘলাঃ তারমানে চাস না তাই তো গুড।
আকাশঃ মেঘলা শোন কোথায় যাচ্ছিস...??
মেঘলাঃ রুমে যাচ্ছি...
আকাশঃ মেঘলাকে কি জেনি কিছু বলেছে...??
না না মেঘলা এটা শুনলে কেয়ামত করে ফেলত এত শান্তভাবে কথা বলত না আমি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছি...এসব আমার মনের ভুল।
মেঘলাঃ না আমি কাঁদব না আমি কেন কাঁদব...আমি তোকে কাঁদাব আজকের শোধ আমি এমন ভাবে নিব যে তুই কেঁদেও কুল পাবি না।আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৫৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন