উপন্যাস       :        শকুন
লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
Bangla Golpo শকুন || আরশি আয়াত
শকুন || আরশি আয়াত

১২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ১৩)


অন্য ছেলের সাথে বসে কথা বলতে দেখেও এতটা রাগ হত না যতোটা রাগ এই ছেলেটার সাথে দেখে হচ্ছে।এই ছেলেটাই তো হিমানীর প্রাক্তন।কি নিয়ে কথা বলছে ওরা?হিমানী তো এই ব্যাপারে কিছুই জানায় নি।আর ওদের ছবি তুলে পাঠালোই বা কে?রবিন তৎক্ষনাৎ ফোন করলো হিমানীকে।তখন গোসল সেরে সবে বেরিয়েছিল ও।রবিনের ফোন দেখে খুশি হয়ে রিসিভ করতেই ওপর পাশ থেকে কথাবার্তা নেই একের পর এক প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছিলো।একপর্যায়ে রবিন থেমে যাওয়ার পর হিমানী লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করলো,'আমার ওর সাথে দেখা করার কোনো প্ল্যান ই ছিলো না।ও নিজেই কলেজের সামনে এসে জোরাজোরি করছিলো কথা বলার জন্য।জরুরি কিছু বলবে!তাই গিয়েছিলাম।'
'কি ছিলো জরুরি কথা?'
'আবোল তাবোল বকছিলো।আমার ওপর নাকি কালো জাদু করেছিলো এখন জাদু কাজ করে নি তাই ও সমস্যায় আছে।সামনের অমাবস্যায় আমাকে বলি দেওয়া হবে।হ্যানোত্যানো আর কত আজগুবি কথা বলেছে।আমি পাত্তা দেই নি।আর যোগাযোগ না করতে বলে এসেছি।'
'আর একদিন যদি ওকে তোমার আশেপাশে দেখি ওরে যে কি করব আমি!'
'আচ্ছা ঠিকাছে এখন শান্ত হও।আর একটা জিনিস বুঝলাম না এটা তুমি জানলে কি করে?তুমি কি আমার পেছনে স্পাই লাগিয়েছো নাকি?'
'না,হঠাৎই একটা মেইল আসে।সেখানেই তোমাদের কথা বলার ছবি তুলে পাঠিয়েছে কেউ একজন।'
'কিন্তু কে করবে এমন?'
'হয়তো কেউ তোমাকে ফলো করে।এখন থেকে সাবধানে চলাফেরা করবে।
'হু,তুমিও।'
এশার নামাজের পর মসজিদের ছাঁদে শামীম ইফতির দাদুর জন্য অপেক্ষা করছিলো।ইফতির দাদু আধঘন্টা পর এসেছেন।একাই এসেছেন তিনি।প্রায় পনেরো মিনিট তারা কোনো কথাই বলল না চুপচাপ সামনাসামনি বসে ছিলো।পনেরো মিনিট পর ইকবাল সাহেবই প্রথম বললেন,'এবার বলো কি বলবে?'
'দাদু আমি কি করব?একদিন একদিন করে সময় চলে যাচ্ছে।আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।আর কি কোনো উপায় নেই এই ধ্বংস বন্ধ করার?'
'না,এটাই একমাত্র পথ।যদি আমার বলা ছেলের সাথে ওর বিয়ে হয় তবেই এটা থামবে।'
ইকবাল সাহেবের কথা শুনে আবারও হতাশ হয়ে গেলো শামীম।তিনি স্বান্তনার সুরে বললেন,'হাল ছেড়ো না।খুঁজতে থাকো।কিছু না কিছু হবেই।ওপরে একজন আছেন তিনি সবকিছু দেখছেন।শুভশক্তির কাছো অপশক্তি হার মানবেই।'
'কিন্তু দাদু আমিও যে একই পাপ করেছি।'
'তুমি তো তওবাও করেছো।যারা গুনাহ করে তওবা করে আল্লাহ তাদের মাফ করে দেন।তুমি এখন শুধু আল্লাহর ওপর পূর্ণবিশ্বাসে খোঁজা শুরু করো।নিরাশ হবে না।'
ইকবাল সাহেবের কথায় শামীম মনে জোর পায়।এত সহজে হেরে যাওয়া যাবে না।লড়তে হবে এই অপ'শক্তির বিরুদ্ধে।
রুপার জ্বর এসেছে তাই ও আজ কলেজে যাবে না।হিমানীর একাই যেতে হবে।রবিন হয়তো এখন অফিসে আজকে দুপুরে ছুটির পর আসবে দেখা করতে।কিছুদিন ধরে ঠিকঠাক দেখা হচ্ছে না ওদের।রবিনের সাথে দেখা হওয়ার কথা ভাবতে ভাবতেই ফুটপাত ধরে হাঁটছিল ও।আজকে রিকশা পায় নি অনেক্ক্ষণ দাড়িয়েও।তাই হাটা শুরু করেছে এরচেয়ে বেশি দাড়ালে ক্লাস মিস যাবে।হঠাৎ রাস্তা পার হওয়ার সময় খেয়াল করলো খানিকটা দূরে কেউ একজন উদভ্রান্তের মত রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছে।যানবাহন,গাড়ি,বাস কিছুই খেয়াল করছে না।হর্নও শুনছে না।চালকরা অতি সাবধানে ব্রেক কষে দুর্ঘটনা এড়াচ্ছে আর সাথে দু'চার কথা শুনাচ্ছেও কিন্তু লোকটার কোনো পাত্তাও নেই।হঠাৎই হিমানী খেয়াল করলো দ্রুত গতিতে একটা মালবাহী ট্রাক আসছে।থামার কোনো লক্ষ্মণও নেই।এভাবে চললে একটা দুর্ঘটনা ঘটবেই নিশ্চিত।হিমানী সর্বচ্চো গতিতে দৌড় লাগালো।সেকেন্ডের ব্যবধানে লোকটার হাত টান দিয়ে রাস্তার পাড়ে নিয়ে এসে আর টাল সামলাতে পারলো না।দুজনেই পড়ে গেলো।হিমানী তখনই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসলো।দ্রুত গলায় প্রশ্ন করলো,'আপনি ঠিকাছেন?'বলতে বলতেই লোকটার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো ওপাশেও একই প্রতিক্রিয়া।দু'জনেই বিষ্মিত!অবাক করা গলায় হিমানী বলল,'তুমি?এভাবে পাগলের মত রাস্তা পার হচ্ছিলে কেনো?'
শামীমের কিছু মনে পড়ছে না।ও তো অফিসের জন্য বেরিয়েছিলো তারপর হঠাৎ কি যেন হলো মাঝে কিছুই মনে নেই।যখন হুশ ফিরলো তখন চোখের সামনে হিমানীকে দেখে ভীষণরকম চমকে গেলো।
হিমানী প্রশ্ন করে উত্তর না পেয়ে ঠাট্টার গলায় বলল,'আবার ছ্যাঁকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে সুই'সাইড করতে গিয়েছিলে নাকি!'বলেই হাসতে হাসতে চলে গেলো।শামীম তবুও কিছু বলতে পারলো না।ওর মাথায় কিছুই ঢুকছে না।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন