উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal
ভিলেন || মনা হোসাইন

৪২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ৪৩)

মেঘলাঃ তুই এত ক্যারেক্টর লেস হয়েছিস জানতান না...
আকাশঃ ক্যারেক্টর লেস শব্দটার মানে বুঝিস..??
মেঘলাঃ চোখের সামনে জলজেন্ত একটা ক্যারেটের লেস থাকতেও বুঝব না..??
আকাশঃ তুই এ পর্যন্ত কতবার আমার সাথে কবুল বলেছিস..??
মেঘলাঃ মাথা নিচু করে বলল তাই বলে এভাবে...??
তুই তো আগে এমন ছিলি না এখন একদম চরিত্রহীন হয়ে গিয়েছিস।
আকাশঃ আবার উল্টাপাল্টা বকছিস... দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি চরত্রহীন কাকে বলে..
মেঘলাঃ না আ আ আ আ....
আকাশঃ উফফ কানের পোকা বের করে দিলি এভাবে কেউ চেঁচায়..?? 
মেঘলাঃ তাহলে ভয় দেখাস কেন..??
আকাশঃ তুই কিন্তু তোর দেয়া কথা রাখতে পারছিস না মেঘলা আমাকে এখনো তুই করে বলছিস...
মেঘলাঃ উম আসছে আমার নবাবজাদা...

তোকে তুই করে বলব না ত কি আপনি করে বলব? 
আকাশঃ আমি জানতাম তুই ভাল কথার মেয়ে না ব্যাপার না সময় বলে দিবে তুই আমাকে কি বলে ডাকবি আচ্ছা বাদ দে তুই এবার নিজের ঘরে গিয়ে রেডি হয়ে নে ..
মেঘলাঃ কেন
আকাশঃ সবাই মিলে বাইরে যাব
মেঘলাঃ পাহাড়ে যাব..?? কি মজা
আকাশঃ হ্যা পাহাড়ে নিয়ে যাব বলেই তো তোকে পাহাড় থেকে ফেলেছিলাম তাই না মাথামোটা কোথাকার। 
মেঘলাঃ তুই কি সহজ ভাবে কোন কথা বলতে পারিস না?
আকাশঃ এখনো বসে আছিস যেতে বল্লাম না..??
মেঘলাঃ যাব না আগে তুই আই লাভ ইউ বল এখনো বললি না তো...
আকাশঃ তুই আসলেই ভাল কথার মানুষ না দাঁড়া শুরু করছি..বলে নিজের টিশার্ট খুলার ভাব নিল আকাশ
মেঘলাঃকি করছিস...?? আমি ত একটা ভাল কথা বল্লাম.. 
আকাশ টিশার্ট  টা ঠিক করে বলল নাবিল....


মেঘলাঃ ওকে ডাকছিস কেন..??
নাবিল আসল, 
আবার কি হল...??
আকাশঃ হোটেলে বসে থাকার জন্য ত এখানে আসি নি তাই না...??নীলিমাদের রেডি হতে বল বাইরে যাব
নাবিলঃ কিন্তু তুই ত অসুস্থ 
আকাশঃ আমাকে কাল ফিরে যেতে হবে পরশু অফিসের উদ্বোধনী অনুষ্টান তাই আর ঘুরাঘুরির সময় নেই যা রেডি হয়ে নে।
নাবিল চলে গেল...
মেঘলাঃ হুম হুম নিলিমাকে নিয়েই ত ঘুরবি আমি ত কেউ না...
আকাশ কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেল।
মেঘলাঃ ভাইয়া এমন কেন আমাকে এত ভালবাসে কিন্তু আচারন এমন কেন..?? বুঝায় যায় না যে ভালবাসে নাকি বাসে না..( মনে মনে)
যাই রেডি হয়ে নেই না হলে আমাকে রেখেই চলে যাবে যে ঘাড় ত্যাড়া।


কিছুক্ষন পর সবাই রেডি হয়ে নিয়েছে। কিন্তু মেঘলার সাড়াশব্দ নেই।
আকাশঃ নাবিল দেখ তো মেঘলার কি হল আসছে না কেন...??
নাবিল গিয়ে মেঘলাকে নিয়ে আসল কিন্তু মেঘলার মন খারাপ সে একটা হোয়াইট টপ সাথে ইয়্যালু একটা স্কাফ পড়েছে। 
আকাশ ড্রাইভ করছে মেঘলা তার পাশে বসেছে সারা রাস্তায় মেঘলা একটাও কথা বলে নি।
আকাশঃ এর আবার কি হল সামথিং ফিসি.. 

গাড়ি থেকে নেমে কিছুটা হেঁটে যেতে হবে সবাই আগে আগে হাঁটছে মেঘলা সবার পিছনে দেখে আকাশ গিয়ে মেঘলার পিছনে দাঁড়াল।
আকাশঃ মুখ ভার করে রেখেছিস কেন কি হয়েছে...???
মেঘলাঃ কিছু না...
আকাশ মেঘলার স্কাফ এর এক সাইড টেনে নিজের গলায় জড়িয়ে নিল।
মেঘলা অবাক হয়ে গেল।
আকাশঃ এবার ঠিক আছে..??
মেঘলাঃ তুই কি করে বুঝলি..??
আকাশঃ এতক্ষন ধরে ভাবছিলাম কি ঘটতে পারে হঠাৎ স্কাফ টা চোখে পড়ল বুঝলাম সমস্যা টা এখানে।

গলায় কামড়ের দাগ বসে গিয়েছে তাই স্কাফ দিয়ে ডেকেছিস তাই না?
মেঘলাঃ টপস এর সাথে স্কাফ টা একদম ম্যচিং হয় নি।আমার কাছে একটাই স্কাফ ছিল তাই এটাই পরেছি আমাকে বাজে দেখাচ্ছে তাই না..??
আকাশঃ উম একদমি খারাপ লাগছে না বরং ভাল হল ঠান্ডা লাগবে না...
মেঘলাঃ কিন্তু ম্যাচিং...??
আকাশঃ আমার ড্রেস এর সাথে বুঝি ম্যাচিং হয়েছে বুঝি..??তুই এত ফালতু বিষয় নিয়ে কি করে যে এত সিরিয়াস হোস কে জানে বাবা..
মেঘলাঃ তুই এভাবেই থাকবি নাকি?
আকাশঃ হ্যা অবশ্যই 


মেঘলাঃ আরে না না আমার মন খারাপ লাগছে না যা তুই।লোকে দেখলে কি ভাব্বে?
আকাশঃ কি আবার ভাব্বে..??এক সুতোয় গাঁথা ২ ফুল ভাল না ব্যাপার টা...??
আকাশঃ আ...
আকাশ মেঘলাকে থামিয়ে দিল আজকাল তুই অনেক কথা বলিস।আর কোন কথা না চুপচাপ সামনে যা...
মেঘলাঃ পাগল একটা (মনে মনে)
সবাই মিলে স্থানীয় একটা মেলায় গেল।
আকাশ, নিলিমা মিলি নেহা মেঘলা সবাই যা ঘুরে ঘুরে দেখে যা যা ভাল লাগে নিয়ে নে সব বিল আমি দিব তবে মেলার বাইরে কোথাও যাবি না ঠিক আছে? আমরা এখানেই আছি ঠিক আছে।
নেহাঃ থ্যাংকস ভাইয়া 
মেঘলাঃ তোরাও ও চল না...
নাবিলঃ মেয়েদের দোকানে গিয়ে আমরা কি করব তোরা যা।
আকাশ মেঘলার স্কাফ টা নিজের গলা থেকে খুলে মেঘলাকে পরিয়ে দিল।
মেঘলারা যে যার মত আলাদা আলাদা দোকানে চলে গেল।
ঈষানঃ আকাশ মেঘলা কে খুব ভালবাসিস তাই না..??
তবে তুই কিন্তু নিলিমা আর মেঘলার ঝামেলাটা মিটাস নি মেঘলার মনে নিলিমাকে নিয়ে কিছু সমস্যা আছে ও ত সব টা জানে না তাই না??

আকাশঃ আজ সব বলে দিব। আচ্ছা এখন এসব বাদ দিয়ে চল কিছু খাই।এদের শপিং এত তাড়াতাড়ি শেষ হবে না..
নাবিলঃ হ্যা চল এখানে শুনেছি খুব ভাল লাচ্ছি পাওয়া যায় তোর ত লাচ্ছি খুব পছন্দ চল গিয়ে খাই।
সবাই মিলে মেলার একটা খাবার স্টলে ডুকে বসল
নাবিলঃ তিনটা লাচ্ছি দিবেন.. 
আকাশঃ তিনটা না ৪ টা দিবেন। 
নাবিলঃ ৪ টা কেন..??
আকাশঃ মেঘলা লাচ্ছি খেতে পছন্দ করে ওর জন্য একটা নিব।
নাবিলঃ ও আচ্ছা...
দোকানদারঃ দুঃখিত এতগুলি লাচ্ছি নেই সকালের দিকে আসলে পেতেন স্যার আমার দোকান লাচ্ছির জন্য জনপ্রিয় তাই তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় শুধু একটাই লাচ্ছি আছে বাকি গুলি জুশ দেই..??
নাবিলঃ কি আর করা যাবে জুশই দিন সাথে হালকা নাস্তা আর আকাশ যেহেতু লাচ্ছি খেতে পছন্দ করে লাচ্ছিটা ওকে দিন।


আকাশঃ তোদের কপাল খারাপ... আমার ইচ্ছা ছিল এই মেলার লাচ্ছি খাব মুলত লাচ্ছি খাওয়ার জন্যই এসেছিলাম যাক একটা হলেও পেলাম। 
ওয়েটার এসে ওদের খাবার দিয়ে গেল
আকাশঃ উফস দেখেই ভাল লাগছে। 
নাবিলঃ আরে খাবিই ত আগে নাস্তা খা তারপর লাচ্ছি খাস তুই আসলেই অদ্ভুত বাচ্চাদের মত পায়েস পছন্দ করিস লাচ্ছি পছন্দ করিস কি যে তুই...
আকাশঃ চুপ শালা ইন্সাল্ট করবি না।
ওরা নাস্তা খাচ্ছিল তখনী সেই দোকানে মেঘলা এসে ঢুকল।
আকাশরা এক কর্নারে বসেছে দোকান ভর্তি লোকজন তাই মেঘলা ওদের দেখল না।কিন্তু আকাশরা মেঘলা কে ঠিকি দেখেছে
মেঘলা কাউন্টারের দিকে গেল। 
কাউন্টারে গিয়ে,
মেঘলাঃ সবাই বলছিল আপনাদের দোকানের লাচ্ছি নাকি খুব নাম করা আমাকে কয়েক টা দিতে পারেন?
দোকানদারঃ সরি ম্যাডাম লাচ্ছি ত শেষ..

মেঘলাঃ একটাও নেই? আসলে আমি খেতে খুব পছন্দ করি। একটু খুঁজে দেখুন না আমরা কাল কেই চলে যাব আর আসা হবেনা তাই বলছিলাম
দোকানদারঃ সরি ম্যাডাম... 
আকাশ মেঘলার কথা শুনে ওয়েটার কে ডেকে বলল 
লাচ্ছি টা নিয়ে যান আমি খাব না আর ওই ম্যাডামের কাছে বিক্রি করে দিন।
ওয়েটারঃ কিন্তু স্যার আপনি নিজেও ত খুঁজে নিয়ে আসলেন...
আকাশঃ সেটা আপনার বুঝতে হবে না যা বল্লাম তাই করুন। আমাদের কথা বলবেন না বলবেন একজন অর্ডার দিয়েছিল ফিরত দিয়ে দিয়েছে।
ওয়েটার তাই করল।
মেঘলা লাচ্ছি টা নিয়ে ওয়েটার কে ধন্যবাদ দিয়ে চলে গেল।
নাবিলঃ এত ভাল কেন বাসিস আকাশ..?? কত স্বাদ করে নিলি তাও নিজে না খেয়ে মেঘলাকে দিয়ে দিলি।
আকাশ মুচকি হাসল কিছু বলল না।
আকাশরা খাবার খেয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করার পর  দাঁড়িয়ে আছে তখন মেঘলা আসল।

আকাশঃ কিনাকাটা শেষ?
মেঘলাঃ হুম অনেক কিছু কিনেছি।
আকাশঃ ভাল করেছিস এখন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক মিলিরা আসুক তারপর যাচ্ছি
মেঘলা সবার জন্যই কিছু না কিছু কিনেছে নাবিল ঈষান কে গিফটগুলি দিল এবার
মেঘলা আকাশের দিকে লাচ্ছিটা এগিয়ে দিয়ে বলল তুই খেতে পছন্দ করিস তাই তোর জন্য কিনেছি।
নাবিল ঈষান অবাক হল...
আকাশ শান্ত গলায় বলল তাই..??শুধু আমিই পছন্দ করি তুই করিস না?
মেঘলাঃ করিতো আমারও খুব ভাল লাগে। এখন তুই খেয়ে দেখ কেমন..??
আকাশঃ তোর পছন্দের তুই খা.. 
মেঘলাঃ আমি খেয়েছি এটা তোর জন্য। 
আকাশঃ কখন খেলি..??
মেঘলাঃ যখন কিনলাম তখন খেয়েছি।
আকাশ নাবিলের দিকে তাকিয়ে বলল কিছুক্ষন আগে প্রশ্ন করছিলি উত্তর পেয়েছিস..?? 
নাবিলঃ আমি কি বলব বুঝতে পারছি না।আমি সত্যিই স্পিচলেস।


মেঘলাঃ তোরা মাঝে মাঝে কি সব বলতে থাকিস আগা মাথা কিছুই বুঝি না বাপু কিসের প্রশ্ন কিসের উত্তর।এসব এখন বাদ দিয়ে ভাইয়া খা না দেখ কেমন হয়েছে..??
আকাশঃ হুম আগে তুই একটু খা তারপর খাচ্ছি বলে মেঘলাকে খায়িয়ে দিল।
মেঘলাঃ খুব মজা তাই না..??
আকাশঃ পৃথিবীর সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক খাবার।যা টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায় না।
নাবিলঃ আকাশ তুই ও কিন্তু মেঘলার মতই ভাগ্যবান
আকাশঃ জানি...
ঈষানঃ এমন ভালবাসা দেখলেও ভাল লাগে।হতে পারে লাচ্ছি টা খুব সাধারন তবে এতে যে ভালবাসা মিশে আছে সেটা অমুল্য।
মেঘলাঃ তোমরা কি আমাকে ইন্সাল্ট করছো..??লাচ্ছিটা কম দামি বলে এসব বলছো তাই না? আসলে ভাইয়া খেতে পছন্দ করে তাই এনেছিলাম।
আকাশঃ আপনাকে এত বেশি বুঝতে কেউ বলে নি কেউ। ওরা আপনাকে ইন্সাল্ট করছে না। আপনি যান গাড়িতে গিয়ে বসুন আমি সবাইকে ডেকে নিয়ে আসছি।
সবাই মিলে ফিরে আসল।

রাতে,
আকাশ নিলিমা আর মেঘলাকে ডাকল।নাবিল আর ঈষান ও আছে।
আকাশঃ তোকে কয়েকটা কথা বলার ছিল মেঘলা..
মেঘলাঃ হুম বল 
আকাশঃ নিলিমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই ওর সাথে মা আমার বিয়ের কথা বলেছিল ঠিকি কিন্তু আমি ওকে সব খুলে বলেছি আর তুই যেহেতু ওর কথাতেই সোসাইড এর সিধান্ত নিয়েছিলি তাই ওকে নিয়ে এসেছিলাম যাতে তুই আমার পাশে ওকে দেখেও সহ্য করতে পারিস।
মেঘলাঃ আমি তো জানতামেই তুই ওকে বিয়ে করবি না কিন্তু সেদিনের এনগেইজমেন্ট..??
আকাশঃ ওটাও মিথ্যা ছিল।
মেঘলাঃ আমি কি পাগল যে এসব আজব ধরনের ট্রিটমেন্ট করতে হলো।
আকাশঃ তুই অনেকটা তাই...
মেঘলাঃ ভাইয়া..??
আকাশঃ হয়েছে ভাব নিতে হবে না নিলিমা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এতদিন অভিনয় করার জন্যে যদিও এটা তোমার দায়িত্ব ছিল কারন গন্ডগোল টা তুমিই করেছিলে।

নিলিমাঃ আমি ত এখানে অভিনয় করতে আসি নি আকাশ তোমাকে আমি আমার করেই ছাড়ব(মনে মনে)
আকাশঃ কি ভাবছো কিছু বলছো না যে...
নিলিমাঃ হুম আরে ধন্যবাদের কি আছে..??শেষপর্যন্ত তুমি সাকসেস হয়েছো এই যথেষ্ট আমি খুব খুশি হয়েছি সারাজীবন ২ জন এভাবেই হাসি খুশি থেকো এটাই চাই।
মেঘলাঃ সরি আপু আমি ত এসব জানতাম মাঝে মাঝে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি তার জন্য দূঃখিত।
নিলিমাঃ আরে কোন ব্যাপার না।
নাবিলঃ যাক অবশেষে সব মিটে গেল। 
পরদিন সকালেই সবাই মিলে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেল।সারা রাস্তায় মজা করতে করতে সবাই মিলে বাসায় ফিরল 
কিন্তু বাসায় ঢুতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি...
রুবিনা বেগমঃ দাঁড়াও আকাশ...
আকাশঃ আগে ফ্রেশ হয়ে আসি খুব ক্লান্ত লাগছে মা।
রুবিনা বেগমঃ না... এখনি শুনতে হবে।
আকাশঃ কি হয়েছে মা সিরিয়াস কিছু..?? 
রুবিনা বেগমঃ হ্যা অবশ্যই আমি এসব কি শুনলাম তুমি নাকি এতদিন লেভার ক্লাস জীবন যাপন করেছো.?

আকাশঃ মাম্মম আসলে...
রুবিনা বেগমঃ থামো আমাকে আর কিছু বলতে হবে না তুমি কিভাবে ছিলে সেটা আমার না জানলেও চলবে তবে এখন কিভাবে থাকবে সেটা আমাত দেখার বিষয় একটা কথা কান শুনে রাখো মেঘলাকে আমি বউ হিসেবে আমার ঘরে তুলব না।
নাবিলঃ বড় মা এসব নিয়ে তো পরেও  কথা বলা যাবে তাই না..??এইমাত্র আসলাম।
রুবিনা বেগমঃ তো কি বলতে চাচ্ছিস ও আকাশের যোগ্য...??আকাশ বিদেশ থেকে পড়াশুনা করে এসেছে ওর সাথে এই ভিখারির যায়?আধ পাগল বদমেজাজি মেয়ে একটা।
নাবিলঃ বড়মা কিসব বলছো মেঘলা পাগল হতে যাবে কেন?
রুবিনা বেগমঃ শুধু দেখতে ভাল হলেই ঘরের বউ হওয়া যায় না বুঝেছিস ওর না ত আদব কায়দা ভাল আর নাত পারে কোন কাজ কর্ম।

রাস্তার ভিখারি একটা। মাকে ত আগেই খেয়েছে বাবা থেকেও নেই আবার মুর্খ এত বয়স হয়েছে তাও স্কুলের গন্ডিও পার হতে পারে নি। ওকে ছেলের বউ করলে সোসাইটিতে মুখ দেখাব কি করে..??


রুবিনা বেগমের কথাগুলি শুনে মেঘলার খুব খারাপ লাগছে কিন্তু কিছু বলছে না তার বিশ্বাস আকাশ নিজেই এসবে উত্তর দিবে তাই সে ছল ছল চোখে আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে মেঘলা।
কিন্তু আকাশ একটাও প্রতিবাদ করল না।
নাবিল আকাশের আচারনে অবাক হয়ে বলল তুই কিছু বলছিস না কেন আকাশ?
আকাশঃ কি বলব মা মার জায়গা থেকে ঠিক বলছে এখানে আমার কিছু বলার নেই আর নাবিল বড়দের সাথে এভাবে কথা বলতে হয় না।মা তুমি চিন্তা করো না তোমার পছন্দ নয় এমন কাউকে আমি বিয়ে করব না।
আকাশ এতক্ষন মাথা নিচু করে মেঘলার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিল কিন্তু এবার মেঘলার হাত টা ছেড়ে দিল।

আকাশঃ আমি বাবা মার একমাত্র ছেলে।আমাকে নিয়ে ওদের কিছু স্বপ্ন থাকতেই পারে আমি সেই স্বপ্ন ভেংগে দিতে পারিনা। আমার উপড় তাদের অধিকার সবচেয়ে বেশি নাবিল আমি আমার মার অপছন্দের কাউকে বিয়ে করতে পারব না।
নাবিলঃ আকাশ তুই এসব কি বলছিস?
আকাশে আচারনে মেঘলা অবাক হয়েছে নাকি কষ্ট পেয়েছে সে নিজেই বুঝল না।মেঘলা আকাশ কে কিছু বলতে চাইল,
মেঘলাঃ ভাইয়া তুই....
কিন্তু মেঘলা কথা শেষ করার আগেই আকাশ হাতে  ইশারা করে মেঘলাকে থামিয়ে দিয়ে বলল নিজের ঘরে যা মেঘলা।

মেঘলার খুব কান্না পাচ্ছে সবার সামনে কাঁদতে চায় না তাই এক দৌড়ে উপড়ে চলে গেল।
নাবিলঃ বাহ অসাধারণ আমি শিহরিত কিছু বলার নেই...
রুবিনা বেগমঃ তুই আমাদের মাঝে কথা বলছিস কেন তোরা সবাই ত চাস একটা রাস্তার মেয়ের সাথে বিয়ে আকাশের জীবনটা নষ্ট করে দিতে আমি এসব আমি জানি না মনে করেছিস?


রুবিনা বেগম এটা বলতেই আকাশ চেঁচিয়ে উঠল মা  মুখে লাগাম দাও। আমি কাকে বিয়ে করব সেটার ব্যাপারে তোমার কথা বলার অধিকার থাকলেও আমার সামনে দাঁড়িয়ে  নাবিল কে কথা শুনানোর অধিকার তোমার নেই শুধু তোমার কেন এই পৃথিবীতে কারোরেই নেই আমি সুস্থ থাকা অবস্থায় নাবিল কেউ নাবিলের দিকে আংগুল তুলবে আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখব এতটা ধর্য্যশীল আমি নই। নাবিলকে আর একটা বাজে কথা বললে আমি ভুলে যেতে বাধ্য হব তুমি আমার মা...কি বলতে চেয়েছি বুঝেছো নিশ্চুই..??
নাবিল অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল আকাশ উপড়ে চলে গেল।
নাবিলঃ যে আমার ব্যাপারে এতটুকু কথা সহ্য করতে পারে না সে নিজের প্রিয়জনের এত অপমান কি করে সহ্য করল?আকাশ কে বুঝা সত্যিই কষ্টকর।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন