উপন্যাস : ভিলেন
লেখিকা : মনা হোসাইন
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল :
লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
![]() |
ভিলেন || মনা হোসাইন |
৫১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ৫২)
আকাশঃ এবার থেকে তোর একটাই কাজ ভাল করে পড়াশুনা করা ঠিক আছে..??
মেঘলাঃ হুম একদম... তুই না চাইতেও আমায় সব দিয়ে দিয়েছিস তোর জন্য আমি এইটুকু করব না..?? অবশ্যই করব ভাইয়া..
আকাশঃ আবার ভাইয়া বলিস...??
মেঘলাঃ আমি ত তোকে সারাজীবনেই ভাইয়াই বলব...
আকাশঃ তবে রে.
মেঘলা পালানোর জন্য দৌড়াতে চাইল কিন্তু আকাশ এসে ধরে ফেলল,
আকাশঃ কি করছিস পায়ে ব্যাথা না.?
মেঘলাঃ উফ হ.. একবারেই ভুলে গিয়েছিলাম।
আকাশঃ ভুলবিই তো ভুল ছাড়া তুই আর কি করতে পারিস?
মেঘলাঃ এসব বাদ দে তো এখন চল বাসায় যাই সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
আকাশ আর মেঘলা বাসায় ফিরে এলো...
কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়ায় মেঘলার পা ভাল হয়ে গিয়েছে নীলিমাও বাসা থেকে চলে গিয়েছে।মোটামুটি সব ঝামেলায় মিটে গেছে..ভালভাবেই দিন কাটছিল আকাশ এখন আর মেঘলার সাথে খারাপ ব্যবহার করে না।
।
।
।
এই কয়েকদিন মেঘলা স্কুলে যায় নি তাই আজকেও অন্যদিনের মতই ঘুমাচ্ছিল হঠাৎই নিজের উপড় পানি পড়ায় মেঘলা তাড়াতাড়ি উঠে বসল তারপর উপড় দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগল।
মেঘলাঃ ছাদটা তো ঠিকি আছে তাহলে ঘরের ভিতর বৃষ্টি আসল কি করে..??কিছুক্ষন ভেবে আবিষ্কার করল
তারমানে কি ভুত...??
আ আ আ কে কোথায় আছো বাঁচাও বলেই মেঘলা চেঁচাতে লাগল।
আকাশ মেঘলার কান্ড দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল।সে পাশেই মগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
আকাশঃ কি হল? কিছুই তো বুঝলাম না চেঁচাচ্ছে কেন এটার হঠাৎ কি হল...?? চেঁচানোর মত কোন কিছু ঘটল কি? আজব তো।এই মেঘলার বাচ্চা এভাবে চেঁচাচ্ছিস কেন...?
মেঘলা চোখ বন্ধ করে চেঁচাচ্ছিল আকাশের গলা শুনে চোখ বন্ধ করেই আকাশকে জড়িয়ে ধরল।
আকাশঃ আরে ফাউল হয়েছেটা কি সেটা তো বল...
মেঘলাঃ দেখতে পাচ্ছিস না ভুত....
আকাশঃ ভুত কোথায় ভুত..??
মেঘলাঃ আরে তুই কি অন্ধ নাকি দেখতে পাচ্ছিস না ঘরের ভিতরে আমি কেমন ভিজে গেলাম।
আকাশঃ আহ মরন... এটা ভুত হতে যাবে কেন আমি নিজেই পানি ঢেলেছি
মেঘলাঃ তুই..??কিন্তু কেন?
আকাশঃতুই যে একজন সুডেন্ড সেটা কি ভুলে গিয়েছিস? ফাযলামি বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে পড়তে বস একটু পরেই স্কুলে যেতে হবে।
মেঘলার মন খারাপ হয়ে গেল...
মেঘলাঃ স্কুলে যেতে হবে...??
আকাশঃ তো কি? সারাজীবন পড়াশুনা না করেই কাটিয়ে দেয়ার ইচ্ছা আছে নাকি...?? তাড়াতাড়ি ড্রেস চেন্জ কর নাহলে ঠান্ডা লেগে যাবে আমি এখনী আসছি এখন থেকে আমি তোকে পড়াব।
মেঘলা কিছু বলতে চাচ্ছিল তার আগেই আকাশ তাকে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিল।
কিছুক্ষন পর এসে আকাশ মেঘলার জন্য খাবার নিয়ে আসল মেঘলাকে খেতে দিয়ে নিজেই বই বের করে আনল তারপর মেঘলাকে পড়াতে বসাল মেঘলাও পড়তে শুরু করল কিন্তু কিছুক্ষন পর আকাশ লক্ষ্য করল মেঘলার কোন সাড়া শব্দ নেই।তাকিয়ে দেখল মেঘলা ঘুমিয়ে গিয়েছে..
আকাশঃ ওহ খোদা আমি এটাকে কি করে মানুষ করব..?? এই মেঘলা শুনছিস..?? উঠ বলছি...
কে শুনে কার কথা মেঘলা ত ঘুমাতে ব্যাস্ত।আকাশ মেঘলাকে কোনরকম টেনেটুনে তুলে রেডি করে স্কুলে নিয়ে যেতে লাগল।
মেঘলাঃ কাল থেকে যাব আজ স্কুলে যাব না প্লিজ ভাইয়া।
আকাশঃ চুপ অনেক্ষন থেকে সহ্য করছি আর একটাও বাড়তি কথা বলবি না।
মেঘলাঃ আমার ঘুম পাচ্ছে...আমি যাব না না না...
আকাশ মেঘলার কথায় কান না দিয়ে
স্কুলের সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে মেঘলাকে ভিতরে যেতে বলল কিন্তু মেঘলা নামছে না।
আকাশঃ কি সমস্যা যাচ্ছিস না কেন..??
মেঘলাঃ যাব না।
আকাশ ধমক দিয়ে বলল মেঘলা বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে...
মেঘলাঃ এই চুপ আমাকে ধমক দিয়ে লাভ নেই আমি তোকে আর ভয় পাই না...
আকাশঃ উফফ মেঘলা ধর্য্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি যা বলছি হারামি।
মেঘলাঃ একদিন স্কুলে না গেলে কি হয়?আমি আজ স্কুলে যাব না ইনফেক্ট আমি আর পড়াশুনাই করব না।
আকাশঃ কি....??
মেঘলাঃ হ্যা ঠিক শুনেছিস.. আমি পড়াশুনা করতে পারব না আমার বাচ্চা হবে আমি বাচ্চা মানুষ করব সংসার করব এসব ফালতু পড়াশুনা আমি করতে পারব না।
আকাশঃ পড়াশুনা না করলে তোকে বিয়েটা কে করবে শুনি...??
মেঘলাঃ আমার বিয়ে হয়ে গেছে...??তুই কতবার কবুল বলেছিস হিসেব আছে...??
আকাশঃ এটাকে বিয়ে বলে না। সবাই মেনে না নিলে সেটা বিয়ে হয় না।তুই পড়াশুনা না করলে মা তোকে মেনে নিবে না কেন বুঝতে পারছিস না।
মেঘলাঃ মানবে মানবে একটা বাচ্চা হলে সবাই মেনে নিবে।
আকাশঃ জানতাম তুই ভাল কথার মেয়ে না।নাম বলছি বলে আকাশ নেমে গিয়ে মেঘলাকে টানতে টানতে নামাল।
মেঘলাঃ ছাড় বলছি ফালতু ছেলে কোথাকার...আমি কিন্তু চেঁচাব।
আকাশঃ অহ গড... রহম করো।এই তুই চাইছিস টা কি?
মেঘলাঃ একটা বাচ্চা...সুন্দর একটা সংসার।
আকাশঃ দাঁড়া তোর সংসার করার মজা আমি দেখাচ্ছি।বলে টানতে টানতে স্কুলের ভিতর নিয়ে যেতে লাগল।
মেঘলাঃ যা যা যা লাগবে না।
তোর মত বেয়াদব বরের দরকার নেই আমার।আমি আজকেই একটা প্রেম করব তারপর বিয়ে করে বাচ্চার মা হব।
আকাশঃ আকাশ বেঁচে থাকতে সেটা সম্ভব না তাই এসব ফালতু চিন্তা বাদ দে।
মেঘলাঃ আমি প্রেম করবই করব কি করবি তুই হ্যা শুনি।
আকাশঃ শুনার কিছু নেই তো আগে কর তারপর বুঝতে পারবি।
মেঘলাঃ কি বুঝাবি...??
আকাশঃ কবরস্থান চিনিস...??
মেঘলাঃ......
আকাশঃ গুড গার্ল সবসময় এমন চুপচাপ থাকবি বুঝেছিস?
মেঘলাঃআমার কথাটা শুন...
আকাশঃ অনেক শুনে ফেলেছি আর পারছি না এবার ক্লাসে না গেলে মার খাবি।
আকাশ অনেক জোরাজোরি করে মেঘলাকে ক্লাসে দিয়ে গাড়িতে ফিরে আসল।
আকাশঃ মেঘলার কাছে আমার দুর্বলতা স্বীকার করা একদম উচিত হয় নি। ও আবারো সেই আগের মত খামখেয়ালি শুরু করে দিয়েছে। ওর সাথে আর নরম সুরে কথা বলা যাবে না বল্লে ও আমার কোন কথায় শুনবে না।
ভাবতে ভাবতে অফিসে গেল।
।
।
।
রাতে আকাশ অফিস থেকে ফিরে মেঘলার ঘরে গেল।
আকাশের ধারনা ছিল মেঘলা পড়তে বসেছে কিন্তু রুমে গিয়ে অবাক হল কারন মেঘলা পড়ছে না বরং মিলি আর নেহার সাথে টিভি দেখছে।
আকাশ রাগে টিভি বন্ধ করে দিয়ে নেহা আর মিলিকে রুম থেকে বের করে দিল।
আকাশ গিয়ে মেঘলার মুখ চেপে ধরল।
আকাশঃ সমস্যা কি তোর...?? এত করে বলছি পড়াশুনাটা কর আমার কথা কেন শুনছিস না?
মেঘলাঃ আমিও ত এত করে বলছি আমি পড়ব না তুই শুনছিস না কেন?
আকাশঃকেন এমন করছিস মেঘলা? কি হয়েছে বল না আমায়।পড়াশুনা কি এতই কঠিন?
মেঘলাঃ আমি এত কিছু জানি না আমি সংসার করতে চাই আর কিছু চাইনা বুঝেছিস।
আকাশঃ হ্যা তোকে লায় দিয়ে মাথায় তুলে ফেলেছি সেটা বেশ ভাল করেই বুঝেছি।বলেই মেঘলার কান ধরে নিয়ে টেবিলে বসিয়ে দিল।
মেঘলাঃ উফফ আমার লাগছে ছাড় বজ্জাত।
আকাশ খাতা কলম হাতে দিয়ে বলল সকালে যা যা পড়ালাম লিখ।
মেঘলাঃ সকালে আমি পড়েছিলাম নাকি...?? কই আমার তো মনে পড়ছে না।
আকাশ জিন্স থেকে বেল্ড খুলতে খুলতে বলল এখনী মনে পড়ে যাবে..
মেঘলা একটু ভয় পেল তাই লিখতে শুরু করল।
আকাশঃ আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি তুই লিখ বলে নিজের ঘরে গেল।
আকাশ ফিরে আসতেই মেঘলা তার হাতে খাতা ধরিয়ে দিয়ে বলল এই যে লিখেছি এবার আমার ছুটি বলে গিয়ে টিভি অন করে বসল।
খাতায় চোখ রেখে আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল গিয়ে মেঘলার হাত থেকে রিমোট নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল সাথে সাথেই রিমোট টা ভেংগে গেল।মেঘলাও ভয় পেয়ে গেল।
আকাশঃ কি লিখেছিস এগুলি সবগুলিই তো ভুল হয়েছে প্রচন্ড রেগে কথা বলছে আকাশ।
মেঘলাঃ মারিস না প্লিজ আর ভুল হবে না...
আকাশঃ তাড়াতাড়ি যা পড়া শুরু কর তা নাহলে আজ তোর কি অবস্থা করব চিন্তায় করতে পারছিস না...
মেঘলা পড়ছে আর নাকের জল ফেলছে।
মেঘলঃএত কঠিন কঠিন কথা কি এত ছোট মাথায় ঢুকে কি করে শিখব এগুলি...???
আকাশঃ ঢং করে লাভ নেই যতক্ষন না ঠিক হচ্ছে ছুটি নেই।
মেঘলাঃ সব প্লেন বৃথা গেল ভাল লাগে না... উফফ
নতুন প্লেন বের করতে হবে (মনে মনে)
আকাশঃ কি ভাবছিস?পড়।
মেঘলা এবার ফটাফট সব লিখে দিল।
মেঘলাঃ এই নে ফাউল সব লিখে দিলাম আমি এগুলি অনেক আগে থেকেই পারি আমি এতটাও গাঁধা না বুঝেছিস বলে চলে গেল।
আকাশঃ এটার মাথায় আবার কি চলছে কে জানে...?? পড়াগুলি পাড়ে তবুও এত কাহিনী করল।কিন্তু কেন এর মধ্যে কোন না কোন রহস্য তো অবশ্যই আছে কিন্তু কি সেই রহস্য...?? পড়াশুনা করতে চায় না কেন?
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৫৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন