উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal কবিয়াল
ভিলেন || মনা হোসাইন

1111111111111111111111

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ১০)

মেঘলা এমনেতেই অসুস্থ তার উপড় আকাশ তাকে মেরেছে তাই সেখানে বসেই কাঁদতে লাগল মেঘলা...উঠে যাওয়ার মত শক্তি বা ইচ্ছা কোনটাই তার নেই।
হটাৎ কেউ একজন এসে বলল,
উঠো এভাবে রাস্তায় বসে থাকলে লোকে পাগল বলবে....
মেঘলা অবাক হয়ে তাকাল...
মেঘলাঃ নীড় তুমি...
নীড়ঃ হুম এদিকেই যাচ্ছিলাম তোমাকে আর  আকাশ ভাই কে দেখলাম বুঝলাম কিছু একটা ঘটেছে সে যাই ঘটোক আমার জানার দরকার নেই চলো তোমাকে দিয়ে আসি...
মেঘলাঃ আমার ভাল লাগছে না তুমি যাও...
নীড়ঃ চলো তো মন খারাপ কেন করছো?আকাশ যে রাগ সামলাতে পারে না জানই তো... 
মেঘলা আর কিছু বলল না নীড়ের সাথেই যেতে লাগল।
নীড় মেঘলার  ক্লাসমিট মেঘলা খুব মিশুক প্রকৃতির হওয়ায় ক্লাসের সবাই মেঘলাকে পছন্দ করে নীড় একটু বেশিই পছন্দ। 
নীড় মেঘলাকে হোস্টেলে দিয়ে চলে গেল।


২ দিন হয়ে গেছে আকাশ মেঘলাকে ফোন করে নি মেঘলাও করে নি...
আকাশের মন খুব খারাপ এই ২ দিন কারো সাথে কোন কথা বলে নি বাইরেও যায় নি সারাদিন নিজের ঘরবন্দি হয়ে আছে।আকাশের হাবভাব দেখে নাবিল বুঝল কিছু একটা ঘটেছে তাই আকাশের ঘরে আসল,
নাবিলঃ একটু কথা বলা যাবে?
আকাশঃ না,কি হয়েছে কি ঘটেছে সেটা আমি কাউকেই বলতে পারব না তাই তুই প্রশ্ন করে আমাকে বিব্রত করিস না।তুই যানিস তুই প্রশ্ন করলে আমি মিথ্যা বলতে পারব না।
নাবিলঃ সমস্যার কথা না বললে সমাধান হবে কি করে?
আকাশের চোখের কোণে জল জমেছে নাবিল তা স্পষ্টই দেখতে পেল...
নাবিলঃ কোন বড়সড় গন্ডোগোল হয়েছে মনে হচ্ছে...
আকাশঃ মেঘলা আমার সাথে এমন কেন করলো... কি করি নি আমি ওর জন্য তবুও কেন আমার বিশ্বাস এভাবে ভেংগে দিল?

নাবিলঃ কি করেছে সেটা তো বল...
আকাশঃ কাউকে বলবি নাতো....
নাবিলঃ না বলব না...
আকাশঃ মেঘলা প্রেগন্যান্ট..
নাবিলঃ হোয়াট... কিসব আবল তাবল বকছিস?
আকাশঃ হ্যা এটাই সত্যি টেবিলের উপড় রিপোর্ট আছে চাইলে দেখতে পারিস...
নাবিলঃ আমি এটা বিশ্বাস করি না মেঘলা দুষ্ট কিন্তু খারাপ না আকাশ...
আকাশঃ আমিও বিশ্বাস করতে চাই না কিন্তু যা ঘটেছে সেটা কি করে বদলাব...??
নাবিলঃ তুই মেঘলাকে জিজ্ঞাস করিস নি বাচ্চার বাবা কে?
আকাশঃ করেছিলাম বলে নি বলেছে বাচ্চাটা নাকি আমার। 
নাবিলঃ তোর সাথে কি ওর তেমন কোন সম্পর্ক হয়েছে?
আকাশঃ প্রশ্নই উঠে না আমার মাথায় কি সমস্যা আছে নাকি যে ক্লাস ৯ এ পড়া একটা মেয়ের সাথে তাও যে কিনা আমার বোন।
নাবিলঃ মেঘলা এখন কোথায়?

আকাশঃ জানি না সেদিন মেরে চলে এসেছিলাম আর খোঁজ নেই নি।
নাবিলঃ ছি আকাশ এটা কি করলি বাচ্চা যারেই হোক মেঘলাকে তো তুই ভালবাসিস ও কতটা অসহায় অবস্থায় আছে তোর বুঝা উচিত ছিল ওকে ভরসা দেয়া উচিত ছিল।
আকাশঃ তোর সাথে যদি এটা ঘটত তাহলে বুঝতি কেমন লাগে...
নাবিলঃ আচ্ছা ধর বুঝলাম,এখন তুই বল মেঘলাকে ছাড়া তুই থাকতে পারবি?
আকাশঃ মানে..??
নাবিলঃ মানে টা তো সহজ,মেঘলা তোকে বাচ্চাটার দায়িত্ব নিতে বলেছিল আমি ত বলব সেটা তোর জন্য ভাল ছিল।
আকাশঃ মানে বুঝলাম না
নাবিলঃ তোর কি মনে হয় বাচ্চা টা যার সে যদি জানতে পারে সে অস্বীকার করে মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে? কখনই না কারন মেঘলা দেখতে সুন্দরী তারচেয়ে বড় কথা বড় লোক বাবার একমাত্র মেয়ে ওকে বিয়ে করতে চাইবে না এমন ছেলে খুব কমেই আছে।পারবি তো চোখের সামনে মেঘলাকে অন্য কারো হয়ে যেতে দেখতে?

আকাশঃ না কিছুতেই না মেঘলা শুধু আমার...
নাবিলঃ কিন্তু ওর বাচ্চাটা তোর হতে পারবে না তাই তো...
আকাশঃ আমি বাচ্চার দায়িত্ব নিতে রাজি আছি আমি মেঘলাকে ছাড়া থাকতে পারব না।
নাবিলঃ এটা আমাকে না গিয়ে মেঘলাকে বল পাগল কোথাকার...আর কাওকে জানানোর দরকার নেই সবাই জানবে এটা তোরেই বাচ্চা ঠিক আছে?
আকাশঃ আমি সব সামলাতে পারব তো...??
নাবিলঃ পারবি তুই একা কেন আমি আছি তো ভয় পাস না।
আকাশ আর নাবিল যখন কথা বলছিল তখনি মিলি ওদের ডাকতে লাগল...
নাবিলঃ এর আবার কি হল...
আকাশঃ চল গিয়ে দেখি আমি মেঘলার কাছে যাব  যাওয়ার সময় দেখে যাব কি হয়েছে এভাবে ডাকছে কেন।
আকাশ আর নাবিল ২ জনেই গেল গিয়ে দেখল নিচে সবাই বসে আছে সবার মুখে হাসি কিছু একটা নিয়ে সবাই খুব মজা করছে...
নাবিলঃ কি হয়েছে? তোমরা সবাই এখানে?
নেহাঃ আরে ভাইয়া যা প্যাকিং কর আমরা বিকালেই যাচ্ছি...
নাবিলঃ কোথায় যাচ্ছি...
মিলিঃ ওমা তোরা জানিস না..??মেঘলার ত বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে... আগামীকাল এনগেজমেন্ট..

মিলির কথাটা আকাশের বুকে যেন তীরের মত আঘাত করল...
নাবিলঃ মানে কি এর মধ্যেই বিয়ে ঠিক হয়ে গেল...?? 
ছোট মাঃ আরে এটা তো ওই বিয়েটাই মেঘলার বাবার বিজনেস পার্টনারের ছেলের সাথে যে ঠিক হয়েছিল,সেবার বলেছিল না বিয়ে পরিয়ে রাখবে ১৮ বছর পুর্ন হলে তুলে নিবে...মেঘলা রাজি ছিল না তাই বিয়েটা হয় নি এখন নিশ্চুই মেয়েটার মাথা চিবিয়ে খেয়েছে বিয়ে তো নয় সবটাই বিজনেস ডিল।যতসব মেঘলার বাবা টাকা ছাড়া কিছু বুঝল না কখনো।
আকাশের মেজাজ আবার খারাপ হয়ে গেল...

সাথে সাথেই নিজের ঘরে গেল আর মেঘলার মাকে ফোন দিল।
মেঘলার মাঃ হ্যা বাবু বল তুই এখনী আসলি না যে...মেঘলা তোকে ছাড়া চলতে পারে না জানিস না আর ওর বিয়েতে তুই এই নেই এটা কোন কথা...
আকাশ গম্ভির গলায় বলল মেঘলা আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না এটা জেনেও ওকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিচ্ছো?

মেঘলার মাঃ আমার কি দোষ আমি তো মেঘলাকে  বার বার জিজ্ঞাস করলাম তোর সাথে কোন সম্পর্ক আছে নাকি ও তো মানা করল...
আকাশঃ ওর বিয়ে করার শখ আমি মিটাব...
মেঘলার মাঃ বাবু শান্ত হ... বাবা ঝামেলা করিস না মেঘলার বাবা কেমন তাত জানিস সব আত্মীয় দের দাওয়াত দেওয়াও শেষ তুই এখন কিছু করলে সমাজে মুখ দেখাব কি করে...???

আকাশ কিছু না বলে ফোন কেটে দিলো....
মেঘলার মাঃ এতো মহা ঝামেলা হয়ে গেল...এখন কি করব?
মেঘলার মা মেঘলার কাছে গেলেন,
মেঘলাঃ কিছু বলবে?
মেঘলার মাঃতুই তো এই বিয়েতে রাজি ছিলি না হটাৎ রাজি হলি কেন সত্যি করে বল তো...

মেঘলাঃ রাজি ছিলাম না এখন হয়েছি তাতে কি হয়েছে?
মেঘলার মাঃ কিছু হয় নি তবে হবে বলে মনে হচ্ছে আকাশ তোর বিয়ে হতে দিবে না বলল।
মেঘলাঃ ও নিজেকে ভাবে টা কি ওকে কি আমি ভয় পাই নাকি দেখি ও কিভাবে বিয়ে ভাংতে পারে...
মেঘলার মাঃ আমি কিছু জানি না  আকাশকে যেভাবেই হোক থামাও আমি কোন গন্ডগোল দেখতে চাই না।তোমার বাবা এসব মানবেন না কিন্ত বলে দিলাম।
মেঘলাঃ তোমার ভাইপো একটা সাইকো ওকে গিয়ে তুমি থামাও... আমি বিয়ে করব এটাই ফাইলান।
মেঘলার মা চলে যাওয়ার পরেই মেঘলার ফোন বেজে উঠল,
মেঘলা রাগে গজ গজ করতে করতে বলল, ফোন করেছিস কেন?
আকাশঃ তোর নাকি বিয়ে?
মেঘলাঃ হ্যা...

আকাশ চেঁচিয়ে উঠল,
তআকাশঃ তোর সাহস কি করে হয় অন্য কারোর সাথে বিয়েতে রাজি হওয়ার?
মেঘলাঃ মানে কি?
আকাশঃকার বাচ্চা কার ঘাড়ে চাপাচ্ছিস?
মেঘলাঃ একটাও বাজে কথা বলবি না আর সেটা তোর বুঝার দরকার নেই যার সাথে বিয়ে হচ্ছে যে বুঝবে..তোর এত জ্বলছে কেন?
আকাশঃ তুই শুধু আমার আর কারো না বুঝেছিস...?? আমি তোকে বিয়ে করব...
মেঘলাঃ আমি মরে গেলেও তোকে বিয়ে করব না।
আকাশঃ তাই নাকি? ছেলেটা কি আমার চেয়ে সুন্দর নাকি দেখতে খুব শখ হয়েছে না বিয়ে করার... আচ্ছা দেখ এবার কি হয়। 
মেঘলাঃ কোন রকম গন্ডগোল করবি না বলে দিলাম। ভাই ভাইয়ের মত থাকবি বিয়েতে আসবি খাবি দাবি চলে যাবি।
আকাশঃ তাত আসবই অপেক্ষা কর আমি আসছি এসে তোকে এত ছোট ছোট করে পিস করব যে তোর বাবা মাও চিনবে না।
মেঘলাঃ তোকে আমি ভয় পাই নাকি..??
আকাশঃ কোন দিন তো আসল রুপ দেখিসেই নি...ভয় পাবি কি করে কিন্তু এবার দেখবি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন