উপন্যাস        :         বেপরোয়া ভালবাসা
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “বেপরোয়া ভালবাসা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ঠিক কবে নাগাদ লেখা শুরু করেছেন তা এখনাব্দি জানা যায়নি। তবে তা জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন
বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন

২৯তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন (পর্ব - ৩০)


আদিবা আদির কথায় অবাক হয় নি। আদির কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি ভদ্রতা আশা করা যায় না।
আদিবা উঠতে চেয়ে উঠতে পারল না পায়ে হালকা ব্যাথা পেয়েছে আদি এসে আদিবাকে কোলে তুলে নিল।সাথে সাথে আদিবা চেঁচিয়ে উঠল
-"ছাড়ুন... আপনাকে হেল্প করতে কে বলেছে? 
-"বাপরে কী তেজ...ছেড়ে দিলে কি হবে বুঝতে পারছিস? 
আদিবা উত্তর দিল না। আদি বাঁকা হেসে বলল,
-"ক্লাইন্ট হিসেবে ওই মাতাল লোকটার চেয়ে আমি শতগুণে ভাল. ধর বাচ্চা যদি মাতাল গুন্ডা হয় তোর জীবন তো তেজপাতা হয়ে যাবে তার চেয়ে আমার মত হলে,দেখতেও ভাল হবে আচারনেও ভাল হবে। 
-" আপনার লজ্জা বলতে কিছু নেই তাই না? এত বাজে কথা কী করে বলেন? আমি আপনার বোন হই অন্তত সেটা ভেবে একটু লজ্জা পেতে পারেন না? এমন বেসরম বেহায়া ছেলে আমি কখনো দেখিনি।
-"দেখার সুযোগ দিলে তো দেখবি। তাছাড়া মাঝরাতে স্টেশনে পড়ে থাকা কোন মেয়ের সাথে এর চেয়ে ভাল করে কথা বলার মানে হয় না।
-"আমাকে নামান বলছি আমার কথা শুনেই গাঁ ঘিন ঘিন করছে। 
আদি র*ক্ত চোখে তাকিয়ে বলল,
-"যখন ওই লোকটা ধরেছিল তখন করেনি..?
বলেই পাশের বেঞ্চে বসিয়ে দিল আদিবা রাগে গজ গজ করতে বলল,
-"যদি ভেবে থাকেন আপনি এসেছেন বলে আমি ফিরে যাব তাহলে ভুল ভাবছেন আমি আপনার সাথে যাব না।
-"আমার খেয়ে কাজ নেই তোকে নিতে আসব? আমি সাদিয়া আর জুইকে নিতে এসেছি। তোকে নিয়ে যাওয়া তো দূর তুই নিজের ইচ্ছেয় যেতে চাইলেও বাসার দরজা তোর জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।
বলেই আদি উঠে দাঁড়াল। আর বলল তোরা কী যাবি নাকি এই ইডিয়েট এর সাথে থাকবি?
বলতেই সাদিয়া আর জুই দেয়ালের পিছন থেকে মুখ বের করে তাকাল। আদিবা অবাক হল। 
-"তোরা এখানে কি করছিস?
আদিবা প্রশ্ন করতেই সাদিয়া ছুটে এসে আদিবার পায়ের কাছে বসে পড়ল। 
-"আপু তুই আর অমত করিস না প্লিজ বাসায় চল। সারাদিন তোকে খুঁজেছি পাইনি এখনো হয়ত পেতাম না ভাইয়া না আসলে...
আদিবা একরাশ অভিমান নিয়ে বলল,
-"আমাকে খোঁজার কি হল? তোরা তো সবাই আমাকে নিজেদের বোঝা ভাবতি হটাৎ আমার জন্য দরদ উতলে উঠল কেন? 
আদিবা কথাটা আদির দিকে তাকিয়ে বলল,সাথে সাথেই আদি বলে উঠল।
-"নাটক দেখার সময় আমার নেই। চুপচাপ গিয়ে গাড়িতে বস। আমার হবু বউ রাতের বেলা বাইরে থাকবে আমি সেটা মেনে নিব না।
আদির কথায় আদিবা আবারো রাগে তেঁতে উঠল,
-"আপনি নিজেকে ভাবেন টা কী হ্যা...?যা মুখে আসে তাই বলেন। কে আপনার হবু বউ? আমি মরে গেলেও তো আপনার মত অ*সভ্য একজন কে বিয়ে করব না।
আদিবার কথায় হা হা করে হেসে উঠল আদি..
-"একটা রাস্তার মেয়েকে আদিত্য চৌধুরী বিয়ে করবে ভাবলি কি করে? তুই যখন থেকে বাসা থেকে বের হয়েছিস তখন থেকে আমার মন থেকেও উঠে গেছিস। আমি তোকে হবু বউ বলি নি সাদিয়াকে বলছি।ও তোকে তো বলা হয়নি আমি সাদিয়াকে বিয়ে করছি। সামনের সপ্তাহে আমাদের বিয়ে। 
কথাটা শুনে আদিবা থ হয়ে গেল সে হতবাক হয়ে সাদিয়ার দিকে তাকাল। সাথে সাথে সাদিয়া মাথা নিচু করে নিল।আদিবা কড়া গলায় প্রশ্ন করল
-"এই তুই মাথা নিচু করছিস কেন? কি বলছেন উনি? তুই সত্যিই উনাকে বিয়ে করবি..?
সাদিয়াকে উত্তর দেয়ার সুযোগ না দিয়ে আদিত্য বলে উঠল,
-"বিয়েটা সাদিয়া করছে না আমি করছি। আর এই ব্যাপারে কারোর মতামত জানার প্রয়োজন মনে করছি না। কেউ চাইলেও এই বিয়ে হবে না চাইলেও হবে... সাদিয়া আমি গাড়িতে যাচ্ছি এক মিনিটের মধ্যে তুই আসবি।
বলে আদি চলে গেল আদিবা চোখ গরম করে তাকাল সাদিয়ার দিকে..
-"এসবের মানে কী সাদিয়া..? তুই কোন প্রতিবাদ করলি না কেন? তারমানে কী তুই ও এই বিয়েতে রাজি..?
-"আপু ভাইয়ার মুখে মুখে কথা বলার সাহস আমার নেই। প্লিজ তুই বাসায় চল আপু তুই পারবি ভাইয়াকে বুঝাতে।আমাকে এতবড় বিপদে ফেলিস না প্লিজ ফিরে চল। 
-'ফিরতে তো হবেই উনি নিজেকে ভাবেন টা কী। যখন যা ইচ্ছে হবে তাই করবেন?
রাগে শরীর রি রি করছে তবুও আদির সাথেই ফিরল আদিবা। আদিবা বাসায় ফিরে কারো সাথে কোন কথা না বলে সোজা আদির ঘরে চলে গেল। আদি গাড়ি পার্ক করে আসতে একটু সময় লেগেছে। সে আনমনে ঘরে ঢুকে একটু থমকে দাঁড়াল। আদিবা তার বিছানায় বসে গোল গোল চোখে তাকিয়ে আছে দেখে প্রশ্ন করল,
-"ঘটনা কী? আপনি আমার ঘরে কি করছেন?
-"আপনার লজ্জা সরম একেবারেই নেই তাই না?
-"এক প্রশ্ন কত বার করিস? একটু আগেই তো প্রশ্ন করেছিলি।
-"আপনি কোন সাহসে সাদিয়াকে বিয়ের কথা বললেন..?
-"কেন না বলার কি আছে? কি নেই আমার যে বিয়ে করতে পারব না।
-"কাউকে আপন করে পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতা থাকা দরকার সেটাই তো নেই।
-"মানে কি বলতে চাইছিস..?
আদিবা উঠে দাঁড়িয়ে উত্তর দেয়ার বদলে ঠাস করে আদির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল। 
আদি অবাক হয়ে তাকাল..
-"সীমা পেরিয়ে যাচ্ছিস কিন্তু আদিবা..আমার ধর্য্যের পরিক্ষা নিস না।
-"ধর্য্যের সীমা তো অনেক আগেই পার করে দিয়েছেন।বড় বোনের সাথে নোংরামি করে এখন ছোট বোনের দিকে নজর দিয়েছেন ছিঃ লজ্জা করল না এত নিজে নামতে...?
আদিবার কথা শুনে হটাৎ করেই যেন আদি পুরো বদলে গেল। চোখ মুখে হিংস্রতা ফুটে উঠেছে আদিবাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আদিবাকে ছুঁড়ে ফেলে দিল।
-"ক ক কী করছেন এসব..?
আদিবার কথা যেন আদির কানে ঢুকে নি সে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিজের শার্ট টা খুলে ছুড়ে ফেল দিল। আদিবা বুঝল আদি নিজের নিয়ন্ত্রন হারাচ্ছে তাই তাড়াতাড়ি উঠে চলে যেতে চাইল কিন্তু সুযোগ পেল না আদি আবারও হ্যাঁচকা টানে আদিবাকে বিছানায় ফেলে দিল।
-"কি করতে চাইছেন? সাবধান কাছে আসবেন না আমি কিন্তু চেঁচাব বাসায় সবাই আছে...
-' Go ahead... 
বলেই আদি আদিবার হাত দুটি চেঁপে ধরল।
-"আ আ আপনি এসব কি করছেন?
-"নোংরামি... 
-"মানে কো আমি কিন্তু এবার সত্যি চেঁচাব। 
-"সমস্যা নেই আমার রুম সাউন্ড প্রুফ। 
বলেই আদি একটানে আদিবার জামার একাংশ ছিড়ে ফেলল।তারপর আদিবার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিল
আদিবা ভয়ে কুঁকড়ে উঠল নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় নিজেকে হাত পা ছুড়তে লাগল..
আদিবা বাঁধা দিচ্ছে দেখে আদি মুখ তুলে হাত দুটো ছাড়িয়ে নিয়ে আদিবার ওড়না দিয়ে হাত দুটি বেঁধে দিল। আদির চোখ থেকে আগুন ঝড়ছে। নাক মুখ লাল হয়ে গেছে। আদিবা একমনে কেঁদে চলেছে.. কিন্তু আদি তাতে পাত্তা দিল না। আদিবার চোয়াল চেপে ধরে বলল,
-"কি করতে যাচ্ছি বুঝেছিস নিশ্চুই..? শুরু করব?
-"ভ ভ ভাইয়া...
-"মাফ চা...বল আর কোনদিন আপনার চরিত্র নিয়ে কথা বলব না।
আদিবা উত্তর দিল না। আদি আবারো ধমকে বলে উঠল, 
-"এক থেকে তিন গুনব এর মধ্যে মাফ না চাইলে...
-"আর কোনদিন আপনার চরিত্র নিয়ে কিছু বলব না।
-"এই তো গুড গার্ল..আমি পৃথিবীতে একটা মেয়েকে খা*রাপ চোখে দেখেছি আর সেটা তুই...সাদিয়াকে কুনজরে দেখা তো দূর ওর দিকে আমি কোনদিন তাকাইও নি...
আদিবা কান্নার জন্য কিছু বলতে পারছেনা...
-"হয়ত ভাবছিস তাহলে কেন বিয়ে করব তাই না..? আসলে আমি তোকে আমার শালিকা বানাতে চাই তাই সাদিয়াকে বিয়ে করব। যাইহোক এই ঘরে আজ যা ঘটল সেটা যেন কেউ জানতে না পারে যদি জানে যেটুকু অসম্পূর্ন রেখেছি সেটাও পূরণ করে ফেলব...
-"আপনি কী মানুষ...?
-"নাহ কোনদিন ছিলাম ও না...চুপচাপ ঘুমা আমি আজ তোর রুমে ঘুমাব এই অবস্থায় বাইরে যাওয়ার দরকার নেই।

চলবে..!!

চলবে ...

৩১তম পর্ব পড়তে এখানে ট্যাপ/ক্লিক করুন


লেখক সংক্ষেপ : 
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন