উপন্যাস       :         অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111111111111

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১০)

আজকে সকাল থেকে মন খারাপ।বিজয় দিবস এর জন্য সব জায়গায় তোড়জোড় চলছে।তাতে আমার কি আমাকে তো আম্মু কোথাও যেতে দিবে না।খুব কান্না পাচ্ছে।
মিষ্টি আপু আকাশ ভাইয়া আর আহসানও ঘুরতে গিয়েছেন।আজকে সারাদিন অনলাইন ছিলেন না।উনারা ঘুরছে একসাথে।আমি আর কল দেই নেই।দিলে আকাশ ভাইয়া দেখে ফেলতে পারে।মিষ্টি আপু জানে।আহসান উনাকে সব বলে দিয়েছেন।এটা আমার একটু ও পচ্ছন্দ হয় নেই।আমি চেয়েছিলাম সব কিছু গোপনে থাকুক। কিন্তু আহসান তার আগেই মিষ্টি আপুকে বলে দিয়েছে।এগুলো ভাবছিলাম আর বিকি ভাইয়ার ডাক পড়লো।
সিমরানঃকি হয়েছে?ডাকছো কেন?
বিকিঃএলাকায় চেয়ার খেলা হচ্ছে চল। 
সিমরানঃআমি তো দৌড়ি লাফ এ জিতেছি।আর লাগবে না।
বিকিঃআরে চল না। বড় ছোট সবাই আসে।পারভীন ফুপ্পি ও খেলবে।
সিমরানঃআম্মুও খেলবে!!
বিকিঃহুম চল।
যেয়ে দেখি বড় ছোট সবাই জড়ো হয়েছে।আম্মু আমাকে অনেক কিছু শিখালো কিভাবে জিততে হয়।খেলা শুরু হলো।এক এক করে সবাই বাদ হতে লাগলো।শেষে অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটলো।আমি আম্মু আর এক জন আন্টির মাঝে প্রতিযোগিতা। মানে আমরা ফাস্ট সেকেন্ড থাড।ব্যাস আবার গোল গোল ঘুরতে লাগলাম।শেষে আমি বসে পড়লাম।তাকিয়ে দেখি আন্টি আর আম্মুর মাঝে ড্র।
তারপর আমি ইচ্ছে করে উঠে গেলাম।মানে আমি থার্ড। তারপর আম্মু আর ওই আন্টি।আর আম্মু জিতে গেলো।
সবাই প্রশংসা করতে লাগলো যে আমি আর আম্মু ১ম ও ৩ য় হয়েছি।মনটা ভালো হয়ে গেলো।যাক কিছুতো ভালো হয়েছে।
সারাদিন এভাবেই কেটে গেলো।সন্ধ্যা সময় প্রাইজ নিতে হবে বলে কেয়া মনি আমাকে জোর করে সাজালো।শাড়ি পরলাম আমি।তারপর সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
আমি একটু সাইডে যেয়ে আহসানকে কল করি।
আহসানঃহ্যা।হ্যালো বলো।
সিমরানঃকি করেন?
আহসানঃএইতো ফুচকা খাচ্ছি সবাই মিলে।একটু পরই এসে পরবো।
সিমরানঃও আচ্ছা।
আহসানঃতুমি কি করো?
সিমরানঃকিছুনা বোর হই।আমাকে তো আর কেউ ঘুরতে নিয়ে যাবে না।
আহসানঃআচ্ছা থাকো।ভাইয়া আছেতো পরে কথা বলি।
সিমরানঃআচ্ছা।
মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।আমি যেয়ে কেয়া মনির পাশে বসে মেকাপ তুলতে নিলে কেয়া মনি বাধা দিলো। খবরদার মেকাপ উঠাবি না।
_কেনো!!
_এখনো প্রাইজ আনিস নাই।
_ধুর ভাল্লাগেনা।
আমি ফেসবুক ঘাটতে লাগলাম।ঘন্টাখানেক পর মিষ্টি আপু আসে।আমি পরো অবাক।এ কেমনে সম্ভব!
মিষ্টিঃকেমন আছিস বোনু?
সিমরানঃতুমি এখানে!!তোমরা ঘুরতে গিয়েছিলে?
মিষ্টিঃহ্যা। গিয়েছিলামতো। তোর ভাইয়া আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।
সিমরানঃওহ!আহসান তাহলে বাসায় চলে গিয়েছেন। (যাক এখন উনাকে অনলাইন এ পাওয়া যাবে)
মিষ্টিঃচল ঘুরে আসি।
সিমরানঃআম্মু দিবে না।
মিষ্টিঃআচ্ছা দেখতেসি।দাড়া।
মিষ্টি আপু আম্মুর কাছে গেল।
মিষ্টিঃআন্টি।আমি সিমরানকে আমার সাথে নিয়ে যাই।আবার দিয়ে যাবো। ১ ঘন্টার জন্য। প্লিজ।
আম্মু দ্বিধাহীনতায় ভুগছে।
কেয়াঃযেতে দাও ফুপ্পি।এখান থেকে এখানইতো। তাড়াতাড়িই এসে পরবো।
আম্মুর কি হলো কে জানি রাজি হয়ে গেলো।
পারভীনঃঠিক আসে যাও।ওরে দিয়ে যেয়ো।একা ছেড়ে না। একসাথেই থেকো।
মিষ্টিঃআচ্ছা।
আমি কেয়া মনিকে জড়িয়ে ধরলাম।
সিমরানঃধন্যবাদ। 
কেয়াঃযা তাড়াতাড়ি এসে পরবি। প্রাইজ নিতে হবে কিন্তু। 
সিমরানঃআচ্ছা।
আমি মিষ্টি আপুর সাথে বের হয়ে গেলাম।কিন্তু কেন জানি খুশি হতে পারছি না।কারন হয়তো আহসান অনলাইন এ এসে আমাকে পাবে না।সারাদিন ও কথা হয় নেই।এখন ও হবে না।ভালো লাগছে না।মিষ্টি আপু না আসলেই ভালো হতো। উনার সাথে কথা বলতে পারতাম।
মিষ্টিঃকি হয়েছে? মন খারাপ কেন?
সিমরানঃএমনেই।
মিষ্টিঃও আচ্ছা।
মিষ্টি আপু কাকে জানি কল করলো।
মিষ্টিঃহ্যা।কই তুমি?গলির বাইরে?আচ্ছা আসতেসি।
সিমরানঃআমাদের সাথে কি অন্য কেউ ও যাবে?
মিষ্টিঃহ্যা।আমার ফ্রেন্ড যাবে।
সিমরানঃওহ।কোথায় যাচ্ছে আমরা?
মিষ্টিঃএইতো এখানে কোনো ক্যাফেতে কফি খেয়ে চলে আসবো।
সিমরানঃআচ্ছা।
যাক ভালোই হয়েছে। তাড়াতাড়ি এসে পরবো এসে আহসান এর সাথে কথা বলতে পারবো।
সামনে তাকাতেই আমি ফ্রিজ হয়ে গেলাম।নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। এটা আমি কি দেখছি।আমার সামনে আফিফ আহসান দাঁড়িয়ে আছেন।
মিষ্টিঃকেমন দিলাম?প্লানটা আহসান এরই ছিলো।ওই আমাকে বললো তোকে বাসা থেকে নিয়ে আসতে। 
আমি কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।চোখ দিয়ে টুস করে এক বিন্দু পানিও গড়িয়ে পরলো।কত দিন পর মানুষটাকে দেখলাম।
আহসানঃমিষ্টি ভাবি এখান এর সব থেকে নামকরা ক্যাফে বা রেস্টুরেন্টে চলো।তোমার বোনকে আজকে  অনেক স্পেশাল কিছু খাওয়াবো।সারাদিন কেদে কেটে শুকিয়ে গিয়েছে।
আমি শুধু শুনছি। কিছুই বলতে পারছি না।সারপ্রাইজ এর রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছি না।
আমাদের ওই এলাকার একটা নাম করা রেস্টুরেন্টে গেলাম আমরা।সমস্যা বাধলো সিট নিয়ে। রেস্টুরেন্টে দুই পাশেই জোড়া জোড়া সিট।এক পাশের জোড়া সিট এর একপাশে আহসান বসেছেন।আর একপাশের জোড়া সিট এ একপাশে মিষ্টি আপু।এখন আমি কোথায় বসবো।
আহসান এর চোখ বলছে তার পাশেরটায় বসতে।আর মিষ্টি আপুও আমাকে বলছে আমি নাকি তার পাশেরটাই বসবো।কেমনটা লাগে।আহসান এর ইচ্ছায় পানি ঠেলে আমি মিষ্টি আপুরটাতেও বসলাম।আহসান ব্যাথিত নয়নে আমার দিকে তাকালেন।আমার কিছুই করার ছিলো না।
আহসানঃকি অডার দিবো?কি খাবে তোমারা?
মিষ্টিঃআমি কফি খাবো।
আহসানঃআর আমি চকলেট মিল্ক শেক।তুমি কি খাবে সিমরান?
সিমরানঃচকলেট মিল্কশেক।
মিষ্টিঃবাহ।দুইজন এর এতো মিল।
আমি আহসান এর দেখাদেখি অর্ডার করেছিলাম।এমনিতে চকলেট আমি খাই না।চকলেট কি মিষ্টি জাতীয় কিছুই আমি খাই না।এখন এদের বলাটা লজ্জাজনক তাই চুপ থাকাই শ্রেয়।
ওয়েটার অর্ডারগুলো নিয়ে আসতেই আমি আহসান এর পাশের সিটে যেয়ে বসলাম।আহসান আর মিষ্টি আপু দুই জনই আমার এহেমকান্ডে পুরো অবাক।
সিমরানঃসমান সমান। অর্ডার আনা পর্যন্ত ওখানে ছিলাম। আর এখন এখানে।
মিষ্টি আপু মুচকি হাসলো।
সবাই সবার মতো খেতে শুরু করলাম।আহসান নিজেরটাতে দুই চুমুক দিয়ে আমারটা টেনে নিলেন।
আমি দেখেও না দেখার ভান করে আছি।মিষ্টি আপু কথা বলায় এতই ব্যস্ত যে এগুলো ক্ষুনাক্ষর ও টের পেলো না।
এখানে আহসান আমারটা চুমুক দিয়ে আমাকে দিয়ে দিলেন।কেমনটা লাগে।আমি উনার মতো লাজ লজ্জার মাথা খাওয়া পাবলিক থাকলে তারটাতেও একটা চুমুক দিতাম। কিন্তু আমি খুবই লাজুক প্রকৃতির।আমার এই ভদ্রতা যে আমাকে আরো লজ্জায় ফেলবে।তা আমার ভাবনারও বাইরে।
আহসান টেবিল এর নিচে আমার হাতটা তার হাতের মাঝে মুষ্টিবদ্ধ করলেন।তারপর মাথাটা টেবিল এর উপর রাখলেন।
মিষ্টিঃমাথা ব্যথা করছে?
আহসানঃহুম। একটু। সমস্যা নাই। আমি ঠিক আছি।
মিষ্টিঃআচ্ছা।
আমি আহসান এর হাতটা চেপে ধরলাম।
সিমরানঃআহারে। আহসান সারাদিন ঘুরে টুরে একটু বিশ্রাম ও নেয় নেই আমার কাছে এসে পরলেন।এই জন্যই উনার মাথা ব্যথা করছে  হয়তো।
এগুলো ভাবছিলাম আর মিষ্টি আপুর সাথে কথা বলছিলাম।তখনই আহসান আমার হতে তার ঠোঁট ছোয়ালো।আমি পুরোটা কেপে উঠলাম।
মিষ্টি আপু সন্দেহ করবে বলে উপর থেকে নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখছি।কিন্তু ভিতর থেকে সারা গায়ে এক অজামা অনুভূতি অনুভব করতে লাগলাম।আস্তে করে হাতটা সরিয়ে নিলাম।
আহসান ও নরমালি বসে নিজের ড্রিংকস পান করতে লাগলেন।যেন কিছু হয়ই নেই।
এখানে আমি এখন উনার কুমতলবটা বুঝলাম।কেন উনি মাথা নিচে নামালেন। হাত ধরলেন।ইশশশ। কি লজ্জা।
সিমরানঃআচ্ছা।এখন আমি যাই।দেরি হয়ে যাবে আমার।
মিষ্টিঃআর এ থাক। দেরি হবে না।আমাদের বাসায় চল।
আহসানঃহুম।আরেকটু থাকো।
আমি আর কি করবো। নিরুপায় হয়ে তাদের সাথে গেলাম মিষ্টি আপুর বাসায়।এখানে মনে চিন্তা লেগে আছে। আম্মু মা রেগে যায়।
মিষ্টি আপুর বাসার পাচ তালার ফ্লাটটা নতুন বানানো হয়েছে।তাই মিষ্টি আপু আমি আর আহসান সেখানে গেলাম।সাথে মিষ্টি আপুর ছোট ভাইও ছিলো।ফ্লাট পুরোটা অন্ধকার।
হুট করে মিষ্টি আপুর ফোনটা বেজে উঠলো।
মিষ্টিঃআকাশ কল দিয়েছে।তোরা থাক আমি আসছি।
মিষ্টি আপু চলে গেলো।মিষ্টি আপু চলে যেতেই মিষ্টি আপুর ছোট ভাই খেলতে লাগলো।
আহসানঃআচ্ছা। পিচ্চু। তুমি লুকাও অন্ধকার এ। আমি খুজি তোমাকে আর সিমরানকে। 
পিচ্চি লুকাতে চলে গেলো।পিচ্চি যেতেই আহসান আমার কোমর চেপে ধরে তার বুকের সাথে আমার পিঠ মিশিয়ে নিলেন।তারপর আমাকে সেভাবেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।আমি তাকে ছাড়ানোর যত চেষ্টা করছি উনি আমাকে ততই চেপে ধরছেন।
সিমরানঃকি করছেন।পিচ্চি দেখে ফেলবে তো।
আহসানঃদেখবে না।কত দিন পর তোমাকে দেখেছি জানো।সকাল থেকে ভাবীকে মানিয়েছিলাম তারপর আসার সময় মেনেজ করে ভাইয়াকে বিদায় করলাম।এতো কিছু করে তারপর তোমাকে পেয়েছি।
আহসান আমার গালে তার নরম ঠোঁট গুলো ছোয়ালো।পিচ্চির পায়ের শব্দ শুনে ছেড়ে দিলো।
পিচ্চিঃতোমরা দুই জন এখানে কি করছিলে?
আহসানঃআমি তোমার সিমরান আপুকে ধরে ফেলেছিলাম।
পিচ্চিঃওহ জানো। আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম।
সিমরানঃআহারে বাচ্চাটা।আসো আমার সাথে।
মিষ্টি আপু এসে পরেছে। 
মিষ্টিঃচল ছাদে যাই।
আহসানঃআচ্ছা চলো।
আমরা সবাই ছাদে চলে আসলাম।ছাদে আপুর চাচাতো ভাই শান্ত ভাইয়ার সাথে দেখা হয়ে গেলো।আমি উনাকে আগে থেকেই চিনি। তাই কেমন আছে না আছে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম।
কথার মাঝখানে হুট করে আহসান 
   ~জয় বাংলা 
বলে চেচিয়ে উঠলো।আমার কলিজা বের হয়ে আসার উপক্রম। এতো ভয় পেলাম।হাত পা ঝিম ঝিম করছে।আমি স্থির দাঁড়িয়ে আছি।
মিষ্টিঃআমি ভয় পায় নেই।ওর এই অভ্যাস আগে থেকেই।হুট হাট চেচিয়ে উঠে। তাই আমি ভয় পায় নেই।
শান্তঃএটা কি ছিল ভাই?এমন করলে তো হার্ট এট্যাক এ রোগী সব মরে যাবে।
আমি যে এখানে জমে আছি কারো কোনো সেন্স নেই।কিন্তু এক জন এর চোখের তা ঠিকই পরলো।আহসান আশেপাশের সব ভুলে যেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করছে।
কি হয়েছে?অনেক ভয় পেয়েছো?তুমি ঠিক আছো?
মিষ্টি আপু আমার হাত ধরলো।
মিষ্টিঃওর হাত ঠান্ডা বরফ হয়ে গিয়েছে।অনেক ভয় পেয়েছে।
আহসানঃনরমাল হও।কিছু হয় নেই তো।
এতক্ষন পর আমি মুখ খুললাম।এমন কেউ করে?মানুষ মেরে ফেলবেনতো আপনি।
আহসানঃসরি।আমি বুঝতে পারি নাই তুমি এতো ভয় পাবে।সরি।
সিমরানঃহুম।ইটস ওকে।
এখানে শান্ত ভাইয়া জোরে গান ছেড়ে নাচতে লাগলেন।শান্ত ভাইয়া মাইকেল জ্যাকসেন এর মতো ডান্স করেন।প্রফেশনাল ডান্সার মনে হয় তার নাচ দেখলে।
সিমরানঃভাইয়া।অনেক সুন্দর নাচেন।
মিষ্টিঃহ্যা রে।আমার থেকেও ভালো।
সিমরানঃহুম।
কথাটা যে আমার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা আহসান এর মস্তিষ্কে এতো জোরে আঘাত করবে তা আমার কল্পনার ও বাইরে ছিলো।
আহসানঃভাবি দেরি হচ্ছে। বাসায় যাবো আমি।
মিষ্টিঃএখনই তো আসলাম। একটু পর যাই।
আহসানঃনা।আমি এখনই যাবো।
আমাদের ফেলেই হন হন করে চলে গেলেন।আমি এখন ও বুঝতে পারছি না আহসান এর এমন আচরনের কারন।
নিচে নামতে মিষ্টি আপুর আম্মু আহসানকে রাতের খাওয়া দাওয়া করে যেতে বললেন। কিন্তু উনি বের হয়ে গেলেন।
যাওয়ার সময় মিষ্টি আপুদের পাশের ফ্লাটে যেটাতে আমরা ছিলাম সেখানের নতুন ভাড়াটিয়া একজন ভাবী।মিষ্টি আপুকে ডাক দিলেন।আহসান ও দাঁড়িয়ে ছিলো।
মিষ্টি আপু তার সাথে আহসানকে পরিচয় করিয়ে দিলেন।আহসান উনার সাথে হেসে কথা বলতে লাগলো।উনাকে দেখে এখন মনেই হচ্ছে না উনি রেগে আছিলেন এতোক্ষন।
উনাদের কথাপকথন ঠিক এমন ছিলো~
_তুমিতো অনেক সুন্দর। তো বিয়ে কবে করছো।তোমার বড় ভাইতো করেই ফেলেছে।এখন তোমার নাম্বার।
_হ্যা। বিয়েতো করে ফেলি।কিন্তু ভালো মেয়ে কই বলেন।
_আচ্ছা। কেমন মেয়ে লাগবে তোমার?আমাকে বলো আমি খুজে দেখি।
_আমারতো অনেক মর্ডান মেয়ে লাগবে।ছোট ছোট ড্রেস পরবে।চুলগুলো ছোট আর স্টাইলিশ থাকবে।আমার আবার লম্বা চুল ভালো লাগে না।তাছাড়াও সুন্দর গান গাইতে হবে। আর ভালো নাচতেও পারতে হবে।
_ওহ তাহলে তোমার মডেল বউ লাগবে।
_হুম।
মিষ্টি আপু একবার আমার চেহারা দিকে তাকাচ্ছে। আর একবার আহসান এর দিকে।আমার উনার কথা শুনে রাগে কান থেকে ধুয়া বের হচ্ছে।উনি যা বর্ননা দিলেন সব গুলো আমার উলটো।শখ কতো। পাজি লোক।
আমিও তার থেকে এক কাঠি উপরে।
সিমরানঃহ্যা ভাবী। ঠিকই তো। এখন কার যুগে পর্দাশীল লম্বা চুল এর মেয়ে আর কেই বা খুজে।আপনি তাহলে বিয়াইয়ের জন্য এমন মেয়ে দেখা শুরু করে দেন।
আচ্ছা আমি দেখছি। ভাবী লাইনটা শেষ করার আগেই আহসান বড় বড় পা ফেলে বের হয়ে গেলো।
ভাবিঃওর কি হলো?
মিষ্টিঃওর হয়তো দেরি হচ্ছে। আমরা যাই। 
রাস্তায় এসে দেখি মহাশয় ভাব নিয়ে দুই হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।মিষ্টি ভাবি যেতেই রিকশা নিয়ে নিলেন।আমাকে কথা বলার সুযোগই দিলেন না।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


১১তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন