উপন্যাস : প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত |
১৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ১৯)
মনের সাথে যুদ্ধ করে আরিফ ঠিক করলো সে ঝিনুক'কে সব বলে দিবে।যা হওয়ার হোক কিন্তু খারাপ কিছু যেন না হয়।হয়ত বন্ধুর সাথে সম্পর্ক খারাপ হবে কিন্তু এছাড়া কিছু করার নেই।রেহান ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।ওর কাজে না জেনে সাহায্য করছে ঝিনুক শেষপর্যন্ত ওর জন্য মেয়েটাও ধ্বংস হবে।এতকিছু জানার পরও আরিফ পারবে না চুপ থাকতে ওর বিবেক ওকে কখনই ক্ষমা করবে না।
কালকের মত আজও ঝিনুক বিকেল হতেই বেরিয়ে গেছে পাখিদের ফ্ল্যাট থেকে।তবে আজ রেহান কিছু কাজে আসতে পারবে না তাই ঝিনুকের মন খারাপ।বের হতেই ঝিনুকের ফোনে কল এলো অচেনা নাম্বার থেকে।ঝিনুক কৌতুহলবশত রিসিভ করল।রাস্তার এপাড় থেকে ঝিনুকের দিকেই দৃষ্টি রেখে আরিফ বলল,'ঝিনুক,আমি আরিফ বলছি।রেহানের বন্ধু।চিনতে পেরেছো আমাকে?'
ঝিনুক চিনলো।এই ছেলেটা মাঝেমধ্যে মাঝেমধ্যেই রেহানের সাথে ওদের বাসায় আসত।ওর সাথে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কথা হয় নি তবে কেন যেনো যতবারই খেয়াল করতো ছেলেটার চোখের দৃষ্টি অন্যরকম লাগতো।এই দৃষ্টি কেবল একটা মেয়েই বুঝতে পারে।ঝিনুক স্বাভাবিক কন্ঠেই বলল,'হ্যাঁ বলুন।'
'তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো আমার রেহানের বিষয়ে।'
ঝিনুক আগ্রহের সাথে বলল,'কি কথা?'
'ফোনে না আমি সামনাসামনি বলতে চাই।তুমি দেখা করতে পারবে এখন?'
'কোথায় আছেন আপনি?'
আরিফ কাছাকাছি একটা রেস্টুরেন্টের নাম বলল।ঝিনুক একবার সময়ের দিকে চেয়ে বলল,'আচ্ছা,আমি আসছি।'
ফোন রেখে নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্টে গিয়ে আগেই অপেক্ষা করতে লাগল আরিফ।একটু পর ঝিনুকও এলো।ওকে আসতে দেখে আরিফ হাত নাড়লো কিন্তু ও এটা উপেক্ষা করে সোজা এসে সামনের চেয়ারে বসে পড়লো এবং কোনোরকম ভণিতা ছাড়াই বলল,'বলুন,কি বলবেন।'
'আগে বলো কি খাবে?'
'আমরা এখানে খেতে আসি নি।আপনি প্লিজ বলুন।'
'অবশ্যই বলব কিন্তু তোমার কিছু একটা নিতে হবে।'
ঝিনুক অগত্যা ক্যাপেচিনো অর্ডার দিলো।আরিফ ও সেটাই নিলো।অর্ডার দেওয়া শেষে এবার ঝিনুক আবারও অধৈর্য গলায় বলল,'এবার বলুন।'
'শোনো,রেহান একটা মেয়েকে পছন্দ করে আর সেটা তুমি না।তুমি যে বাড়িতে কাজ করছো ছদ্মবেশে ওই বাড়িতে একটা মেয়ে থাকে ওর স্বামীর সাথে ওই মেয়েকেই রেহান পছন্দ করে।রেহান চাইছে ওরা আলাদা হয়ে যাক আর ও ওই মেয়েকে পাক।আর ওদের আলাদা করার জন্য ও তোমাকে ব্যাবহার করছে।'
ঝিনুক আশ্চর্য হয়ে বলল,'মানে?আপনার মাথা ঠিক আছে?কি সব আবোল-তাবোল বকছেন?'
'আমি সত্যি বলছি।বিশ্বাস করো আমাকে।'
'দেখুন আপনি যা তা বলবেন আর আমি বিশ্বাস করব এমন বোকা আমি নই।রেহান মোটেও এমন ছেলে নয়।নেহাৎ আপনি রেহানের বন্ধু বলে কিছু বলছি না।তা নাহলে এই পাব্লিক প্লেসে আপনাকে ঠাটিয়ে চড় দিতাম।'
কথাগুলো বলেই আর একমুহূর্ত বসল না ঝিনুক।গটগট করে হেটে বেরিয়ে গেল রেস্টুরেন্ট থেকে।আরিফ পেছন থেকে অনেকবার ডেকেছে কিন্তু ঝিনুক একটাবারও ফিরে তাকাল না।বেশ মন খারাপ হয়ে গেল ওর।মেয়েটা রেহান কে কত বিশ্বাস করে!কিন্তু যেদিন ওর এই বিশ্বাস ভাঙবে সেদিন কি হবে?আর বুঝতে পারলো না ও কি করবে?হঠাৎ মনে হলো ঝিনুক না হয় না ই বিশ্বাস করল কিন্তু পাখি তো বিশ্বাস করবে!সবকথা পাখিকে বলে দিলেই হবে।
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়েই একটা রিকশা নিলো ঝিনুক।ফোন করলো রেহানকে।প্রথমবার রিসিভ হলো না তবে দ্বিতীয়বার দিতেই রিসিভ হয়ে ওপাশ থেকে রেহান কপট অপরাধী গলায় বলল,'সরিইই জান!একটু কাজে ছিলাম তাই রিসিভ করতে পারি নি।কি করো তুমি?খেয়েছে দুপুরে?'
এত আদর মাখা কথায় ঝিনুক একমুহূর্তে গলে গেলো।ছেলেটা ওর এত কেয়ার নেয়!ঝিনুক নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে।কিছুক্ষণ আগের আরিফের বলা কথা গুলো আর বলে না।এই মুহুর্ত'টা ধরে রাখতে চায়।আদুরে কন্ঠে বলে,'বাসায় যাচ্ছি,জান।তুমি কি করো?'
রেহান গলায় আরেকটু মধু ঢেলে বলল,'তোমাকে মিস করা ছাড়া আমার আর কিছুই করতে মন চায় না সারাদিন।'
এভাবেই কথোপকথন চলল কিছুক্ষণ।ফোন রাখার আগে হঠাৎ আরিফের কথা মনে পড়তেই ঝিনুক বলল,'তোমার বন্ধু আরিফ দেখা করেছিলো।তোমার নামে অনেক কিছু বলল।আমি বিশ্বাস করি নি।তুমি কাল সকালে আসো।সব বলব তোমাকে।'
রেহান আরিফের কথা শুনে প্রচন্ড রেগে গেলো।শা*লা এত বড় হারামখোর।সব বলে দিলো ঝিনুককে!কাল গিয়ে সব ঠিক করতে হবে।
পরেরদিন সকালে রেহান এলো।একে একে সব শুনলো ঝিনুকের কাছে।কাল থেকেই মাথা গরম হয়ে আছে ওর।মনে মনে বলল,'শু*য়োরের বাচ্চা তোর একদিন কি আমার একদিন!'
কিন্তু এখন ঝিনুক'কে বুঝ দিতে হবে কিছু বলে তবে এই বলদ মেয়ে এখনও ওকে অবিশ্বাস করছে না কিন্তু রেহান কোনো রিস্ক নিতে চাইলো না।ও ঝিনুক'কে বুঝ দেওয়ার জন্য আরিফের সবচেয়ে দুর্বল জায়গায় আঘাত করলো।বলল,'আরিফ আসলে তোমাকে ভালোবাসে।অনেক আগে থেকে।কিন্তু যখনই শুনেছে আমরা রিলেশনে গিয়েছি তখন থেকেই ফন্দি আঁটছে কিভাবে আমাকে তোমার কাছে খারাপ বানাবে।'
ঝিনুক ওর কথা শুনে মুখ ভেংচে বলল,'বললেই হলো?যে কেউ এসে বললেই আমি বিশ্বাস করব কেন?আমি শুধু তোমাকে বিশ্বাস করি।'
রেহান ওকে জড়িয়ে ধরে বলল,'এইজন্যই তো তোমাকে এত ভালোবাসি!আই লাভ ইউ জান।'
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
২০ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন