উপন্যাস        :         প্রিয় ইরাবতী
লেখিকা        :          রাজিয়া রহমান
প্রকাশনা       :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২০ জুলাই, ২০২৫ ইং

লেখিকা রাজিয়া রহমানের “প্রিয় ইরাবতী” নামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি  ২০২৫ সালের ২০ জুলাই থেকে লেখা শুরু করেছেন। 
প্রিয় ইরাবতী || রাজিয়া রহমান kobiyal
প্রিয় ইরাবতী || রাজিয়া রহমান


৩২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রিয় ইরাবতী || রাজিয়া রহমান (পর্ব - ৩৩)


ইরা হলের বাহিরে আসতেই বাসার ড্রাইভার এগিয়ে এলো ইরার দিকে। এগিয়ে এসে ইরাকে বললো, “আসুন ম্যাডাম, গাড়িতে উঠে আসুন।”

ইরা দ্রুত পায়ে ড্রাইভারের সাথে এগিয়ে গেলো। ড্রাইভার গাড়ি পার্কিং থেকে বের করে নিয়ে আসে।

ইরা নিজের পার্সটা খুলে ফোন বের করে রিমিকে কল দিলো কোথায় আসবে জিজ্ঞেস করার জন্য। রিমি কল রিসিভ করলো না। ইরা অধৈর্য্য হয়ে ওঠে। ইশতিয়াককে কল করতে যেতেই এক জোড়া কোমল হাত ইরার নাকে একটা রুমাল চেপে ধরে। বিস্মিত হয়ে ইরা মানুষটার দিকে তাকায়।কোনো প্রতিবাদ করার আগেই ইরার জ্ঞান হারিয়ে যায়।

ইশতিয়াক ক্লারার ব্যাপারটাতে ফোকাস করতে গিয়ে এক মুহূর্তের জন্য ইরা একা আছে ব্যাপারটা ভুলে গেলো।মনে পড়তেই তাকালো ইশতিয়াক।

ইরা নেই।

ইশতিয়াকের বুক কেঁপে উঠে। আচমকা ইরা বলে চিৎকার করে উঠে ইশতিয়াক।

শায়লা ইশতিয়াকের দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকায় ইরা যেখানে বসে ছিলো সেদিকে।

ইরা নেই।

শায়লার দুই ঠোঁট মৃদু প্রসারিত হয়ে উঠে।

এতো অশান্তি, যন্ত্রণার মধ্যেও শায়লার শান্তি লাগে। ইকবাল নিজের ও কেমন শান্তি লেগে উঠে।

চুলায় যাক তারিন।

জাহান্নামে যাক বিয়ে।

ইরাকে তাহলে কব্জা করে ফেলেছে মা!

ইকবাল হেসে উঠে হো হো করে। ইশতিয়াক ইকবালের হাসি দেখে শিউরে ওঠে। কেমন পশুর মতো হাসছে ইকবাল।

ছুটে এসে ইকবালের গলা চেপে ধরে বললো, “আমার ইরা কোথায়?”

ইকবাল মুচকি হেসে বললো, “আমি বিয়ে করতে এসেছি রে ভাই।তোর বউয়ের খবর আমি কীভাবে জানবো?”

কয়েকজন এসে দুই ভাইকে থামালো।তারিন বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলো। এটা কেমন পরিবার!

ইকবাল ঠোঁট গোল করে শিস দিতে লাগলো আস্তে করে। যেনো সে ভীষণ আনন্দিত।

বিয়েটা ভেঙে গেলো অথচ কারো মধ্যে কোনো লজ্জা,ভয়,অনুশোচনা কিছুই দেখতে পেলো না তারিন।

ইশতিয়াক এদিক ওদিক সবদিকে খুঁজতে লাগলো ইরাকে।

কোথাও ইরা নেই।

ইশতিয়াককে পাগলের মতো ছুটতে দেখে ইকবালের ভীষণ আনন্দ হচ্ছে।

হেরে যাওয়া বাজি জিতে গেছে ইকবাল।আনন্দ তো হবেই।

উপস্থিত অতিথিরা সবাই নিজেদের মতো খাওয়া দাওয়া করে চলেছে।তারিন রীতিমতো কাঁপছে আতঙ্কে। শায়লা নামক এই ভদ্রমহিলা আর তার বড় ছেলে দুজনকেই তারিনের কাছে সাইকো মনে হচ্ছে। তা না হলে কোনো সুস্থ মানুষ এরকম স্বাভাবিক থাকে কীভাবে এরকম অভিযোগের পরেও।

তারিনের ক্লারার জন্য ও মায়া হচ্ছে সেই সাথে। বেচারা মেয়েটা এতো দূর থেকে ছুটে এসেছে। অথচ তার গর্ভের বাচ্চাটা কখনোই বাবার পরিচয় পাবে না।

শায়লা মিষ্টি সুরে ইকবালকে ডেকে বললো, “চলো ইকবাল। এরকম একটা বিয়ে ভেঙে গেলে কিছু হবে না।তুমি এর চেয়ে ও ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করো।”

তারিনের বাবা ক্ষুব্ধ হয়ে বললো, “আপনার নামে আমি মামলা করবো। আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন,আমার মানহানি করেছেন।”

শায়লা হেসে বললো, “বেস্ট অফ লাক মি.যা পারেন করেন।শুধু একটা কথা জানিয়ে দিই।মামলা আপনি করবেন,টাকা আপনি ঢালবেন।জিতবো আমি।”

তারিনের মা স্বামীর হাত চেপে ধরে বললো, “তুমি কেনো ভেঙে পড়ছো এতো? আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছে বরং। এরা কেমন মানুষ আমাদের সেদিনই বুঝা উচিত ছিলো যেদিন বিয়ের তারিখ পাকা করতে গেছি আমরা। কেনো এই মহিলার ছোট ছেলে এর সাথে খারাপ ব্যবহার করছে সেদিন যদি ভালো করে খোঁজ নিতাম তাহলে আজ আর জল এতো দূর গড়াতো না।তবুও যা হয়েছে আল্লাহর কাছে শোকর আদায় করো যে মেয়ের জীবন নষ্ট হওয়ার আগেই সব জেনেছি আমরা।”

ইশতিয়াক বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর একটা জায়গায় ধপ করে বসে পড়লো। যা করার ইকবাল করেছে এই ব্যাপারে ইশতিয়াক নিশ্চিত।

ইশতিয়াক উঠে পড়ে ইকবালের পিছু নিতে।

ইশতিয়াক ভেবেছিলো ইকবাল নিশ্চয় ইরাকে কোথাও আটকে রেখেছে। নিশ্চয় সেখানে যাবে ইকবাল। সেই ভেবেই ইকবালের পিছু নেয়।কিন্তু হতাশ হয়ে যায় যখন দেখে ইকবালের গাড়ি বাসার দিকে গেছে।

ইশতিয়াকের বুক ভেঙে যায় যন্ত্রণায়।ডানা ভাঙা আহত পাখির মতো।

চিৎকার করে ইরার নাম ধরে ডাকতে থাকে ইশতিয়াক।

নিজের রুমের বারান্দায় সকাল থেকে বসে আছেন হাসিব শেখ।ইশতিয়াকের আর্তনাদ তার কানে যাচ্ছে।

বারান্দার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে শূন্যের দিকে তাকিয়ে আছেন হাসিব শেখ।

আকাশে একটা একাকী চিল উড়ে বেড়াচ্ছে।

হাসিব শেখ সেখানে নিজেকে কল্পনা করেন মনে মনে।

খানিক পরে ইশতিয়াক ছুটে এলো হাসিব শেখের কাছে। উদভ্রান্তের মতো মুখের দিকে তাকিয়ে হাসিব শেখ একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন আজকে।

ইশতিয়াক বাবার পায়ের কাছে লুটিয়ে বসে পড়লো।হাসিব শেখ কোমল গলায় বললো, “কি হয়েছে?”

“বাবা,আমার ইরা?ইরাকে পাচ্ছি না বাবা।ও কোথায়?আমার ইরাকে খুঁজে এনে দাও তুমি। আমার ইরার এই বিন্দু ক্ষতি হলে আমি সবকিছু শেষ করে দিবো।আল্লাহর কসম বাবা,ইরার চুল পরিমাণ ক্ষতি যে করবে তাকে আমি এই দুনিয়ার শেষ প্রান্ত থেকে হলেও খুঁজে এনে শেষ করে দিবো।”

“অস্থির হইও না।কোথাও গেছে হয়তো ইরা।”

“না বাবা।ইরা আমাকে না বলে কোথাও যাবে না।আমার ইরাকে চাই।আমার ইরাকে আমার সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চাই।ওর এক ফোঁটা ক্ষতি আমি হতে দিবো না।আজকে এই শেখ ভিলাতে র ক্তে র বন্যা বইয়ে দিবো আমি মনে রেখো।”

হাসিব শেখ এক মুহূর্ত ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকলেন।ইশতিয়াকের দুই চোখে আগুন জ্বলছে যেনো।

ইশতিয়াক উঠে যায় হাসিব শেখের রুম থেকে। হাসিব শেখ হনুফাকে ডেকে পাঠালেন।তিনি উপরে যাবেন।

ইশতিয়াক থানায় ছুটলো মিসিং ডায়েরি করতে।হাসিব শেখ শায়লার রুমের দরজায় নক করলেন।

স্টাডি রুম থেকে শায়লা বের হয়ে এলো।

বাহিরে হাসিব শেখকে দেখে শায়লা বিস্মিত হলো।

মুচকি হেসে বললো, “কি ব্যাপার? হঠাৎ করে আমার বেডরুমের সামনে? এতো দিনে ইচ্ছে করেছে বুঝি?”

“তোমার সাথে আমার কথা আছে শায়লা।তোমার রুমে আসো।”

“কী কথা?আমি স্টাডি রুমে বসবো কিছুক্ষণ। তুমি স্টাডি রুমে আসো।”

হাসিব শেখ শায়লার সাথে স্টাডি রুমে ঢুকলো। শায়লা দরজা বন্ধ করে দিলো।

“ইরার যাতে এক চুল ও ক্ষতি না হয় শায়লা।আমার ইশতিয়াকের প্রাণ ভোমরা ইরা।ওর ক্ষতি হলে ইশতিয়াক কাউকে ছেড়ে দিবে না।”

“আশ্চর্য! ইরার ক্ষতির কথা আমাকে বলছো কেনো তুমি? আমি সেসবের কী জানি?”

“শায়লা, ইরা কোথায় আছে সেটা তুমি আর ইকবাল সবচেয়ে ভালো জানো।ইরাকে ছেড়ে দাও।অঘটন ঘটিও না।নিস্তার পাবে না কেউ।ইশতিয়াক র ক্তে র বন্যা বইয়ে দিবে বলেছে।ড় ও যখন বলেছে তখন যে সেটা করবেই তা তুমি আমার চাইতে ভালো করে জানো।”

শায়লা খিলখিল করে হাসতে হাসতে বললো, “দেখো হাসিব শেখ,ইরা,ইশতিয়াক, ইকবালসহ আমরা একই জায়গায় ছিলাম।তোমার আদরের পুত্রধন তখন ক্লারা নামের ওই বিদেশি মেয়েটাকে নিয়ে এসে আমার ছেলের বিয়েটা ভেস্তে দিলো। আমরা তখন ওখানেই কথা বলছি।সেখান থেকে ওই মেয়েটা নিজেই কোথায় গেছে তার আমি কী জানবো বলো ডার্লিং?”

হাসিব শেখের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে। কঠোর সুরে বললো, “তুমি ইরাকে ২০ মিনিটের মধ্যে বের করে না আনলে আমার চাইতে খারাপ কেউ হবে না।ইশতিয়াক ফিরলেই আমি ওকে বলে দিবো সবকিছুর পেছনে তুমি আছো।”

“আর আমি ও চুপ করে থাকবো না ডার্লিং। যেই ছেলের কাছে তুমি দেবতাতুল্য,তার কাছেই তোমার আসল চেহারা প্রকাশ করে দিবো।আজকে ওর জন্য আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে ডার্লিং। আমার হাজার কোটি টাকার বিজনেস হাত থেকে বের হয়ে গেছে। এতো মানুষের সামনে আমাকে লজ্জিত হতে হয়েছে যেহেতু তোমাকে আমি কীভাবে ছাড় দিবো?

একদিকে ইরার শোক আরেক দিকে নিজের পরম পূজনীয় বাবার ব্যাপারে যখন জানবে ইশতিয়াক তখন কেমন লাগবে ওর আমি সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি।আমি শান্তি পাই নি হাসিব শেখ,কাউকে শান্তিতে থাকতে দিবো না।”

হাসিব শেখ অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।অনেক ভাবনা চিন্তা খেলতে থাকে তার মাথায়।

শায়লা মিটিমিটি হাসছে।

হাসিব শেখ কোমল গলায় বললো, “শায়লা! তুমি ঠিক কবে এতটা বদলে গেছো বল তো?”

শায়লা এক মুহূর্ত অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। তারপর নিজেকে সামলে বললো, “আমি বদলে যাই নি,তুমি বদলাতে বাধ্য করেছো।ভুলে গেছো সবকিছু?সমস্যা নেই। ইশতিয়াকের সামনে যখন সবকিছু বলবো তখন সব মনে পড়ে যাবে তোমার।”

হাসিব শেখ চোখ বন্ধ করে বসে রইলেন হুইলচেয়ারে হেলান দিয়ে। ইশতিয়াক যখন জানবে শায়লাকে এই নোংরা খেলায় তিনি নিজের হাতে নামিয়েছেন,নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছেন তিনি শায়লাকে সেদিন কী ইশতিয়াক তাকে আর বাবা বলে ডাকবে?

শায়লার জন্য ইশতিয়াকের চোখে যেই ঘৃণা তিনি দেখেছেন তার জন্য ও কী তেমনই দেখবেন?

ছেলের চোখে নিজের জন্য ঘৃণা দেখে হাসিব শেখ কীভাবে বাঁচবেন?

তিনি তো এখনই জিন্দা লাশ হয়ে আছেন তখন?

হাসিব শেখ শিউরে উঠে।

শায়লা এতো নিষ্ঠুর কাজ করবে?

হাসিব শেখ অনেকক্ষণ চুপ করে থাকলেন। শায়লা কিশোরীর মতো রিনরিনে সুরে হাসছে।হাসিব শেখ মুগ্ধ হতে চাইলেন কিন্তু ঘৃণায় তার শরীর রি রি করে উঠলো।

শায়লার ওই চাঁদপানা মুখের দিকে তাকিয়ে হাসিব শেখ নিজের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলেন।

ঘড়িতে এখন রাত ৯টা বাজতে আর ৭ মিনিট বাকি। ইরার জ্ঞান ফিরেছে।

আধো আলোয় সামনে একটা চেয়ারে বসে থাকা বিশালদেহী মানুষটাকে দেখে ইরার দেহে প্রাণ এলো।যাক,ইশতিয়াক আছে তার পাশে।ইরা উঠে বসতেই গমগমে গলায় মানুষটা বললো, “ফাইনালি তোমাকে পেলাম ইরা।”

শিউরে উঠে ইরা।

এটা তো ইশতিয়াকের গলার আওয়াজ নয়।এটা তো ইকবাল!

ইকবাল উঠে রুমের সবগুলো লাইট জ্বালিয়ে দিলো।চোখ ধাধানো আলোয় ইরার বুক কেঁপে উঠে। ইকবাল!

সেই নোংরা মানুষটার হাতে তাকে পড়তেই হলো তাহলে?

ইরার গলা শুকিয়ে আসে।

এই বিপদের জন্য তো সে অনেক আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো।তাহলে এখন এতো ভয় পাচ্ছে কেনো।

ইরা চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস নেয়।সে ভীতু না।কেনো এতো অস্থির হচ্ছে। ইকবালকে কিছুতেই ইরা ভয় পাবে না।ভয় পেলে ইরা হেরে যাবে ইরা জানে।ইরা হারতে চায় না।

ইকবালের দিকে তাকিয়ে শান্ত সুরে ইরা বললো, “কী চান আপনি?”

ইকবাল ইরার পাশে এসে বসে।ইরার দিকে হাত বাড়াতেই ইরা এক লাফে পিছিয়ে গিয়ে বললো, “আগে কথা শেষ হোক আপনার সাথে। আমাকে যেহেতু ধরে এনেছেন সেহেতু আপনার পরিকল্পনা যা আছে সেটা বাস্তবায়ন করবেন জানি।তাহলে এখনই আমাকে স্পর্শ করবেন না।আরো কিছুক্ষণ আমাকে আমার স্বামীর জন্য পবিত্র থাকতে দেন।”

ইকবাল খিলখিল করে হাসে।হাসতে হাসতে ইকবালের চোখে পানি চলে আসে। এই মেয়েটা কী ভয়ংকর সুন্দর একটা কথা বললো!

ইকবাল হাসি থামিয়ে বললো, “আফসোস হচ্ছে ইরা।আজ তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার মতো পবিত্র একটা মেয়ে যদি আমার বউ হতো কিংবা এই তুমিই যদি আমার হতে।”

“তার জন্য আপনাকে ও তো চরিত্রবান হতে হতো। আপনি কী তা?”

ইকবালের চোয়াল কঠোর হয়ে উঠে। আলমারি থেকে একটা শপিং ব্যাগ এনে ইকবাল বললো, “এই নাও,এখানে একটা শাড়ি আছে ইরা।পরে নাও।বেনারশী শাড়ি।আজ আমার বাসর হওয়ার কথা ছিলো। একটা বেনারসি পড়ে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করতো এখানে।আমার ইচ্ছে ছিলো বাসর রাতে তারিন নয়,তুমি থাকবে আমার বিছানায়। তাই পূর্ণ হয়েছে আজকে।”

ইরা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে।এদিক ওদিক তাকিয়ে ইরা বললো, “এটা কোথায় এনেছেন আপনি আমাকে?”

ইকবাল হাহাহা করে হেসে বললো, “কেনো ইরা?সেসব জেনে কী করবে?ভয় নেই।তোমাকে আমি মেরে ফেলবো না।একবার ইউজ করে তোমাকে আমি সেই জায়গায় দিয়ে আসবো যেখানে তুমি হাজার বার ব্যবহৃত হবে।ইশতিয়াকের জীবনের সব সুখ আমি মাটির সাথে মিশিয়ে দিবো প্রমিস।”

“আপনি সুখী হবেন তো তাতে?”

ইকবাল আনমনা হয়ে যায়।আনমনা হয়ে বলে, “জানো ইরা,একটা সময় ছিলো যখন আমি ভাবতাম আমি ভীষণ সুখী।পোশাকের মতো একটার পর একটা নারী চেঞ্জ করি।আমার মনে হতো ইশতিয়াকের জীবন ভীষণ পানসে।ওকে আমার ভীষণ বোকা মনে হতো।না আছে ওর জীবনে অ্যা ল কো হ ল আর না আছে নারী।

কিন্তু ও যখন তোমাকে বিয়ে করে। আমার সামনে দিয়ে যখন দেখি ও তোমার আশেপাশে ঘুরছে,যখন তখন তোমার কাছে চলে যাচ্ছে আমার না হিংসা হতে থাকে।এখন আমার মনে হয় আমি ভীষণ কষ্টে আছি ইরা।আমার কেউ নেই।

কেনো আমি নষ্ট হলাম ইরা?কেনো ইশতিয়াকের মতো পানসে জীবন হলো না আমার? তাহলে তো তোমার মতো একটা মিষ্টি বউ পেতাম আমি।

আমার ভীষণ কষ্ট হয় ইরা।নিজের জীবনটা ছন্নছাড়া মনে হয়।তুমি ইরা,শুধু তুমি এর জন্য দায়ী।কী আছে তোমার মাঝে ইরা?কেনো আমার কাছে মনে হয় তুমি সেই অগ্নিশিখা যার টানে আমি আগুনপোকার মতো ছুটে যেতে চাই।

কেনো এতো নারীকে ছোঁয়ার পরেও মনে হয় তোমার মতো সুখ কেউ দিতে পারবে না।

শারীরিক সুখ না শুধু সেই সাথে মনে হয় তোমার কাছে বোধহয় স্বস্তি ও পাবো।ইরা,সব ছেড়ে দিই চলো।তুমি আমাকে একটু স্বস্তি দাও।

আমি ভালো হয়ে যাবো।ভীষণ ভালো হবো প্রমিস।”

ইরা ঘৃণায় মুখ বাঁকিয়ে বললো, “আপনার লজ্জা করে না? নিজের আপন ছোট ভাইয়ের বউয়ের সাথে এরকম কথা কিভাবে বলেন আপনি? আমি ইশতিয়াককে ভালোবেসেছি।মরণ পর্যন্ত ইরা শুধু ইশতিয়াকের হয়ে থাকবে।আমি জানি না আজকে আমার সাথে কী হবে।আমার আল্লাহর উপর সবচেয়ে বেশি ভরসা।তিনি জীবনের সব বড় বিপদ থেকে আমাকে বাঁচিয়েছেন। আমি জানি আজকেও বাঁচাবেন।আল্লাহর সাহায্য থাকলে আর কাউকে লাগবে না।আপনার মতো জালিমের হাত থেকে আমি নিশ্চয় রেহাই পাবো।”

ইকবাল চুপ করে বসে থাকে।

ইরার দুই চোখ ভিজে উঠে। ইশতিয়াক কী করছে!সে নিশ্চিত পাগল হয়ে ঘুরছে।

কিন্তু ইরা এখনো বুঝতে পারছে না তাকে কোথায় নিয়ে এসেছে এরা।ভালো করে রুমটা দেখতে লাগলো ইরা।

বিশাল বড় একটা বেড রুম।

দেয়ালে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের একটা পেইন্টিং।

বাতাসের সাথে হালকা মিষ্টি ফ্রুটি স্মেল ইরার নাকে এসে লাগে।এদিক ওদিক তাকায় ইরা।পাশেই তার ছোট পার্সটা পড়ে আছে।

কিন্তু… কিন্তু……

চট করে ইরা বুঝে যায় সে কোথায় আছে।

এই মহিলা ভীষণ স্মার্ট ইরা বুঝতে পারে। ইরাকে সে নিজেদের বাড়িতেই নিয়ে এসেছে।এটা শায়লার বেডরুম।

বিয়ের ভেন্যুতে শায়লার শরীরে এই ফ্রুটি স্মেলটা পেয়েছে ইরা।

শায়লার বেডরুমে ইরা আগে কখনো আসে নি।তাই বুঝতে পারে নি এটা কার রুম।কিন্তু হনুফার থেকে শুনেছে শায়লার রুমে একটা ছবি আছে।আগা মাথা নাই এরকম একটা ছবি।এক বেডি মাছ কুটে। হনুফার ভাষায় এরকম একটা ছবি শোয়ার রুমে রাখার কোনো মানেই হয় না।তার চাইতে শায়লার উচিত ছিলো তাজমহল,দুইটা টিয়া পাখি,একটা ফুলের বাগান এসব ছবি রুমে লাগানো।

সেই থেকেই ইরা বুঝে গেলো সে এখন শায়লার রুমেই আছে।

ইকবাল অনেক কিছু ভাবছে একই সাথে। কেনো তার জীবন এরকম নষ্ট হলো?

এর পেছনে কে দায়ী?

সে নিজে?

নাকি শায়লা?

শায়লা যদি একটু শাসন, আদর,ভালোবাসা দিয়ে বুঝাতো তাহলে কী ইকবাল এতটা নষ্ট হতে পারতো!

কিন্তু ইশতিয়াক ও তো ছিলো। ও তো এরকম বিগড়ে যায় নি।তাহলে ইকবাল কেনো বিগড়ে গেলো?

মুহূর্তে ইকবালের সব রাগ শায়লার ওপর গিয়ে পড়ে। ক্রোধে অন্ধ হয়ে ইকবাল ঝাঁপিয়ে পড়ে ইরার ওপর। নিজের ব্যাগটা এক হাতে খপ করে ধরে ইরা লাফিয়ে সরে গেলো। ইকবাল উঠে ইরার কাছে আসার আগেই ইরা জামার ভিতর থেকে ছোট স্প্রে বোতলটা বের করে এনে হাতটা পেছনে লুকিয়ে রাখলো।

ইকবাল আবারও এগিয়ে আসতে আসতে বললো, “ফোন বের করেছো ইরা?তোমার ফোন তো আমার ড্রয়ারে আগেই সরিয়ে ফেলেছি।তোমার দ্বিতীয় ফোন?কাকে কল করবে?তুমি কী জানো তুমি কোথায় আছো?কি বলে সাহায্য চাইবে?”

ইকবাল এগিয়ে এসে হাত বাড়াতেই ইরা স্প্রে বোতলটা সামনে এনে স্প্রে করতে লাগলো ইকবালের চোখ লক্ষ্য করে।

এক পাম্প,দুই পাম্প,তিন…..

ইকবাল চিৎকার করে উঠলো ভীষণ জোরে।

চোখ জ্বলে যাচ্ছে ইকবালের।

ইরা পিপার স্প্রের বোতলটা শেষ করে ফেলেছে স্প্রে করতে করতে।

ইকবাল নিজের চোখ চেপে ধরে বসে আছে। ইরা দ্রুত দৌড়ে গিয়ে বিছানার সাইড টেবিল থেকে নিজের ফোন বের করে। সুইচ অফ করা ফোনের।

ইকবাল দ্রুত ওয়াশরুমের দিকে যায় হাতড়ে হাতড়ে।ইকবাল ওয়াশরুমে ঢুকতেই ইরা বাহিরে থেকে ওয়াশরুমের দরজাটা বন্ধ করে দেয়।

একবার রিং হতেই ইশতিয়াক কল রিসিভ করে ব্যাকুল গলায় বললো, “ইরা,ইরা তুমি কোথায় ইরা?ইরা আমি মরে যাচ্ছি, আমার সাফোকেশন হচ্ছে তুমি কোথায় চলে গেছো?”

“আপনি শান্ত হোন।আমি ঠিক আছি।আপনি কোথায়?দ্রুত বাসায় আসুন?”

“আমি থানায়।আমি বাসায় যাবো না।তুমি কোথায় সেটা বলো?”

“আমি আপনাদের বাসাতেই আছি।আপনার মায়ের রুমে। আর নিশ্চয় কিছু বলে দিতে হবে না।সময় কম,দ্রুত আসুন।”

“আমি আসছি ইরা।এক্ষুনি আসছি। আজকে শেখ বাড়িতে আমি রক্তবন্যা বইয়ে দিতে আসছি।”

ইশতিয়াক এক সেকেন্ড ও দেরি না করে ছুটে বের হয় থানা থেকে।হাসিব শেখের রুমে এসে তার আলমারি থেকে তার লাইসেন্স গানটা বের করে নেয় ইশতিয়াক। তারপর দুই লাফে ছুটে যায় উপরের দিকে।

আত্মীয় স্বজনরা তেমন কেউই নেই। ইশতিয়াকের ফুফুরা দুজন ছাড়া।

শায়লার রুমের দরজা লাথি মারতে শুরু করে ইশতিয়াক। সেই সাথে গলা ফাটিয়ে ইরাকে ডাকে।শায়লা স্টাডি রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে এলো। পেছন পেছন হাসিব শেখ ও এলো।

ভেতর থেকে ইরা দরজা খুলে দিতেই ইশতিয়াক ইরাকে শক্ত করে বুকে টেনে নেয়।

যেনো বহু বছর পর নিজের প্রাণ ফিরে পেয়েছে ইশতিয়াক। আকুল হয়ে কাঁদে ইশতিয়াক ইরাকে জড়িয়ে ধরে।

“ইকবাল কোথায় ইরা?আজকে আমার হাতে ওর মৃত্যু হবে।ও কোথায়?”

“আপনি শান্ত হোন।হাতে পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?আগে এটা রাখুন আমি বলছি।”

“না ইরা,এই অনুরোধ আমি রাখবো না তোমার।”

শায়লা এগিয়ে এসে বললো, “কী পাগলামি করছো তুমি? গান রাখো।”

“আপনি একটা কথা ও বলবেন না।আপনি প্লিজ সরুন এখান থেকে।আমার মাথা ঠিক নেই।আমি যে কোনো কিছু করে ফেলতে পারি।”

হাসিব শেখ এগিয়ে এসে বললো, “ইশতিয়াক, আমি থানায় কল দিয়েছি।পুলিশ লিগ্যাল অ্যাকশন নিবে।তুই মাথা ঠান্ডা কর বাবা।”

“আমি কসম করেছি আজকে ইকবালের র ক্তে আমার হাত রাঙাবো।আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।ওই জানোয়ারটা কোথায় ইরা?”

রুমের কোথায় ইকবালকে না দেখে ইশতিয়াক ওয়াশরুমের দরজার ছিটকিনি বাইরে থেকে খুলে দিলো। ভেতরে থেকে ইকবাল সব কথোপকথন শুনতে পেলো।

কিংবা কে জানে,হয়তো ইচ্ছে করেই অপেক্ষা করলো ভেতরে ইশতিয়াক আসার জন্য।

তা না হলে লিনা যখন রুমে এনে ইরাকে সার্চ করে ইকবালকে জানিয়েছে ইরার কাছে পিপার স্প্রে আছে। ইকবাল তো চাইলে তখনই ওটা সরিয়ে রাখতে পারতো।

ইকবাল হামলে পড়তে পারতো ইরার ওপর যখন ইরা সেন্সলেস ছিলো।

ইকবাল নিজের এই অদ্ভুত ব্যবহারটা বুঝতে পারছে না।

কেনো শেষ সময়ে এসে তার মন বিদ্রোহ জানিয়েছে এই ফুলের মতো পবিত্র মেয়েটাকে নষ্ট না করতে।

তার মতো পাপী,তার মায়ের মতো নোংরা একজন মানুষের জন্য এদের দুজনের জীবন শেষ হয়ে যাক ইকবাল শেষ পর্যন্ত তা হতে দিতে চায় নি।

চায় নি বলেই বোধহয় ইরাকে জানিয়ে দিয়েছে ইরার ফোন ড্রয়ারে রাখা আছে।

ইশতিয়াক ইকবালের দিকে গান তাক করে ধরলো।

ইরা এগিয়ে এসে ইশতিয়াকের আরেক হাত চেপে ধরে বললো, “না প্লিজ,না।ওনাকে পুলিশের হাতে তুলে দিন।আপনি এই কাজটা করলে আমাদের দুজনের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।এমন প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আপনি আর আমি ভুগবো।প্লিজ মাথা ঠান্ডা করুন।”

ইরা ইশতিয়াকের হাত থেকে গানটা নামিয়ে নেয়।ইকবাল ধীর পায়ে শায়লার বেডের দিকে যায়।সবাইকে ঠেলে শায়লা ভেতরে ঢুকে আসে।ইকবালের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় জানতে চায় এই ছোটলোক মেয়েটার অহংকার শেষ করে দিয়েছে কি-না ইকবাল।

এতোক্ষণ টয়লেটে অপেক্ষা করতে করতে ইকবাল নিজের প্ল্যান সাজিয়ে নিয়েছে।.১% দ্বিধা ছিলো তার মধ্যে কাজটা করবে কি-না।

কিন্তু এই মুহূর্তে শায়লার এমন প্রশ্ন শুনে ইকবাল ১০০% নিশ্চিত হয়ে গেলো।

।ইরা শক্ত করে ইশতিয়াককে জড়িয়ে ধরে আছে।

বাহিরে পুলিশের গাড়ি এসে থেমেছে।

শায়লার লাইসেন্স করা গানটা বের করে ইকবাল। তারপর শায়লা কিছু বুঝে উঠার আগেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শ্যুট করে শায়লার মাথায়।

চমকে উঠে ইশতিয়াক ইরাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। পুরো বাড়ির সবাই চমকে উঠে।

নিচ থেকে কয়েক জোড়া পা দ্রুত উঠে আসছে।বুট জুটোর শব্দ আরো কাছে শোনা যাচ্ছে। ইকবাল ইরাকে উদ্দেশ্য করে বললো, “সরি ইরা।তোমার একটা চুল ও আমি স্পর্শ করি নি কিন্তু। তোমাকে তোমার ইশতিয়াকের জন্য আমি পবিত্র রেখেছি।তোমার মতো পবিত্র ফুলকে আমার নোংরা হাত দিয়ে কলুষিত করি নি তোমার সেন্সলেসের সুযোগ নিয়েও।

একটা কথা বলে যাই ইরা।আবার যদি মানব জনম পাই,তাহলে আল্লাহর কাছে চাইবো আমার জীবনে যেনো তোমাকে দেয় তখন।তোমার ভালোবাসা পাবার ভীষণ লোভ জন্মেছে যে আমার। ঠিক কতটা ভালোবাসতে পারলে আমার ভাইয়ের মতো একটা ছেলে তোমাকে তার জীবন মনে করতে পারে আমি জানি না।আমার ভীষণ জানার ইচ্ছে ইরা।পরজন্ম বলে কিছু নেই ইরা আমি জানি,তবুও কোথাও যদি আবারও সুযোগ হয় তুমি একবার আমার হইও।”

দরজার সামনে পুলিশ এসে দাঁড়াতেই ইকবাল নিজের মাথায় নিজে গু লি চালায়।

ইরা চোখ বন্ধ করে শক্ত করে ইশতিয়াককে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।

সবাই ভীষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ফ্লোরে পড়ে থাকা লাশ দুটোর দিকে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News



চলবে ...

৩৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা রাজিয়া রহমান বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহন করেন। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন তিনি। তরুণ এই লেখিকা বৈবাহিক সূত্রে লক্ষ্মীপুরেই বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জননী। পেশাগতভাবে তিনি গৃহিনী হলেও লেখালেখির প্রতি তার ভিষন ঝোক। আর তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও শখের বশে ধারাবাহিকভাবে লিখে যাচ্ছেন একের পর এক উপন্যাস। ২০২২ সালের মধ্যদিকে গর্ভকালিন সময়ে লেখিকা হিসেবে হাতেখড়ি নিলেও এরই মধ্যে লিখে ফেলেছেন “তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর” ও “শালুক ফুলের লাঁজ নাই” -এর মতো বহুল জনপ্রিয় উপন্যাস।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন