উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal
ভিলেন || মনা হোসাইন

৫২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ৫৩)

ঘড়ির কাঁটায় রাত ১ টা...বাসার সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছে।
আকাশও ঘুমিয়ে গিয়েছে।
শুধু মেঘলার চোখে ঘুম নেই। মেঘলা চুপি চুপি গিয়ে আকাশের পাশে বসল তারপর যখন আকাশের পাশে শুতে চাইল। তখন চোখ বন্ধ রেখেই আকাশ বলে উঠল  ঘুমাস নি এখুনো...??
মেঘলা আকাশের কথায় চমকে উঠল সে ভেবেছিল আকাশ ঘুমিয়ে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি উঠে বসল
আকাশ এবার চোখ খুলল।
আকাশঃকিরে ঘুমাস নি কেন মন খারাপ...??
মেঘলা কিছু বলল না।
আকাশ উঠে বসে বলল  চল আমি তোকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আসি।
মেঘলা মাথা নিচু করে বলল আজ আমি এখানে ঘুমাই প্লিজ...??
আকাশ মেঘলাকে টেনে নিজের পাশে শুইয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।
আকাশঃআচ্ছা ঘুমা আমি নাহয় তোর ঘরে গিয়ে ঘুমাব। 
মেঘলাঃ না না না যাবি না আমি তোর সাথে ঘুমাব।
আকাশ একটু হেসে বলল পাগলী কোথাকার আমাদের একসাথে ঘুমানোর সময় এখনো হয় নি বুঝেছিস?
মেঘলা আকাশকে জড়িয়ে ধরে বলল আমি এত কিছু শুনতে চাই না তুই আমাকে রেখে যাস না প্লিজ।
আকাশঃ আচ্ছা তুই ঘুমা বাকিটা পরে দেখা যাবে বলে মেঘলাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগল আকাশ।
কিন্তু কিছুক্ষন পরেই আকাশ বুঝতে পারল এখানে কিছু গন্ডগোল ঘটছে।
আকাশ এক ঝটকায় মেঘলাকে সরিয়ে দিল। কারন সে বুঝতে পেরেছে মেঘলা অস্বাভাবিক কিছু করতে চলেছে...
আকাশঃ কি করছিস এসব মেঘলা...
মেঘলা আকাশকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আকাশের উপড় উঠে আকাশের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে দিল। 
আকাশ মেঘলাকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগল কিন্তু মেঘলা আকাশের গলায় গালে সমানে চুমু খেতে লাগল।
আকাশ জোর করে মেঘলাকে সরিয়ে দিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে মেঘলার ২ হাত চেপে ধরল।
আকাশ মেঘলার এমন আচারনের জন্য প্রস্তুত ছিল না সে ভাবতেও পারে নি মেঘলা এমন কিছু করতে পারে। 
আকাশ প্রচন্ড রেগে গেল।
আকাশঃ লজ্জা সরম সব কি ধুয়ে ফেলে দিয়েছিস..?? কি করছিস এসব?
মেঘলাঃ আমি কিছু জানি না আমি তোর কাছ থেকে একটা বাচ্চা চাই আর তোর সেটা দিতে হবে। আর কিছু শুনতে চাই না আমি।
আকাশ মেঘলার কথায় অবাক হয়ে হল।
আকাশঃ কি চাস..??
মেঘলাঃ বাচ্চা...
আকাশ মেঘলাকে ধমক দিয়ে বলল পাগল হয়ে গিয়েছিস..??
মেঘলাঃ হ্যা হ্যা হ্যা পাগল হয়ে গিয়েছি।
প্লিজ ভাইয়া আজ আমাকে ফিরিয়ে দিস না..
আকাশঃ আমি ভাবতে পারছি না তুই এত টা নিচে নেমে গেলি কি করে...এমন জঘন্য একটা প্রস্তাব করতে তোর একটুও বাঁধল না..??
মেঘলা কেঁদে ফেলেছে....
আকাশঃ ছ্বিঃ মেঘলা... তুই এমন করতে পারিস আমি কখনো ভাবতেও পারি না।তুই না চাইতেই আমি তোকে সব দিয়েছি.. তারপরেও তুই এমন জঘন্য প্রস্তাব দিলি কি করে?
মেঘলাঃ হ্যা না চাইতেই দিস চাইলে তো দিস না...
আকাশঃ তাই বলে বিয়ের আগে বাচ্চা...??
মেঘলাঃ হ্যা বিয়ের আগেই চাই প্লিজ ভাইয়া...
আকাশঃ আমার মনে হয় না তুই এই মুহুর্তে সুস্থ্য আছিস। তুই এখন এই রুম থেকে যা...
আকাশ যেই মেঘলার হাত ছাড়ল মেঘলা আবারো আকাশকে জরিয়ে ধরল।
আকাশঃ আবার...?? তোর হয়েছে টা কি? আমার ধর্য্যের পরিক্ষা নিস না মেঘলা তুই এমন করলে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।
মেঘলাঃ আমি তোকে কন্ট্রোল করতে বলি নি প্লিজ ভাইয়া।আমার দিকে একবার তাকা ভাইয়া বলে মেঘলা নিজের ওড়না টা ফেলে দিল।
সাথে সাথেই আকাশ মেঘলার গালে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।মেঘলা ছিটকে নিচে পড়ল।
মেঘলা ব্যাথা পেয়েছে দেখে আকাশের খারাপ লাগল তাই গিয়ে মেঘলাকে তুলে আদর করে দিল।তারপর মেঘলাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিল।
আকাশঃ পানি খা শান্ত হ মেঘলা কেন এমন করছিস কি হয়েছে বল আমাকে...আমরা তো এক সাথেই আছি একসাথে একই ছাদের নিচে তাহলে এমন করার কারন কি..
মেঘলা গ্লাসটা ফেলে দিল।
মেঘলাঃ আমি একসাথে থাকতে চাই না। আমি বাচ্চা চাই। 
আকাশ নানা ভাবে মেঘলাকে বুঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু মেঘলা কিছু শুনতে রাজি না।সেও নানাভাবে আকাশকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
আকাশঃ এই বাচ্চার ভুত তোর মাথায় কে ঢুকিয়েছে শুনি...?? 
মেঘলাঃ কেউ না...
আকাশঃ তাহলে..??
মেঘলাঃআমি বড় হয়েছি ভাইয়া আমারো কিছু পেতে ইচ্ছে করে। 
কথাটা শুনে আকাশ আবারও মেঘলার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল।
মেঘলা তারপরেও আকাশকে জড়িয়ে ধরল।
তারপর কান্না কান্না কন্ঠে বলল প্লিজ ভাইয়া রাজি হয়ে যা শুধু একবার প্লিজ...
আকাশঃ এমনিতেই মেঘলা আমার কাছে কিছু চাইলে আমি মানা করতে পারি না তারউপর এমন একটা চাওয়া।আমার ভিতরের পৈশাচিক আত্মা তো আর মানতে চাইছে না আমি একটা ছেলে হয়ে কি করে নিজেকে আটকাব..?? না মেঘলাকে আর এই ঘরে থাকতে দেওয়া যাবে না যেভাবেই হোক ওকে বিদায় করতে হবে তা নাহলে ও আমাকে যেভাবেই হোক দুর্বল করে ফেলবে।(মনে মনে)
আকাশঃলজ্জা করছে না তোর এসব বলতে... তুই ত মেয়ে জাতির লজ্জা। বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্কে জড়াতে চাইছিস ছ্বি ছিঃ দুশ্চরিত্র মেয়ে।শরীরের এত চাহিদা থাকলে যা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়া টাকা আর মজা ২ টাই পাবি যা হোটেলে যা এখানে এসেছিস কেন?আর কতজনের সাথে কি কি করেছিস খোদা জানে এতদিন তোকে ভাল জানতাম আজ জানলাম তুই কি ছি ছি ছি...আর কখনো আমার সামনে আসবি না যা এখান থেকে তোকে দেখে আমার ঘৃনা করছে।
আকাশ মেঘলাকে টেনি নিয়ে ধাক্কা দিয়ে দরজার বাইরে ফেলে দিল।
মেঘলা ছল ছল চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
আকাশঃ আজ এই ঘরে কি ঘটল কেউ যেন জানতে না পারে বুঝতে পেরেছিস..?? আর একটা কথা তুই আর কখনো আমার ঘরে আসবি না ইনফেক্ট তুই আমার চোখের সামনেই আসবি না বলে দরজা লাগিয়ে দিল।
আকাশঃ শুধু শুধু কতগুলি খারাপ কথা শুনলি... জানি কষ্ট পেয়েছিস আমি তোকে হার্ট করতে চাই নি মেঘলা। কিন্তু পাগলামির একটা সীমা থাকে তুই  তো আজ সব সীমা পেরিয়ে গিয়েছিস
মেঘলাঃ আমাকে এভাবে অপমান করলি...?? একটা মেয়ে হয়ে এত করে চাইলাম তাও দিলি না...আরে আমি অন্য কারো কাছে ত চাই নি যাকে ভালবাসি তার কাছেই চেয়েছিলাম তবুও আমাকে দুশ্চরিত্র মেয়ে বললি। আমাকে তুই ঘৃনা করিস তুই চাস না তো আমি তোর সামনে আসি আচ্ছা আর কখনো আসব না।
আকাশঃ আচ্ছা মেঘলা কি আদো জানে আজ ও কি করতে যাচ্ছিল? 
কিন্তু মেঘলা এমন করল কেন..??ও কি সত্যি বাচ্চা চায় নাকি অন্য কিছু...??
আকাশ সারারাত ধরে মেঘলার এমন করার কারন খোঁজার চেষ্টা করল কিন্তু তার মাথায় কিছুই ঢুকল না।
আকাশঃ সকালে উঠেই মেঘলাকে কারন টা জিজ্ঞাস করতে হবে।কোন কারন ছাড়া ও এমন করবে না।
পরদিন সকালে আকাশ প্রথমেই মেঘলার ঘরে গেল কারন মেঘলার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তার খারাপ লাগছে।
কিন্তু মেঘলার ঘর খালি মেঘলা সেখানে নেই।
আকাশঃ ওহ গড কোথায় গেল মেঘলা...??
ও কি তাহলে বাসা থেকে চলে গিয়েছে..?? এইটুকু মেয়ে হলে কি হবে পুরুটাই রাগে ভর্তি।উফফ
মেঘলা এত জ্বালাস কেন আমাকে..?? এখন তোকে আমি কোথায় খুঁজব ?
আকাশ সারাবাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মেঘলাকে পেল না।
বাড়ির কেউ এই সকালে মেঘলাকে দেখে নি।
আকাশের এবার চিন্তা হচ্ছে 
আকাশঃ আচ্ছা মেঘলা নিজের কোন ক্ষতি করে বসে নি তো..??কেন যে এমন করলাম কি এমন চেয়েছিল দিয়ে দিলেই পারতাম আজ হোক কাল হোক বিয়ে তো করতামেই তাহলে চাওয়াটা পূরন করে দিলেই পারতাম কেন যে ওকে হার্ট করলাম। 
নাবিলঃ আকাশ মেঘলার সাথে কি তোর কোন ঝামেলা হয়েছে? না মানে তুই এত সকালে ওকে খুঁজছিস আবার মেঘলাও উধাও তাই জিজ্ঞাস করলাম।
আকাশঃ কি ঘটেছিল সেটা আমি কি করে বলব।
(মনে মনে) মেঘলা সবসময় বুঝে কম, করে বেশি আর ভাল লাগে না।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৫৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন