উপন্যাস : পদ্মমির
লেখিকা : ইলমা বেহরোজ
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল :
লেখিকা ইলমা বেহরোজের “পদ্মমির” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হয়েছে।
![]() |
পদ্মমির || ইলমা বেহরোজ |
১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
পদ্মমির || ইলমা বেহরোজ (পর্ব - ২)
ফিসফিসিয়ে বলল, ‘ইয়াকির পার্টনার করে দেব তোমায়।’
আমিরের কোনো ভাবান্তর নেই। সে সিগারেটে আগুন ধরিয়ে মৃদু গলায় বলল, ‘ওভিয়া, ইয়াকিসাফি জানলে - ‘ওভিয়া আমিরের মুখ চেপে ধরল। গভীর আদরের সঙ্গে আলিঙ্গন করে বলল, ‘যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি, তোমার দৃষ্টিতে থাকা শক্তির প্রাচুর্য, তোমার কথা বলার দৃঢ়তা, তোমার থুতনির এই কাঁটা দাগ আমার হৃদয় নাড়িয়ে দেয়। আমি তোমার প্রেমে পড়ে যাই।’
ওভিয়া ও আমিরের আজই সরাসরি প্রথম কথা হলো। যতবার সে এখানে এসেছে, ইয়াকিসাফির পাশে ওভিয়াকে দেখেছে। প্রতিবারই খেয়াল করেছে, ওভিয়া তার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকায়। ওভিয়ার কামনা বাসনা সে বহু আগে টের পেয়েছে। চোখাচোখি যেন কত কথা বলে এই নারী! ইয়াকিসাফি যদি এই সংবাদ পায়, সঙ্গে সঙ্গে ওভিয়াকে হত্যা করবে তবুও কেন এই ঝুঁকি নিল?
ওভিয়া আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়ায়। তার দুরন্ত যৌবন, মেদহীন নিখুঁত দেহ। ইয়াকিসাফির মতো সম্রাটের প্রিয় রক্ষিতা; নিঃসন্দেহে রূপবতী ও গুণবতী সে।আমির মৃদুস্বরে বলল, তুমি গ্রীকদেবীর মতো সুন্দর। কিন্তু আমি আগ্রহ পাচ্ছি না।’
আমিরের ঠোঁটে ওভিয়ার উত্তপ্ত নিঃশ্বাস পড়ছে। ফিসফিসিয়ে বলল, ‘আগ্রহ বাড়ানোর সুযোগ দাও।’
কথা শেষ করেই সে আমিরের ঠোঁটে চুমু খেল। রোব খুলতে গেলেই তাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল আমির। ওভিয়া অবাক হয়ে তাকাল আমিরের দিকে। তার দর্শন যেকোনো পুরুষের মাথা ঘুরিয়ে দেয়। এমন কোনো পুরুষ নেই, যে ওভিয়াকে দেখার পর মনে-মনে তাকে কামনা করেনি। এমন এক নারী সে, যাকে ইয়াকিসাফি ছাড়া কারো সাহস নেই ছুঁয়ে দেখার। অথচ আমিরের হৃদয়, শরীর দুটোই স্থির! ওভিয়া বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে বলল, ‘তুমি সমকামী?’
আমির না হেসে পারল না।
সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে বলল, ‘মোটেও না।’
গাঢ় সবুজ চোখ দিয়ে আমিরকে কয়েক সেকেন্ড পরখ করল ওভিয়া।
ধীরে ধীরে বলল, ‘স্ত্রীকে ভালোবাস?’
আমির হাসল। ওভিয়া উত্তর পেয়ে গেছে। নারী ব্যবসায় জড়িত পুরুষ কোনো নারীকে ভালোবেসে নিজেকে অন্য নারী থেকে, তার মতো নারী থেকে দূরে রাখছে!
‘সে কি আমার থেকেও সুন্দর?’ বলল ওভিয়া।
সিগারেটের ছাই ঝেরে আমির বলল, ‘পৃথিবীর সব নারী থেকে সুন্দর।’ তার চোখমুখ চিকচিক করছে।
ওতিয়া আগ্রহবোধ থেকে বলল, ‘কেমন সে?’
রাতের খাবার ডাইনিংরুমে সাজানো। ওভিয়া সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। আমির সিগারেট ফেলে ডাইনিংরুমের দিকে যায়। ওভিয়া পিছু পিছু গেল।
আমির চেয়ার টেনে বসে বলল, ‘বসো।’
ওভিয়া পাশের চেয়ার টেনে বসল।
আমির বলল, ‘নিখুঁত। ভেতরে-বাইরে, ডানে-বামে, সামনে- পেছনে, সব রূপে, সব পোশাকে সে নিখুঁত। তার মতো কেউ নেই, তার রূপের কোনো বর্ণনা হয় না, গুণের কোনো শেষ নেই। আমি তার ব্যাখ্যার যোগ্য নই।’
‘তোমার মতো কাউকে বউয়ের প্রশংসা করতে
দেখিনি।’
অন্যদের আমার বউয়ের মতো বউ নেই।’ আমির গর্বের হাসি হাসল। ওভিয়া বিস্ময় নিয়ে দেখছে তাকে। যে জগতে তার বাস, সেই জগতে এমন ভালোবাসা নেই; সে দেখেনি।
‘সত্যি কি এতো সুন্দর? নাকি সবটাই ভালোবাসার জন্য বলছ?’
‘যদি তুমি তাকে দেখতে! কিন্তু কখনো দেখতে পারবে না।’
‘কেন?’
‘তোমার মতো মেয়েদের সে ঘৃণা করে।’
কথাটি শুনে ওভিয়ার চোখমুখ লাল হয়ে যায়। রাগ হয়, কিন্তু আমিরকে সে কিছু বলবে না। মানুষটা তার প্রেমা
শুধু বলল, যার স্বামী নারী ব্যবসায় জড়িত, সে আমাকে ঘৃণা করার মতো নিশ্চয়ই না।’
আমির কিছু বলল না। সে কখনো কাউকে পদ্মজার কথা বলে না, নাম বলে না, পদ্মজার কাছে তার নারী ব্যবসা অপ্রকাশিত, তা জানায় না।
প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলল, ‘ইয়াকিসাফি জানার আগে ফিরে যাও।’
ওডিয়া বিষণ্ণ হয়ে জানালার বাহিরে তাকিয়ে বলল, ‘আমি তাকে ভালোবাসি না, অথচ তার মনোরঞ্জন করে পুরো জীবন কাটাতে হবে। আমার সব আছে। শুধু -‘ ওভিয়ার গলা নিভে এলো। সে হাসার চেষ্টা করল।
মাতোয়ারা হয়েছিলাম। যে, ইয়াকির ‘তোমার প্রেমে এতোটাই মো বেডরুম ছেড়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তোমার কাছে চলে এসেছি। নিজেকে আটকাতে পারিনি। ছোট থেকেই মেয়েরা আমাকে ঈর্ষা করত, এই প্রথম কোনো নারীকে, তোমার স্ত্রীকে ভীষণ ঈর্ষা হচ্ছে।’
ওভিয়া আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছে। আমির দয়াবান নয় তাই সামনে থাকা সুন্দরী নারীটির দুঃখের কথা কোনো প্রভাব ফেলল না তার উপর। সে একমনে খাচ্ছে।
ওভিয়া পলকহীন চোখে অনেকক্ষণ আমিরকে দেখল। তার অভিজ্ঞ চোখ বুঝতে পারল, আমির টলবে না। উঠে দাঁড়ায় চলে যেতে, আমির বলল, ‘গাড়ি আছে?’
জবাব দিল না সে। এপার্টমেন্ট ছেড়ে নিশ্চুপে বেরিয়ে গেল। হেরে গেছে, অজানা কোনো এক নারীর কাছে দেবীর মতো সুন্দর ওভিয়া হেরে গেছে! সেই নারী...
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা ইলমা বেহরোজের ডাকনাম ইলমা। জন্ম ২০০৩ সালের ১৮ জুলাই। নেত্রকোনায় জন্ম হলেও তার বেড়ে ওঠা সিলেটে। ছোটোবেলা থেকেই গল্প/উপন্যাসের প্রতি ছিল তার ভীষণ ঝোঁক। ক্লাসের ফাঁকে লুকিয়ে গল্পের বই পড়ার কারণে ̧গুরুজনদের তপ্তবাক্যও হজম করতে হয়েছে বহুবার। তবুও এই অভ্যাস কে কখনো বাদ দিতে পারেননি। সমাপ্ত গল্পকে নিজ কল্পনায় নতুনভাবে রূপ দেওয়া ছিল তার অন্যতম শখ। স্কুলের গন্ডি পেড়িয়ে একসময় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার গল্পরাজ্যের সঙ্গে পরিচিত হোন। যেখানে সবাই নিজ চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে নিজ লেখাকে আক্ষরিক রূপ দিয়ে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়। তাৎক্ষণিক নিজের কল্পনায় সাজানো গল্পগুলোকেও লিখিত রূপ দিতে শুরু করলেন তিনি। পাঠকদের থেকে আশানুরূপ সাড়া পেয়ে লেখালেখির যাত্রা অব্যাহত রাখার ইচ্ছে আরও বৃদ্ধি পায়। ফলসরূপ, রক্তে মিশে যাওয়া লেখালেখিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে পাঠকদের প্রতি ভালোবাসা থেকে বইয়ের পাতায় প্রকাশ করেছেন তাঁর প্রথম বই ‘মায়ামৃগ’। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের বইমেলায় বই আকারে প্রকাশ করেন তার আলোচিত উপন্যাস ‘আমি পদ্মজা’।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন