উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal
ভিলেন || মনা হোসাইন

৩৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ৩৫)

মেঘলাঃ তুই আমাকে যতই ইগনোর কর আমি ত তোকে ছাড়ব না। 
আকাশ নিজের ঘরে চলে গেল কিছুক্ষন পর বাসার সবাই চলে আসল...
আকাশের মাঃ মেঘলা টা সবটা পার্টিই নষ্ট করে দিল ভাল লাগে না আপদ কোথাকার
নিলিমাঃ ঠিক বলেছো খালামনি...
আকাশের মাঃ তুই চিন্তা করিস না এই আপদকে বিদায় করার ব্যবস্থা আমি আজেই করছি।
কিছুক্ষন কথা বলার পর যে যার রুমে চলে গেল



এদিকে আকাশ মেঘলার ঘর থেকে এসে নিজের ঘরে বসে বসে চিন্তা করছে...
সে যে কি নিয়ে চিন্তা করছে সেই জানে কারো সাথে শেয়ার করে না আজব প্রকৃতির মানুষ আকাশ। যাই হোক কিছুক্ষন পর আকাশ ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়ল। 
আজ সবাই খুব ক্লান্ত তাই খুব তাড়াতাড়ি সবাই ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে আকাশও তাই।
ঘড়ির কাঁটায় রাত ১ টা হঠাৎ আকাশের ঘুম ভেংগে গেল। অন্ধকার ঘর কিছুই দেখা যাচ্ছে না কিন্তু আকাশ অনুভব করছে কিছু একটা গন্ডোগোল ঘটেছে তাই বেড সুইচে লাইট অন করল আর তাতে যা দেখল তারপর আকাশের চোখের ঘুম একবারে পালিয়ে গেল।
আকাশঃ যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে এতদিন তাও একটু ভয় পেত এখন সব শেষ হয়ে গেল।

আর কোন কিছু শুনবে না বুঝবেও না আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে...এই উঠ...  উঠ বলছি।মেঘলার হাত ধরে টানতে টানতে বলছে আকাশ।
মেঘলা আদো আদো ঘুমে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে আকাশের কাছ থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আবার ঘুমিয়ে গেল।

আকাশঃ বাড়ি ভর্তি লোকজন কেউ দেখলে কি ভাব্বে...ওহ গড মান ইজ্জতের তো ১২ টা বাজিয়ে দিবে, 
এজ হারামি কখন এখানে এসেছে?
আমার যন্ত্রনা আবারো শুরু হয়ে গেল...
উঠবি কি তুই?নাকি পানি ঢালব...
মেঘলাঃ কেরে ছোকরা আমার ঘুম ভাংগাতে এসেছিস? মেরে মাথা ফাটিয়ে দিব ভাগ এখান থেকে..


আকাশঃ আমার লক্ষি বোন আমাদের মেঘলা কত ভাল মেয়ে সে এখনি চলে যাবে তাই না..??
মেঘলাঃ যা তো এখান থেকে বিরক্ত করবি না।
আকাশ মেঘলাকে টেনেটুনে একবার  তুলে বাসায় মেঘলা আবার শুয়ে পড়ে.. এভাবে কিছুক্ষন চলার পর

আকাশঃ তোর হাতে ধরছি পায়ে ধরছি তবুও উঠ প্লিজ...
কিছুক্ষন ডাকার পর মেঘলা উঠে বসল,
মেঘলাঃ কি হয়েছে কি শুনি? এত ডাকছিস কেন বাসায় কি ডাকাত এসেছে নাকি?
আকাশঃ তুই এখানে কি করছিস..??
মেঘলাঃ এটা জিজ্ঞাস করার জন্য তুই আমাজে ডেকে তুললি? বিদেশ থেকে কি যে ডিগ্রী নিয়েছিস কে জানে বাবা...আমি ঘুমাচ্ছিলাম দেখতে পাস নি জিজ্ঞাস করার কি আছে..??
আকাশঃ ঘুমাচ্ছিলি দেখেছি কিন্তু এখানে কেন...??
মেঘলাঃ আমার ইচ্ছে।
আকাশঃ ইচ্ছা মানে..??

মেঘলাঃ আমার তোর সাথে ঘুমাতে ইচ্ছে হয়েছে তাই এসেছি...এতদিন তোর যা মন চায় করেছিস এবার আমার পালা।
আকাশঃ বেশি কথা বলতে পারব না এখনী বিদায় হ বলছি... তানাহলে কি যে হবে ভাবতেও পারছিস না।
মেঘলাঃ কি আর হবে,?নাহয় একটা বাচ্চাই হবে..
আকাশঃ😳😳
মেঘলাঃ এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন..??
আকাশঃ তুই আবারো সেই...

মেঘলাঃ আমি আগে যা ছিলাম এখনো আছি ভবিষ্যতেও তাই থাকব এসব ছাড়, তোর না আমাকে ভোগ করার খুব ইচ্ছা তাহলে আয় ভোগ কর।
আকাশঃ মেঘলার বাচ্চা...(ধমক দিয়ে)
মেঘলাঃ যেই কথা মিথ্যা প্রমাণিত হবে তেমন কথা বলিস কেন?
আকাশঃ কিসের মিথ্যা..??
মেঘলাঃ এই যে এতক্ষন  যা যা  বলে আসলি সবি ত মিথ্যা ছিল... আমাকে কাঁদানোর জন্য বলেছিলি তাই না?


আকাশঃ তোকে কাঁদিয়ে আমার লাভ কি?কোন মিথ্যা না সব সত্যি..
মেঘলাঃ তাই বুঝি তাহলে আয় কাছে আয়  দুরে কেন আচ্ছা জামা খুলব নাকি তুই খুলে দিবি... বলেই মেঘলা জামা খুলার ভাব নিল।
আকাশ সাথে সাথে নিজের চোখে হাত দিয়ে বলল কি করছিস মেঘলা তুই আর ছোট নেই বুঝিস না?

মেঘলাঃ হি হি হি অপারেশন সাকসেসফুল... তুই মিথ্যা বলছিলি সেটা প্রমাণ করার জন্যই এখানে ঘুমিয়েছিলাম। 
আকাশঃ হয়েছে তোর যা মন চায় তুই ভাবতে থাক আমার কি আমি সত্য বলেছিলাম এটাই সত্যি..আর শো যা ভাবার নিজের ঘরে গিয়ে ভান এবার বিদায় হ এখান থেক্র সারাদিন অনেক কাজ করেছি এখন আর শরীর চলছে না একটু ঘুমাব।
মেঘলাঃ আচ্ছা চলে যাব যদি তুই i love you megla...বকিস।

আকাশঃ কোন দুঃখে?  বলেছি না ভালবাসি না।
মেঘলাঃ ঠিক আছে তাহলে আমিও যাব না...
আকাশঃ বেশ তোর যেতে হবে না আমিই চলে যাচ্ছি যতসব ফাযলামী...বলে আকাশ বেরিয়ে গেল।

মেঘলাঃ হুম হুম যা যা আপদ কোথাকার...
আকাশ গিয়ে ড্রয়িং রুমে সোফায় শুয়ে পড়ল।
আকাশঃ যেটা ভাবছিলাম তাই হল মেঘলা আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠবে ওকে সামলানো কঠিন হয়ে যাবে।
উফফ খোদা ওকে কেন যে এমন বানালে..
ভাবতে ভাবতে আকাশ ঘুমের দেশে পাড়ি দিল।


কিছুক্ষন পর, 
আকাশ ঘুমাচ্ছিল ঠিক সেই সময় নাবিলের ডাকে আকাশের ঘুম ভেংগে গেল।
আকাশের চোখ মেলতে ইচ্ছা করছে না তবুও নাবিলের ডাকাডাকিতে ঘুম ঘুম চোখে বলল উফফ কি শুরু করেছিস তোরা? আমাকে কি আজ ঘুমাতে দিবি না..??
নাবিলঃ আমি কি শুরু করেছি সেটা না ভেবে তোরা কি শুরু করেছিস সেটা বল..
আকাশঃ আমি শুরু করেছি মানে..??
নাবিলঃ ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানিস না মনে হচ্ছে?
আকাশ এবার চোখ খুলল ঘুম কিছুটা ভেংগে গেছে বুঝতে পারল তাকে কেউ জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে...

আকাশ এবার চমকে উঠল,
নাবিলঃ রোমান্স টা ড্রয়িং রুমে না করে বেড রুমে করলে ভাল হত না..??
আকাশঃ ওমা এটা কে..?? আরে এটা আবার কোথা থেকে চলে আসল? ওকে তো আমি ঘরে রেখে এসেছিলাম।

নাবিলঃ হয়েছে অভিনয় করা বাদ দে এখন আমার জায়গায় অন্য কেউ আসলে এতক্ষনে কি হত কে জানে...যা ভাই ঘরে যা সবার সামনে এসব করতে হয় না।
আকাশঃ আরে তুই ভুল ভাবছিস আমি ওকে আনি নি বরং ওই আমার পিছু ছাড়ছে না।
নাবিলঃ বুঝেছি বুঝেছি আর বুঝাতে হবে না কে কার জন্য কত পাগল সেটা ত আমি জানিই। 
আকাশঃ আরে ইচ্ছা করে শুলে এইটুকু খানি সোফায় ২ জন শুতাম নাকি? এই মেয়েটা আসলেই কখনো মানুষ হবে না...

নাবিলঃরমনিকে বাহুডুরে নিয়ে কম জায়গায় তো শুতে মজা তাই না..??যাই বল ভাই বিয়েটা আগে করো তারপর যা মন চায় করো। 
আকাশঃ আমি কিছু করি নি তুই এসব কি বলছিস?
নাবিলঃ আচ্ছা আমি না হয় মেনে নিলাম তুই কিছু করিস নি কিন্তু একটা ছেলেত উপড় একটা মেয়ে পা তুলে শুয়ে আছে তাও সোফার মত ছোট জায়গায় মাটিতে বালিস পড়ে আছে তারপরেও কেউ বিশ্বাস করবে..? এখন বাড়িতে আত্মীয়রা আছে এক এক জন এক এক রকম তাই এভাবে ঘুমানো টা ঠিক হয় নি। বলে মিটমিট করে হাসতে হাসতে নাবিল চলে গেল।


আকাশঃ আজ তোর একদিন কি আমার একদিন..
এই ডায়নিবুড়ি মেঘলা উঠ...বলে আকাশ মেঘলাকে ডাকতে গেল।
কিন্তু মেঘলার সাড়াশব্দ নেই।
মেঘলা গভীর ঘুমে আছন  দেখে আকাশের মায়া হল সে মেঘলার ঘুমটা ভাংতে পারল না বরং উল্টে মেঘলার কপালে চুমু এঁকে দিয়ে আস্তে করে মেঘলাকে নিজের উপড় থেকে সরিয়ে দিল।

আকাশ উঠে চলে নিজের ঘরে চলে গেল,
কিন্তু কিছুক্ষন পরেই,
আকাশঃ কি করলাম এটা মেঘলাকে একা রেখে চলে আসলাম তাও এমন খোলা জায়গায় না না এটা আমি ঠিম করি নি বাড়িতে আজ অনেক ছেলে আছে এমন খোলা জায়গায় মেঘলাকে একা রেখে রাখাটা একেবারেই ঠিক হবে না। ভেবে আকাশ আবার মেঘলার কাছে ফিরে গেল মেঘলাকে আবারর নিজের উপড়ে নিয়ে শুয়ে পড়ল কিন্তু মেঘলার সাথে ঘুমালে যদি কেউ দেখে নেয় সেই টেনশানে সে আর ঘুমাতে পারল না যদিও তার খুব ঘুম পাচ্ছিল কিন্তু মেঘলার জন্য পারল না সারারাত বজেগে জেগে মেঘলাকে পাহারা দিল। 
ভোরের দিকে আকাশ মেঘলাকে রেখে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল।


সকালে মেঘলা কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল।
সকালে সবাই টেবিলে খেতে বসেছে শুধু আকাশ আসে নি তার নাকি খুব ঘুম পেয়েছে সবাই কে নিষেধ করেছে কেউ যেন তাকে না ডাকে তাই কেউ ডাকল না।
আকাশের বাবা সচারাচর তেমন কথা বলেন না কিন্তু আজ টেবিলে বসে হঠাৎ তিনি বলতে আরম্ভ করলেন,
আজাদ সাহেবঃ শায়রা তুমি কি সত্যি চাও মেঘলা নাবিলের বউ হোক...

শায়রা বেগমঃ ভাইজান হটাৎ এই প্রশ্ন..?? আমি ত কাল এমনি...
আজাদ সাহেব  নাবিলের মাকে থামিয়ে দিলেন,এবার নাবিলের দিকে তাকালেন।
আকাশের বাবা এ বাড়ির সবচেয়ে সিনিয়র সকল ভাল মন্দ সিধান্ত তিনিই নেন তার মুখে মুখে কথা বলার সাহস আকাশ,নাবিল বা মেঘলা কারোরেই নেই।
আজাদ সাহেবঃ নাবিল তুমি কি মেঘলাকে বিয়ে করবে।
নাবিল ভয় পেয়ে গেল।

নাবিল ভয়ে ভয়ে বলল...আ আ আমি মানে বড় বাবা..আমার কি এখনি বিয়ের বয়স হয়েছে আমি তো আকাশের মত সাকসেসফুল নই...  নাবিল আসলে বুঝাতে চেয়েছিল আকাশের সাথে যেন মেঘলার সাথে বিয়ে দেয় কিন্তু আজাদ সাহেব তাকেও থামিয়ে দিল।
আজাদ সাহেবঃ আমি শুনেছি মেঘলার এনগেইজমেন্ট হয়েছিল আমি সেই ছেলের বাবার সাথে কথাও বলেছি তারা এখন আর মেঘলাকে বউ বানাতে চান না আর মেঘলার সাতজে যেহেতু এ বাড়ির অনেকেরেই মতামত মিলছে না তাই আমি ঠিক করেছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওর বিয়েটা দিয়ে দিব।আমার বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ের কথা বলতে চাই। কাল বিকালে ওরা মেঘলা কে দেখতে আসবে আশা করছি তাতে কারো কোন আপত্তি নেই।
মেঘলাঃ বড় বাবা আ আমি মানে..


আজাদ সাহেবঃ তুমি আর একটা কথাও বলবে না তুমি কি চাও আমি জানি কিন্তু আকাশ তোমাকে চায় না তোমার সেটা বুঝতে হবে...আমি আর কোন বাড়তি কথা শুনতে চাই না কাল সুন্দর ভাবে সেজগুজে সবার সামনে যাবে এটাই আমার শেষ কথা...তোমাকে যতদিন না একটা জায়গায় নিতে পারছি আমার শান্তি হবে না হাজার হোক নিলু আমাদের একমাত্র বোন ছিল তার মেয়েকে কেউ এত অপমান করবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না।
আকাশ বা আকাশের মা কেউ এই তোকে সহ্য করতে পারে না আমি এটা আর মানতে পারছি নারে মা...

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৩৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন