কবিতা : ছায়াদের শহরে
কবি : ইলা জাহান নদী
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২০২৫ইং
তরুণ লেখিকা ইলা জাহান নদীর “ছায়াদের শহরে” কবিতাটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট থেকে নেয়া হয়েছে। তিনি এটি ২০২৫ সালের মে মাসের কোনো একদিনে লিখেছেন।
![]() |
| ছায়াদের শহরে || ইলা জাহান নদী |
ছায়াদের শহরে || ইলা জাহান নদী
এই শহর এক প্রতিজ্ঞার ভেতর জন্ম নেয়,
যেখানে সবাই বাঁচে, কিন্তু কেবল নিজের জন্য।
মোহের মতোন ঝলমলে আলোকছায়া আড়াল করে দেয়
কার কতোটা ক্ষয় হচ্ছে ভিতরে
ভালোবাসা নয়—এখানে আকাঙ্খা বড়ো সত্য,
কে উঠবে ওপরে, কে কাকে পেছনে ফেলে দেবে,
তাতেই বাঁধা থাকে মানুষের মর্যাদা।
আসক্তি জন্ম নেয় ক্ষমতার, পদমর্যাদার,
আর মায়া—সে এখন বিজ্ঞাপনের ভাষায় বাঁধা চাহিদা
মানুষ মানুষকে শুধু আকড়ে ধরে
যতক্ষণ না তার প্রয়োজন ফুরায়।
অনুপস্থিতি এখানে কাউকে কাঁদায় না,
কারণ সবাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে “থাকার অভিনয়” দেখে।
স্বার্থের হিসাব চলে নিঃশ্বাসেও,
এমনকি বন্ধুত্বের খাতায়ও এখন ফুটনোট থাকে।
মুক্তি চাই, তবে সেটা শুধুই মুখে—
আসলে আমরা সবাই আবেগে বন্দি,
নিজের ব্যক্তিত্ববোধকে গলা টিপে ধরি,
যাতে ভিড়ের মধ্যে নিজেকে আলাদা না লাগে।
যখন কেউ ত্যাগ করে কিছু
তাকে বলে ‘বোকা’—
কারণ এই সমাজ জানে না কৃতজ্ঞতা,
জানে কেবল লেনদেন।
একদিন হয়তো সব বিলুপ্ত হয়ে যাবে—
মানবতা, সহানুভূতি, একে অন্যের জন্য হাত বাড়ানো।
তখন আকাশে আক্ষেপের মতো ঘুরবে প্রশ্ন—
"মানুষ কি সত্যিই একে অপরকে ভালোবেসেছিলো ?"
লেখক সংক্ষেপঃ
কবি ইলা জাহান নদীর জন্ম ঢাকায়। তিনি সাহিত্যজগতের বাইরে একজন চিকিৎসক, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব, চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং পরিচালক। ২০২০ সালের বইমেলায় তার ‘ইচ্ছে গাছের পাতাগুলো’ ও ‘কালাই কইতরি আরণ্যক’ নামে দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।ইলা তার কাব্যগ্রন্থ ‘ইচ্ছে গাছের পাতাগুলো’য় নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, “আব্বু (মৃত আ.ফ.ম জাকারিয়া) লন্ডন থাকার সুবাদে আমার ছোট্টবেলার একটা সময় কেটেছে নানুবাড়িতে। আব্বু ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিজনেস এর উপর বিশেষ ডিগ্রি নিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাস্ট থেকে তাদের অর্থায়নে গিয়েছিলেন। যাক সে গল্প আরেকদিন করব।নানাবাড়িতে আমার সমবয়সী কয়েকজন ছেলেমেয়ে ছিল। আম্মু (মুক্তা নাহার ঝর্ণা) বা নানুমনির মেন্টালিটির কারণে আমি কোনদিনই নারী, পুরুষ, ছেলে, মেয়ে এরকম আলাদা করে কিছু বুঝিনি। আমার কাছে সব ছিল নামে পরিচয়।আমাদের নানান রকম খেলা ছিল। সুপারির ডাল এর এক কোণায় বসে থাকলে আরেকজন ডালের অন্য মাথা ধরে টানত। এটা নৌকা খেলা। একটা গোল চাকা, একটা লাঠির সাহায্যে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে নিয়ে যেতাম বহুদূর। মুরগী ঢেকে রাখার পোলো পানির নিচের মাটিতে চেপে ভেতরে হাত ঢুকিয়ে মাছ ধরা আমি ভয় পেতাম। যদি ব্যাঙ বা সাপ এসে পরে।কলা পাতায় ডিম বা আলু রান্না তো ছিল কমন খেলা। এটিও আমার অভ্যাস ছিল না। আমার চেয়ে তারাই ভাল পারত। আমি খুলে খেতাম। ঘুরে ফিরে ওই বসে থেকে নৌকা খেলাটাই আমার অভ্যাসের বড় খেলা ছিল। মানে অলস বা অকর্মা যাকে বলে, ছোটবেলা থেকেই আমি তাই।আমরা দুই বোন, ভাই নাই। আমি আমার ছোটবোনের নয় বছরের বড়। তাই পরিস্থিতি, আব্বু-আম্মুর ইন্সট্রাকশন আর সাহসে আমি শিখে গেছি ঘরের এবং বাইরের কাজ এমনকি দালান তোলার প্রাথমিক কাজগুলিও। বড় হবার পর আমি অনেকগুলো কাজ একই সাথে করতে শিখেছি। আমি এখন কর্মঠ আর সামাজিকও।আসলে সত্যের একটা আলাদা শক্তি থাকে। মনের ভাল ইচ্ছার একটা আলাদা জোর থাকে। আর সব ভাল কাজের একটা ভাল আউটপুট থাকে।”
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন