উপন্যাস       :        শাহজাহান তন্ময়
লেখিকা        :        নাবিলা ইষ্ক
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২০ই নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা নাবিলা ইষ্ক-র “শাহজাহান তন্ময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ২০ই নভেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
শাহজাহান তন্ময় || নাবিলা ইষ্ক
শাহজাহান তন্ময় || নাবিলা ইষ্ক 

৭৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শাহজাহান তন্ময় || নাবিলা ইষ্ক (পর্ব - ৮০)


৮০.১
মাহিন শব্দ করে হেসে ডেকে বলে,
‘অ্যাই-যে ফায়াজ-ফাইজার বাবা, ভালো আছেন? মন মেজাজ ভালো? দিনকাল কেমন যাচ্ছে?’
তন্ময় ঘুরিয়ে কেবলই সিগারেট ঠোঁটে চেপে ধরেছে। অন্যদিকে রিয়ান হকচকিয়ে ওঠে। প্রশ্ন করে,
 ‘ও ভাই, কী মিস করলাম? ফায়াজ-ফাইজা কে?’
মাহিন হাসতে হাসতে বলে, ‘কে আবার? তন্ময়!’
সৈয়দ আশ্চর্য হয়ে পড়ে। আপদমস্তক নির্বিকার তন্ময়কে দেখে বলে,
 ‘এতো ফাস্ট? এইতো বাসরটুকুও করতে চাইছিলি না। বিড়ালের মতন লেজ আকাশে তুলে মাছের থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছিলি। আমরাই তো জোরপূর্বক মাছ সামনে সার্ভ করে খেতে বাধ্য করলাম। আমরাই তো সবকিছুর বন্দবস্ত করে দিলাম। অথচ এখন দেখি তলে তলে আনবর্ণ বাচ্চাদের নামধামও ডিসাইড করে আছিস। তাও আবার দুটোর! আশ্চর্যজনক।’
ইব্রাহিমের হাতে জুসের গ্লাস। সে গ্লাসে মুখ দিতে ভয় পাচ্ছে। দেখা যাবে খেতে নিচ্ছে এসময় এমন কিছু বলে বসল যে তার মাথায় জুস উঠে গেছে। কাশতে কাশতে জীবন যাবে পরে। এমন অভিজ্ঞতা হাজার খানেক হয়েছে তার ইতোমধ্যে। তাই আর রিস্ক নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এই অসভ্যদের মধ্যে শান্তভাবে খাওয়াও বিলাসিতা। বিড়বিড় করে এযাত্রায় বলে,
‘এখনো জানিস না দেখছি? শালার লাক না যেন খোদাই করা স্বর্ণ! অরুর আলট্রাসনোগ্রাফিতে জমজ বাচ্চা ধরা পড়েছে। এক ঝটকায় প্রেগন্যান্ট করিয়ে তো ফেলেছেই তাও আবার দুটো বাচ্চার!’
তন্ময় থমথমে চোখে ইব্রাহিমের দিকে চাইতেই ইব্রাহিম মুখ ঘুরিয়ে চুপসে যায়। রেস্টুরেন্টের ছাঁদে তখন বেশ শোরগোল, মানুষজন। বন্ধুরা তারা বসেছে পূর্বদিকে চার টেবিল জুড়ে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে ভরা মজলিসের মধ্যেই হৈহৈ করে ওঠে সবগুলো। উচ্চ শব্দ শুনে আড়চোখে সবাই চাইছে এদিকটায়। তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে। শুধায়,
‘তোরা বাসায় যাবি না?’
ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে বারোটা চল্লিশে। চল্লিশ মিনিট ধরে এই বাঁদরগুলো তাকে আঁটকে রেখেছে। নেহাতি বন্ধুবান্ধবদের আকুতি-মিনতি রক্ষার্থে এসে হাজির হয়েছিল। রিয়ান তখনো কৌতুহলী হয়ে আছে জানতে,
‘তা নাহয় বুঝলাম, তবে এই নাম রেখেছে? ভবিষ্যৎ দেখেছিলি নাকি যে দুটো হবে?’
মাহিন ফের খিলখিল করে হেসে ফেলে। হাসতে হাসতে বলে,
 ‘আমাদের অরু রানি রেখেছে। ছেলে হলে ফায়াজ, মেয়ে হলে ফাইজা। এখন ছেলে, মেয়ে দুটোই হচ্ছে। তাই নামও ওলরেডি ফিক্সড।’
শুহানি তন্ময়ের ফোনটা নিয়ে অরুর ছবি দেখছে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। মেয়েটার মুখ ফুলে গেছে। শরীরও বেশ পরিবর্তন হয়েছে। এক অদ্ভুত সৌন্দর্য এসে ছুঁয়েছে সম্পূর্ণ ওকে জুড়েই।
 সৈয়দ আবদার ধরে এবেলায়, ‘বাসায় একদিন দাওয়াত দে না, দোস্ত! অরুকে একটু দেখি। ছবিতে কী মিষ্টি লাগছে, একদম নাদুসনুদুস।’
তন্ময়ের প্রত্যুত্তরটুকু কাটকাট, কঠিন শোনায়, 
 ‘না। কখনো না।’ 
রিয়ান ঠোঁট ফোলায়, ‘আমার ডার্লিংকে একটু দেখতে দিবি ন….’
তন্ময়ের কালো মুখ দেখে কথাটুকুর পূর্ণতা করার সাহস রিয়ান আর পায় না। আলগোছে মুখ বন্ধ করে ফেলে। একটু ডার্লিং ডাকলে কী এমন হয়েছে? তন্ময়টা না যাচ্ছেতাই!
———
ভোরের মিঠে-মিঠে রোদ্দুর এসে ছুঁয়েছে বেলকনির ফ্লোর। দুটো পাখি এসে ঘুরছে এদিক-ওদিক জুড়ে। বেলকনির রেলিঙে ঝুলানো ফুল গাছগুলোতে কিছুক্ষণ আগেই জবেদা বেগম পানি দিয়ে গিয়েছেন। পানির সংস্পর্শে এসে ভেজাটে ফুলগুলো দারুণ ভাবে ফুটে উঠেছে। ফুলের পাপড়ি থেকে টুপটুপ করে এখনো পানি ঝরছে। তন্ময় বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসেছে সবেমাত্র। এসেই দাঁড়িয়েছে বেলকনিতে। গলায় রাখা তোয়ালে দিয়ে বেশ অবহেলিত ভঙ্গিতেই মাথার চুলগুলো মুছে নিচ্ছে। দৃষ্টি গিয়ে থামে বাগানের দক্ষিণ দিকটায়।
 সেখানটায় এই সাতসকাল বেলায় জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শাহজাহান বাড়ির বেশ কিছু সদস্য। তাদের সবার দৃষ্টি — গর্ভধারিণী অরুর ওপর। অরুর ছয় মাস চলছে। মাসের তুলনায় পেট অস্বাভাবিক বড়ো। কিছুদিন আগেই তার আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে জমজ বাচ্চা ধরা পড়েছে। একটি ছেলে আর ওপরটি মেয়ে। এরপর থেকেই বাড়ির ভেতরে এক থমথমে পরিস্থিতি। আনন্দের মধ্যেও সবাই চিন্তায় অশান্ত হয়ে আছে। অরুর বয়স কম, অল্পবয়সী প্রেগ্ন্যাসির মধ্যেই আবার জমজ বাচ্চা! ও যে তাদের হাতের ননির পুতুল। এই পুতুল জমজ বাচ্চার মাতৃত্বের স্বাদ আদতেও নিতে পারবে তো?
 তন্ময় নিজেও দুঃশ্চিন্তায় আজকাল ঘুমোতে পারছে না। আজ ক'টা দিন ধরেই সে বড্ড বিচলিত। এতো অশান্তি লাগছে ভেতরে। বাবার হওয়ার আনন্দটুকুও সে উপভোগ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জমজ বাচ্চার ডেলিভারি প্রসেস আতঙ্কজনক। ডিফিকাল্টিস বেশ হাই। তন্ময় ডাক্তার থেকে নিপুণভাবে শুনেছে, জেনেছে। 
অসহায় লাগছে তার। 
বাড়ির বুজুর্গদের অবস্থাও তন্ময়ের মতনই—কাছাকাছি। জবেদা বেগম আর সুমিতা বেগম অরুর পেছনেই লেগে থাকেন চব্বিশঘণ্টা। ওর প্রতিটা পদক্ষেপ যেন তাদের ইশারায় ফেলতে হবে। এতে অরু মহা বিরক্ত! চঞ্চল সে গৃহবন্দী হয়ে তো আছেই, সাথে একেকটা কদমও তাকে গুনে-গুনে ফেলতে হয়। গতকাল রাতেও সে তন্ময়ের কাছে আহ্লাদী স্বরে নালিশ জানিয়েছে। তন্ময় শুনেছে বেশ মনোযোগ সহকারে। তবে শোনা পর্যন্তই। নালিশ কানে তোলেনি। সেই ব্যপারটি ধরে অরু এখনো মুখ ফুলিয়ে আছে। কথাবার্তা বলছে না। অল্পতেই মুখ ভার করছে, কাঁদছে…অভিমান করছে। ডাক্তার বলেছেন এসময়টায় ওর অনুভূতির ঘুর্ণিঝড় বয়ে যাবে। আর তা তার ওপরেই। শাহজাহান তন্ময়ের ওপর! 
মোস্তফা সাহেব গম্ভীরমুখে চেয়ে আছেন শূন্যে। যেন জগৎ সংসারের ওপর তিনি অতিষ্ঠ। খুব শীঘ্রই বেরিয়ে পড়বেন অজানার উদ্দ্যেশ্যে। হাতে তার চায়ের কাপ। গরম চা থেকে এখনো ধোঁয়া উড়ছে। সুমিতা বেগম মাত্রই দিয়ে গিয়েছেন। তন্ময় এসে বসেছে ভদ্রলোকের পাশেই। সে কফি নিয়ে এসেছে এক মগ। হাতের ল্যাপটপটা রেখেছে টেবিলের ওপর। পায়ের ওপর পা তুলে চায় অদূরেই। অরু ফুল গাছে পানি দিচ্ছে। পাশেই রুবি দাঁড়িয়ে আছে। দীপ্ত প্রজাপতি ধরতে ব্যাকুল। তন্ময় ওদিকে চেয়েই কফির মগে চুমুক বসায়। মৃদু বাতাস বইছে। পাখি ডাকছে। দারুণ এই সময়টা তন্ময় উপভোগ করতে পারে না। পূর্বেই বাবা নামক দুঃসম্পর্কিত শ্বশুর ক্যাটক্যাটে কণ্ঠে বলে ওঠেন, 
‘খুব আমোদেই কফি খাচ্ছো দেখছি।’
তন্ময় জানে তার পিতা মহাশয় কী নিয়ে তার ওপর বিরক্ত! দুটো বাচ্চা তো তন্ময়ের কাণ্ডে আসেনি। আল্লাহ্ এর ইচ্ছেতেই এসেছে। তাই নয় কী? কিন্তু এই ভদ্রলোক সেই বিষয় নিয়ে তন্ময়ের ওপর চটে আছে। আশ্চর্য! 
‘কেঁদে কেঁদে খাব?’ 
তন্ময়ের সরল প্রশ্নের বিপরীতে মোস্তফা সাহেব তীক্ষ্ণ ভাবে চোখ রাঙান। তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন,
‘না কেঁদে কেঁদে কেনো খাবা? হেসে হেসে খাও।’
তন্ময় ফের মগে চুমুক বসায়। নির্বিকার কণ্ঠে বলে,
 ‘হাসতে ইচ্ছে করছে না আপাতত। তোমার হাসি আসলে আমায় ধার দিও, বাবা। তোমার জন্য নাহয় একটু হেসে হেসেই কফি খাব।’
মোস্তফা সাহেবের থমথমে মুখখানা আরও থমথমে হয়ে এলো। নাক ফোলালেন। বিরক্তিতে মুখ ভোঁতা করে বাঁকাচোখে ছেলেকে দেখলেন। তন্ময় যেন বাবার ওই ধারালো দৃষ্টি দেখেও দেখল না। ভদ্রলোককে সুযোগ দিলেই তাকে পেয়ে বসবে। মোস্তফা সাহেব মিনমিনে গলায় আওড়ালেন,
‘দামড়া ছেলে তুমি কিচ্ছুটি কী বুঝো নাই? গাফলতির দ্যাখো কী পরিণাম দাঁড়িয়েছে।’
তন্ময় যেন শুনেও শোনে না। তবে প্রত্যুত্তর করবে না করবে না করেও, করে বসে শেষমেশ,
‘তুমি দাদা হচ্ছো।’
মোস্তফা সাহেবের কথাটুকু বুঝতে সময় লাগে। গুরুগম্ভীর মুখে কিছুক্ষণ ছেলের উদাস মুখপানে চেয়ে রন। অবশেষে তিনি হনহনিয়ে উঠে চলে গেলেন। পিতা নামক দুঃসম্পর্কিত শ্বশুরকে বিরক্ত করে তন্ময়ের মন ভালো হয়ে আসে অনেকাংশে। সে বেশ আরাম করে কফিতে চুমুক বসাতে বসাতে অরুকে দেখে। মেয়েটা ম রে যাওয়া ফুল নিয়ে হাহুতাশ করছে। রুবি স্বান্তনার বুলি আওড়াচ্ছে। এযাত্রায় ফিরে চায়। তন্ময়ের চোখে চোখ পড়তেই মুখ ভেঙায়। মাথা ঘুরিয়ে ফের ফুল দেখতে ব্যস্ত হয়। ও কী জানে ওভাবে মুখ ভেঙালে তন্ময়ের ভেতর কিছু একটা হয়? তছনছ হয় ভেতরটা? জানে? জানে না। জানার কথাও না। 
 ———
অরুর জন্য সিঁড়ি ঘরের রুম ফাঁকা করা হয়েছে। ক'মাস ধরে এই রুমেই সে থাকে। তন্ময়কেও ঘুরেফিরে এই রুমেই পাওয়া যায়। আজও ব্যতিক্রম নয়। অরু বিছানার অন্যপাশে গিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে আছে৷ রাতের খাবার খায়নি এখন অবধি। ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে ন'টায়। তন্ময় হাত ঘড়ি খুলে রাখতে নিয়েই ডাকে,
‘অরু? খেতে আয়।’
অরু আরও ঘুরে বসে। পিঠ দেখিয়ে আওড়ায়,
‘খাব না।’
তন্ময় ওর দিকে এগুতে নিয়ে শুধায়, 
‘কেনো খাবি না?’
অরুর প্রত্যুত্তর বাঁকা, ‘আপনার জানা লাগবে না।’
তন্ময় এসে দাঁড়ায় অরুর সামনে। গাল দুটো রক্তিম হয়ে আছে। ফুলো ফুলো গাল দুটোকে আবার কেমন ফুলিয়ে রেখেছে টমেটোর মতন। চুলে তেল দিয়ে দুটো বিনুনি গেঁথে দিয়েছে জবেদা বেগম। দেখতে বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। আর এই বাচ্চার পেটেই তার নাকি দুটো বাচ্চা! ভাবতেই তন্ময়ের মেরুদণ্ড বেয়ে শিহরণ ছুটে যায়। সেই অনুভূতি বড্ড অদ্ভুত। তার পুরো পৃথিবীটাই যেন শুধু ওর সামনে এসে থমকে গেছে। সে পকেট হাতড়ে পায়েলের বক্সটা বের করে। কিনেছিল গতকাল রাতে, ফেরার পথে। মেয়েটা অভিমান করে কাছেও আসেনি, দেবার সুযোগও হয়নি। এবারে এসে তন্ময় বসে অরুর পাশেই। বক্স থেকে পায়েলটা বের করে আলতোভাবে অরুর পা’টা বিছানায় রাখে। পায়েলটা পরিয়ে দেয় খুব যত্নের সাথে। অরু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে। চোখে কতশত প্রশ্নের বাণ। সেই প্রশ্নের বাণ এড়িয়ে তন্ময় ফের উঠে দাঁড়ায়। আর একটা কথাও বলে না। হঠাৎ করেই কোমর বেঁকিয়ে অরুকে পাজাকোলে তুলে নেয়। অরু হকচকিয়ে ওঠে। অস্পষ্ট আর্তনাদ করে। দ্রুত জাপ্টে ধরে তন্ময়ের গলা। সে কী ভারী! এই তাকে মানুষটা কীভাবে তুলতে পারে? তন্ময় ইতোমধ্যে এগুতে শুরু করেছে দরজার দিক। অরু প্রথমে আশ্চর্য হয়। রুম থেকে বেরুতে দেখে বিচলিত হয়ে ওঠে,
‘কই নিচ্ছেন? নামান, নামান। বাইরে সব্বাই আছে তো।’
তন্ময় কী শুনলো? বোধহয় না। খুব ধীরস্থির কদমে এগুতে থাকল নিজের মতোই। অরু চোখমুখ আতঙ্কে, লজ্জায় বুজে নিয়েছে। শক্ত করে ধরেছে তন্ময়ের গলা। লিভিংরুমে উপস্থিত সকলের মুখ তখন হা হয়ে আছে। মোস্তফা সাহেবের হাত থেকে বাদাম পড়ে গিয়েছে। আনোয়ার সাহেব থতমত চেহারায় চেয়ে আছেন। তন্ময় কোথাও চায় না। সোজা ডাইনিং এসে চেয়ারে বসিয়ে দেয় অরুকে। জবেদা বেগম বেয়াকুবের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন এহেন দৃশ্যে। তন্ময় বলে,
‘ওকে খেতে দাও।’
যেন হুঁশ আসে জবেদা বেগমের। তিনি আমতাআমতা করেন,
‘ওহ, হ্যাঁ। দিচ্ছি, দিচ্ছি। তুইও বোস।’
অরু মাথা নত করে রেখেছে। রীতিমতো লজ্জায় মেয়েটা এইটুকুন হয়ে আছে। তন্ময় পাশের চেয়ার টেনে বেশ সাবলীল ভাবেই বসে খেতে। আগ বাড়িয়ে অরু প্লেট উল্টে দেয়। অথচ পেছনে অনেক গুলো চোখ বড়ো বড়ো চোখে তাদের দুজনকেই দেখছে।

৮০.২
অরুর প্রেগন্যান্সির আট মাস। শরীরের তুলনায় পেট খানা তার অসম্ভব বড়ো। বড়ো পেটের কারণে হাঁটাচলা তো দূরের বিষয়, মেয়েটা আরাম করে শুতে অবধি পারে না। কোনোরকম একপাশ হয়ে শুয়ে থাকতে হয় সারাটিরাত। অথচ ও বিছানার জুড়ে ঘুমের ঘোরে পায়চারি করা মেয়েমানুষ। তন্ময় হাপুসনয়নে প্রিয়তমারা অস্বস্তি, কষ্ট দেখে —পীড়া অনুভব করে। সে পীড়া অনুভব করে, তা অরু হয়তোবা বোঝে। তাইতো কোনোভাবেই খারাপ লাগা জাহির করতে চায় না। চঞ্চল থাকতে চায়, হাস্যোজ্জ্বল থাকতে চায়৷ বোঝাতে চায় সে মোটেও খারাপ নেই। দিব্যি আনন্দে আছে। এতেও তন্ময় খুব অসহায় অনুভব করে। তার অরুর এতো বুঝদার হওয়া ভালো লাগছে না। এতো বুঝতে কে বলেছে? এসময়েও কেনো তার কথা ওই পুচকে মেয়েটার ভাবতে হবে? ওর খারাপ লাগলে কাঁদুক, তন্ময়কে জ্বালাক, পোড়াক…জানাক এইতো সে চায়। 
খুব করে চায়। এইযে ও কিছু মাস ধরে শান্তিতে ঘুমুতে পারছে না। ঘুমের ঘোরে একটু নড়তেচড়তে গেলে অসুবিধে হয়। ব্যস, ওমনি ঘুম ভেঙে যায়। আর বাকিটা রাত ঘুম আসে না ওর। নির্ঘুম কাটে। তন্ময়েরও ঘুম ভেঙে যায়, সে অবশ্য ওর চিন্তায় ঠিকঠাক ঘুমাতেও চায় না৷ ইচ্ছে হয় না।
অরুর পাশে— বিছানার হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে তন্ময়। কাজের ফাঁকে-ফাঁকে আড়চোখে ঘুমন্ত অরুর ওপরও নজর রাখছে। ওর ওঠার সময় হয়ে এসেছে। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে এই মাঝরাতে উঠে বসে থাকার বদভ্যাস করে রেখেছে। আজ রাতের খাবার সেরে একটু হেঁটেছিল। এরপর ঘরে এসেই ঘুমিয়ে গিয়েছে। দেয়াল ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে রাতের একটা পঁয়তাল্লিশ। আজ আকাশে চাঁদ নেই, নেই নক্ষত্র। কালো মেঘে আকাশ অন্ধকার। জানালা দিয়ে কেমন ঠান্ডা বাতাস আসছে। এসময়ে ঝংকার তুলে বজ্রপাত পড়ল। তন্ময় চকিতে তাকাল অরুর দিকে। না, ওর ঘুম ভাঙেনি। বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। মাঝেমধ্যে অস্বস্তিতে গুঙিয়ে উঠছে। তলপেটে হাত রেখে আছে। অন্যহাত গালে। তন্ময় কিছুক্ষণ নীরবে, বড্ড নিভৃতে অরুর মুখখানি দেখে। আগের তুলনায় স্বাস্থ্য হয়েছে সামান্য। গাল দুটো ভরাট। কী ভীষণ মিষ্টি দেখায় আজকাল! অন্যরকম সৌন্দর্য বহন করছে ওর অস্তিত্ব জুড়ে। 
তন্ময় হাত বাড়িয়ে অরুর অবাধ্য চুলগুলো মুখ থেকে সরিয়ে কানে গুঁজে দেয়। মুখ থেকে হাত নামিয়ে আলগোছে ওর তলপেটে হাত রাখে। বুলিয়ে দেয়। অরুর পেট বুলিয়ে দেয়া তার অন্যতম এক অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অভ্যাসটা অবশ্য অরুই করিয়েছে তাকে। হঠাৎ করে এসে বলতো,
‘তন্ময় ভাই, বাবুদের ছুঁয়ে দিন তো একটু। ওরা ওদের বাবার স্পর্শ চায়।’
তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এমন মুহূর্তে ওর মুখের ভাই ডাকটা পৃথিবীর অন্যতম হাস্যকর সম্বোধন। 
তন্ময় অসহায় গলায় তখন বলে, 
‘এক মুখে আমায় ভাই ডাকছিস, আবার তোর পেটের বাচ্চাকে আমায় বাবা ডাকাচ্ছিস। তোর কমনসেন্স কোথায়?’
অরু মিইয়ে যায়। দাঁত দিয়ে জিহ্বা কামড়ে মিনমিনে গলায় বলে, 
‘ফায়াজ-ফাইজার বাবা, বাবুদের ছুঁয়ে দেন না।’
তন্ময় ওকে কোলে বসিয়ে উঁচু পেটটা ছুঁয়ে দিতো, চুমু খেতো। ভীষণ আদর করতো। এখন তাকে আর বলতে হয় না। সে দিনে অগুনিত বার অরুর পেট বুলিয়ে দেয়। সেদিন ঘরের দুয়ারে এসে দেখে অরু নিজের পেট দু'হাতে ধরে নরম গলায় গল্প করছে। তন্ময়কে দেখতে পেতেই হাতের ইশারায় কাছে ডেকে উত্তেজিত বলে,
‘একটা বাবু মাত্রই কিক করল। কে কিক করতে পারে বলুন তো? ফায়াজ নাকি ফাইজা?’
তন্ময় কীভাবে জানবে কে লাথি দিয়েছে? তার তো জানার কথা না। ওদিকে অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকা প্রেয়সীকে হতাশ করতে ইচ্ছে হয়নি তার। অরুর চোখে চেয়ে দিনদুপুরে মিথ্যে বলেছিল,
‘ফায়াজ।’
অরু গদগদ গলায় বলে, ‘আসুন, ছুঁয়ে দেখুন কীভাবে কিক করছে! একদম আপনার মতো অ্যানার্জেটিক।’
তন্ময় আর অ্যানার্জেটিক? আদতেও এই কথা বিশ্বাস করার মতন? তন্ময় এগিয়ে গিয়ে পাশে বসে অরুর পেটে হাত রাখে। তখুনি বাচ্চা ফের কিক করে। তন্ময় স্পষ্ট একটা নতুন জীবনের উপস্থিতি পায়। সেই অনুভূতি ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়। আজও সে অরুর পেট ছুঁয়ে বাচ্চাদের উপস্থিতি অনুভব করার প্রচেষ্টা চালায়। এসময়ে ফের বজ্রপাত ঘটে। আশেপাশেই ঘটেছে বোধহয়। জানালা খোলা থাকায় খুব জোরালো হয় বজ্রের ধ্বনি। অরু নড়েচড়ে ওঠে। তন্ময়ের হাতটা শক্ত করে দু'হাতের মধ্যে। আড়মোড়া চোখ মেলে চায়। তন্ময়কে দেখে ঠোঁট ফুলিয়ে বিড়বিড় করে,
‘খেতে ইচ্ছে করছে।’
তন্ময় ল্যাপটপ বন্ধ করে। অন্য হাতে অরুর চুল বুলিয়ে দিয়ে শুধায়,
‘কী খেতে ইচ্ছে হচ্ছে?’
অরু বলে না। বরংচ প্রশ্ন করে, ‘কয়টা বাজে?’
তন্ময় সময় বলতেই অরু কিছুক্ষণ নীরব থাকে। চিন্তিত গলায় বলে, ‘কিছু খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। ঘুমাচ্ছেন না কেনো? এতো রাত হয়েছে আর আপনি এখনো জেগে। আসুন, ঘুমান।’
বাইরে বুঝি বৃষ্টি শুরু হয়েছে? ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ঝুম হয়ে বৃষ্টি এই নামবে বলে। তন্ময় অরুর গাল ছুঁয়ে জিজ্ঞেস করে,
‘কী খেতে ইচ্ছে করছে?’
অরুর সদ্য ঘুম ভাঙা মুখ অসহায় দেখল। বড়ো হতাশ হয়ে জানাল, 
‘রসমালাই। কিন্তু আমি খেতে চাচ্ছি না বিশ্বাস করুন। বাচ্চারা খেতে চাচ্ছে।’
তন্ময় হেসে ফেলে। সেই হাসি দেখে অরু হাপুসহুপুস করে। লজ্জা পায়। নিজের কথাটুকু প্রমাণ করতে বলে,
‘ওদের জিজ্ঞেস করুন, ওরাই বলবে আমি নির্দোষ।’
বলতে বলতে অরু উঠতে চায়। তন্ময় দু'হাতে উঠে বসতে সাহায্য করে। অরুর গায়ের ম্যাক্সি হাটুর ওপরে উঠে আসে৷ তন্ময় নরম হাতে ছায়া, ম্যাক্সি ঠিক করে দিয়ে বলে,
‘আমার বাচ্চারা খেতে চেয়েছে যেহেতু আমি তাদের বানিয়ে খাওয়াব। তাদের মাকে তো একবার বানিয়ে খাইয়েছিলাম। ভুলে গেছে?’
অরু মুহূর্তেই তন্ময় বুকে হামলে পড়ে। দু'হাতে জড়িয়ে মুখ লুকিয়ে বিড়বিড় করে জানায়,
‘আমাকে কিনে এনে দিলে মোটেও ভালো হতো না। আমি খুব অভিমান করতাম। খুউউব।’
তন্ময় নিঃশব্দে হাসে। অরুর চুলগুলো গুছিয়ে নিতে নিয়ে বলে, 
‘দিনের চব্বিশঘণ্টার বিশ ঘণ্টাই তো অভিমান করে থাকিস।’
অরু প্রত্যুত্তরে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে তন্ময়ের পুরুষালি কোমর। বড়ো করে ঘ্রাণ শুঁকে নেয় তন্ময়ের শরীরের। তন্ময়ের বুকে যেই শান্তি পায় সে তা পৃথিবীর কোথাও পায় না। এই যায়গাটাই তার সবকিছু। অরুর আস্ত পৃথিবী এই বুক। 
— — —
বাতি বন্ধ লিভিংরুমের, রান্নাঘরের। সবাই ঘুমাতে চলে গিয়েছে। রাত তো কম হয়নি! তন্ময় বাতি জ্বালায়। এসে দাঁড়ায় রান্নাঘরে। সেবার ইউটিউব দেখে রান্না করেছিল। এবারো সে ইউটিউবে রসমালাই বানানোর ভিডিও ছেড়ে কিছুক্ষণ দেখল। উপকরণ গুলো আগে জড়ো করতে হবে। প্রথমে ফ্রিজ থেকে দুধ নামিয়ে ভিজিয়ে রাখল।
এরপর রান্নাঘরের কাবার্ড খুলে উপকরণ খুঁজতে থাকল। নীরবতা চিড়ে টুংটাং ধ্বনিতে মুখরিত চারিপাশ। এসময়ে কারো উপস্থিতি অনুভব করে তন্ময় পিছু চেয়ে আশ্চর্য না হয়ে পারে না৷ মোস্তফা সাহেব আগ্রহী বদনে দাঁড়িয়ে আছেন। হালকা কেশে প্রশ্ন করেন চাপাস্বরে,
‘কী করছো?’
তন্ময় ফের ব্যস্ত হয় নিজের কাজে। বলে,
‘অরু রসমালাই খেতে চাচ্ছে। তাই বানাব।’
মোস্তফা সাহেব আনন্দে আপ্লূত হলেন। চটপট বেসিনে ধুতে গেলেন হাত দুটো। হাত দুটো ফটাফট ধুয়ে এসে বলেন,
‘একা করতে পারবে না। দেরি হবে। আমিও সাহায্য করি।’
বলতে বলতে তিনি নিপুণ দৃষ্টিতে তন্ময়ের ফোন নিয়ে রসমালাই বানানোর রেসিপিটা দেখে নিলেন। বিজ্ঞের মতো বলেন,
‘দুধটা চুলোতে বসিয়ে দিই আগে। এটা অনেকক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। তারপর নাহয় ঢো বানানোর কাজে লাগব।’
মোবাইলটা রেখে মোস্তফা সাহেব দুধের প্যাকেট কেটে ঢেলে নিলেন পাতিলে। তন্ময় তখনো এক এক করে উপকরণ খুঁজে খুঁজে এক যায়গায় জড়ো করছে। ব্যস্ত দুজন হঠাৎ কারো উপস্থিতি পেয়ে পিছু ফিরে দেখে আনোয়ার সাহেব দাঁড়িয়ে। চোখে চশমা, হাতে বই। ভদ্রলোক ঠান্ডা পানি খেতে এসেছেন। বড়ো ভাই, এবং ভাইপোকে রান্নাঘরে ব্যস্ত দেখে আশ্চর্য গলায় শুধান,
‘কী করছেন ভাইয়া?’
মোস্তফা সাহেব আনন্দিত গলায় ঘোষণা দেবার ভঙ্গিমায় জানান,
‘অরু রসমালাই খেতে চেয়েছে। রসমালাই বানাচ্ছি।’
মুহূর্তেই আনোয়ার সাহেব বিচলিত হলেন। বইটা পাশে রেখে হাত দুটো ধুতে গেলেন বেসিনে। ধুয়ে এসে তিনিও বড়ো ভাইয়ের পেছনে রসমালাই বানানোর কাজে ব্যস্ত হলেন৷ তন্ময় আশ্চর্য না হয়ে পারে না। নির্বাক তাকে মোস্তফা সাহেব কাজ ভাগ করে দিলেন। তন্ময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে নীরবে হেসে ভাগে পড়া কাজটুকু করতে থাকে। 
রান্নাঘরের টুংটাং শব্দ, মিহি স্বরে রসমালাই বানানোর আলোচনার মধ্যে অরু ধীরপায়ে এসে হাজির হয় লিভিংরুমে। সে এসেছে তন্ময়ের রসমালাই বানানো দেখতে। অথচ রান্নাঘরে তন্ময় ব্যতীত আরও দুজন ভীষণ ব্যস্ত। মোস্তফা সাহেবের নাকে আটা লেগে আছে৷ আনোয়ার সাহেবের সাদা শার্টেও সাদা কিছু একটা লেগে গিয়েছে। তন্ময়ের দু'হাতে মিশ্রণের বাসন। এই পর্যায়ে তন্ময় অরুকে দেখতে পায়৷ অদূরেই দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল চোখে তাদের দেখছে। আনোয়ার সাহেবও এবারে মেয়েকে দেখেন৷ দু'হাতে ময়দা তার। সেভাবেই দু'গাল ভরে হাসেন। মোস্তফা সাহেব প্রাণোচ্ছল গলায় বলেন,
‘মামণি আর আধঘন্টার মধ্যেই রসমালাই হয়ে যাবে। তুমি বসো।’
অরু লজ্জায় আড়ষ্ট হয়। বাবা-চাচাদের এহেন কাণ্ডে আনন্দে হেসেও ফেলে। তন্ময় চাইতেই সে দু'হাত মুখে চেপে হেসে ওঠে। চাচার কথা মতো বসে লিভিংরুমের সোফায়। দেখা গেল কিছুক্ষণের মধ্যে জবেদা বেগম, সুমিতা বেগমও এসে হাজির হলেন। তবে তারা রান্নাঘরে ঢোকে না। লিভিংরুমে দাঁড়িয়ে তাদের ব্যস্ত কাণ্ডকারখানা দেখে যায়।
— — —
অরুর ডেলিভারি ডেট ঘনিয়ে আসছে। তন্ময় আপনমনে খুব অস্থির হয়ে আছে। অরুও কিছুটা ভয়ে মাঝেমধ্যে গুটিয়ে যায়। এইতো অরুর প্রায় ন'মাস। এই মাসের শেষের দিকে অরুর ডেলিভারি ডেট পড়েছে। জবেদা বেগম, সুমিতা বেগম ব্যাগপত্র গোছাতে শুরু করেছেন। আজ তন্ময় বেবিশপ থেকে শপিং করে ফিরেছে। নবজাতক বাচ্চা যা যা প্রয়োজন সবই সে নিয়ে এসেছে। সেসব জবেদা বেগমের হাতে দিয়ে ঘরে এসে ঢোকে। অরু বিছানায় বসে আছে হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে। তন্ময়কে দেখে অস্থির হয়, নড়েচড়ে ওঠে। তন্ময় হাত ঘড়ি খুলতে নিয়ে শুধায়,
‘কী হলো?’
অরু হাতের ইশারায় কাছে ডাকে। তন্ময় এগিয়ে যায়। পাশে বসে৷ অরু কিছুক্ষণ তন্ময়ের দিকে চেয়ে থেকে কান্না আটকে রাখা চাপা গলায় বলে,
‘তন্ময় ভাই, যদি আমার কিছু হয়ে যায় আপনি কিন্তু কখনো অন্যক কাউকে বিয়ে করতে পারবেন না।’
তন্ময় মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়। থমকায় তার মুখ। চোয়াল তৎক্ষণাৎ শক্ত হয়। এক ভয়ংকর বিশ্রী অনুভূতির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় ভেতরের সবকিছু। অরু বোধহয় বুঝতে পারে সে ভালো কিছু বলেনি! কিন্তু তাকে কিছু বলতেই দেয় না তন্ময়। জাপ্টে ধরে নিজের বুকের মধ্যে। বিড়বিড় করে তন্ময়,
‘দ্বিতীয়বার এইসব কথা তোর মুখে শুনলে আমি — আমি….’
তন্ময় শেষ করতে পারে না বাক্য। সে থামে যায়। অরু ঘাবড়ে যায়। গুটিয়ে যায় তন্ময়ের বুকে৷ 

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...

৮১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা নাবিলা ইষ্ক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন