উপন্যাস       :        প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১২ই ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত - Bangla Golpo - Kobiyal
প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত

১৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমের জোয়ারে ভাসলো দুকূল || আরশি আয়াত (পর্ব - ১৭)

রাস্তার এপাশ থেকে রেহান দেখলো শয়ন অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে।ঝিনুকও ওর কাজে লেগে পড়েছে।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
পাখি ঝিনুক'কে তার নাম জিজ্ঞেস করতেই ঝিনুক তৎক্ষনাৎ বলল,'মোর নাম ওইলে ফুলবানু।আফনে মোরে ফুল বোলাইত পারেন।'
'তুমি কোথায় থাকো?'

'মুই থাহি মোহাম্মদপুর বস্তির দারে।মোর মা'র লগে।মোর মা'য় তো একছের কাম হরতে ফারে না।হের পা একসাইড এক্কেলে অবশ ওইয়ে গেছে।'
ঝিনুকের নিখুঁত দুঃখের অভিনয় পাখি বুঝতেই পারলো না।ওর নরম মন ঝিনুকের জন্য ব্যাথিত হলো।নরম গলায় বলল,'আচ্ছা,তুমি শুধু সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখো রান্নার।আমিই রাঁধবো।'

'কি যে কন আফা আম্মের কোনো ছিন্তাই করতে হইবে না।মুই হগল জিনিস রানতে ফারি।'
'না,আমিই রাঁধব।তুমি এটুকুই করো আর পুরো ঘরটা গুছিয়ে রেখো শুধু ওই ঘরে যেও না।ওটা আমি গুছাবো।'
এমন বিধিনিষেধে ঝিনুকের মনে সন্দেহের দানা আরও শক্ত হলো।এই মেয়ে কেন ওইঘরে যেতে মানা করছে?কি আছে ওই ঘরে?

ঝিনুক মাথা নেড়ে বলল,'জে আফা,আছ্ছা।'


পাখি ঝিনুকের সাথে কাজের কথা বলে নিজের ঘরে চলে গেল।পাখি যাওয়ার পর ঝিনুক রান্না ঘরে গিয়ে কোমড় থেকে নিজের সেলফোন বের করে রেহান'কে কল করলো।রেহান এতক্ষণ এই কলের অপেক্ষাই করছিলো।রিসিভ করতেই ঝিনুক বলল,'ওই লোকটা একটু আগে অফিসে গেছে।ওরা আলাদা থাকে।তুমি ঠিকই বলেছিলে মেয়েটাকে জোর করে আঁটকে রেখেছে।স্বামী-স্ত্রী কি আলাদা থাকে!আবার মেয়েটা ওই লোকটার ঘরে যেতে না করছে।আর রান্নাও নিজে করবে।এত সিকিউরিটি কেন?কোথাও লোকটা ওর পরিবারকে জিম্মি করে ওকে ব্ল্যাকমেইল করছে না তো?'

ঝিনুকের এত অতিরিক্ত ভাবনা যেন রেহানের জন্য সুবিধা ই করে দিলো।ওর আর নতুন কোনো গল্প ফাঁদতে হলো না।ঝিনুকের কথায় তাল দিয়ে ওকে আরও উৎসাহী করে তুললো।তবে একটা ব্যাপার তো শিউর হলো রেহান ওদের মধ্যে সম্পর্ক'টা অত গভীর না।ভাঙতে সহজ হবে।খুশীতে পৈশাচিক হাসি খেলে গেলো ওর ঠোঁটে।

লাঞ্চ ব্রেকে শয়ন পাখিকে কল করলো।ঠিক একই সময়ে পাখিও ওকে কল দেওয়ার জন্য ফোন ধরেছিলো।কিন্তু কাঙ্ক্ষিত নাম্বার থেকে আগেই ফোন চলে আসায় স্নিগ্ধ একটা হাসি দেখা গেলো ওর ঠোঁটে।মনে মনে বলল 'আমার সব আয়ু আপনার হোক প্রিয়।'
ফোন রিসিভ করতেই শয়ন বলল,'খেয়েছেন মিসেস?'

পাখি লজ্জা পেলো।এভাবে কখনোই বলে নি শয়ন।এই লোকটা আজকাল ভিষণ লজ্জায় ফেলছে ওকে।পাখি লাজুক কন্ঠেই উত্তর দিলো,'না,খাই নি এখনো।আপনি খেয়েছেন?'
'না,মাত্রই ব্রেক পেলাম আর তোমাকে কল করলাম।খেয়ে নাও।আমিও খাবো এখন।'
'আচ্ছা।'


'তোমার জন্য একটা গিফট আছে।'
পাখি খুশী হয়ে বলল,'কি?'
'এখন বললে আমি তোমার অনুভূতি অনুভব করতে পারবো না।সামনা সামনি দেব।'
'আচ্ছা,অপেক্ষায় থাকবো।'
'যাও এখন খাও।'
'হু,আপনিও।'

কথা শেষ করে পাখি খেতে বসলো।ঝিনুকও পাখির সাথে বসলো।ও বিকেলেই চলে যাবে বাসায়।বাবা- মা হাজার মিথ্যা বলে আসতে হয়েছে।
বিকেল হতেই ঝিনুক বেরিয়ে গেলো।বেরিয়েই রেহানকে কল দিলো।রেহান আশেপাশেই ছিলো।ওর কল পেয়ে তাড়াতাড়ি চলে এলো।রেহানকে দেখে দূর থেকেই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো ঝিনুক।উচ্ছ্বাসিস হয়ে বলল,'আই মিস ইউ।'
'আই মিস ইউ টু জান।'

ঝিনুক খুশিতে ওকে জড়িয়ে রেখেই চোখ বন্ধ করে ফেললো।বলল,'আমি কবে তোমার কাছে থাকতে পারব তোমার বউ হয়ে?'
'খুব তাড়াতাড়ি।এই ঝামেলা শেষ হলেই বিয়ে করব আমরা।'


ঝিনুক যত বারই ভাবে রেহান ওর স্বামী হবে তত বারই খুশীতে পাগল হয়ে যায়।এই মানুষ'টাকে এত ভালোবাসে কেন বুঝতে পারে না ঝিনুক।কিন্তু ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে ও বুঝতে পারছে না এটার শেষটা কি আসলেই সুখের হবে?রেহান ওকে ব্যাবহার করছে এটা ও কখন বুঝতে পারবে?আদৌ পারবে তো?বোঝার পর কি করবে?ক্ষমা করতে পারবে ভালোবাসার মানুষ কে?প্রতারণা কি ক্ষমা করা যায়?

বাসায় ফিরে শয়ন আগে পাখির কাছে গেল।বলল,'দূরে কোথায় ঘুরতে যাবে তোমার পরীক্ষার পর?'
'কোথায়?'
'সিলেট।'

পাখি ঝলমলিয়ে উঠে বলল,'হ্যাঁ যাব।আমার চা-বাগান দেখার খুব শখ।'
শয়ন হেসে বলল,'সমস্যা নেই।এবার যাব আমরা।'
'এটাই আপনার গিফট ছিলো?'
'না।'

'আরও আছে?'
শয়ন স্মিত হেসে বলল,'তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি আসছি।'
পাখি বহু উৎকন্ঠ নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো।শয়ন একটু পর আসলো।হাত পেছনে।কিছু তো আছে!কি আছে?

শয়ন পাখির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বলল,'এই রিং টা আমি তোমার জন্য কিনেছিলাম।কিন্তু অনেক ঝামেলা হওয়ায় দিতে পারি নি।আজ হঠাৎ মনে পড়লো এটার কথা।পছন হয়েছে তোমার?'


পাখি রিং টার দিকে তাকিয়ে খুশীতে কথা বলাই বন্ধ করে দিল।কখনো ভাবতেও পারে নি শয়ন ওকে রিং দেবে।পাখি নিজের হাতটা বাড়ালো শুধু।শয়ন নিজের হাতে পরিয়ে দিলো।আর হঠাৎই চুমু দিয়ে বলল হাতের পিঠে।পাখি এতটুকুর জন্য প্রস্তুত ছিলো না।শয়ন কিছু না বলে একটু দুষ্টু হেসে চলে গেলো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন