উপন্যাস : প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত |
১৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ১৮)
নিজের টেবিলে বসে পড়াশোনা করছিলো পাখি।গভীর মনযোগে পড়ছিলো বলে এতক্ষণ টের পায় নি ওর রুমের ফ্যান ঘুরছে না কিন্তু কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই যখন গরম লাগা শুরু হলো তখন ফ্যানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ফ্যান বন্ধ।উঠে গিয়ে চেক করে দেখলো নষ্ট হয়ে গেছে।শয়নকে জানাতে হবে নাহলে এই গরমে ঘুমানো যাবে না।পাখি নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে শয়নের ঘরের দিকে গেলো।
শয়ন কাজ করছিলো ল্যাপটপে।দরজায় দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে পাখি তার প্রিয় মানুষটিকে দেখছে।কি সুন্দর মানুষটা!
পাখি ভেবেছিলো শয়ন টের পায় নি ওর উপস্থিতি কিন্তু ও যখন দরজার সামনে এসে দাড়িয়েছিলো তখনই শয়ন খেয়াল করেছিলো কিন্তু আওয়াজ না করে দেখতে চেয়েছিলো পাখি কি করে!কিন্তু এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অধৈর্য কন্ঠে বলল,'এখন কি আসার জন্য এপয়েনমেন্ট নেবে নাকি?'
শয়নের কথায় পাখির হুশ এলো।থতমত খেয়ে বলল,'না,আসলে আপনি কাজ করছিলেন বলে...'
'আমি তো তোমাকে প্রথমেই খেয়াল করেছি।কি দেখছিলো এতক্ষণ?'
'কিছু না,এমনই।'
শয়ন ল্যাপটপ'টা সাইডে রেখে বিছানা থেকে উঠে এসে পাখির হাত ধরে ঘরে টেনে নিতে নিতে বলল,'আমি দেখেছি তুমি আমার দিকেই চেয়েছিলে।বলো কি দেখছিলে?'
'আপনাকে।'পাখির সহজ স্বীকারোক্তিতে মৃদু হাসির সঞ্চার হলো শয়নের ঠোঁটের কোণে।সে বলল,'লুকিয়ে না দেখে সামনে এসে দেখবে এখন থেকে।'
পাখি মাথা দোলালো।শয়ন জিজ্ঞেস করলো,'এখন বলো,কি বলতে এসেছো?'
'আমার ঘরের ফ্যান'টা নষ্ট হয়ে গেছে।'
'কি বলো?কখন?'
'একটু আগে খেয়াল করেছি।'
'আচ্ছা,আমি ঠিক করিয়ে দেব কাল,পরশুর মধ্যে।আজ তুৃমি আমার ঘরেই ঘুমিয়ও।'
'তাহলে আপনি কোথায় ঘুমাবেন?'
'তোমার পাশে।'
পাখির চমকে উঠলো।শয়ন হেসে বলল,'আমার খাট যথেষ্ট বড়।আমার মনে হয় দু'জনই ঘুমাতে পারবো।'
পাখি লজ্জায় কোনমতে মাথা দুলিয়ে চলে গেলো ঘর ছেড়ে।শয়ন কেবল হাসলো ওর যাওয়ার পানে চেয়ে।মেয়েটা কত সহজেই লজ্জা পেয়ে যায়!আর লজ্জা পাওয়ার পর ওর গাল দু'টো যে টমেটো হয়ে যায় সেটা কি ও জানে?ও কি জানে ওকে তখন দেখে শয়নের হৃদয় বেসামাল হয়ে পড়ে!জানে না বোধহয়!
ঘুমানোর সময় ওরা পাশাপাশি শুয়ে পড়লো।কারো চোখেই ঘুম নেই।কথাও নেই।তবে একইরকম অনুভূতি কাজ করছে দু'টি হৃদয়ে।কিছুক্ষণ পর ক্ষীণ স্বরে শয়ন জিজ্ঞেস করলো,'ঘুমিয়ে পড়েছো?'
পাখি উত্তর দিলো না।বোঝাতে চাইলো ঘুমিয়ে পড়েছে সে।শয়ন এবার দূরত্ব ঘোচালো।পাশে থাকা রমণীটিকে সন্তপর্ণে আবদ্ধ করলো নিজের বাহুতে।আলতো করে কপালে চুমু খেয়ে একহাতে চুলে বিলি কাটতে লাগলো।পাখি আর সহ্য করতে পারলো না তীব্র অনুভূতিতে খামচে ধরলো শয়নের টি-শার্ট।শয়ন হাসলো,সে জানতো পাখি ঘুমায় নি।মনের মধ্যে এত অনুভূতি চেপে রেখে কে'ই বা ঘুমাতে পারে?তবুও শয়ন কিছু বলল না।আরেকটা গভীর চুমু খেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো প্রেয়সীকে।
আজকের সকাল'টা সবচেয়ে সুন্দর সকাল পাখির কাছে।ঘুম ভেঙে সে নিজেকে আবিষ্কার করেছে শয়নের বাহুতে।মানুষটা ঘুমাচ্ছে এখনো।পাখি ধীরে ধীরে মাথা তুলে শয়নের মুখের ওপর ঝুঁকলো।সব রুপেই মানুষ'টা এত সুন্দর কেন?এখনও কি শান্ত,স্নিগ্ধ লাগছে।গলার অ্যাডামস অ্যাপেল'টা উঁচু হয়ে আছে।হঠাৎই পাখি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলো শয়নের ওপর।ঠোঁট গিয়ে পড়লো শয়নের গলায়।যা হওয়ার তাই হলো।জেগে গেলো শয়ন।পাখিকে এই অবস্থা দেখে কৌতুকের স্বরে বলল,'একা পেয়ে একটা ছেলেকে এভাবে ফাঁসাচ্ছ?'
'কোথায় ফাঁসাচ্ছি?এটা একটা এক্সিডেন্ট!আমি ইচ্ছে করে পড়ি নি।'
'হু,ধরা পড়লে সবাই একথাই বলে।আর কোথায় চুমু দিয়েছো?'
'কোথাও দেই নি?'
'কেনো দাও নি?এইজন্য তোমার সাজা হওয়া উচিত।'
এটা বলেই শয়ন পাখিকে ঘুরিয়ে নিজের জায়গায় নিয়ে এসে নিজে ওর ওপর ঝুঁকলো।বলল,'এখন তোমার শাস্তি হবে।'
এই বলে ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখার আগেই কলিং বেল বেজে উঠলো।হঠাৎ শব্দে দু'জনেই তড়িঘড়ি করে উঠে সরে বসলো।পাখি থতমত কন্ঠে বলল,'আমি দেখছি।আপনি ফ্রেশ হন।'
শয়ন বিরক্তিতে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো।পাখি দরজা খুলতেই দেখলো কাজের মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে।পাখি দরজা থেকে সরে দাঁড়ালো।ঝিনুক ভেতরে ঢুকতেই পাখি বলল,'নাস্তাটা বানিয়ে ফেলো তাড়াতাড়ি।উনি এখন বের হবেন।অফিস আছে।'
'আইচ্ছা,আমনে কোনো চিন্তাই হইরেন না।মুই এহনি বানাইতে আছি।'
এই বলে ঝিনুক চলে গেলো রান্নাঘরে।রান্না সে ভালোই করতে পারে।শিখেছিলো রেহানকে রান্না করে খাওয়াবে বলে।যখন ওদের বিয়ে হবে তখন ও সবসময় ওর জন্য রান্না করবে।
বন্ধু আগে নাকি ভালোবাসার মানুষ আগে?
আরিফ না পারছে কইতে না পারছে সইতে।রেহান তার বেষ্টফ্রেন্ড ছোটোবেলা থেকে একসাথে বড় হয়েছে।ওর সব দোষ সবার কাছ থেকে লুকিয়েছে কিন্তু আরেকদিকে ঝিনুক ওর ভালোবাসা।একতরফা ভালোবাসা!কোনোদিনও নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করে নি সে।কিন্তু এখন যা করছে রেহান সেটা ঠিক হচ্ছে না।রেহানকে বুঝিয়েও লাভ হচ্ছে না।ঝিনুক'কে বললে কি ও বুঝবে?নাকি ভুল বুঝবে?আর যদি না বলে তাহলে দেরি হয়ে যাবে।আরিফ বুঝতে পারছে না কি করবে!
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
১৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন