উপন্যাস        :         তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
লেখিকা         :         মাধুর্য মাধুরী
গ্রন্থ              :         
প্রকাশকাল     :         
রচনাকাল      :         ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মাধুর্য মাধুরীর “তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১৬ই নভেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী


1111111111111111111111

৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী (পর্ব - ০৯)

ঘুম থেকে উঠে আর্য লক্ষ্য করলো, মাথাটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। যেন মনে হচ্ছে কিছু স্মৃতি'র অধিকাংশই মুছে গেছে। ঝাপসা মনে পড়ছে আরণ্যার মেরুন রঙা শাড়ি, কালো টিপ, খোলা চুল....আর কিছু? নাহ, আর কিছুই নয়। বিছানা ছাড়তেই আর্য লক্ষ্য করলো, টেবিলের নীচে একটা কাঁচের গ্লাস আর তার পছন্দের ব্র্যান্ডের মদের বোতল আড়াল করে রাখা। আরণ্যার এক্সিডেন্টের পর থেকে সে তো আর ওসব ছুঁয়েও দেখেনি। তবুও ঘরে একটা চাপা মদের গন্ধ যেন রুম ফ্রেশনারের সুবাসে ঢেকে গেছে। কাল রাতে কি তবে সে ড্রিংক করেছিল আরণ্যার সামনেই?লজ্জায় আর্যর মুখ-চোখ লাল হয়ে এলো। রাতের ঘটনা তার কিছুই মনে পড়ছে না ঠিক মত।
চুল ঝাড়তে ঝাড়তে আরণ্যা ব্যালকনি থেকে প্রশ্ন করলো,
-'কী ভাবছেন ওখানে একভাবে দাঁড়িয়ে?'
আরণ্যাকে খুব স্বাভাবিক লাগছে। বিগত রাতের কোনো কিছুর কথাই তুলছে না সে। তবুও আর্য লজ্জায় রাতের সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন করলো না। হয়তো সবটাই তার ভ্রম। কিন্তু কাঁচের গ্লাস আর অর্ধসমাপ্ত বোতলটা তার মনে কিছুটা অস্বস্তি জাগিয়ে তুললো।
আর্য ফ্রেশ হয়ে এসে বলল,
-'আজ আমার ছুটি আছে। বিয়ের পর থেকে তোমাকে নিয়ে সেভাবে কোথাও যাওয়া হয়নি। এখন তুমি যেহুতু ফিট আছো, তাই ভাবছি, আজ আমরা গোটা শহর ঘুরবো রিক্সায়। আলমারিতে একটা সবুজ জামদানি আছে। তুমি সেটাই বরং পড়বে।'
আরণ্যা খুশি হয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
-'আপনি তাহলে আপনার সবুজ শার্টটা পড়বেন? বেশ লাগে ওটা পড়লে আপনাকে।'
আর্য হাসলো।
-'বেশ তাই হবে। একটু পরেই বেরোবো আমরা। তৈরি থেকো। লাঞ্চ করবো বাইরের কোনো রেস্টুরেন্টে।'
-'না, না, আজ যেমন রিক্সায় ঘুরবো, তেমনই খাবো বাইরের স্ট্রিট ফুড,যেখানে উপরের খোলা ছাদ থেকে নীল আকাশ দেখা যাবে।'
আরণ্যার কিশোরীসুলভ কথা শুনে আর্য ভাবলো, মেয়েটা তার ভাবনার চেয়েও বেশি সরল।
সবুজ শাড়িতে আরণ্যাকে ঠিক যেন লজ্জাবতী লতা লাগছে। বেরোনোর ঠিক আগের মুহূর্তে আর্য কোথা থেকে এক গুচ্ছ বেলীর মালা এনে আরণ্যার চুলে গুঁজে দিতে দিতে বলল,
-'এবার তোমার সাজ সম্পূর্ণ লাগছে।'
আরণ্যা মিষ্টি হেসে বলল,
-'আমার সব সাজ শুধুমাত্র আপনার জন্যই।'
হুড খোলা রিক্সায় যেতে যেতে আরণ্যা ভাবলো, তার জীবনের গল্পটা আর্যকে ছাড়া অসম্পূর্ণই থেকে যেত। সাময়িক হলেও সে একটা মানুষকে পুরোপুরি নিজের আয়ত্তে আনতে পেরেছে। আচ্ছা, খুব কি ভুল হত, যদি আর্যর সাথে বাকি জীবনটা এভাবেই সব কিছু ভুলে কাটিয়ে দেওয়া যেত?
-'আরণ্যা, পাশের লেকে ঘুরবে? শুনেছি, ওখানে জোড়ায় জোড়ায় গেলে ভালোবাসা বাড়ে।'
আরণ্যার হটাৎ চমকে ওঠা দেখে আর্য থমকে গেলো। ব্যাস্ত কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলো,
-'কী হল তোমার? শরীর খারাপ লাগছে?'
-'নাহ, নাহ অন্য একটা কথা ভাবছিলাম। আপনি হটাৎ ডেকে ওঠাতে ভয় পেয়ে গেছি।'
আর্য দুষ্টুমি করে জিজ্ঞাসা করলো,
-'হাসব্যান্ডের সাথে ঘুরতে ঘুরতে কার কথা মনে পড়লো তোমার? আমার আগে কোনো প্রেমিক পুরুষ ছিল নাকি জীবনে?'
আরন্যা বিব্রত হয়ে উঠলো। আর্য কি তবে তাকে সন্দেহ করছে?
লেকের সামনের একটা বেঞ্চে দুজনে বসে পড়লো। আশে-পাশে আরও অনেক যুগল ঘোরাঘুরি করছে। কেউ লেকের জলে পা দোলাতে, আবার কেউ আইসক্রিম খেতে ব্যাস্ত। সেখানে হটাৎ হাওয়াই মিঠাইওয়ালা'কে দেখে আরণ্যা চেঁচিয়ে উঠলো,
-'এই যে মিঠাই কাকু, এদিকে এদিকে... একটা গোলাপি রঙের হাওয়াই মিঠাই দিয়ে যান তো।'
আর্য অবাক হয়েছে, তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অতো বড়ো মেয়ে কি না এখন বাচ্চাদের মত কটন ক্যান্ডি খাবে? তাও আবার রং পছন্দ করে?
আর্যকে ধাক্কা দিয়ে দাঁত বের করে হেসে আরণ্যা বলল,
-'যদি টাকাটা দিয়ে দিতেন!'
আর্য পার্সটা তার দিকে বাড়িয়ে দিলো। নাহ, এই মেয়ে এখনো বাচ্চাই আছে,লেডি হয়ে উঠতে পারেনি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মাধুর্য মাধুরী তার সামাজিক মাধ্যম প্রফাইলে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন - “নিজেকে প্রকাশ করতে চাই না। পৃথিবীর সব রহস্যের মধ্যে আমি অধিকতর রহস্যময়।” এছাড়া তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন