উপন্যাস       :         প্রেমাতাল
লেখিকা        :         মৌরি মরিয়ম
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল    :         
রচনাকাল     :         ১০ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মৌরি মরিয়মের “প্রেমাতাল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম Ebook



২৫ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম (পর্ব - ২৬)

মুগ্ধ হিসাব মেলাতে পারছিল না। কাল রাতে তিতির ঘুমের ঘোরে বলেছে মুগ্ধ কেন ওকে আদর করেনা! এখন আবার আদর করতে যেতেই এরকম করলো যেন চাচ্ছেই না। অল্পবয়সী মেয়েদের সাথে প্রেমে এই এক ঝামেলা বটে! তারা কখন যে কি চায় বোঝা বড় দায়। কিন্তু তিতির আজ যেভাবে চলে গেল তাতে কিছুটা অপমানিত বোধ করছে। ওর নিজের উপর যে পরিমাণ কন্ট্রোল আছে তাতে তিতিরকে বছরের পর বছর একফোঁটা না ছুঁয়েও থাকতে পারবে।

লাঞ্চ টাইমে আবার দেখা হলো তিতিরের সাথে। কিছুই বলল না মুগ্ধ। চুপচাপ খেয়ে উঠে গেল। উঠে বেসিনে হাত ধুচ্ছে এমন সময় মা বলল,

-"মুগ্ধ তিতিরকে নিয়ে একটু বেড়িয়ে আয় না।"

-"কোথায়?"

-"ওম্মা! এদিকে যা যা ঘোরার মত যায়গা আছে ঘুরিয়ে নিয়ে আয়। পতেঙ্গাও তো যেতে পারিস।"

-"পতেঙ্গা যাওয়ার সময় কোথায়? এখন তো টা বেজেই গেছে।"

তিতির চিন্তায় পড়ে গেল। মুগ্ধ এভাবে বলছে কেন? রাগ করেছে নাকি? কিন্তু রাগ কেন করবে? বুকে কিস করতে না চাইলে কি ওভাবে বের হয়ে যেত ঘর থেকে? আচ্ছা মুগ্ধ কি সত্যিই করতো? নাকি ওকে লজ্জা দেয়ার জন্য বলেছিল? মুগ্ধ তো মজা করে কত কিছুই বলে! তারপরও, বললেও এভাবে প্রিপারেশন নিয়ে ধরে তো না কখনোও। ইশ কেন যে মুগ্ধর বুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ওভাবে কিস করতে গিয়েছিল! খুব ভুল হয়েছে। কিন্তু কিইবা করবে? মুগ্ধকে যে ওর কতরকমভাবে আদর করতে ইচ্ছে করে তা তো কোনোদিনও উচ্চারনও করতে পারবে না।

মা বলল,

-"তাহলে আশেপাশে ঘুরিয়ে আন। বেচারি বাসায় বসে বোর হচ্ছে না?"

মুগ্ধ তিতিরের দিকে তাকিয়ে বলল,

-"তুমি বাসায় বোর হচ্ছো?"

তিতির বলল,

-"না, পিউ আর আন্টির সাথে ছিলাম সারাদিন, একটুও বোর হইনি।"

-"ওকে।"

মুগ্ধ নিজের ঘরে চলে গেল। মনে হলো এই বাচ্চা মেয়েটার সাথে রাগ করে কি হবে? তো রাগটা বুঝেই না। সে যাই হোক, ওর আসলে কি হয়েছিল? কি রাগ করেছিল? নাকি লজ্জা পেয়েছিল? লজ্জা তো সবসময়ই পায় কিন্তু এভাবে রিফিউজড কখনো, কিছুতে করেনা।

মুগ্ধ ঘরে ঢোকার পর মা তিতিরকে জিজ্ঞেস করলো,

-"ওর আবার কি হলো? রাগ করেছে কেন? ঝগড়া হয়েছে তোমাদের?"

-"না তো!"

-"ঝগড়া না হলেও কোন কারনে রেগে আছে।"

-"কি করে বুঝলেন আন্টি?"

-"আরে, আমার ছেলের সব বিহেভিয়ার আমার মুখস্থ। খুব বুঝতে পারছি তোমর উপরেই কোন কারনে রাগ করেছে। আর তুমি জানোই না?"

-" আমার সাথে কখনোই রাগ করেনি, তাই বুঝতে পারছি না।"

পিউ বলল,

-"ভাবী, ভাইয়া আসলেই রাগ করেছে। তুমি দেখো গিয়ে কি হয়েছে!"

ওদের কথার মাঝেই মুগ্ধ শার্ট পড়তে পড়তে নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো,

-"মা, বাবা কি বাইকটা নিয়ে বেড়িয়েছে?"

-"না, তোর বাবা তো ঢাকা গেছে কাল, অফিসের গাড়িতে গেছে। বাইক গ্যারেজেই আছে। তুই চিন্তা করিস না, তোর বাবা কালই চলে আসবে। তিতিরের সাথে দেখা হবে।"

-"ওহ। আচ্ছা বাইকের চাবিটা দাও।"

-" তোরা বেরোবি? আমি এক্ষুনি এনে দিচ্ছি।"

-"তোরা না, আমি একা বের হব। শহরে যাব, কাজ আছে।"

-"তুই তিতিরকে একা রেখে বের হবি?"

-"একা কোথায়? তোমরা আছ তো।"

-"একটা থাপ্পড় মারবো, ওকে নিয়ে যা।"

মুগ্ধ তিতিরের দিকে তাকিয়ে বলল,

-"তুমি আসলেই যাবে? গেলে রেডি হয়ে আসো। আর আমি কিন্তু আজকে ঘোরাতে পারবো না। আমি কাজে যাচ্ছি।"

তিতিরের তবু যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু কি বলবে! ওকে বলতে হলো না। মা বলল,

-"যাবে না কেন? ছোট মানুষ বাসায় বসে থাকবে নাকি সারাক্ষণ? তোর কাজ তুই করবি তোর সাথে থাকবে। বাইকে করে যাবে আসবে এতেই তো ঘোরা হবে।"

তারপর তিতিরের দিকে ফিরে বলল,

-"মা যাও রেডি হয়ে নাও।"

তিতির বলল,

-"পিউ তুমিও চলো।"

পিউ বলল,

-"না না আমি যাব না। আমার কাজ আছে। তোমরা যাও।"

তিতির পিউএর রুমে গেল। মিনিটের মধ্যেই মুখটা ধুয়ে, ড্রেস চেঞ্জ করে চুলগুলো একটা ঝুটি করে বেড়িয়ে এল। মা চাবি এনে মুগ্ধর হাতে দিতে দিতে তিতিরের দিকে চেয়ে বলল,

-"ওমা এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেল?"

তিতির হাসলো। মুগ্ধ বলল,

-"তোমার কি মনে হয় মা তোমার ছেলে অর্ডিনারি কাউকে বিয়ে করতে চলেছে? তিতির ঠিক তেমন যেমনটা তোমার ছেলের জন্য দরকার।"

একথা বলেই মুগ্ধ বের হল। মা তিতিরের কাছে এসে বলল,

-"অতটাও রাগ করেনি। যাও যাও। দাঁড়িয়ে আছে তোমার জন্য।"

তিতির লজ্জা পেয়ে বেড়িয়ে গেল। বাইকে উঠে বসে মুগ্ধর কাধে হা রেখে পিছনে ফিরতেই পিউ, মা হাত তুলে টা টা দিল। তিতিরও টাটা দিল। ওরা যখন টিলার উপর থেকে যখন নামছিল স্নিগ্ধ স্কুল থেকে ফিরছিল। ওদের বাইকে দেখতে পেয়েই দু'অাঙুল মুখে দিয়ে একটা সিটি বাজালো। মুগ্ধ থামলো না। যেতে যেতেই জোরে জোরে বলল,

-"কানের নিচে একটা দিব ফিরে এসে।"

স্নিগ্ধ চিৎকার করে বলল,

-"ভাবী বাঁচাবে।"

ততক্ষণে মুগ্ধ অনেকদূর চলে গেছে। তাই আর উওর দিল না। তিতির বলল,

-" অনেক দুষ্টু না?"

-"হুম, মারাত্মক।"

মুগ্ধ তিতিরকে জিজ্ঞেস করল,

-"পতেঙ্গা রোডে বাইকরাইডে যাবে?"

তিতির মুগ্ধকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওর পিঠের উপর মাথা রেখে বলল,

-"তুমি যেখানে নিয়ে যাবে সেখেই যাব।"

-"যদি জাহান্নামে নিয়ে যাই?"

-"যাব।"

মুগ্ধ তিতিরকে পতেঙ্গা রোডে নিয়ে স্পিড বাড়িয়ে দিল। উন্মত্ত বাতাস যেন ওদেরকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। দুইপাশে গাছ, মাঝখানে পিচঢালা রাস্তা। সমুদ্রের ঠেউএর শব্দ! আহ, আনন্দ রাখার যায়গা পাচ্ছে না তিতির। অথচ আসার আগে বলছিল ঘোরাতে পারবে না।

এরপর সন্ধ্যা নেমে এলে মুগ্ধ ওকে নিয়ে নাভাল রোডে চলে গেল কাঁকড়া খেতে। তিতির বলল,

-"তোমার না কাজ আছে? এখানে এলে যে?"

-"হ্যা, ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করার কাজ। ওদের বলে দিয়েছি, ওরা এখানেই আসবে।"

-"ও।"

কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এল গরম গরম মশলা দিয়ে লাল করে ভাজা কাঁকড়া। মুখে দিয়েই তিতির বলল,

-"এত মজার কাঁকড়া আমি কোনদিনও খাইনি।"

-"হুম জানি তো। কুয়াকাটার লেবুবনের কাঁকড়া আরো মজা।"

-"আমি যাব।"

-"হুম, অবশ্যই নিয়ে যাব কোনো একদিন। ওখানে কাঁকড়া ছাড়াও আরো অনেক কিছু আছে।"

-"কি আছে?"

-"ওখান থেকে সূর্যাস্ত, সূর্যদোয় দুটোই ভাল দেখা যায়। একটা জাতীয় উদ্যান আছে যেখানে অসংখ্য গাছ আর বিভিন্নরকম পাখি দেখা যায়, পাশেই সমুদ্র। যায়গাটা খুবই শান্তির। লাল কাঁকড়ার দ্বীপও আছে একটা। লেবুবনের ওইদিকটাও অনেক সুন্দর। একপাশে সমুদ্র আরেকপাশে বালুতে জন্মানো গাছ। অসাধারণ।"

-"আর বোলোনা, আমার এখনি যেতে ইচ্ছে করছে।"

-"আচ্ছা যাও আর বলব না।"

তিতির হঠাৎ মুগ্ধর একটা হাত ধরে বলল,

-"তোমার বাসার সবাই এত ভাল কেন?"

-"সবার সাথে এমন ভাল না। তোমাকে পছন্দ হয়েছে তাই তোমার সাথে এত ভাল।"

-"সত্যি?"

-"হুম সত্যি। আচ্ছা তুমি বাসায় কয়দিনের কথা বলে এসেছো?"

-" দিন।"

-"কিন্তু আমার ছুটি তো তিনদিন। একদিন আজ চলেও গেল।"

-"হুম জানি তো। তবু আমি এক্সট্রা টাইম নিয়ে এসেছি। আগে চলে গেলে তো আর প্রব্লেম নেই।"

-"ও। আচ্ছা তোমার এক্সট্রা টাইমের কথা শুনে একটা আইডিয়া এল মাথায়।"

-"কি?"

-"তোমার যদি কোন আপত্তি না থাকে চলো যাওয়ার সময় একটা দিন বান্দরবানে ঘুরে আসি। আমাদের বাসা থেকে ঘন্টাও লাগে না যেতে। ধরো সকালে বের হলাম সারাদিন ঘুরে রাত্রের বাসে ঢাকা চলে গেলাম। বান্দরবান সিটিতেই ঘুরাঘুরি করবো। আমার কিছু পছন্দের যায়গা আছে, তোমাকে সেসব যায়গায় নিয়ে যাব।"

-"ইটস গ্রেট আইডিয়া। কিন্তু তোমার তো ছুটি নেই।"

-"আমি তো আর ছুটি নিয়ে আসিনি। আজ সরকারি ছুটি ছিল। কাল-পরশু শুক্রবার-শনিবার। অফিসে বলিওনি বাড়ি আসব। তুমি যদি বান্দরবান যাও তো তখন ছুটি নিয়ে নেব।"

-"আমি যাব প্লিজ।"

মুগ্ধ হেসে বলল,

-"আচ্ছা ঠিক আছে।"

কিছুক্ষণ পর মুগ্ধর ফ্রেন্ডরা এল। মুগ্ধ তিতিরকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। অনেক আড্ডা হলো তারপর ফিরে এল বাসায়। রাতে সবার সাথে গল্প করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেল। অবশেষে টার দিকে যে যার মত ঘুমাতে গেল। বিছানায় শুয়েই আছে শুধু ঘুম আসছে না। এমন সময় ফোন বেজে উঠলো মুগ্ধর। ওপাশ থেকে তিতিরের গলা,

-"হ্যালো.."

-"হুম বলো।"

-"কি করছো?"

-"শুয়ে আছি।"

-"শুয়ে শুয়ে কি করছো?"

-"করার মানুষ তো এখানে নেই। পিউএর ঘরে।"

তিতির মুচকি হেসে বলল,

-"জানো,ঘুম আসছে না আমার!"

-"জীবনেও বিশ্বাস করিনা। বাসের মধ্যেই যেভাবে ঘুমিয়েছো আর এখানে বিছানায়ও তোমার ঘুম আসছে না?"

-"তখন তো তুমি পাশে ছিলে।"

-"তো?"

-"তুমি পশে থাকলে এত শান্তি লাগে। তোমার ছোঁয়া পেলে আবেশে ঘুম চলে আসে।"

-"হুম সেজন্যই তো দুপুরবেলা ওরকম করলে!"

-"ইশ, সরি।"

-"আচ্ছা এত কাছে থেকেও ফোনে কথা বলার কোনো মানে হয়না। চলো ছাদে যাই। বের হও রুম থেকে। বাই দ্যা ওয়ে পিউ কি জেগে?"

-"নাহ ঘুমিয়ে পড়েছে।"

-"আচ্ছা দেন বের হও। ছাদে যাই।"

তিতির বেরিয়ে এল। মুগ্ধ ওর হাত ধরে ছাদে চলে গেল। মুগ্ধ আকাশের চাঁদ টার দিকে তাকিয়ে বলল,

-"দেখেছো আমাদের একসাথের সব মুহূর্তগুলোতে চাঁদ আমাদের সাথে।"

-"হুম! আমরা লাকি।"

মুগ্ধ সিঁড়িরুমের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তিতিরকে বুকে টেনে নিল। তারপর বলল,

-"এবার বলোতো দুপুরে ওরকম করলে কেন?"

-"সরি, আমার আসলে খুব লজ্জা লাগছিল, তুমি যা বলছিলে! ছিঃ আর ভয় করছিল যদি কেউ চলে আসে।"

-"এখন ভয় করছে না?"

-"নাহ! এখন তো রাত।"

-"তার মানে কি রাতে তোমার সাথে যা করতে চাইব তাইই করতে দিবে?"

-"ইশ! কক্ষনো না।"

একথা বলেই তিতির সরে যেতে চাইলো। মুগ্ধ বলল,

-"খুব শক্ত করে ধরেছি, আমি নিজে না ছাড়লে ছাড়াতে পারবে না।"

তিতির মুগ্ধর বুকে কামড় দিল। মুগ্ধ ব্যাথা পেলেও ছাড়লো না। বলল,

-"তোমার যত অত্যাচার আর যত ভালবাসা সব আমার বুকের উপর কেন? আমি কি কখনো তোমার..."

কথা শেষ করতে দিলনা তিতির। একটা হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরল। মুগ্ধ ওর সেই হাতে চুমু খেল।

তিতির বলল,

-"প্লিজ, একটু সামলে কথা বলো। তোমার কিছু কিছু কথায় আমার খুব বেশি লজ্জা লাগে।"

মুগ্ধ ওর হাতটা সরিয়ে দুহাতে তিতিরের মুখটা ধরে বলল,

-"তোমার লজ্জামাখা মুখটা দেখতেও তো আমার খুব বেশি ভাল লাগে।"

তিতির একথায়ও চোখ নামিয়ে নিল। চাঁদের আলো পড়ে কি মায়াবী দেখাচ্ছে তিতিরকে! মুগ্ধ চোখ ফেরাতে পারছিল না। নিচু হয়ে তিতিরের ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিতেই তিতির আবার হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরলো। বলল,

-"না, প্লিজ!"

মুগ্ধ তিতিরকে ছেড়ে দিল। কিন্তু তিতির চলে গেল না। দাঁড়িয়ে রইলো। মুগ্ধ পকেটে হাত গুজে অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। তিতিরের মনে হলো মুগ্ধ আবার রাগ করেছে। কিন্তু মুগ্ধ তখন রাগ করেনি, নিজেকে সামলে নিচ্ছিল। তিতির মুগ্ধর কাছে এসে বলল,

-"রাগ করো না প্লিজ। আমার কেমন জানি লাগে। কখনো করিনি তো।"

বলতে বলতেই তিতির কান্না করে দিল। মুগ্ধ অবাক। তিতির আর দাঁড়ালো না, হাঁটা শুরু করলো নিচে যাওয়ার জন্য। মুগ্ধ দৌড়ে ওকে ধরে ফেলল,

-"এই পাগলী কি হচ্ছেটা কি? আমি রাগ করেছি কে বলল? তুমি যতদিন না চাইবে আমি কিছুই করবো না। কান্না থামাও।"

-"আমি তোমার এক্স গার্লফ্রেন্ডদের মত স্মার্ট নই।"

-"শোনো কাল রাতে তুমিই কান্না করতে করতে বলেছিলে আমি আমার এক্সদের কিস করেছি কিন্তু তোমাকে করিনি। তার মানে আমি ওদের তোমার থেকে বেশি ভালবেসেছিলাম। কেমন লাগে এসব কথা শুনতে?"

-"ইশ, জীবনেও আমি এসব বলিনি।"

-"বলেছ বাবা। আরো অনেক কিছু বলেছো"

-"কি বলেছি?"

মুগ্ধ সবটা বলল। তিতির সব অস্বীকার করে মুগ্ধর হাত ছেড়ে নিচে চলে যেতে নিল। মুগ্ধ আবার ওর হাত ধরে থামিয়ে গান শুরু করে দিল। মান্না দে' সেই বিখ্যাত গানটা,

"সুন্দরী গো দোহাই দোহাই মান করোনা

আজ নিশীথে থাকো কাছে

না বোলোনা।

অনেক শিখা পুড়ে তবে

এমন প্রদীপ জ্বলে

অনেক কথার মরন হলে হৃদয় কথা বলে

না না চন্দ্র হারে কাজল ধোয়া জল ফেলোনা।

একেই তো এই জীবন ভরে

কাদের বোঝাই জনে

আজ পৃথিবীর ভালবাসার

সময় গেছে কমে

না না একটু ফাগুন আগুন দিয়ে না জ্বেলোনা।

সুন্দরী গো দোহাই দোহাই মান করোনা

আজ নিশীথে থাকো কাছে

না বোলোনা।"

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

২৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মৌরি মরিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে। 

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন