উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান Bangla Golpo - Kobiyal - Love Story
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান


৪৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৭)

আদ্রিয়ান রাস্তায় এক লোক থেকে বাইকের চাবি কেড়ে নিলো।লোকটা চাবি নিতে আসলে আদ্রিয়ান রেগে তাকায় লোকটার দিকে।
_আরে কি করছেন?রাত দুপুরে ছিনতাই করছেন?দেখতে তো ভালো ঘরের মনে হচ্ছে।এগুলো করছেন কেন?
আদ্রিয়ান লোকটার মাথা থেকে হেলমেট খুলে ধুম করে নাক বরাবর ঘুষি বসিয়ে দিলো। লোকটা ছিটকে দূরে যেয়ে পড়লো।সাথে সাথে অনেক গুলো লোক জড়ো হয়ে গেলো।আদ্রিয়ান দ্রুত হেলমেট পড়ে বাইক স্টার্ট দেয়।মিরা চট করে আদ্রিয়ানের পিছনে বসে গেলো।লোক গুলো আদ্রিয়ান এর দিকে ছুটে আসছে।আদ্রিয়ান এক মূহুর্তও দেরি না করে বাইক টান দিলো।লোকগুলো দৌড়ে এসেও আদ্রিয়ানকে ধরতে পারলো না।আদ্রিয়ান সেকেন্ডে বাতাসের সাথে মিশে গেলো।

আদ্রিয়ানঃএই মেয়ে! তুমি আমার বাইকে উঠেছো কেন?
মিরাঃসব বলবো আগে বাইকের স্পিড কমান।আমার ভয় করছে।ইয়া আল্লাহ এত ফার্স্ট কেউ ড্রাইভ করে?
আদ্রিয়ানঃহ্যা।আস্তে চালাই। আর ওই লোক গুলো আমাকে ধরে উরুমধুরুম পিটাক।রাম ধোলাই দেয়ার ভালোও ওয়ে খুজেছো।
মিরাঃআল্লাহ। আল্লাহ।আমার বিয়ে হও নাই আল্লাহ।আমি এখন মরতে চাই না।আমার জামাইয়ের সাথে ঘোরা হয় নাই।আমাকে বাচিয়ে নাও আল্লাহ।আর বাইকে উঠবো না।এইবারের মতো মাফ করে দাও।আর টইটই করবো না।তোমার সব কথা শুনবো।ভালো হয়ে যাবো আল্লাহ আমার জীবন নিও না।


মিরা আদ্রিয়ানকে জাবড়ে ধরে কাপা কাপি শুরু করেছে।এত রাগ কষ্টের মাঝেও আদ্রিয়ান উচ্চ শব্দে হেসে দিলো।
আদ্রিয়ানঃহা হা হা।হা হা হা।
মিরাঃএই আপনি হাসছেন কেন?
আদ্রিয়ানঃআদ্রিয়ান চৌধুরীর বাইকে ওঠার সাহস দেখিয়েছো এত ভয় পেলে চলবে?
আমি তো এর থেকে ৩ গুন স্পিডে নরমাল ড্রাইভ করি।
মিরাঃআপনাকে তো আমি যথেষ্ট ভালো, ভদ্র ভেবেছিলাম। কিন্তু আর না।আপনি আস্তো একটা আদপাগল।এই যে কানে ধরছি।আর উঠবো না এই বাইকে।
মিরা কানে হাত দিতে গেলে আদ্রিয়ান এক হাতে বাইকের হ্যান্ডেল ধরে আরেক এক হাত দিয়ে মিরা হাত বুকের সাথে চেপে ধরে।
আদ্রিয়ানঃমিরা। পাগল হয়েছো?এখনই তো ছিটকে পড়তে।রানিং বাইকে কেউ সাপোর্ট ছাড়া বসে?

মিরা হতভম্ভ হয়ে গেলো আদ্রিয়ান এর কান্ডে।আদ্রিয়ান বাইকটা সাইডে পার্ক করে।মিরা লাফ মেরে নেমে যায়।
মিরাঃআলহামদুলিল্লাহ এইবারের মতো মৃত্যুর হাত থেকে বেচে গেলাম।আর উঠবো না এইটা তে।জীবনেও না।
আদ্রিয়ান এক ভ্রু উচু করে বাইক থেকে নেমে নিজের মাথার হেলমেটটা মিরাকে পড়িয়ে দিলো।
আদ্রিয়ানঃনা ম্যাডাম আপনি এখনো বাচেন নাই।আদ্রিয়ান এর বাইকে ওঠার মজা দেখাচ্ছি।আমার বাইকে তিথি ছাড়া আর কাউকে উঠতে দেই না আমি।আপনি যখন উঠেছেন শাস্তি তো পাবেনই।

আদ্রিয়ান মিরাকে জোর করে বসিয়ে তিনগুন স্পিডে বাইক স্টার্ট দিলো।।মিরা দেহের সবশক্তি খরচ করে আদ্রিয়ানকে জাবড়ে ধরে আছে।রাস্তাগুলো ঝাপসা দেখাচ্ছে।কত জোরে বাইক চালালে সেকেন্ডেই গাছ গুলো দূরে চলে যাচ্ছে ভাবতেই মিরার শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে।মিরা চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।


আদ্রিয়ান এর গা থেকে পারফিউমের মিষ্টি সুবাস ভেসে আসছে।মিরা আদ্রিয়ানকে এইবার মন থেকে জড়িয়ে ধরে পিঠে মাথা ঠেকালো।
শো শো বাতাসে মিরার চুল গুলো মুখের সামনে চলে আসছে।আদ্রিয়ান কিছু বলতেও পারছে না কারন চলতি বাইকে চুল আটকাতে গেলে পড়ে যাবে মিরা।
আদ্রিয়ান এক ধ্যানে বাইক চালাচ্ছে।
আদ্রিয়ানঃভয় কি পাচ্ছেন না?নাকি?
মিরাঃএখন আর পাচ্ছি না।
আদ্রিয়ানঃযাক বাবা।এখন এমন কি হলো?
মিরাঃতা তো বলা যাবে না।
আদ্রিয়ানঃআপনি খুব অদ্ভুত মেয়েতো। 
মিরা খিলখিল করে হেসে দিলো।
মিরাঃক্যাপ্টেন। 
আদ্রিয়ানঃজ্বি বলেন।
মিরাঃআবারো আপনিতে চলে আসলেন যে?

আদ্রিয়ানঃসরি রেগে ছিলাম।তাই তুমি করে বলে ফেলেছি।
মিরাঃএখন নেই?
আদ্রিয়ানঃকেন আসলেন আমার পিছনে?
মিরা বুঝতে পারছে আদ্রিয়ান তিথির বিষয়টা এড়িয়ে যাচ্ছে।তাই সে ও আর পালটা প্রশ্ন করলো না।
মিরাঃরেগে বেড়িয়ে ছিলেন।যদি কোনো অঘটন ঘটাতেন।তাই এসেছি।
আদ্রিয়ানঃআমি রেগে থাকলে এমনই বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি।বাইকটা আমার প্রথম স্ত্রী আর ২য়.....।


আদ্রিয়ান থেমে গিয়ে আবার বলতে শুরু করলো।
চোখ বন্ধ করে চালালেও এক্সিডেন্ট হবে না আমার দ্বারা।
মিরাঃবাহ।অবশ্যই এতক্ষনে টের পেয়েছি যে আপনি বেশ ভালো ড্রাইভার। 
আদ্রিয়ানঃযাক কেউতো সুনাম করলো।আজ পর্যন্ত খালি বকাই খেয়েছি এই ড্রাইভিং নিয়ে।
মিরাঃআপনি জানেন আপনার সবকিছু আমার খুব ভালো লাগে।এই যে কি সুন্দর লোকটার নাকের নকশা ভেঙে বাইক নিয়ে এসে পড়লেন।না মানে একজন আর্মী অফিসার এমন করতে পারে।ভাবতেই অবাক লাগে।খুবই ইউনিক ব্যাপারটা। 
তারপর তিথির সবকিছু জেনেও কি সুন্দর শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।একটু ও ভেঙে পড়েন নাই।

দেখতে শুনতে মাশআল্লাহ একদম নায়কের মতো।
খুব সুন্দর একটা মন আছে।নিজের আগে অন্যের কথা ভাবেন।হেলমেটটা আমাকে দিয়ে দিলেন একটা বার ও ভাবলেন না এক্সিডেন্ট হলে আপনার কি হবে!
আপনি ফুল ক্রাশ প্যাকেজ। যতই দেখি ততই ক্রাশ খাই।
আদ্রিয়ানঃআজতো আপনাকে এটাও বলতে পারবো না আমি বিবাহিত। ফ্লার্ট করবেন না।
খুশি হয়েছেন তাই না? বিয়েটা নকল ছিলো বলে?
মিরাঃবাইকটা এইবার থামাবেন?চোখ ভিজে আসছে আপনার।
আদ্রিয়ানঃআপনি কি করে বুঝলেন?
মিরাঃভেজা কন্ঠ শুনে।বাইক থামান আদ্রিয়ান। 
আদ্রিয়ান বাইকটা থামিয়ে দিলো।মিরা নেমে আদ্রিয়ান এর মুখোমুখি যেয়ে দাড়ালো।
মিরাঃআপনাকে না বললাম একদম ভেঙে পড়বেন না?তবুও কেন?
আদ্রিয়ানঃসত্যিই কথা বলবো?বাইকটা নিয়ে বের হয়েছিলাম এক্সিডেন্ট করার উদ্দেশ্যে।এত ঠকে আর বাচতে ইচ্ছে করছে না।
_ঠাসসসসসস।

মিরা ঠাস করে চড় মেরে দিলো আদ্রিয়ান এর গালে।
আদ্রিয়ান একদম প্রস্তুত ছিলো না এটার জন্য।আদ্রিয়ান অবাক নয়নে তাকায় মিরার দিকে।
মিরাঃআর একবার যদি শুনছি একদম নিজ হাতে খুন করে ফেলবো।বলে দিলাম।
কেন মরবেন?হ্যা?ওই মেয়ের জন্য কেন মরতে যাবেন যে আপনার ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানকে মেরে ফেলেছে?
কেন মরবেন ওই মেয়ের জন্য যে কখনোই আপনাকে ভালোবাসে নাই।শুধু ব্যবহার করেছে আপনাকে।বুঝতে পারছেন?ব্যবহার করেছে।


আদ্রিয়ান হাটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়লো।মাথার চুলগুলো দুই হাত দিয়ে চেপে ধরলো।
মিরাও এইবার হাটু গেড়ে বসল।
মিরাঃকারো যাওয়াতে জীবন থেমে যায় না।জীবন ঠিকই চলে। হয়তো স্থির গতিতে আর নয়তো বা চলমান গতিতে।
ওই মানুষটার জন্য কেন জীবন শেষ করে ফেলবেন বলেন তো?
আপনার মা বাবা কি আপনাকে কষ্ট করে বড় করে নাই?ভাই বোন কি ভালোবাসে না?
একজন মানুষ ঠকালো বলে এতজনকে ঠকাবেন?
আদ্রিয়ান মাথা নিচু করে রেখেছে।
আদ্রিয়ানঃআমাকে কেন ঠকালো মিরা?আমি কি দোষ করেছিলাম?সেই বুঝ হওয়ার পর থেকে একটা মানুষকে ভালোবাসলাম সে এমন কেন বের হলো?
ও মিথ্যা বিয়ে সাজালেও আমি ওকে মন থেকে কবুল বলেছিলাম।বিয়েটা শরিয়ত মোতাবেক না হলেও এক পাক্ষিক ছিলো। আজকে যখন এটা জানলাম আমি বোঝাতে পারবো না আমার কেমন অনুভব হয়েছে।

আদ্রিয়ান এর গলার স্বর আটকে আসছে।
আদ্রিয়ানঃআমি সত্যি ওর দিকে ফিরে তাকাতে চাই না।এজন্যই চাচ্ছিলাম মরে যাই।বেচে থাকলে ঠিকই আবারো ওর কাছেই ফিরে যেতে চাইবে বেহায়া মন।
মিরাঃকান্না করেন আদ্রিয়ান।
আদ্রিয়ান মিরার চোখের দিকে তাকায়।
মিরাঃকান্না করে হাল্কা করুন বোঝা।চেপে রাখলে বাচতে পারবেন না।কেদে ভাসিয়ে দেন কষ্ট গুলো।

আদ্রিয়ান তিথিইইইই পাখিইইই বলে চিৎকার করলো।বাইক চালাতে চালাতে আদ্রিয়ান মিরা শহর থেকে দূর জংগলের পাশে চলে এসেছিলো।তাই রাতের আধারে আদ্রিয়ান এর চিৎকার প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসতে লাগলো।আদ্রিয়ান মিরা এই দুই মানব ছাড়া আর কারো কানেই এই শব্দ পৌছায় নাই।
মিরা সরে আসলো আদ্রিয়ান এর কাছ থেকে।একটু কর্নারে এসে চোখের পানিটা মুছলো।
মিরাঃএতোদিন আমিই ভেবেছিলাম আপনি অবিবাহিত হলে ভালো হতো।আজ আমিই ভাবছি এমনটা না হলেও পারতো।


আদ্রিয়ান এর সাথে তিথি নামটাই ভালো ছিলো। কিন্তু তিথি কাজটা ঠিক করল না।ওকে খুব কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আদ্রিয়ান অনেক্ষন যাবত কান্না করেও চোখের পানি থামাতে পারছে না।তিথির সাথে কাটানো সব অনুভূতিগুলো জাগ্রত হয়ে যাচ্ছে।স্মৃতি গুলো জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠলো।
আদ্রিয়ানঃকেন!!কেন! করলে?আমার ভালোবাসার মূল্য আরো একবার দিলে না।গতবার তো তবুও মনকে বোঝাতে পারতাম এটা বলে যে আমার বিষয়টা তুমি জানতে না।এই বার তো জেনে বুঝে করলে।এইবার কি করবো আমি?কি করে ক্ষমা করবো তোমাকে?!
মিরাঃক্ষমা করবেন না আদ্রিয়ান। এটা ক্ষমার যোগ্য অপরাধ না।
আদ্রিয়ান অসহায়ের মতো মিরার দিকে তাকালো।
মিরা আদ্রিয়ান এর হাত ধরে জংগলের ভেতরে নিয়ে গেলো। সেখানে একপাশে কিছু কাঠ একত্রিত করে আগুন জ্বালানো আছে।

আদ্রিয়ানঃএসব কি?মিরা।
মিরাঃঅনেক কেদেছেন আর না।
মিরা ওড়নাটা মাটিতে বিছিয়ে দিলো।
মিরাঃএইটায় শুয়ে আকাশ দেখুন।
আদ্রিয়ান গা থেকে জ্যাকেট খুলে মিরাকে পড়িয়ে দিলো।
আদ্রিয়ানঃবিদেশে থেকেছেন বলে যে দেশীয় সংস্কৃতি ভুলে যাবেন এটা আপনার দ্বারা আশা করি নাই।
মিরাঃকি করলাম আমি?

আদ্রিয়ানঃপরপুরুষের সামনে গা থেকে ওড়না খুলেন কি করে?
মিরাঃবিদেশে এগুলো নরমাল ব্যাপার। 
আদ্রিয়ান হাতে মাথা রেখে ওড়নাটাতে শুয়ে পড়লো।
আদ্রিয়ানঃবিদেশে কিন্তু আমিও থেকেছি।
মিরা আদ্রিয়ান  থেকে এক হাত দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লো।
মিরাঃআপনার কথা তো আলাদা।আপনি তো দেশপ্রেমিক। 
আদ্রিয়ানঃআর আপনি না?
মিরাঃএই দেশে ভালোবাসার মতো আছেই বা কি?
আদ্রিয়ান মুচকি হাসলো।

আদ্রিয়ানঃবাংলাদেশের মতো শান্তশিষ্ট দেশ আর একটি ও নাই।এখানকার মানুষরা খুব সহজ সরল।খায় দায় আর ঘুমায়।অন্য কোনো দেশকে নিয়ে  মাথা ব্যাথা নেই।
মিরাঃএই মানুষ গুলো ছাড়া এখানে আর আছেই বা কি?
আদ্রিয়ানঃছিলো তো অনেক কিছুই।সোনার বাংলাদেশ ছিলো আমার।
বিট্রিশরা সোনা লুটে রুপার দেশ করে গেলো।তারপর ভারত বিভাগ রুপা কেড়ে তামা বানিয়ে ফেললো।এরপর বাকি যা ছিলো পাকিস্তান নিয়ে গেলো।
আমার সোনার বাংলাদেশকে এখন খাদের দেশ করে দিয়ে চলে গেলো সবাই।না হলে আমরা ও ধনী দেশগুলোর একটি হইতাম।


মিরাঃসরি।
আদ্রিয়ানঃইটস ওকে।দেশকে ভালোবাসলে দেখবেন আজও সোনার দেশই মনে হবে।মা যেমন কখনো অসুন্দর হয় না তেমন মাতৃভূমিও অসুন্দর হয় না।
কিছু অসৎ মানুষ সেটাকে অসুন্দর করে ফেলে।ভাইয়া মন্ত্রী হলে দেখবেন এগুলোর খবরই আছে।
মিরাঃআপনার ভাই কি মন্ত্রি ক্যান্ডিডেট মেহরাব চৌধুরী? 
আদ্রিয়ানঃহ্যা।কেন?

মিরাঃওহ নো। আমি ভাবসিলাম অন্য কোনো মেহরাব হবে।তাহলে তো আপনার বাসায়ই নেহা চাকরি করে।
আদ্রিয়ানঃহ্যা।উনাকে তো আমিই চাকরি দিয়েছিলাম।
মিরাঃওহ আচ্ছা। আমি জানতাম না ব্যাপারটা।
নেহা অনেক ভালো জানেন।একটা এক্সিডেন্ট এ স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। তারপর থেকে আমাদের কাছে ছিলো।
স্বামীর নাম বাদে কিছুই মনে নেই ওর।
আদ্রিয়ানঃকি নাম উনার স্বামীর? আমাকে বললে আমি খুজে দেখতে পারি।
মিরাঃমেহের।
আদ্রিয়ানঃকিহহ!!
মিরাঃজ্বি কেন?
আদ্রিয়ানঃপিক আছে উনার?কোনো?

মিরাঃকার নেহার?
আদ্রিয়ানঃজ্বী আছে তো।কিন্তু ও তো পর্দা করে।তাই দেখাতে পারছি না।
আদ্রিয়ান নিজের ফোনের গ্যালারি থেকে নূরের পিক বের করে মিরার সামনে ধরে।
আদ্রিয়ানঃদেখুন তো ইনিই নাকি?
মিরাঃহ্যা।কিন্তু এটা আপনার কাছে।
আদ্রিয়ান এর মুখে হাসি ফুটল।
আদ্রিয়ানঃযাক কিছু তো ভালো হলো।
নেহাই নূর ভাবী।
মিরাঃকিহ!!
আদ্রিয়ানঃজ্বীহ।
মিরাঃতার মানে তিথি এতকিছু আমার, মিরার বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথে করেছে।ওকে তো আমি মেরেই ফেলবো।
আদ্রিয়ান কিছু বললো না।
মিরা নিজে নিজে বিড়বিড় করছে।তিথিকে বিনা সাবানে ধুয়ে দিচ্ছে।
আদ্রিয়ান মনোযোগ দিয়ে আকাশের তারাগুলো দেখছে।
আদ্রিয়ানঃআমাকে তুমি ভালোবাসো তাই না?
মিরা থেমে গেলো।আদ্রিয়ান এর দিকে ঘুরে তাকালো।আদ্রিয়ান মিরার দিকে ঘুরলো এইবার।
আদ্রিয়ানঃআমি সবই জানি।কি করে ৩ টা বছর আমাকে পাগলের মতো খুজেছো।আমার কলিগদের পাগল করে রেখেছিলে।আমি ঢাকায় এসেছি জানতেই বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এলে।

তোমার দোয়ায় জোর ছিল বলেও আমি কক্সবাজার আসলাম।তোমাকে নিয়তি নিয়ে আসলো।
মিরাঃসব কিছু জেনেও উপেক্ষা করেছেন আমাকে?আপনি তো চাইলেই আমাকে খুজতে পারতেন।কেন খুজেন নাই?
আদ্রিয়ানঃবিবাহিত ছিলাম।
মিরাঃতো এখন বিয়েটা নকল ছিলো জানতেই ভালোবাসা উপচে বের হয়ে আসছে?
আদ্রিয়ানঃএমনটা না।


আদ্রিয়ান দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
মিথ্যা বলবো না কিন্তু সত্যিই এটাই তোমাকে আমার  প্রয়োজন।
আমার সামনে এখন দুইটা পথ খোলা একটা হচ্ছে মৃত্যু।আর একটা তোমাকে নিয়ে আরো একবার বাচার চেষ্টা।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন