উপন্যাস : শকুন
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
শকুন || আরশি আয়াত |
১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব -১২ )
রাগ দুঃখে মন খারাপ করে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে ছিলো হিমানী।অভিমানের অশ্রু গড়িয়ে পরছে কপোল বেয়ে।হঠাৎ বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ হওয়ায় চমকে গেলো।যেন মনে হলো বাইরে থেকে কেউ ঢিল দিয়েছে।চোখের পানি মুছে ও বারান্দায় গেলো কি হয়েছে বোঝার জন্য কিন্তু সেখানে গিয়েই এতক্ষণের রাগ,দুঃখ,অভিমান সব কর্পূরের ন্যায় উবে গেলো।রবিন দাঁড়িয়ে আছে।ইশারায় ডাকছে নীচে নামার জন্য।হিমানী এবার কপট রাগের ভান ধরে টেক্সট করলো,'এখানে কেন?কি চাও?'
রবিন টেক্সটের রিপ্লাইয়ে ভয়েস মেসেজ দিলো।সেখানে গানের সুরে বলল,'যদি সত্যি জানতে চাও তোমাকে চাই,তোমাকে চাই।যদি মিথ্যে মানতে চাও তোমাকেই চাই।'
হিমানী হেসে ফেললো।কিছুতেই আর রাগ ধরে রাখা গেলো না।রবিনকে অপেক্ষা করতে বলে চুপিচুপি সদর দরজার চাবি নিয়ে নিচে নেমে এলো।তবে সমস্যা হলো দারোয়ান ব্যাটাকে নিয়ে।গেটে থেকে একে সরাবে কি করে!কিন্তু নীচে নেমে দারোয়ানকে চেয়ারের ওপর নাক ডেকে ঘুমাতে দেখে হিমানী খুশিই হলো।চোরের মত পা টিপেটিপে গেটের বাইরে বেরিয়ে আসতেই অতর্কিত হামলায় কারো বাহুবন্ধী হয়ে গেলো।হিমানী জানে মানুষ'টা কে!তবুও এত সহজে মেনে নেওয়া তো যাবে না তাই সরে যেতে চাইলো কিন্তু পারলো না তার বদলে আরেকটু যেন মিশে গেলো।
পরিচিত,অপরিচিত অনেকের মধ্যে খোঁজ খবর নিয়েও কোনো লাভ হলো না।কারো সাথেই শর্ত মেলে না।জমজ হলেও কারো পিঠে লাল জোড়া তিল নেই।এদিকে যত একদিন যায় তত ভয় বাড়ে।ধ্বংস যেন এগিয়ে আসছে পাগলা ঘোড়ার বেগে।শামীম ভাবলো ও একা পারবে না।হিমানীকেও জানাতে হবে সব।কিন্তু ও কি দেখা করতে চাইবে!তবুও আশা রেখে আজ অফিস থেকে হাফ ডে ছুটি নিয়ে হিমানীর কলেজের সামনে এসে দাঁড়ালো।ছুটি হতেই দেখতে পেলো সেই চিরচেনা হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী।একটা সময় এই মেয়েটাকেই এত চাইতো!এখনও কি চায়?শামীম এগিয়ে গেলো ওর দিকে।
হঠাৎ চোখের সামনে বহু পরিচিত কাউকে দেখে চমকে গেলো হিমানী তবে প্রকাশ করলো না।মুখে কাঠিন্যতা নিয়ে বলল,'এখানে এসেছেন কেন?'
'তোমার সাথে জরুরি কিছু কথা ছিলো।'
'কিসের কথা?'
'এখানে বলা যাবে না।সামনে একটা রেস্টুরেন্ট আছে ওইখানে বসে বলি।'
'আপনার সাথে আমার খোশগল্প করার সময় নেই।'
'আমিও কোনো খোশগল্প করতে চাইছি না।ব্যাপারটা জরুরি।'
'এখানে বলুন।'
'তুমি বুঝতে পারছো না কেন?বলছি তো জরুরি।এখনে বলতে পারব না।আর তোমার বেশি সময়ও নিবো না।প্লিজ চলো।'
হিমানীর কৌতুহল হলো একপ্রকার নিমরাজি হয়ে শামীমের সাথে গেলো।
এদিকে কেউ একজন ওদের পাশাপাশি হাঁটার,রেস্টুরেন্টে সামনাসামনি বসার কিছু ছবি তুলে নিলো দূর থেকে আর সেটা পাঠিয়ে দিলো রবিনের ফোনে।
শামীম ভেতর থেকে কথাগুলো গুছিয়ে নিয়ে বলতে শুরু করলো,'তুমি আমাকে ছেড়ে যাবার পর আমি রাগে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।তোমাকে আবার নিজের করে পাবার জন্য জঘন্য একটা কাজ করেছি।রুপাকে দিয়ে তোমার পিরিয়ডের র'ক্তের একটা প্যাড জোগাড় করে কালোজাদু করেছিলাম তান্ত্রিককে দিয়ে কিন্তু জাদুটা হয় নি।যার ফলে তান্ত্রিকটা মারা যায় আর আমি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হই।আমার সাথে ভয়ানক ব্যাপার ঘটছে অনেকদিন ধরে।তখন আমার ফ্রেন্ডের দাদু বললেন তুমি বিশেষ কেউ তোমার ওপর জাদু চলবে না।সামনের অমাবস্যায় তোমাকে শয়তানের উদ্দেশ্যে ব'লি দেওয়া হবে।আর এটা হলে সবাই শেষ হয়ে যাবো যারা যারা তোমার আশেপাশে আছে সবাই।এমনকি আমিও!এটার উপায় একটাই সামনের অমাবস্যার আগেই বংশে ভিন্ন চেহারার জমজ ছেলে এবং তাদের মধ্যে যার পিঠে জোড়া লাল তিল আছে তার সাথে তোমার বিয়ে দিতে হবে তবেই তুমি এবং আমরা রক্ষা পাবো।'
এতক্ষণের জমিয়ে রাখা হাসি এবার আর ধরে রাখতে পারলো না উচ্চস্বরে খলখলিয়ে এসে উঠলো হিমানী।হাসতে হাসতেই বলল,'বাহ!কি কাহিনি শুনালে।মুভি বানাচ্ছো নাকি!কাহিনি সুন্দর।সুপার হিট হবে!'
শামীম অসহায় কন্ঠে বললো,'বিশ্বাস করো একবিন্দুও মিথ্যা বলছি না আমি।সব সত্যি।'
'শোনো আমি পাগল না যে তোমার এই বানোয়াট কাহিনিতে আমি বিশ্বাস করব।এরপর থেকে আর কখনো আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না।'
'হিমানী প্লিজ!'
হিমানী যেন শুনলোই না।হনহনিয়ে হেঁটে চলে গেলো বাইরে।আর সেদিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শামীম।সামনে কি হবে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না।কি এক গোলকধাঁধায় ফেসে গেলো ও!কোনো কূলকিনারা নেই!
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
১৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন