উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal কবিয়াল
ভিলেন || মনা হোসাইন

1111111111111111111111

১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ০২)

(নায়িকার নাম আরোহীর বদলে মেঘলা দেয়া হল)

মেঘলা আর আকাশ মামাত ভাইবোন।
মেঘলা বয়সে আকাশের চেয়ে বেশ কয়েক বছরের ছোট। তারা একই প্রতিষ্টানে পড়াশোনা করে তবে মেঘলার বাসা এই শহরে না। মেঘলা আকাশের ফুফির একমাত্র আদুরে মেয়ে।সে তার মা বাবার সাথেই থাকত কিন্তু মেঘলা হটাৎ বায়না করে সে আকাশের কলেজে সে পড়বে একরকম জোর করে সে এখানে পড়াশোনা করতে এসেছে।কথাছিল আকাশদের বাসায় থেকে পড়াশোনা করবে কিন্তু মেঘলা তাতেও রাজি হয়নি সে একটা বিলাশবহুল হোস্টেল এ থাকে। মেঘলা আসলে বাসায় থাকতে চায় নি কারন সেখানে থাকলে শাসনের মধ্যে থাকতে হবে। মেঘলা খুবি জেদি,অগোছালো একটা মেয়ে নিজে যা ঠিক করে তাই করে।

ওপরদিকে আকাশ ফিটফাট, গুড লুকিং,স্বভাবে বেশ শান্ত শিষ্ট,খুব ভাল সুডেন্ট সহজে কারো সাথে কথা বলে না সবসময় নিজের মোড নিয়ে থাকে। চুপচাপ থাকাই তার বৈশিষ্ট্য দেখতেও খুব হেন্ডসাম মোট কথা যতরকমের ভাল গুন থাকা সম্ভব তার সবগুলিই আকাশের মধ্যে বিদ্যমান।

তবে মেঘলা যেদিন থেকে এখানে এসেছে সেদিন থেকে আকাশের জীবন তেজপাতা করে দিয়েছে। মেঘলা কখন কি করে তার কোন ঠিক নেই আর যত ঝামেলা আছে সব আকাশের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়।মেঘলা যদি একটা তেলাপোকাও দেখে সেটাকে দেখার জন্য আকাশকে ডেকে নিয়ে যায়। এমনকি হোস্টেলে মেঘলার গার্জিয়ানের জায়গায়ও আকাশের নামই লিখা আছে।মেঘলা আকাশকে ছাড়া এক পাও চলতে পারে না।প্রেম করুক বা ডেট করুক সবকিছুতেই সে আকাশের সাথে শেয়ার করে।

আকাশঃ কি ভাবছেন আমি বড় ভাই হয়ে এসব মেনে নেই কেন তাই না? মেঘলার সবকিছু মেনে নেওয়ার পিছনেও একটা সুনির্দিষ্ট কারন আছে।
প্রথম প্রথম মেঘলার উল্টা পাল্টা কাজ সহ্য করতে পারতাম না। একদিন খুব বকা দিয়েছিলাম মেরেও ছিলাম আগেই বলেছি মেঘলা একটু বেশিই ন্যাকা তাই তাই সেদিন রাগে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল কত খোঁজে ওকে তুলতে হয়েছিল আর ওর যে অবস্থা হয়েছিল সেটা মনে হলে এখুনো ভয় করে।বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম সেবার মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে ফিরে এসেছিল তাই এখন আর কিছু বলি না যতটা সম্ভব চোখেচোখে রাখার চেস্টা করি।

ওর প্রধান সমস্যা প্রেম... সে যেই ছেলেকেই দেখে প্রেমে পড়ে যায়। এখন আবার সিগারেট খাওয়াও শিখেছে শুনলাম। অবশ্য ওর সব ব্রেকাপের পিছনেও আমারি কৃতিত্ব। ও দেখতে খুব সুন্দরী তাই মুটামুটি যে ছেলেই দেখে সেই প্রেম করতে চায়। মেঘল এখনো প্রেমের মানে যানে না শুধু ফ্রেন্ডদের সাথে বড়াই করার জন্য প্রেম করে। যানি না কেন যানি এগুলি খুব পছন্দ করে সে।

প্রেম করলে নাকি ছেলেরা তাকে সুন্দরী বলে এসব তার ভাল লাগে। প্রেমের আসল মানে না বুঝলেও ইতিমধ্যে সে ১৬/১৭ টা প্রেম করে ফেলেছে। আমি সব যেনেও প্রেম করতে দেই।তবে বেশি দূর পর্যন্ত এগুতে দেই না হাজার হোক ও আমার বোন তাই যখন দেখি রিলেশান টা একটু ঘনিষ্ট হচ্ছে তখনি ছেলেটাকে সরিয়ে দেই তবে সেটা মেঘলা জানে না।


মেঘলা আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে সবার ছোট তাই সবাই ওকে খুব আদর করে।আর সবার মধ্যে আমি একটু বেশিই আদর করি কারন একবার আমার জন্য মরতে বসেছিল ।আদর করলেও ওকে বুঝতে দেই না কারন একবার বুঝলে আমার মাথায় চড়ে বসবে।এমনিতেই সারাদিন জ্বালায়।ওর সব কিছুই আমার ভাল লাগে শুধু ন্যাকামি গুলি ছাড়া।

আজ আর একটু দেড়ি হলেই ও ঝাঁপ দিত ভাগ্য ভাল সময় মত যেতে পেরেছিলাম তানাহলে কি হত কে জানে।অনেক হয়েছে এবার এই আত্মহত্যা আত্মহত্যা খেলাটার একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।
সব সময় বাচ্চাদের মত দেখে দেখে রাখা সম্ভব নাকি।


মেঘলাকে পাঠিয়ে দিয়ে আকাশ রাস্তায় হাঁটছিল তখনি বাসা থেকে ফোন আসল। আকাশ ফোন ধরে বলল হুম ছোট আম্মু বলো।
ছোট আম্মু (আকাশের চাচী)-এক্ষুনি বাসায় আয়
আকাশ- কেন কিছু কি হয়েছ?
ছোট মা- না হলে আসতে বলছি কেন তারাতাড়ি এসো।
আকাশ-কি হয়েছে সেটা তো বলো
ছোট মা- আসলেই দেখতে পাবে এত কথা বলার সময় নেই তারাতাড়ি এসো বলে ফোন কেটে দিল।

কিছু না হলে এভাবে বলে নি বুঝলাম তাই তারাতাড়ি করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাসায় ঢুকার পর বুঝতে পারলাম মারাত্মক কিছু ঘটেছে কারন বাসার সবাই ড্রয়িং রুমে একসাথে বসে আছে ছোট বাবা,ছোট মা, আমার মা, বাবা কাজিন নাবিল,মিলি,নেহা সবাই আছে। তারচেয়েও আজব ব্যাপার আমার ন্যাকারানী মেঘলাও আছে। তাকে হাজার বলেও বাসায় আনা যায় না আজ নিজে এসেছে।

আমি যাওয়ার সাথে সাথে থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হল। যদিও বাসায় আমাকে কেউ কখনো কিছু বলে না কারন আমি বাসায় সবার বড় ছেলে আর আমি উল্টা পাল্টা কাজ খুব কম করি তাও আজ কেমন যেনো লাগছে মনে হচ্ছে যেন সবাই আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্যই আদালত বসিয়েছে।

আকাশঃ কি হয়েছে ছোট মা তোমরা সবাই এভাবে বসে আছো কেন?
ছোট মাঃ কি হয় নি তাই বল আকাশ? তুই কি এখুনো ছোট আছিস?
বাবাঃ থামো শিরিন তুমি যে কি শাসন করতে পারবে বুঝেছি তুমি শুধু আদর করতেই পারো।
এই তোর এত সাহস হয় কি করে মেঘলাকে মারিস?

আকাশ রাগি চোখে মেঘলার দিকে তাকাতেই মেঘলা বলে উঠল ভয় দেখাচ্ছিস কেন মারিস নি বুঝি?
আকাশঃ আমি কখন মারলাম?
মেঘলা নিজের হাত দেখিয়ে বলল এই দেখ কত রক্ত বেরিয়েছে জানিস।
আকাশঃ আজব তো একটুখানি ছিলে গিয়েছিল সেই হাত থেকে এখুনো রক্ত পড়ছে এটা কি করে হতে পারে?যাক গে এখানে স্বীকার করা যাবে না তারচেয়ে মিথ্যা বলে দেই।
তো রক্ত পড়ছে পড়ুক তার সাথে আমার সম্পর্ক কি?আমার সাথে তো তোর দেখাই হয় নি আমি কি করে বলব তোর হাতে কি হয়েছে?

এবার ছোট মা এসে আমার কান ধরে বলল তাই নাকি? তাহলে এটা ওর কাছে গেল কি করে?আকাশের রুমাল দেখিয়ে বলল এটা তো তোর রুমালেই তাই না? সকালেও তোর কাছে ছিল।তুই যে হাইজিন মেন্টিন করিস কাউকে নিজের রুমাল দিবি না সেটা আমরা সবাই জানি তাহলে তোর রুমাল ওর কাছে গেল কি করে?

আকাশঃ মেঘলা তুই না দুনিয়ার সবচেয়ে স্বার্থপর মেয়ে। ৯৯ দিন তোকে আদর করে ১ দিন একটা ধমক দিলে তোর চোখে সেটাই পরে?বাকি ৯৯ দিনের কথা ভুলে যাস তাই না?
মেঘলাঃ এটাকে ধমক বলে?
আকাশঃ সব যখন বললি তাহলে এটাও বল কেন মেরেছি?
মেঘলাঃ......
আকাশঃ এখন বলছিস না কেন?

বাবাঃ আবার তর্ক করছিস? মেরে আমি তোর সব গুন্ডামি ছাড়িয়ে দিব।
বাবা আমাকে বকাবকি করছে তখনি ছোট বাবার ফোন বেজে উঠল আরোহীর মা ফোন করেছে।
ছোট বাবাঃ হ্যা নীলু বল
ফুফিমনিঃ কি শুরু করেছিস তোরা? নাবিল বলল তোরা নাকি আকাশ কে বকাবকি করছিস? আকাশ কে চিনিস না ও কেন মেঘলাকে মারবে? আমি বিশ্বাস করি না আকাশ এসব করেছে আর করলেও নিশ্চুই কারন ছিল তাই আমি বলছি ওকে আর একটাও বকা দিবি না।দিলে আমি কিন্তু মেঘলাকে এখানে নিয়ে আসব।

ছোট বাবাঃ কিন্তু দিদি মেঘলা...
ফুফুঃ ওকে ফোন টা দে
ছোট বাবা মেঘলাকে ফোন দিল।
ফুফিঃ কি শুরু করেছো? এমন করলে তোমাকে বাসায় নিয়ে আসব আর ওখানে থাকতে দিব না।
মেঘলাঃ কিন্তু আম্মু ও সত্যি আমাকে মেরেছে
আকাশঃ যা যা বলছিস ভেবে বলছিস তো সবগুলি কথা মনে রাখিস? কাল থেকে কোন ঝামেলায় পড়লে আমি কিন্তু যাব না বুঝে নিস।

ফুফিঃ আকাশ তো ঠিক বলেছে ছেলেটা তোর জন্য সারাদিন এত করে আর তুই ওকে বকা শুনাচ্ছিস?তুই ভাল করেই জানিস যে ওর একবার ভুল করেছে জন্য এখন তুই যা বলবি সবাই তাই বিশ্বাস করবে।সবাই তর পক্ষেই থাকবে কেউ ওর কথা মানবে না।খুব বকা দিবে এমনকি মারতেও পারে তাও নালিশ দিচ্ছিস বিবেক নেই তোর? আকাশ যদি আর একটা বকা শুনে তোকে আমি আজকেই বাসায় নিয়ে আসব কথাটা মাথায় রাখিস মেঘলার মা ফোন রেখে দিল।
আকাশের বাবাঃ কি বলল নিলু?

ছোট বাবাঃ ছাড়ো দাদা... আকাশ শোন নিলুর জন্য আজ তোকে ছেড়ে দিলাম কিন্তু এরপর এমন করলে তোকে বাড়ি ছাড়া করব বলে দিলাম মেয়েটাকে একবার যমের বাড়ি পাঠিয়ে শান্তি হয় নি তোর?আবার মারিস কোন সাহসে?
এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা চোখের সামনে থেকে দূর হ।

আকাশ রাগে গজ গজ করতে করতে বাইরে চলে গেল।
ছোট মাঃ আয় হাতে ওষুধ লাগিয়ে দেই।
মেঘলাঃ না না লাগবে না আমি নিজেই লাগিয়ে নিচ্ছি বলে মেঘলা এক দৌড়ে উপড়ে চলে গেল।
মেঘলা আজ অনেকদিন পর এই বাসায় এসেছে তাই নাবিল মিলি নেহার সাথে খুব মজা করছে।
সবাই মিলে গল্প করছিল তখন আকাশ আসল।
যদিও নাবিল মিলি বা নেহার চকলেট খাওয়ার বয়স নেই তবুও আকাশ সবার জন্য চকলেট নিয়ে এসেছে সবাইকে দেওয়ার পর সবাই খুব খুশি হল। কিন্তু আকাশ মেঘলাকে দেয় নি।

মেঘলা রেগে বলল আমার চকলেট কোথায়?
আকাশঃ তোকে দিব কেন? তোকে তো আমি মারি আদর করি না।তাহলে চকলেট কিসের?
মেঘলা লাগবে না তোর চকলেট সর এখান থেকে।
আকাশঃ যাওয়ার হলে তুই যা আমি ওদের সাথে গল্প করব।
মেঘলা রাগে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
আকাশ কিছুক্ষন গল্প করার পর আকাশ তার নিজের ঘরে গেল।কিন্তু ঘরে ডুকে সে অবাক হয়ে গেল।
কারন মেঘলা তার রুমে,তার বিছানায় শুয়ে তারই ল্যাপটপ ঘাঁটাঘাঁটি করছে।

মেঘলাকে ঘরে দেখে আকাশ তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল।
আকাশঃ এই তুই আমার রুমে কি করছিস? তাও আবার আমার বিছানায়..??
মেঘলাঃ তেমন কিছু না তোর ফেসবুক টা একটু ঘাঁটাঘাঁটি করছিলাম।

আকাশঃ কি...?? তোর কি minimum sense টুকুও নেই একে তো বকা খাওয়ালি এখন রুমে আসলি তাও আবার আমার বিছানায় শুয়ে আছিস যেখানে আমি আমার ঘরে কোন মেয়েকেই আসতে দেই না সেখানে তুই আমার বিছানায় গড়াগড়ি করছিস? তাও আবার আমার ল্যাপটপে আমারি ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করছিস সাহস দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি।

মেঘলাঃ অবাক হওয়ার কি আছে...?? যা ত এখান থেকে আজ আমি এই রুমে থাকব।
আকাশঃ তাই নাকি? বলেই আকাশ মেঘলার চুল ধরে টানতে লাগল।
মেঘলাঃ সবাইকে ডেকে দেখাই তুই আবার আমায় মারছিস।
আকাশঃ মারলাম কোথায়?
মেঘলাঃ এই যে চুল ধরেছিস...

আকাশঃ তো কি করব এখন তো জ্যাকেট পড়িস নি কোথায় ধরব?আমি মেয়েদের টাচ করি না জানিস না?
মেঘলাঃ হয়েছে বুঝেছি ছাড় ছাড় আমি যাব না টানাটানি করে লাভ নেই।
আকাশঃ তোকে আমি মেরে ফেলব বলে দিলাম এসব আর নিতে পারচ্ছি না ভালভালই ঘর থেকে বেরিয়ে যা।
মেঘলাঃ প্রতিদিন তো আসতে বলিস আজ আসলাম তাও বিদায় করে দিচ্ছিস? ঠিক আছে চলে যাচ্ছি।

আকাশঃ আমি কি চলে যেতে বলেছি? অন্য ঘরে যা মিলি বা নেহার সাথে ঘুমা গিয়ে।
মেঘলাঃ না থাক আমি বরং হোস্টেলে চলে যাই
আকাশঃ রাত হয়ে গিয়েছে পাগলামি করিস না যেতে হবে না ওদের সাথে গল্প কর গিয়ে।
মেঘলাঃ না থাকব না নাবিল ভাইয়াকে বলে দেখি যদি নিয়ে যায়..না গেলেও আমি একাই যেতে পারব।

আকাশঃ এত রাগ কেন হুম? আচ্ছা আজ যে তুই আমার কথা বিচার দিলি আমি যদি বলে দিতাম তুই কতগুলি প্রেম করেছিস আর আজ কি করতে চেয়েছিলি তাহলে কি হত?
মেঘলাঃ তুই বলবি না আমি জানি...
আকাশঃ সবকিছুই আগে থেকে জেনে যাস আচ্ছা এসব বাদ এবার হাত দেখা,দেখি হাতে এতটা লাগল কি করে এখনো রক্ত পড়ছে কেন?

মেঘলাঃ না দেখতে হবে না।
আকাশঃ দেখা বলছি বলেই হাত টেনে আনল।
কিন্তু দেখার পর আকাশের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল সাথে সাথে আকাশ টাস করে আবার এক্টা থাপ্পড় মারল মেঘলাকে...

মেঘলাঃ আ আ আ আ আ......

আকাশঃ সরি সরি ভুল হয়ে গেছে আমার। থাম থাম প্লিজ আমার লক্ষি সোনা থাম প্লিজ এবার তুই নালিশ করলে আমাকে আর আস্ত রাখবে না প্লিজ থাম....
মেঘলাঃ তুই খুব খারাপ আমাকে খালি মারিস আ আ আ

আকাশ এবার কোনো কথা না বলে মেঘলার মুখ চেপে ধরে টানতে টানতে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল।
মেঘলাঃ এখানে এনেছিস কেন?
আকাশঃ তোর কি মাথায় কোনদিনো বুদ্ধি হবে না মেঘলা? আমাকে বকা খাওয়ানোর জন্য তুই কাটা জায়গায় রং লাগিয়ে দিলি? এখন যদি ইনফেকশন হয়ে যায়? বলতে বলতে আকাশ হাত ধুয়ে দিচ্ছে...

মেঘলাঃ হলে হবে...
আকাশঃ তাত হবেই কারন তাতে তো তোর কিছু না হবে না সারাদিন ধরে আমাকে প্যারা দিতে থাকবি জীবনে কি ভুল করেছিলাম যে এই ঝামেলা আমার ঘাড়ে চাপলো খোদা জানে।তুই শুধু স্কুল পাস করলেই তোর বিয়ে দিয়ে আমি মুক্ত হব।
মেঘলাঃ তাই বুঝি তুই আমায় বিয়ে করবি?

আকাশ রাগী চোখে তাকিয়ে বলল আমার খেয়ে কাজ নেই তোকে বিয়ে করব? বিয়ে দিয়ে তোকে শহর ছাড়া করব।
মেঘলাঃ থাকতে পারবি আমায় ছাড়া?
আকাশঃ বেশি কথা বলিস চল হাতে ওষধ লাগিয়ে দেই।
মেঘলাঃ সর তো কিসের ওষধ আমি লাগাব না এসব লাগালে জ্বালা করবে।
আকাশঃ তোর মতামত কে জানতে চেয়েছে? চল বলছি বলে জোর করে নিয়ে যেতে লাগল মেঘলাকে।

মেঘলাঃ বদের হাড্ডি, হারামি, শেওড়া গাছের পেত্নির জামাই ছাড় আমাকে...
আকাশ জোর করেই ওষধ লাগিয়ে দিল আর মেঘলাও চেঁচিয়ে উঠে আকাশকে জড়িয়ে ধরল।
আকাশঃ বাহ তুই তো দেখছি বাংলা সিনামা কেও হার মানিয়ে দিলি।
মেঘলাঃ...
আকাশঃ ছাড়বি নাকি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব?

মেঘলার জেদ চেপে গেল আকাশ কিছু বুঝার আগেই মেঘলা আকাশকে বিছানায় ফেলে দিয়ে আকাশের উপড় চড়ে একদম আকাশের গায়ে গা মিশিয়ে দিল।
আকাশ মেঘলার কান্ড দেখে অবাকের সপ্তম আকাশে পৌছে গেল।
আকাশঃ কি করছিস এসব?

মেঘলাঃ এত ভাব দেখাস কেন? তোকে ছুয়ে দিলে কি তর গাঁয়ে ফুসকা পড়ে? সবসময় একটা আগলা ভাব নিয়ে থাকিস। এবার দেখ আমি একদম তোর সাথে মিশে আছি এবার কি করবি হুম?
আকাশ কি বলবে বুঝতে পারছে না।
আকাশঃ সাইকো হলেও এতটা হয় তোকে না দেখলে জানতাম না
মেঘলা তুই কি করছিস সে সম্পর্কে তোর আদো কোন ধারনা আছে?

মেঘলাঃ কই কি করছি আমি তো তোর উপড় শুয়ে আছি।
আকাশঃ তা এমন আর কার কার সাথে করেছিস?
মেঘলাঃ তুই ছাড়া কেউ এত ভাব দেখায় না তাই আর কারো সাথে করি নি।
আকাশঃ সর মেঘলা কেউ দেখলে মান সম্মান থাকবে না।
মেঘলাঃ সরব না আগে আমার চকলেট দে...
আকাশঃ কিসের চকলেট আমি এখন চকলেট কোথায় পাব?
মেঘলাঃ সবার জন্য এনেছিস আমার জন্য আনিস নি কেন?তাই তোক ছাড়ব না।
আকাশঃ আচ্ছা ছাড় আমি বাইরে গিয়ে এনে দিচ্ছি।
মেঘলাঃ না আমার তখনকার চকলেটেই চাই।তানাহলে ছাড়ব না।
আকাশঃ পাবনা পাঠানো আবশ্যক হয়ে পড়েছে আমি আজেই ফুফির সাথে কথা বলব।

মেঘলাঃআবার বাজে কথা বলছিস? ভালই ভালই চকলেট দে নাহলে আমি এবার সবাইকে ডাকব...বলেই ডাকতে শুরু করল ছোট মা...ছোট মা...
আকাশ কি করবে বুঝতে না পেরে তাড়াতাড়ি নিজের পকেট থেকে চকলেট বের করে মেঘলা কে দিল।
সাথে সাথেই মেঘলা নেমে গেল তারপরেই আকাশের চাচি মানে ছোট মা রুমে আসল।

আকাশের দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা হয়ে গেছিল
আকাশঃ উফফ একটুর জন্য বেঁচে গেলাম। কি মেয়ে এটা বাপরে ?নিজের ভাল নিজে বুঝে না।

ছোট মাঃ হ্যা মেঘলা বল কিছু লাগবে?কিছু খাবি নাকি নুডলস করে দেই?
মেঘলাঃ না আমি তোমার সাথে ঘুমাব সেটা বলার জন্যেই ডাকলাম চলো।
ছোট মাঃ তাই বল আচ্ছা আয়...

মেঘলা যেতে যেতে আকাশকে উদ্দেশ্য করে বলল তুই যে আমার জন্যে চকলেট এনেছিস আমি যানতাম আর ভালই ভালই দিবি না সেটাও জানতাম তাই এসব করলাম একটা কথা জেনে রাখ তোকে কেউ সোজা করতে না পারলেও মেঘলা পারবে...
আকাশঃ তাত পারবিই আদর দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলে ফেলেছি না?

মেঘলা ভেংচি কাটতে কাটতে চলে গেল।



পরদিন সকালে ৬.৩০ বাজে কেবল তখন৷ আকাশের ফোন বেজে উঠল.

আকাশ ঘুম ঘুম চোখে ফোন টা ধরল, ফোন ধরার সাথে সাথে আকাশের চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে গেল কারন ফোনের ওপাশ থেকে মেঘলার গলা ভেসে আসছে...

আকাশ বিচলিত হয়ে জিজ্ঞাস করল কি হয়েছে মেঘলা চেঁচাচ্ছিস কেন...

মেঘলাঃ তাড়াতাড়ি পার্কে আয় খুব ঝামেলায় পড়ে গিয়েছি।
আকাশঃ কি হয়েছে সেটা তো বল...
মেঘলাঃ আ....

আকাশঃ কি হয়েছে মেঘলা কথা বল প্লিজ...
ফোনটা কেটে গেল আকাশ বের হতে হতে কয়েকবার কল করেছে কিন্তু ফোন অফ।

আকাশ গেইটের তালা খুলা আর বাইক বের করার সময় টাও যেন পাচ্ছে না এতটাই অস্থির হয়ে গেছে।

আকাশঃ এত সকালে ওর পার্কে যাওয়ার কি দরকার ছিল কবে যে মানুষ হবে মেঘলা? প্লিজ গড কোন অঘটন যেন না ঘটে ওর সাথে...

আকাশ পার্কে গিয়ে এদিক ওদিক ছুটছে আর মেঘলার নাম ধরে ডাকছে অনেকেই জগিং করতে এসেছে আকাশ সবাইকেই মেঘলার ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করছে মেঘলাকে দেখেছে কিনা...

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

০৩ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন