উপন্যাস        :         বেপরোয়া ভালবাসা
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “বেপরোয়া ভালবাসা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ঠিক কবে নাগাদ লেখা শুরু করেছেন তা এখনাব্দি জানা যায়নি। তবে তা জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন
বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন


৪৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

বেপরোয়া ভালবাসা || মনা হোসাইন (পর্ব - ৪৪)

আদিবার আচারন আদিকে অবাক করলেও আদি ততটা গায়ে মাখল না। সে আদিবার জন্য রান্না করে তাকে খায়িয়ে দিয়ে নামে মাত্র বিশ্রাম নিয়েই অফিসে ছুটল। যাই হয়ে যাক আজ অফিস মিস করা যাবে না। আদির চোখ মুখে ক্লান্তির ছাপ তবুও তা উপেক্ষা করে মিটিং রুমে ঢুকল। 
আদির মিটিং শুরু হতেই সশব্দে তার ফোন বেজে উঠল। মিটিং এর মাঝে ফোনের আওয়াজে সবাই মোটামুটি বিরক্ত হয়েছে তবে আদি যেহেতু অফিসের বস তাই এইটুকু এক্তিয়ার তার আছে।
সে ফোনটা হাতে নিয়ে চোখ রাখতেই দেখল আদিবা ফোন করেছে। আদি তাড়াতাড়ি ফোন তুলে সাইডে গেল। 
-"হ্যালো আদিবা..? 
-"তা নয়ত কে?আমার ভুতে ফোন করেছে আপনাকে? 
-"আদিবা আমি মিটিং এ আছি তোকে কিছুক্ষন পর ফোন দেই..? 
-"আমার চেয়ে মিটিং বেশি হল আপনার কাছে...? 
-"উফফ কিসব বলছিস? 
-"আপনিই তো বললেন। 
-" আমি বলেছি মিটিং শেষ করে কল দিব। 
-"কিন্তু আমি এখনী কথা বলতে চাই। 
-"বেশ দরকারী কিছু বলার থাকলে বলে ফেল সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। 
-"আমি আপনাকে ভালবাসি। 
আদিবার কথায় আদি স্মিথ হাসল। হাসি মুখেই উত্তর দিল। 
-"আমি জানি আর এর বিপরীতে আমি কী উত্তর দিব সেটাও তুই জানিস। 
-"আমি জানলে হবে তো নিজের মুখে উত্তর দিন। 
-"কী ছেলেমানুষী হচ্ছে?  আমি মিটিং রুমে,সবার সামনে কী করে বলব? 
-"তারমানে বলবেন না। 
-"ছোট বাচ্চাদের মত কি হচ্ছে এসব? তুই কী ছোট বাচ্চা বুঝিস না কিছু ? 
-"স্বামীর সাথে আহ্লাদ করার বয়স আমার নেই সেটাই বুঝাতে চাইছেন? 
-"আদিবা আমি ব্যাস্ত আছি..এখন ঝগড়া করার পরিবেশ নেই  যা যা বলার আছে বাসায় ফিরলে
বলিস। 
-"তাহলে এখনী ফিরে আসুন। 
-"মানে কী..? 
-"আমার একা একা ভাল লাগছে না প্লিজ আসুন না... 
-"তুই তো জানিস আজ আমার জরুরী কিছু মিটিং আছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করে চলে আসব ঠিক আছে? 
-"এতক্ষন আমি একা একা কী করব? আপনি এখনী চলে আসুন প্লিজ প্লিজ প্লিজ... 
-"তুই কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করছিস আদিবা। যাইহোক সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে রাখছি। পরে কথা হবে বলেই আদিবাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন টা কেটে দিল আদি। 


আদি এসে মিটিং এ যোগ দিল। মিটিং চলাকালীন সময় আরও কয়েকবার ফোন আসল। বারবার ফোন বাজায় সবাই বিরক্ত হচ্ছে। শুধু ভয়ে বলতে পারছে না কিন্তু ম্যানেজার সাহেব বলেই বসল, 
-"স্যার আপনি ফোনের ঝামেলা আগে মিটিয়ে নিন। এভাবে মিটিং এ মন বসাতে পারবেন না। 
ম্যানেজারের কথায় আদির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল এমনিতেই সারারাত না ঘুমিয়ে মেজাজ খিটখিটে ছিল। আদি মোটামুটি ধমক দিয়েই বলল, 
-"আমাকে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না সেটা নিশ্চুই আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে না তাই না? 
-"সরি স্যার... 
আদি জবাব না দিয়ে ফোনটা তার এসিস্ট্যান্ট এর কাছে দিয়ে বলল, 
-"ফোন টা নিয়ে যাও আবার ফোন আসলে ফোন টা ধরে বলবে স্যার ব্যাস্ত আছেন আপনাকে পরে ফোন করবেন। 
আদির এসিস্ট্যান্ট ফোনটা নিয়ে মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে আদির পার্সনাল রুমে রেখে আসল। এরমধ্যে আর ফোন আসল না। 
এসিস্ট্যান্ট ফিরে আসতেই আদি জিজ্ঞাসা করল ফোন এসেছিল? 
এসিস্ট্যান্ট উত্তর দিল 
-"আর ফোন আসেনি। 
আদি স্তস্তি পেল। আদি মিটিং এ মন দিতে চাইলেও কিছুতেই যেন মন বসছে না। বসবে কী করে আদির মন যে পড়ে আছে আদিবার কাছে মেয়েটা বাসায় একা একা কি করছে কে জানে। যত তাড়াতাড়ি মিটিং শেষ হবে বাসায় যেতে হবে। 
কিন্তু অফিসে কিছু ঝামেলা হওয়ায় আদি তাড়াতাড়ি ফিরতে পারল না। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল। বাসায় ফিরে আদি অবাক হল আদিবার হাতে বেন্ডেজ দেখে আদির মাথা চক্কর দিল। তাড়াহুড়ো করে আদিবার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করল, 
-"হাতে কি হয়েছে আদিবা... 
আদিকে দেখেই আদিবা রাগে ফুসফুস করতে লাগল।


-"খবরদার আমার কাছে আসবেন না এতক্ষন যেখানে ছিলেন সেখানেই যান..বলে আদিবা সরে গেল। 
-"এসব কী ধরনের ফাযলামি? ব্যাথা পেয়েছিস কি করে? 
-"আমার ব্যাথা আমি বুঝে নিব আপনার বুঝার দরকার নেই তো... 
-"আদিবা ছেলেমানুষী বাদ দে দেখি কী হয়েছে... 
-"আপনি আমার কাছে আসবেন না বলছি। বাড়াবাড়ি করলে খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম। 
আদি বেশ বিরক্ত হয়ে রাগে উঠে গেল। আদিবাও বাঁধা দিল না। আদি উঠে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসল। সে মনযোগ দিয়ে কিছু একটা দেখল তারপর আদিবার কাছে এসে কিছু না বলে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিল। আদিবাও কড়া চোখে তাকাল। 
-"খুব বাড় বেড়েছিস তাই না..? বেশ এখন দেখব তুই কত বাড়তে পারিস বলেই আদি জিন্স থেকে বেল্ট খুলে আদিবার সামনে দাঁড়াল। তবে আদিবা বরাবরের মত আদিকে ভয় পেল না বরং সরাগী চোখে তাকাল আদির দিকে। চোখ দুটি যেন যেন ভিতরের সব রাগ উগড়ে দিতে চাইছে।

চলবে ...

৪৫তম পর্ব পড়তে এখানে ট্যাপ/ক্লিক করুন


লেখক সংক্ষেপ : 
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন