উপন্যাস        :         যতনে রাখিলাম যাতনা
লেখিকা        :          মম সাহা
প্রকাশনা       :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ৭ জুলাই, ২০২৪ ইং

লেখিকা মম সাহার “যতনে রাখিলাম যাতনা” নামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। এটি মূলত লেখিকার ‘প্রেমোত্তাপ’ উপন্যাসের ২য় খন্ড। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি  ২০২৪ সালের ৭ জুলাই লেখা শুরু করেছেন। 
যতনে রাখিলাম যাতনা || মম সাহা
যতনে রাখিলাম যাতনা || মম সাহা

১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

যতনে রাখিলাম যাতনা || মম সাহা (পর্ব - ২)


সিলেটের আম্বরখানায় একটি তিন তালা বাড়ি আছে নাতাশা বেগমের। তার বললে ভুল হবে বাড়িটি হলো তার স্বামী জুবায়ের আহমেদের। সেই তিন তালা বাড়িটির দ্বিতীয় তালাতেই তারা থাকে পাঁচ রুমের একটি ফ্লাটে। সেই ফ্লাটের দক্ষিণ দিকের একটি রুম অহির নামে বরাদ্দ। অহি সে-ই রুমটাতেই থাকে।
সময় মাত্র সকাল পৌনে সাতটা। অহি স্নান করে বের হয়েছে সবে। পরনে গতানুগতিক সাদা রঙের একটি ফতুয়া। গোল ফ্রেমের চশমাটা চোখে। চুল গুলো এখন পিঠ ছাড়িয়ে কোমড় সমান হয়েছে। স্নিগ্ধ, সুন্দর মুখশ্রী। স্নান করাতে আরেকটু বেশি পবিত্রতা জড়িয়ে ধরেছে যেন তাকে। খানিক পরিপাটি হতেই ফোন বেজে উঠল তার। ভাইব্রেশনের তালে তালে কাঁপছে ফোনটা। অহি রিসিভ করল ফোন। অপর পাশ থেকে চনমনে একটি মেয়েলি স্বর ভেসে এলো,
‘কতক্ষণ লাগবে তোমার, অহি? আমরা কিন্তু বের হয়ে গিয়েছি।’
‘পাঁচ মিনিট বড়োজোর। তোমরা আসতে আসতে আমি দশবার যেতে পারব। আমার বাসা থেকে দুই মিনিটের রাস্তা সিএনজি স্টেশন।’
‘আচ্ছা আসো। বাই।’
ছোটো কথপোকথনের পর কলটি বিচ্ছিন্ন হলো৷ অহি মুখে কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করেনি। কেবল চুল টুকু নাম মাত্র গুছিয়েই কাঁধে ট্রাভেল ব্যাগ তুলে নিল। নিজের বেড রুম থেকে বাহির হয়ে তালা ঝুলিয়ে দিল দরজায়। ড্রয়িং রুম ডিঙিয়ে যেতে নিলেই রান্নাঘর থেকে তাকে ডেকে উঠল কামেনি খালা,
‘মেডাম, আপনে এই সাত-সকালে কই যান? তা-ও এত বড়ো ব্যাগ লইয়া? আবারও কি ঘুরতে যাইতাছেন?’
অহি কাঁধের ব্যাগটা পাশের টুলে রেখে জুতা পরতে পরতে বলল, ‘আহা খালা, আপনাকে না বলেছি আমাকে অহি বলে ডাকতে। মেডাম বলে আমাকে অস্বস্তিতে ফেলবেন না।’
অহির বিরক্তি প্রকাশে বোকা বোকা হাসলেন কামেনি খালা, ‘কী যে কন না! বড়ো মেডাম হুনলে বকবো।’
‘বকলে সেটা আমি বুঝে নিবো। আপনি আমাকে মেডাম ডাকবেন না প্লিজ।’
‘আপনে না অনেক ভালা জানেন? বড়ো মেডামের মাইয়া আপনি কিন্তু একটুও মেডামের মতন না।’
অহি জুতার ফিতা বেঁধে ব্যাগটা কাঁধে তুলে নিল। মুচকি হেসে বলল, ‘পেটে ধরলেই কি আর মা হওয়া যায়? আমায় যে পিঠে ধরেছে তার গুণ আমি পেয়েছি। একদিন সেই মায়ের সাথে নাহয় দেখা করিয়ে দিবো?’
কামেনি খালা যদিও পুরো কথার অর্থ বুঝেননি তবুও ঘাড় কাঁত করে সম্মতি জানালেন। তার মাঝেই ঘর থেকে ঘুম জড়ানো চোখে বেরিয়ে এলেন নাতাশা বেগম। পরিপাটি অহিকে দেখে তার ঘুম জড়ানো চোখের ঘুম উবে গেল। কপালে দীর্ঘ তিন ভাঁজ ফেলে বললেন, ‘কোথায় যাও আবার? সেদিন না ট্যুর থেকে এলে তাহলে আজ আবার….!’
অহি মায়ের মুখের দিকে তাকানোর প্রয়োজনটুকু বোধ করল না। ব্যাগের দিকে দৃষ্টি রেখেই বলল,
‘আজ আবার ট্যুরে যাচ্ছি। ট্রাভেল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে কেউ নিশ্চয় বিয়ে খেতে যায় না!’
অহির বাঁকা কথার ধরণে নাতাশা বেগম অসন্তুষ্ট হলেন। তারপর কাজের লোকের সামনে মেয়ের আচরণ তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই ফেলল কিছুটা। তাই খানিক রাগী স্বরে বললেন,
‘দু'দিন অন্তর অন্তর কীসের ট্যুর দেও তুমি! এত স্বেচ্ছাচারী নীতিবাদী হয়ে উঠেছ কার আশকারায়? মানুষ করতে পারেনি আমজাদ তোমাকে।’
অহি ভ্রু বাঁকাল। তাচ্ছিল্য করে বলল,
‘মানুষ করার দায়ভার কি একা তারই ছিল? আপনার ছিল না? প্রেমিক পেতেই মেয়ের চিন্তা ফেলে যে মহিলা পালিয়ে যেতে পারে তার মুখে নীতিবাক্য মানায় না।’
‘অহি, খবরদার!’ খ্যাপে গেলেন নাতাশা বেগম। তাতে ঠিক অহির তেমন কিছু হেলদোল হলো না। জুতা জোড়া মুছতে মুছতে বলল,
‘গলা নামিয়ে কথা বলুন। নয়তো কথা বলার প্রয়োজন নেই।’
নাতাশা বেগম মেয়ের এমন গা-ছাড়া ব্যবহারে বিস্মিত হলেন, ‘ভুলে যেও না আমি তোমার মা! ‘
‘আপনিও ভুলে যাবেন না আপনি কেবল আমাকে জন্ম দিয়েছেন।’
‘তোমাকে সামান্য একটা প্রশ্নই জিজ্ঞেস করেছিলাম।’
‘ওটা প্রশ্ন নয়। ওটা কৈফিয়ত। আর আমি আপনাকে কৈফিয়ত দিবো না সেটা আপনি ভালো করেই জানেন। তাই না?’
‘অনার্স শেষ করেছ ছয় মাস হলো। না কোনো জব প্রিপারেশন, না কোনো বাহিরের যাওয়ার চিন্তা আছে না ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছো। তোমার ভবিষ্যত নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা হয় বলেই জিজ্ঞেস করি তোমার ব্যাপারে।’
অহি এবার ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়াল। দরজার কাছে এগিয়ে গেল নিঃশব্দে। তারপর দরজা খুলে বাহিরে যেতে যেতে বলল,
‘আজ আমি নিজের হাতে খেতে পারি, নিজের পায়ে চলতে জানি, ব্যথা পেলে নিজেকে সামলাতে জানি তাই আজ আর আপনাকে আমার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এখন আগুন আর পানির তফাত বুঝি। যে বয়সে কোনটা আগুন কোনটা পানি কোনটা বুঝতাম না সে-ই বয়সেই তো ভাবেননি আমার ভবিষ্যতের কথা তাই আজ না ভাবলেও চলবে। যে বয়সে মা'কে না পেলে একটা শিশুর জীবন ঝরে যেতে পারে সে বয়স যেহেতু ঝরে পড়িনি তার মানে আমায় নিয়ে আর ভয় নেই। আমার ভবিষ্যত আমি বুঝে নিতে পারব।’
আর এক ফোঁটা কথা না বাড়িয়ে অহি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। যাই- বলার প্রয়োজনটুকুও বোধ করল না। কামেনি খালা একবার নাতাশার দিকে তাকিয়ে মুখ নামিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলেন। নাতাশা বেগম মেয়ের স্পর্ধায় অবাক হলেন। চোখ ফিরিয়ে মেয়ের দরজায় তালা দেখতেই তার রাগ হুড়মুড়িয়ে বাড়ল। এত অবাধ্য হয়েছে মেয়েটা! এমন ভাবে অসম্মান এ জনমে তাকে কেউ করেনি।
অহি তিন মিনিট হাঁটতেই আম্বরখানার সিএনজি স্টেশনে এসে পৌঁছে গেল। কিন্তু তার আগেই তার বন্ধুরা এসে দাঁড়িয়ে আছে এখানটায়। মায়ের সাথে মতবিরোধ না লাগলে সে-ই আগে আসতো কিন্তু এ কথা তো আর বন্ধুদের বলা যাবে না।
অহির ভার মুখ দেখেই উচ্ছ্বাসিত নুজাইফা এগিয়ে এলো। উষ্ণ আলিঙ্গন করল বিনা অনুমতিতে। উৎফুল্ল গলায় বলল,
‘অহি, মন খারাপ না-কি?’
অহি উত্তর দিল না। তার আগেই কোহিনূর বলল, ‘ওর মন কোনদিন ভালো থাকে? সারাদিনই তো এমন ভাবে থাকে যেন মুখের ভেতর গোল আলু ভরে রাখছে।’
কোহিনূরের কথায় খিলখিল করে হেসে ফেলল সকলে। অহি বলল,
‘চুপ করো তো। তুমিও না..’
‘আমিও না কী হুম? তুমি তো সবসময় এমন রাগী ভাব নিয়ে থাকো।’
‘ওটা ভাব নয়। ওর বৈশিষ্ট্যই অমন, নূর। তুই খোঁচা দিস না তো ওকে। চল তাড়াতাড়ি। এখান থেকে হাদারপার নৌকা ঘাটে যেতে ভালো সময় লাগবে কিন্তু। তারপর সেখান থেকে পান্তুমাই ঝর্ণা। তাড়াতাড়ি চল আমার সয় না।’
নুজাইফার কথায় অহি ও নূর সম্মতি দিল। শহর ছেড়ে আসার পর থেকেই অহির একাকীত্ব কাটছিল ভীষণ ভয়ঙ্কর ভাবে। হুট করে একটা ট্রাভেল গ্রুপ থেকেই নুজাইফার সাথে তার প্রথম আলাপ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপর তারা দু'জন ট্যুর দেয় কয়েক জায়গায়। নুজাইফার বন্ধু নূর। নুজাইফার সাথে ভাব হওয়া অহির বন্ধুত্ব হয়ে গেল নূরের সাথে। এরপর তিনজন সিলেটের আশেপাশের জেলা গুলো চষে বেড়ালো। অহিকে যেন নতুন করে বাঁচার কারণ শেখালো দু’জন। নাহয় এই অপরিচিত সিলেটে অপছন্দের মানুষের সাথে ও থাকতো কেমন করে?
সওদাগর বাড়ির রান্নাঘর থেকে যথারীতি ছ্যাঁত ছ্যাঁত রান্নার শব্দ ভেসে আসছে। সন্ধ্যা বেলার ভাজাপোড়া রান্না হচ্ছে সেখানটায়। রান্না করছে নিরু। মেয়েটা হুট করেই এই আড়াই বছরে বাড়িটার খুব আপন হয়ে গিয়েছে। সওদাগর বাড়ির বিপদে, আপদে মেয়েটা সাথে থেকেছে। চিত্রার রাগ, ক্ষোভ হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছে। টু শব্দটুকুও করেনি। এমন একটা বুদ্ধিমতী ও ভালো মেয়েকে তুহিন পছন্দ করেছে বিধায় সকলেই তার প্রতি যথেষ্ট সন্তুষ্ট।
রান্নাঘর থেকে ঘর্মাক্ত নিরু বের হলো। সাথে দুই হাতে দু'টো বোল। টেবিলের উপর রাখল সেগুলো। অবনী বেগম হাতে হাতে প্রত্যেকের জন্য ভাজাপোড়া প্লেটে সাজিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে লাগলে সকলের। নিরু তুহিন আর চিত্রার খাবারের প্লেটটা নিয়ে গেল নিজ থেকেই।
চিত্রার রুমের দরজা আটকানো সবসময়ের মতন। তবে ছিটকিনি দেয়নি আজ। সামান্য ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে গেলো। ঘরে সবুজ রঙের বাতি জ্বলছে। খুব স্লো ভলিউমে গান বাজছে সাউন্ড সিস্টেমটায়। মেয়েটা গানের প্রতি এত ঝুঁকেছে এই দুই বছরে যা বলার মতন নয়। এই বাড়ির প্রত্যেকেই তা জানে।
দরজায় দাঁড়িয়ে থেকেই নিরু অনুমতি চাইল ঘরে প্রবেশ করার, ‘চিত্রা, আসবো?’
কোনো সাড়া এলো না বিপরীত দিক থেকে। ঘরে নেই মেয়েটা। হয়তো বারান্দায় আছে। নিরু আবার ডাকল, ‘চিত্রা..’
এবার বারান্দা থেকে খানিক উঁকি দিল চিত্রা। সবুজ আলোতে ভারি মিষ্টি লাগছে সেই চিত্রাকে। কিশোরী সময়টা পেরিয়ে যৌবনের প্রথম ধাপেই মেয়েটাকে অসম্ভব সুন্দরী লাগছে। যদি চেহারার আরেকটু যত্ন নিতো তাহলে দুনিয়ার যেকোনো সুন্দর তার কাছে ফিকে পড়ে যেত।
‘কী কাজ?’
চিত্রার ভারিক্কি স্বর। ঠাণ্ডায় গলা বসে গেছে মেয়েটার। নিরুর মায়া হলো। বিচলিতও হলো খানিকটা, ‘ঠাণ্ডা লেগেছে তোমার? চা কিংবা কফি করে দিবো?’
‘কী কাজ এখানে সেটা জানতে চেয়েছিলাম।’
কণ্ঠস্বর বরাবরের মতনই রুক্ষ। নিরু হতাশ শ্বাস ফেলল। খাবারের প্লেটটা ঘরের দরজার পাশের ছোটো ওয়ারড্রবের উপর রাখতে রাখতে বলল,
‘তোমার ফেবারিট সিঙ্গারা করেছি। চিকেন সিঙ্গারা সাথে তেঁতুল টক। খেয়ে নাও।’
‘ধন্যবাদ। খাবো একটু পর।’
‘আর কিছু লাগবে? বলো, আমি এনে দিচ্ছি।’
‘বাড়িতে না আসতেই কর্ত্রী হয়ে যাচ্ছ মনে হচ্ছে! বেশ ভালো।’ কথাটা যে বেশ খোঁচা মারা তা বুঝতে বাকি নেই নিরুর। তবুও সে মনে দুঃখ নিল না। বরং প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, ‘কাল ঘুরতে যাবে?’
‘কোথায়?’
‘তুমি যেখানে চাও।’
‘তোমার সাথে?’
‘হ্যাঁ।’
‘তোমার সাথে ঘুরতে যাওয়া লাগবে? এমনেতেই তো তোমার একটা এন্ট্রিতে আমি বেঁচে থেকেও জীবনে জাহান্নাম ঘুরে ফেললাম। আর নতুন করে কী ঘুরাবা!’
চিত্রার কথায় চুপ করে গেল নিরু। মনটা এতটা ছোটো হয়ে গেল যে কথা বের হলো না। চিত্রা হয়তো বুঝল, নাকি না বুঝেই বলল,
‘রাগ করলে? রাগ করো না। জানোই তো আমি আধপাগল। কী বলতে কী বলে ফেলি! পাগলের কথা ধরতে নেই।’
‘এভাবে কেন বলছো! তুমি খুব ভালো একটি মেয়ে চিত্রা। তোমার জায়গায় আমি থাকলেও এ কথা গুলোই বলতাম।’
‘নাহ্। তুমি হলে এসব বলতে না। একটু হলেও তো তোমায় চিনেছি। তুমি আমার মতন এতটা শক্ত আচরণ কারো সাথে করতে পারবে না।’
‘তুমিও তো পারতে না আগে। করতেও না।’
‘কারণ তখন আমার হৃদয় ছিল। এখন হৃদয় নেই তাই হৃদয়হীনার মতন আচরণ করতে পারি।’
নিরু আর কথা বাড়াল না। এখনো চিত্রা উত্তেজিত হয়নি। দেখা যাবে কথা বলতে বলতে মেয়েটা উত্তেজিত হয়ে যাবে পরে। এর চেয়ে আর কথা না বাড়ানোই শ্রেয়।
চিত্রাও আর আগ বাড়িয়ে কথা বাড়াল না।
চিত্রার ঘর ছেড়ে বের হতেই নিরু দেখল বাহিরে তুহিন দাঁড়িয়ে আছে। নিরুকে বেরুতে দেখেই সে বলল, ‘তুমি আবার চিত্রার ঘরে গিয়েছ, কেন?’
নিরু নরম গলায় জবাব দিল, ‘খাবার দিতে।’
‘তোমাকে বলেছিলাম না ওর সামনে এত যেও না।’
নিরু এবার মুখ তুলে তাকাল তুহিনের দিকে। স্পষ্ট কণ্ঠে বলল, ‘কেন যাব না?’
তুহিন বিরক্ত গলায় বলল, ‘ও তোমাকে দেখলে উত্তেজিত হয়ে যায়। রেগে যায়। পাগলামো করে। এগুলো কি তুমি জানো না?’
নিরু এবার হাসল। তুহিনের খাবারের প্লেটটা তুহিনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘তোমাকে ভালোবাসা আমার জন্য বড়ো দোষের হয়ে গেল তাই না? সেজন্য আজকাল তুমিও বিরক্ত হও। অথচ আমি যদি জানতাম আমি কারো গলার কাঁটা হবো তাহলে কখনোই তোমার জীবনে আসতাম না।’
নিরুর অভিমানে খারাপ লাগে তুহিনের। সে আলোগেছে জড়িয়ে ধরে তাই নিরুকে। আনমনে বলে,
‘তুমি তো জানো চিত্রা আমাদের জন্য কী। খারাপ লাগে মেয়েটার এমন পাগলামোতে।’
নিরু কথা বলে না। ফ্যাচ ফ্যাচ করে নাক টানার শব্দ পাওয়া যায় কেবল।
চিত্রা দরজাটায় ছিটকিনি টেনে দেয় ধীর শব্দে। ভাইজান যেন টের না পায় এমন ভাবে। এরপর চুপচাপ বসে থাকে নিজের ঘরটায়। শুনশান নিরিবিলি ঘরটায় বাজতে থাকে গান।
‘আমার দরজায় খিল দিয়েছি আমার দারুণ জ্বর,
তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো ঘর….’
চিত্রার শরীরের উত্তাপ বাড়ে। ভেঙে আসে কণ্ঠ,
‘কারো মন ভেঙে তোমরা যারা ঘর বাঁধো, তারা কি সুখী হতে পারো? অভিশাপ নিয়ে সুখী হওয়া যায় আদৌ?’


আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


মম সাহা’র গল্প ও উপন্যাস:

  1. যতনে রাখিলাম যাতনা 
  2. প্রেমোত্তাপ 


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মম সাহা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন