জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমানী যে মেয়েটি আত্মহননের মধ্যে পথ খুঁজেছিল

মধ্যদুপুরের বৃষ্টি সকল বাঁধন খুলে দেয় তার
জীবনের সবগুলো আঁটসাট দড়িরশি
সবগুলো ভালোবাসাবাসি
মায়ের স্নেহের ডাক বাবার বুকের নীল মায়া
ভাইবোন, সহপাঠীদের চোখ, ছোট ছোট সুখ-দুঃখ
পাওয়া-না-পাওয়ার মেঘ-আলো-ছায়া
হাট করে খুলে দেয় জানালা কপাট
যদিও যে যাবে তার দরকার সামান্য ওড়াল—

জাহানারা ইমাম হলের বুড়ো দ্বাররক্ষী পথ আগলে
বসে থাকে বৃথা।
সুমী লেখে শেষ চিঠি ডায়েরিতে তার—
ক্যাম্পাসের ঝিলগুলো ভরে আসে
শ্রাবণের জলে, গাছগুলো নীরব আতঙ্কে হাত নাড়ে:
না সুমী না, না বোন না, না, এইভাবে না!

সুমী লেখে ঝোড়ো হাতে শেষ চিঠি তার—
শখের শাড়িতে উইয়ের দাঁতের দাগ আবিষ্কার করে
মানুষ যেমন করে কষ্ট পায়, দুঃখ-সুতো আঙুলে জড়িয়ে
বাইশ বসন্ত জুড়ে বেড়ে ওঠা নকশিকাঁথার গায়ে
বেদনার ক্রস-স্টিচে বুনে চলে আক্ষেপের ফুল—
‘ক্রূরমনা হায়রে সুমন
তোমার মনের কপাটে আমি ব্যর্থ করাঘাত
আর এই মধ্যদুপুরের রৃষ্টি বড় বেশি নিদয় নিঠুর—’

বাঁধনের সব গাঁট, জীবনের জড়ানো-প্যাঁচানো আঁকশিগুলো
খুলে গেলে ওড়নার প্রান্তদেশে আঁট হয় অভিমানী ফাঁস—
কাঁদে ক্যাম্পাসের পিপাসী বৃক্ষেরা যারা
একদিন বন্ধু বলে কথা দিয়েছিল;
হরিৎ পত্রালি খুব কাঁদে, সারা দিন জলে ভিজে কাঁদে।
Shimul Chowdhory Drubo
                Dramatics, 34 Bach
              Jahangirnogor University

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন