উপন্যাস       :        আম্বরি
লেখিকা        :         সামিয়া খান প্রিয়া
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা সামিয়া খান প্রিয়ার “আম্বরি” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
আম্বরি || সামিয়া খান প্রিয়া Bangla Golpo - Kobiyal
আম্বরি || সামিয়া খান প্রিয়া

১২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

আম্বরি || সামিয়া খান প্রিয়া (পর্ব - ১৩)

"মেয়েটা তোর ভাইয়ের প্রেমিকা।কীভাবে তার সাথে এতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছিস?এই তোর নীতি এরোন?রক্ত আসলেও কথা বলে।তুই যে নোংরা গোপন একটা সম্পর্কের ফসল সেটি আজ সেকেন্ডে সেকেন্ডে প্রমাণ হচ্ছে।"

এরোনের গৌড় মুখখানা আরক্ত হয়ে উঠলো।সে আজীবন নিজের উপর এমন প্রশ্ন না আসুক সেই চেষ্টা চালিয়েছে।অথচ আজ কতো অবহেলায় সব শুকনো ফুলের মতোন ভেঙে গেলো।রাফসানের হাত ধরে মেহরী থমথমে মুখে বসে আছে।এরোন তাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
"মেহরী,তুমি এইমাত্র বললে আমি রাফসানের কথা বলে তোমাকে এই নির্জন ফ্ল্যাটে ডেকেছি।সত্যিই কী তাই?বলো মেহরী।এভাবে একজনের উপর কাঁদা লাগতে দিওনা।"
"এরোন স্যার।আমি যা বলছি সেসব কথা সত্যি।" 

মেহরীর কণ্ঠ ঈষৎ কম্পিত হলো।সে ভেতরে ভেতরে ভীষণ ভীত।রিচি স্বত্তা ফিরে আসায় রাফসান তার কাছে সবটা হয়ে উঠেছে।সেখানে এরোনের ব্যাপারে সত্য বলে কেন ফেঁসে যাবে?একদম হতে দিবেনা।রাফসানের হাতটা আরেকটু শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো।তাকে শান্ত করলো ছেলেটি।
"ভয় পেওনা।আমি দেখো নিবো এরোনকে।"


"আমাকে বিশ্বাস করো রাফসান?"
"অনেক বেশী।"
প্রেমিক যুগলের বক্তব্য শুনে তি ক্ত হাসি বের হয়ে এলো এরোনের ভেতর থেকে।নারী ছলনাময়ী।এ কথা তবে সত্য।সে একবার ভাবলো রাফসানকে সব জানিয়ে দিবে।পরক্ষণে ভাবলো এসব নিছক পন্ডশ্রম হবে।এরোন এলেমেলো হাতে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে গেলো।পিছন থেকে রাফসান ডেকে বলল,
"এরোন দাঁড়া আমাদের কথা শেষ হয়নি।"

দাঁড়ালো এরোন।পিছন ফিরে মেহরীর পানে তাঁকিয়ে শান্ত সুরে বলল,"আসলেও সব শেষ।"
পুরুষটি দুঃখময় কণ্ঠে কিছু একটা ছিল।যা মেহরীকে ভেতর হতে শূন্য করে দিলো।সে রাফসানকে হারিয়ে ফেলতে চায়না।এজন্য যখন রাফসানের কণ্ঠ শুনলো তখন চট জলদি এই বুদ্ধি বের করেছে।সেই হিসেবে বলেছে এরোন তাকে কল করে বলেছিল এখানে আসতে।রাফসান তার জন্য অপেক্ষা করছে নাকী।বিষয়টা মিথ্যা হলেও ভেবেছিল এরোন এভাবে শা স্তিপাবে।কিন্তু উল্টো মনটা বড় বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো।
"কী ভাবছো মেহরী?"

রাফসানের অধরযুগলে স্মিত হাসি ঝুলে আছে।ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাওয়ার প্রশান্তি হয়তো এই অনুভূতিকে বলে।সে খুব ভালোমতন বুঝতে পেরেছে মেহরী অসুস্থতার জন্য রিচি হয়ে উঠেছে।এরোনের সাথে এমন বিহেভিয়ারে তার মনে একটুও খারাপ লাগা কাজ করছেনা।ছেলেটা বাহিরের মানুষ।আর মেহরী তার আপনজন।ভাগ্য ঠিক কতোটা সদয় হলে মেহরীর ঠিক এখুনি অসুস্থ হতে হলো।


(***)
"একজন ছোট বাচ্চা যে সদ্য ভূমিষ্ট হয়েছে সে এই পৃথিবীর কতোটা জানে গ্র্যানী?তাকে তার বাবা অস্বীকার করেছে কিন্তু মা কতোটা আপন করলো যে ঠিক বাবার কাছে রেখে এলো।আজ জীবনের প্রথমবার নিজেকে অসহায় লাগছে।রাফসান আমাকে কী কী বলেছো জানো?চ রি ত্রহীন,দূষিত রক্ত,জা'র'জ।আরো শুনতে চাও।"

এরোনের আন্দোলিত হওয়া কণ্ঠ শুনে অপর পাশ থেকে মায়াভরা কণ্ঠে বৃদ্ধা ক্যাথরিন বলল,"দুঃখ পেওনা আমার বাচ্চা।তুমি মেহরীকে ভালোবাসো?"

"না।আমার মা ও বাবা যে ভুল করেছিল আমি সেই ভুল পুনরায় করতে চাইনি।এ কারণে বহু আগে থেকে নিজের কাম বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছি।কিন্তু মেহরী মেয়েটা সবটা কেমন এলেমেলো করে দিলো।এ কারণে তার সঙ্গে সহজ হওয়ার জন্য পাঁচটা মাসের মেলামেশা।"
এরোন থামলো।উষ্ণ শ্বাস বের হয়ে এলো তার অন্তঃকরণ চিড়ে।মনে মনে দৃঢ় এক সংকল্প নিলো সে।ক্যাথরিন তার আপন নানী।এক জাহানারা দুই ক্যাথরিন।এই দুজন মানুষের নিকট থেকে মায়ের সুবাস পায় সে।এজন্য দুঃখ ব্যক্ত করার পথ হিসেবেও তাদের বেছে নেয়।ক্যাথরিন যেদিন থেকে তার খোঁজ পেয়েছিল সেদিন থেকে রোজ একবার করে ফোন করবে।আজও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি।ফ্ল্যাট থেকে বের হতেই তার ফোন আসে।এরোনকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে শুধালো,"এরোন।"

"গ্র্যানী,গ্রান্ড পা কে বলবে আমি আগামীকালের ফ্লাইটে চলে আসছি"
"সত্যিই এরোন?আমি এখুনি ফিলিপকে জানাচ্ছি।ও সব ব্যবস্থা করে দিবে।কিন্তু এখানে একেবারে চলে আসার জন্য তোমার কিছু প্রস্তুতি দরকার ছিল।"
বিরস মুখে এরোন জবাব দিলো,"এখানের কোনোকিছু আমি নতুন জীবনে নিবো না গ্র্যানী।"
(***)


অর্ধেক হওয়া রান্না রাফসান নিজ উদ্যোগে পূর্ণ করলো।মেহরী এখনও গম্ভীর মুখে তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।কোন এক কারণে বুকটা ভীষণ জ্ব লে যাচ্ছে তার।এরোন তো তার জন্য য ন্ত্র ণা দায়ক ছিল।শাওনকে নিয়ে হালকা চিন্তা হলেও খুব বেশী আমলে নিলো না।কারণ রিচি তার মধ্যে এলে সে নিজেকে বেশী প্রাধান্য দেয়।দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাফসানের উদ্দেশ্যে হাসি মুখে বলল,"এরোন আসলে কী হয় তোমাদের?ওর পরিচয় জানো?"

"আমাদের কিছু হয়না।তবে চিন্তা করো বৈধ সম্পর্কের ফসল হলে কেউ এভাবে অচেনা মানুষদের বাড়ীতে ফেলে যায় কোলের বাচ্চাকে?"
"তাও সঠিক।"

"এরোনকে আমি সামান্য তম সহ্য করতে পারিনা।আগে যাও তোয়াক্কা করিনি খারাপ লাগা।কিন্তু ইদানীং সহ্যের বাহিরে।"
মেহরী নিশ্চুপ হয়ে রইলো।সামনে শূন্যে তাঁকিয়ে থাকতে থাকতে তার দুচোখ বাষ্পকূল হয়ে উঠলো।মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে।হুট করে মনে হলো কানের কাছে জোরে কেউ দফ বাজিয়ে উঠলো।মেহরী তৎক্ষনাৎ এরোনের জায়গায় দাঁড়ানো পুরুষটিকে শুধালো,"কে আপনি?এরোন কোথায়?"


রাফসানের চতুর মন অল্প কিছু সময় নিশ্চুপ থাকলো।দৃষ্টি বন্ধ করে সে জবাব দিলো,"এরোন চলে গিয়েছে।একটু আগে তোমাকে আমার কাছে বি ক্রি করে দিয়ে।সে মা ফি য়া জানতে তো।তবুও কেন মেলামেশা করলে?"

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
লেখিকা সামিয়া খান প্রিয়ার বাস বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলায়। শখের বশে লিখালিখি করলেও ইতোমধ্যে তার বেশ কয়েকটি বই এবং ইবুক প্রকাশিত হয়েছে। যা ইতোমধ্যে পাঠকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
তরুণ এই লেখিকা সম্পর্কে এর বেশি কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন