উপন্যাস        :         বেপরোয়া ভালবাসা
লেখিকা        :          মোনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মোনা হোসাইনের “বেপরোয়া ভালবাসা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ঠিক কবে নাগাদ লেখা শুরু করেছেন তা এখনাব্দি জানা যায়নি। তবে তা জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
বেপরোয়া ভালবাসা || মোনা হোসাইন
বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন

৩৩তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন (পর্ব - ৩৪)

-"আপনি জানেন আপনার মাথায় যে সমস্যা আছে..?
আদি শুনেও না শোনার ভান করে উত্তর দিল না। তবে আদিবাও থেমে নেই নিজমনে আদিকে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে। আদি তাতে কোন পাত্তা না দিয়ে আদিবাকে টানতে টানতে নিয়ে বাসায় নিয়ে ফিরল।বাসায় ঢুকেই আদিবা আবারো চেঁচিয়ে উঠল,
-"কখন থেকে এত কথা বলে যাচ্ছি আপনার কানে যাচ্ছে না?
-"যাবে না কেন? তুই বলছিস আমিও শুনছি কিন্তু উত্তর দেয়ার প্রয়োজন মনে করছি না..
-"উত্তর তো দিতেই হবে আপনি বিয়েটা ভেঙে দিলেন কেন?
-"ভদ্র বাড়ির মেয়েরা রেস্টুরেন্টে বউ দেখাতে যায় না।
-"বিদেশ ফিরত শিক্ষিত একজন ছেলের কাছ থেকে এমনটা আশা করা যায় না। যুগ পাল্টেছে এখন এভাবেই বিয়ে হয়।
-"আমাদের বাড়িতে হবে না চুপচাপ নিজের ঘরে যা... 
-"সরাসরি বলুন না আপনার হিংসা হচ্ছে জেলাস ফিল করছেন। 
-" তোর বিয়ে হবে জন্যে আমি জেলাস ফিল করব কেন? সাদিয়া কি তোর চেয়ে খারাপ দেখতে..?আমি মুখে যা বলছি মনেও তাই তোর বিয়ে ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্যে নয় বরং বাড়ির সম্মান বাঁচাতে এমন টা করেছি।
আদির কথায় আদিবার মন খারাপ হল তাই আর কথা না বাড়াতে চাইল না। আদি আবার বলল,
-"তোর যেহেতু বিয়ে করার এতই ইচ্ছে হয়েছে তখন সভ্য নম্র ভদ্রভাবে বিয়ে কর। ম্যাট্রিমনি থেকে আজ বিয়ে করবি কাল দেখবি ছেলে আগেই ৩ টা বিয়ে করে বসে আছে। বড় ভাই হয়ে এটা তো মেনে নিতে পারি না।
-"তারমানে আপনি এখনো বলবেন আমায় বিয়ে করতে চান? (মনে মনে) নাকি আপনি সত্যিই আমায় বিয়ে করতে চান। এই যে ভালবাসা এই পুরোটাই অভিনয় আপনি আসলে আমায় ভালবাসেন না? ভালই যদি বাসবেন এখনো কেন বলছেন না? নাহ আমাকে জানতেই হবে আপনার মনে আমি সত্যিই আছি নাকি নেই?
আদিবা কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। সারাদিনে আর আদির সাথে দেখা হয় নি আদিবার। কারন আদি নিজের ঘর থেকে সারাদিন বের হয়নি আশ্চর্য বিষয় আদি আজ একবারো আদিবাকে ডাকে নি। আদির হুট করে বদলে যাওয়াটা আদিবা ভাল লাগল না। অজানা কারনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। যাইহোক প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে আদি প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় কফি খায়।এবার অন্তত আদিবাকে ডাকবে সে আশায় আগেই কফি বানিয়ে রেখে দিল।
সন্ধ্যা ৬ টা হবে আদি নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে নিচে আসল। আদিবা কফির মগ হাতে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়াতেই আদি আদিবাকে দেখেও না দেখার ভান করে ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে বলল সাদিয়া আমাকে কফি দিয়ে যা তো,...
আদিবা অবাক হয়ে বলল,
-"প্রতিদিন তো আমি কফি দেই...
-"আর দিতে হবে না এখন থেকে আমার সব কাজ সাদিয়াই করবে।যাইহোক তোকে একটু পর দেখতে আসবে রেডি হয়ে নে...
আদিবা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল,
-"দেখতে আসবে মানে..?
-"আমার পরিচিত এক সিনিয়র ভাই পাত্রী খুঁজছে আমি তোর কথা বলায় বললেন দেখতে আসবেন...
-"আ আ আপনি...??
-"আমতা আমতা করার মানে কি?
-"আপনি সত্যিই আমার বিয়ে দিতে চান..?
-"অবশ্যই তোর বিয়ে নাহলে তো আমাদের টাও হবে না।তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তোকে বিয়ে দিতে হবে এখন এত কথা না বলে রেডি হ গিয়ে। 
আদিবা যাচ্ছে না দেখে আদি জুই কে ডেকে বলল,
-"ওকে একটু সাজিয়ে দে তো জুই। শাড়ির দরকার নেই জামা পরে মাথায় ওরনা দিলেই হবে।
-"সাজিয়ে দিব বলতে বুঝিনি ভাইয়া...
-"পাত্রী দেখতে আসছে তাই সাজিয়ে দিবি।
-"কিন্তু ভাইয়া
আদি জুইকে কথা শেষ করতে দিল না অযথাই ধমকে বলে উঠল,
-"তোরা সবাই দেখছি বেয়াদব হয়ে গিয়েছিস...এক কথা আমি দুবার বলিনা।এক্ষনি আদিবাকে নিয়ে যা তানাহলে আজ সবার কপালে দুঃখ আছে।
আদিবা কিছু বলার সুযোগ পেল না।আদি কি করতে চাইছে আদিবা বুঝলো না। জুই তাকে সাজাতে সাজাতেই আদির কন্ঠ ভেসে আসল,
-জুই পাত্র পক্ষ এসেছে।
আদিবা কিছুই বুঝতে পারছে না কিন্তু নিচে এসে দেখল জমজমাট অবস্থা টেবিল ভর্তি নাশতা ফলমূল। একপাশে বসে আছে আদিসহ বাড়ির বড়রা অন্যপাশে ২ জন অপরিচিত ছেলে এবং একজন ভদ্রমহিলা।আদিবাকে জুই নিয়ে আসতেই আদি উঠে গিয়ে আদিবাকে এগিয়ে আনল নিজের পাশের সোফায় বসিয়ে বলতে শুরু করল,
-"নিজের বোন বলে বলছি না। আদিবা যে শুধু দেখতে সুন্দরী তা কিন্তু না ওর আচার ব্যবহারো খুব ভাল। সারাদিন বকা দিলেও টু শব্দ করে না।রান্না বান্না বাসার কাজ সব পারে।
আদি আজ হটাৎ আদিবার প্রশংসা করছে ব্যাপারে কারোরি হজম হল না একে অপরের মুখ দেখা দেখি করছিল ঠিক তখনী আদি বলে উঠল,
-"আশা করছি ওকে আপনাদের ভাল লেগেছে।ভাইয়া আপনি চাইলে আদিবার সাথে পারসনালি কথা বলতে পারেন। বিয়ের আগে দুজনের মাঝে ভাল বন্ডিং হওয়া জরুরী।আদিবা উনাকে নিয়ে তোর ঘরে যা. আদিবা এবারেও কিছু বলতে পারল না। আদি জোর করে আদিবাকে উপড়ে পাঠিয়ে দিল।আদিবা আদির এমন ব্যবহারের কারন খুঁজে পেল না আদিকে সে একটু জেলাস ফিল করাতে চেয়েছিল কিন্তু আদি যে সত্যি সত্যি বিয়ের আয়োজব করে বসবে কে জানত। আদিবা কিছু বলছে না দেখে পাশের ছেলেটি বলল,
-"আমি আশিক,আপনার কথা আদি যতটা বলেছিল আপনি তার চেয়েও অনেক বেশি সুন্দরী..আমার এই বিয়েতে কোন অমত নেই। আপনার কি আমাকে পছন্দ হয়েছে? আদিবা উত্তর দিতে পারল না চোখ জলে ভরে আসল। আদিবা মাথা নিচু করে জবাব দিল,
-"ক্ষমা করবেন আমি এই বিয়ে করতে পারব না।আমি অন্য একজনকে ভালবাসি...
বলেই আদিবা কেঁদে দিল আর দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গেল।

চলবে ...

৩৫তম পর্ব পড়তে এখানে ট্যাপ/ক্লিক করুন


লেখক সংক্ষেপ : 
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন