উপন্যাস        :         ভিলেন
লেখিকা        :          মনা হোসাইন
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         

লেখিকা মনা হোসাইনের “ভিলেন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০১৯ সালে লিখেছেন।
ভিলেন || মনা হোসাইন Bangla Golpo - Kobiyal
ভিলেন || মনা হোসাইন

1111111111111111111111

২৫ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

ভিলেন || মনা হোসাইন (পর্ব - ২৬)

মেঘলাঃ আমি জানি আমার জন্যই তোমার এমন অবস্থা হল...
নীরবঃ পাগলের মত কিসব বলছো...??তোমার জন্য কেন হবে..???
মেঘলাঃ হ্যা আমার জন্য হয়েছে এটাই সত্যি..কিন্তু কেন হয়েছে সেটা আমি বলতে পারব না।
নীরবঃ আচ্ছা বলতে হবে না ছাড়ো এসব,আকাশের কি হয়েছে সেটা বলো ত,ও হাসপাতালে কেন?আর 
কাল তুমি বলছিলে বাসায় সবাই নাকি তোমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে তো আকাশ কিছু বলে না..??
মেঘলাঃভাইয়া তো পুরুই বদলে গিয়েছে ও আমাকে আর ভালবাসে না। জানো ওর না বিয়ে...

নীরবঃ মানে কি?
মেঘলাঃ হ্যা নিলিমা নামের মেয়েটার সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে...
নীরবঃ সেই নিলিমা যার জন্য তুমি...??? তারমানে সব সত্যি ছিল....??
মেঘলা হাওমাও করে কেঁদে দিল  
নীরবঃ কেঁদো না মেঘলা সব ঠিক হয়ে যাবে...
মেঘলাঃ এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ রইল না সময়ের ব্যবধানে সবাই পর হয়ে গিয়েছে..

নীরবঃ কে বলেছে কেউ নেই এত তো আমি আছি...
সারাজীবন থাকব, তোমার যেকোনো সমস্যা শুধু একবার বলে দেখো...
মেঘলাঃ আমার অনেক সমস্যা সবচেয়ে বড় যে সমস্যা, সেটা যাকে বলব সেই বিপদে পড়বে (মনে মনে)
নীরবঃ কি ভাবছো মেঘলা...???
মেঘলাঃ না কিছু না আচ্ছা তোমার বাবা মা কে দেখতে পাচ্ছি না তারা কোথায়..??
নীড়বঃ আসে নি..আমি এই ঘটনার কথা তদের বলি নি। 
মেঘলাঃ ও আচ্ছা তারমানে তোমাকে দেখাশুনা দেখাশুনা করার কেউ নেই?
নীরবঃ ডাক্তার নার্স আছে তো..
মেঘলাঃ ওরা থাকলেই হয় নাকি আচ্ছা এখন থেকে আমি আসব কেমন কোন দরকার হলে আমাকে ফোন দিও...

নীরবঃ আচ্ছা...
মেঘলাঃ এখন তাহলে যাই পরে আবার আসব।
মেঘলা বিদায় নিয়ে বাসায় চলে গেল ততক্ষনে আকাশরাও চলে এসেছে...
আকাশ নিজের ঘরে মুখ গুমরা করে বসে আছে আর ভাবছে মেঘলাকে কিভাবে শিক্ষা দেয়া যায় ঠিক তখনি মেঘলাকে দেখতে পেল। 
আকাশঃ মেঘলা...???
মেঘলাঃ আজ আর রক্ষা নেই স্কুলে যাই নি জন্যে নিশ্চুই মারবে...
আকাশঃ তোকে ত স্কুলে যেতে বলেছিলাম গেলি না কেন?
মেঘলাঃ না ম ম মানে...

আকাশঃ ছেলেদের সাথে ঢং করতে খুব ভাল লাগে তাই না?
মেঘলাঃ কি বলছিস..??
আকাশঃ হাসপাতালে গিয়েছিলি আমি সবি দেখেছি তাই অভিনয় করার দরকার নেই।
মেঘলাঃ ও আচ্ছা তাহলে নীরবের সাথে দেখেছেন তাই তো বলি যে কিনা সব সময় মুখ ঘুরিয়ে থাকে নিজের ঘরে ডাকা ত দুর কথাও বলতে চায় না সে আমাকে ডাকল কেন.. (মনে মনে)

আকাশঃ চুপ করে আছিস যে,এত ঢ্লাঢলি করছিলি কেন বল?আমার এসব ভাল লাগে না জানিস না?
মেঘলাঃ তারমানে আকাশ ভাইয়ার খারাপ লেগেছে এই তো পেয়েছি কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলতে হবে.. তুই যে এখুনো আমায় ভালবাসিস সেটার প্রমান দিলি এবার শুধু মুখ দিয়ে বলার অপেক্ষা( মনে মনে)
আকাশঃ কি জবান বন্ধ হয়ে গেল কেন?
মেঘলাঃ নীরব আমার বর আর ও অসুস্থ তাই গিয়েছিলাম।
আকাশ ধমক দিয়ে বলল মেঘলা...???
মেঘলাঃ ধমক দিচ্ছিস কেন আর তুই রাগই না করছিস কেন তুই কি আমাকে ভালবাসিস?
আকাশ কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেল।
মেঘলাঃ কি হল বল...
আকাশঃ না বাসি না...

মেঘলাঃ তাহলে আমার বরের কাছে আমি যাব না কেন..??
আকাশঃ বর বর করে মাথা খেয়ে নিচ্ছে একেবারে পৃথিবীতে যেন শুধু ওরেই বর আছে আর কারো নেই..
আকাশের রাগ দেখে মেঘলার মনে মনে খুব আনন্দ হচ্ছে কারন সে বুঝতে পারছে আকাশ ওকে ভাল বাসে...
আকাশঃ মেঘলা তুই তো বড় হয়ে গিয়েছিস তাই না...
মেঘলাঃ হটাৎ এমন প্রশ্ন করছিস যে....
আকাশঃ বল না বড় হয়েছিস কিনা
মেঘলাঃ হ্যা...
আকাশঃ তো এখনো মানুষ হস নি কেন  (ধমক দিয়ে)
ধমক শুনে মেঘলা চমকে উঠল,
মেঘলার ভীত চেহারার দিকে তাকিয়ে আকাশের খারাপ লাগল।
আকাশঃ ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম,আর কখনো স্কুল মিস করলে খবর আছে, যা এবার টাওয়েল বের কর...
মেঘলাঃ টাওয়াল দিয়ে কি হবে?
মেঘলাঃ তোকে মানুষ বানাব..

মেঘলাঃ টাওয়াল দিয়ে শ্বাস বন্ধ করে মেরে ফেলবে নাকি... ওর যে রাগ মারতেই পারে তার আগে পালাই বাবা...বলেই মেঘলা যখন পিছন ঘুরল।
আকাশ সাথে সাথেই খপ করে মেঘলার হাত ধরে ফেলল,
আকাশঃ খুব চালাক ভাবিস নিজেকে তাই না?
ভেবেছিস হাত ভাংগা তাই পালাতে পারবি..শোন 
আমার এক হাত ভাংগা বুঝেছিস ২ টা না বলেই মেঘলাকে টানতে টানতে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকল আকাশ...
মেঘলাঃ কি করছিস ছাড় বলছি...
আকাশ মেঘলাকে ছেড়ে দিয়ে দরজা লক করে দিল..
মেঘলাঃ কি করছিস দরজা বন্ধ করছিস কেন?
আকাশঃ জামা খোল...

আকাশের মুখে কথাটা শুনে মেঘলা যেন আকাশ থেকে পড়ল...নিজের জামা আখড়ে ধরে বলল বিদেশে গিয়ে তুই এত খারাপ হয়ে গিয়েছিস ভাবতেই পারছি না।
আকাশ মেঘলার জবাব শুনে অবাক হল,
আকাশঃ পাগল টাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি? খারাপের কি দেখলি। 
মেঘলাঃ তুই আমাকে জামা খুলতে বলছিস 
আকাশঃ হ্যা খুলবিই তো বরের সেবা করতে পারিস আর আমি যে সারাজিবন তোর সেবা করলাম তার শোধ দিবি না?
মেঘলাঃ তাই বলে এভাবে শোধ নিবি?
আকাশঃ কিসব বলছিস বুঝিয়ে বলতো সমস্যা কি?শাওয়ার নিব আমার হাত ভাংগা আমি খুলতে পারব না তাই বলছি আমার জামাটা খুলে দে...এত ঢং করছিস কেন?
মেঘলাঃ এ্যা...??? তুই আমার জামার কথা বলিস নি?
আকাশ রসগোল্লার মত চোখ বড় বড় করে বলল কি...?? ও গড তুই এটা ভাবলি কি করে যে আমি তোর জামা খুলতে বলব তাও আমার সামনে..??

মেঘলাঃ যেভাবে বললি আমি তো তাই ভাবলাম।
আকাশঃ যার মাথা যেমন সে তো তেমনেই ভাব্বে।গাধা পিটিয়ে কি আর মানুষ বানানো যায়..??
মেঘলাঃ আমি গাধা না তুই গাধা...এটাকে শার্ট বলে। 
আকাশ হাসতে হাসতে বলল শার্টের বাংলা কি বল তো..??
মেঘলাঃ কেন জামা...
আকাশঃ তাহলে কে গাধা?আচ্ছা তুই যেটা ভেবিছিস সেটাই ঠিক,দেখাবি একটু দেখা না প্লিজ.. 
মেঘলাঃ কি দেখাব..
আকাশঃ জামার নিচে কি আছে...
বলতে বলতে আকাশ মেঘলার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল
মেঘলা পিছাতে পিছাতে গিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেল তারপর বলল কাছে আসবি না..ভাল হচ্ছে না বলছি...
আকাশ মেঘলার কাছে এসে বলল ওরে লজ্জাবতীরে এত লজ্জা কবে হল? আগে তো নিজেই সব দেখাতে চাইতি...

মেঘলাঃ আগে তো ছোট ছিলাম বুঝতাম না।
আকাশ ধমক দিয়ে বলল শার্ট টা খুল ফাউল মেয়ে, অনন্ত কাল দাঁড়িয়ে থাকার জন্য ওয়াশরুমে আসি নি।তোর এসব দেখার কোন ইচ্ছা নেই আমার আমি শাওয়ার নিব।
মেঘলাঃ তোর ত হাত ভাংগা কিভাবে শাওয়ার নিবি?
আকাশঃ তুই আছিস কি করতে...??
মেঘলাঃ আমি কিভাবে তোকে??
আকাশঃ কেন কি হবে? খোল বলছি,...নাকি থাপ্পড় খাওয়ার শখ হয়েছে..???
মেঘলা বাধ্য হল শার্ট খুলতে নাহলে মার খেতে হবে। 
আকাশঃ ফাউল গল্প বাদ দিয়ে আমাকে হেল্প কর.। বলে আকাশ শাওয়ার অন করে দিল।
মেঘলাঃ আহ কি করলি আমাকেও ভিজিয়ে দিলি তো...
আকাশঃ সরি বুঝতে পারিনি আচ্ছা আমার পরে তুই ও শাওয়ার নিয়ে নিস...এবার আমাকে শ্যাম্পু করে দে তো..

মেঘলা আকাশের চুলে শ্যাম্পু করে দিয়ার জন্য আকাশের চুলে হাত বুলাচ্ছে...
আকাশঃ এ যেন স্বর্গ সুখ..তুই যতই অন্য কারো হতে চাইবি,আমাকে ছেড়ে যেতে চাইবি আমি ততই তোকে কাছে টেনে আনব মেঘলা তুই সারাজীবন এভাবে আমার পাশে থাকবি  তুই শুধুই আমার...
আকাশ কে খালি গায়ে ভেজা অবস্থায় দেখে মেঘলার অস্বস্তি হতে লাগল।মেঘলা অন্য দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আকাশের গায়ে সাবান মেখে দিতে লাগল।
আকাশঃ আরে যন্ত্রনা আমার দিকে তাকাতে এতই সমস্যা আমি কি দেখতে খুব খারাপ নাকি?
মেঘলাঃ তোর লজ্জা করছে না?

আকাশ মুখ তুলে মেঘলার দিকে তাকাল...মেঘলা লজ্জা পাচ্ছে দেখে আকাশ রেগে গিয়ে উঠে দাঁড়াল কিন্তু মেঘলাকে দেখে সে অজানায় হারিয়ে গিয়েছে
মেঘলা পুরো ভিজে গিয়েছে.. ভিজা চুল থেকে টুপটাপ পানি ঝরছে মেঘলার গোলাপি ঠোঁটের উপড় ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে এ যেন এক অদ্ভুত আকর্ষন যা থেকে আকাশ নিজেকে আটকাতে পারল না। আকাশ ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল মেঘলার দিলে।
মেঘলা এক পা এক পা করে পিছিয়ে যেতে যেতে লজ্জার সাথে ভয় মিশিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,
মেঘলাঃ কি ক ক কি করছিস ভাইয়া...??

আকাশ মেঘলার ঠোঁটে আংগুল চেপে ধরে বলল চুপ একটাও কথা বলিস না মেঘলা...
মেঘলাঃ আকাশ ভাইয়া এমনিতে সুন্দর তার উপড় খালু গায়ে ভেজা চুলে আমার একদম কাছে দাঁড়িয়ে আছে তার উষ্ণ নিশ্বাস অনুভব করতে পাচ্ছি আমি... 
জানি না আমার কেমন যেন একটা ভাল লাগা কাজ করছে তবে ভয় ও করছে...
আমি ভাইয়াকে সরিয়ে দিতে চাই কিন্তু পারছি না.. মন বলছে ও আমার সাথেই মিশে থাকুক অনন্তকাল ধরে।কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে ভাইয়াকে সরিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম কিন্তু আমার সে আশায় জল ঢেলে দিয়ে ভাইয়া আমাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিয়ে একহাতে আমার কোমড় চেপে ধরল তারপর নিজের ঠোঁট ২টি আমার ঠোঁটে চেপে দিল।

এর আগেও ও আমাকে এভাবেই কিস করেছিল তবে তখন এমন অনুভুতি হয় নি। 
আজ এক অন্যরকম ভাল লাগা কাজ করছে...মনে হচ্ছে যেন আজ আমি পরিপূর্ন। আমার মাঝে আজ আর কোন এপূর্নতা নেই পৃথিবীর সব পাওয়া এসে ভীর জমিয়েছে আমার দরজায়...সব সুখ যেন আমার হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে।

যাকে ভালবাসি তাকে আজ নিজের করে পেয়ে গিয়েছি। আমার এতদিনের অপেক্ষা আজ সার্থক। আর কি চাওয়ার আছে আমার...না আর কিছুই চাওয়ার নেই আজ আমি পূর্ন।
মেঘলা চোখ বন্ধ করে আছে আকাশ মেঘলার মাঝে ডুবে গিয়েছে অনেক আগেই... বেশ কিছুক্ষন পর আকাশের হুঁশ ফিরল...সাথে সাথে মেঘলাকে ছেড়ে দিল...

আকাশঃ আই এম সরি মেঘলা কি থেকে কি হয়ে গেল আমি সত্যি বুঝতে পারি নি সরি...বলেই আকাশ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে গেল...

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

২৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মনা হোসাইনের মূল নাম গাজী পিংকি হোসেন। তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মনাম হিসেবে ‘মনা হোসাইন’ নামটি বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা এই লেখিকা অনলাইন ডিজিটাল মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন