উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান - Bangla Golpo - Kobiyal - কবিয়াল
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১০)

মেহরাব নূরকে নিয়ে নিচে চলে আসে।আরিয়ান তার মা বাবাকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে।আরিয়ান নূর মেহরাবকে একসাথে দেখে মুচকি হাসে।মেহরাব আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে।
মেহরাবঃকেমন আছেন? 
আরিয়ানঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি?
মেহরাবঃখুব ভালো।
নূর এদের আদিখ্যেতা সহ্য না করতে পেরে সরে আসে।
আরিয়ান আশেপাশে আদ্রিতাকে খুজছে।
মেহরাবঃকি রে কারে খুজিস?
আরিয়ানঃকই কাউকে না।
মেহরাবঃওহ।
আরিয়ানঃকিছু কি ভেবেছিস?
মেহরাবঃহুম।আজকেরটা ভাবছি।কালকেরটা আমি কিছুই জানি না।
আরিয়ানঃআজকেরটাই বল।
মেহরাবঃহ্যা।শুন...........
তিথি বোর হয়ে আদ্রিয়ানকে কল করে।
আদ্রিয়ানঃহ্যা।বল।
তিথিঃবেয়াদপ।কই তুই?
আদ্রিয়ানঃবাসায় রেডি হচ্ছি।
তিথিঃসারাদিন কি করস ফাজিল।আমি একা বোর হচ্ছি।
আদ্রিয়ানঃতুই এসে ও পরেছিস?
তিথিঃআরো ১ ঘন্টা আগে।
আদ্রিয়ানঃ৫ মিনিট এ আসছি।
আদ্রিয়ান কল কেটে চুলটা ঠিক করে দৌড় দিলো।
আদ্রিতাঃআর এ আমাকে তো নিবি?
আদ্রিয়ানঃতাড়াতাড়ি আয়।
আরাফঃএতোক্ষন লাগে?৫ মিনিট বলে ১ ঘন্টা বসিয়ে রেখেছো।
আদ্রিয়ানঃতুমি পাশের সিটে যাও।আমি ড্রাইভ করবো।
আদ্রিতাঃহ্যা হ্যা। এখন তো  উড়ে যেতে হবে।
আরাফঃমানে?
আদ্রিতাঃতিথি কল দিয়েছিলো।এজন্যই তো এত তাড়াহুড়ায় আছে।
আরাফঃতো এই কথা?
আদ্রিয়ানঃআব্বু সরবে নাকি আমি বাইক নিয়ে টান দিবো?
আরাফ সরে বসলো।আদ্রিয়ান স্পিডে ড্রাইভ করে নিলয়ের বাসায় পৌছায়। 
আদ্রিতাঃআব্বু। আমরা কি বেচে আছি?
আদ্রিয়ানঃআপুনি ঢং করো না। আমি গেলাম।
আদ্রিয়ান ভিতরে চলে গেলো।
আরাফ গেট খুলে হাত বাড়িয়ে দিলো।
Come my Princess ❤️
আদ্রিতা মুচকি হেসে আরাফ এর হাত ধরে ভিতরে প্রবেশ করলো।
আরিয়ান এর চোখ এতক্ষন দরজায়ই আটকে ছিলো। আদ্রিতাকে দেখে ছোট খাটো একটা হার্ট এট্যাক ও করলো।আদ্রিতা সবসময় নরমাল লুকে থাকতো। আজ প্রথমবার তাকে এতো সুন্দর করে সাজতে দেখলো আরিয়ান।আরিয়ান ড্যাব ড্যাব করে আদ্রিতার দিকে তাকিয়ে আছে।আদ্রিতা দিব্যি বাবার হাত ধরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে।আরিয়ানকে বিন্দু পরিমান এটেনশন ও দিলো না।
আরিয়ান এবার রেগে আদ্রিতার কাছে গেলো।
আরিয়ানঃExcuse me.
আদ্রিতাঃজ্বি বলেন?
আরিয়ান আদ্রিতার দিকে তাকিয়ে সব রাগ ভুলে আহম্মক হয়ে গেলো। 
আদ্রিতাঃকি হলো? কিছু কি বলবেন?
আরিয়ানঃএতো লেট হলো কেন?
আদ্রিতাঃআমি তো আর বউ না যে আমার জন্য অনুষ্ঠান আটকে থাকবে।তাই দেরি করেই আসলাম।
আরিয়ানঃআপনাকে ছোটকালে মধু খাওয়ানো হয় নাই?
আদ্রিতাঃনা। আমার বাবা মা গরিব ছিলো।
কথাটা বলে আদ্রিতা নূর এর পাশে যেয়ে বসলো।
আরাফ নবনির উপর রেগে কথা বলছে না।আর নবনি সেটাকে পাত্তা দিচ্ছে না।
আদ্রিয়ানকে মেয়েরা ঘিরে সেল্ফি তুলছে।তিথি এতোক্ষন এগুলো দেখে লুচির মতো ফুলছিলো।তখনই একটা মেয়ে হুট করে আদ্রিয়ান এর গালে কিস করে দিলো।তিথির মাথায় যেন বাড়ি পরলো।তিথি উঠে যেয়ে আদ্রিয়ানকে টেনে সব ভিড় ঢেলে ওয়াশরুমে নিয়ে আসলো।
ওয়াশরুমে ছোবা দিয়ে গালটা ইচ্ছে মতো ঢলতে লাগলো।
আদ্রিয়ানঃওই করছিস কি?কলার ছাড় আমার।
তিথি চোখ গরম করে তাকালো আদ্রিয়ান এর দিকে।
তিথিঃডেকে আনলাম আমি।আর এসে ওদের সাথে লেগে গেলি।বেয়াদপ।বিদেশে এগুলো করে বেড়াতি?
আদ্রিয়ান তিথিকে জ্বলতে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে।
তিথিঃহাসছিস কেন?
আদ্রিয়ানঃতোর কি?আমাকে মেয়েরা ঘিরে ধরলে?
তিথিঃআমার কি মানে!!আমার সবকিছুই তো তোকে ঘিরে।তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড না।আমি তোর আশেপাশেও কাউকে সহ্য করতে পারবো না।
আদ্রিয়ানঃআমার সবকিছুও তো #তোমায়_ঘিরে তিথি পাখি।
আদ্রিয়ান এর কথাটা তিথির বুকে তীর এর মতো লাগে।তিথির মনে এক অন্যরকম অনুভূতির শিহরণ বয়ে গেলো।
তিথি সেখানে থেকে চলে আসলো।আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বের হয়ে আসলো।
মেহরাব নূর আর আরিয়ানকে স্টেজে নিয়ে আসলো।তারপর হাতে মাইক নিলো।
মেহরাব~
হ্যালো এভ্রিওয়ান।
আপনাদের সবাইকে নূর আর আরিয়ান এর হলুদ সন্ধ্যা আর আংটি বদল এর অনুষ্ঠানে স্বাগতম।আপনাদের সবার সামনে আরিয়ান নূরকে আংটি পরবে।
সবাই জোরে হাত তালি দিতে লাগলো।রিং নূর এর হাতে দেয়া হলো।নূর আরিয়ানকে আংটি পড়াতে যাবে তখনই বিদ্যুৎ চলে গেলো।মেহরাব রিং নিয়ে নূর এর হাতে পড়িয়ে দিলো।
মেহরাবঃআংটি পড়াও।আরিয়ানকে নূর।
নূর আরিয়ান ভেবে মেহরাব এর হাতে আংটি পড়িয়ে দেয়।
এদিকে আদ্রিতার গালে কেউ চুমু খায়।আদ্রিতা অন্ধকারে কিছুই দেখতে পায় না।
বিদ্যুৎ চলে আসে। নূর আর আরিয়ান এর হাতে রিং।সবাই হাত তালি দিতে থাকে।মেহরাব মুচকি হেসে নেমে আসে স্টেজ থেকে। 
আরিয়ান মেহরাব এর পাশে এসে দাঁড়ায়।
মেহরাবঃআমি যখন নূরকে রিং পড়াচ্ছিলাম তুই কই গিয়েছিলি।
আরিয়ানঃআমি কোথাও না।
আরিয়ান যেয়ে নূর এর পাশে বসে পড়লো।
মেহরাবঃকিছু তো একটা চলছে যেটা আমি দেখছি না।
সবাই নূর আরিয়ানকে হলুদ দিতে লাগে।মেহরাব এর সহ্য হচ্ছে না তাই মেহরাব দূরে সরে আসলো।
মেহরাবঃসামান্য আরিয়ান এর নামের হলুদ আমি সহ্য করতে পারছি না বিয়ে কিভাবে সহ্য করবো।নূর পাখি।
মেহরাব খাবার এর ব্যবস্থা দেখতে চলে গেলো।নূর মেহরাবকে খুজতে লাগে।
নূরঃআপনি কোথায় মেহরাব?আমার ভালো লাগছে না। আমার কেন জানি আংটি পড়ানোর সময় মনে হলো ছোয়াটা আপনার ছিলো।কিন্তু আপনি কি করে হতে পারেন।আংটিটাতো আরিয়ান এর হাতেই।আর আপনারতো কোনো আসে যায়ই না।নূর এর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো।নূর কারো দেখার আগে মুছে ফেললো।
আরিয়ান অসহায়ের মতো বসে আছে।আদ্রিয়ান আরিয়ানকে হলুদ লাগাতে আসে।
আরিয়ান এর ঠোঁটে হাসি ফুটে।
আদ্রিতা আরিয়ানকে হলুদ লাগায়।
আদ্রিতাঃCongratulation ডাক্টার সাহেব।
আরিয়ান হলুদ নিয়ে আদ্রিতার গালে লাগিয়ে দেয়।
আদ্রিতাঃএটা কি করলেন?
আরিয়ানঃহলুদের অনুষ্ঠানে হলুদ লাগিয়েছি।
বলে চোখ টিপি মারলো।আদ্রিতা রেগে চলে গেলো।
হলুদ শেষে নূর ছাদে চলে আসে।
নূরঃনিচে সবার মাঝে ভালো লাগছে না।মেহরাব ও কোথায় চলে গেলেন।আংটি বদল এর পর আর দেখা যায় নাই তাকে।
ছাদে দূরে একটি অবয়ব দেখা যাচ্ছে।কিন্তু অন্ধকার এর জন্য বোঝা যাচ্ছে না কে সেখানে।নূর এগিয়ে গেলো অবয়বটার দিকে। 
_কে সেখানে?
এইবার লোকটা ঘুরে দাড়ালো।
নূরঃমেহরাব?
মেহরাব চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।নূর কাছে যেতেই নূর এর হাত টান দিয়ে ঘুরিয়ে বুকের সাথে নূর এর পিঠ ঠেকালো।নূর এর গাল এর হলুদ নিজের গালে ঘষে নিলো।
Congratulation নূর পাখি।
নূর স্থির হয়ে গেলো।নূর এর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ার আগে মেহরাব ঠোঁট দিয়ে চুষে নিলো।
নূর ঘুরে মেহরাব এর বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।মেহরাব মুচকি হেসে নূরকে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে নিলো।
মেহরাবঃনূরপাখি?
নূর এর কোনো সারাশব্দ নেই।মেহরাব এর বুকে চুপ হয়ে আছে।
মেহরাব ও আর কিছু বললো না।সময় যেন থেমে গেলো।এভাবে কত সময় পার হয়ে গেলো দুজনের একজন ও টের পেলো না।
কিছুক্ষন পর মেহরাব কারো পায়ের শব্দ পেলো।পায়ের আওয়াজ শুনে মেহরাব সরে আসতে চাইলো।কিন্তু নূর আজ মেহরাবকে ছাড়তে রাজী না।কোনো কিছুর ভয় নূরকে আটকাতে পারছে না।নূর মেহরাবকে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে।জোর করে ছাড়ালে নূর ব্যাথা পাবে।পায়ের আওয়াজ কাছে আসছে দেখে মেহরাব ছাদে টানানো কাপড় এর দড়িটা হাত দিয়ে ছিড়ে ফেলে।কাপড়গুলো মেহরাব নূর এর উপর পড়তেই মেহরাব নূরকে নিয়ে বসে পড়ে।
নিলয় ফোনে কথা বলতে বলতে ছাদে এসেছিলো।এদিকটায় অন্ধকার দেখে নিলয় আর এগোলো না।নিচে চলে গেলো।
নিলয় যেতেই মেহরাব নূরকে কোলে করে নূর এর রুমে দিয়ে আসলো।
নূর রেগে মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে আছে।
মেহরাবঃতুমি যে কতো জেদি তা আমি খুব ভালো করে জানি।কিন্তু আমি যে কতটা রাগী তাও তোমার জেনে রাখা দরকার নূর।এই বিয়ে কেউই আটকাতে পারবে না।যাও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।
নূর রেগে মেহরাব এর মুখের উপর দরজা আটকে দিলো।মেহরাব ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
আদ্রিয়ান দুই হাতে হলুদ নিয়ে তিথির পেছনে ছুটছে।তিথি এদিক সেদিক লুকাতে লুকাতে মেহরাব এর ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন