উপন্যাস       :        শকুন

লেখিকা        :         আরশি আয়াত
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
Bangla Golpo শকুন || আরশি আয়াত
শকুন || আরশি আয়াত

১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ১১)


তৎক্ষনাৎ রুপাকে ছেড়ে দিলো হিমানী।ওর শরীর এত ঠান্ডা কেন?নাকি মনের ভূল?রুপা হিমানীর এমন আচরণে জানতে চাইলো,'কি রে!তোর আবার কি হলো?'
হিমানী থতমত চেহারায় বলল,' না,না কিছু তো হয় নি।তুই এখন সুস্থ আছিস পুরোপুরি?'
'হ্যাঁ।সুস্থ না হলে তোর সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম কি করে!এখন যা যা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে,কলেজে যাবো।'
দুই বান্ধবীর কথোপকথনের মাঝেই হিমানীর মা এসে বললেন,'আজকে নাস্তা না খেয়ে বের হওয়া চলবে না কারোই।'
'মা,দেরি হয়ে যাবে।'হিমানীর গলায় বিরক্তি।
'হলে,হবে।কিন্তু তবুও খেয়েই বেরোবে।বসো,নাস্তা নিয়ে আসছি।'
'আন্টি,আমি তো খেয়ে এসেছি।পেটে তো জায়গা নেই।'রুপা বলল।
'হাতি,ঘোড়া তো আর খাস নি।বস,কিছু না হলেও চা খেয়ে যাবি।'
বাঙালি মা বলে কথা বিসিএস পরীক্ষা মিস হলেও না খেয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া চলবে না।অগত্যা খেয়েই বের হলো দু'জনে।
আজকে লাঞ্চ আওয়ারে ছুটি নিয়েছে শামীম।যদিও ছুটি নেওয়ার কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না কিন্তু ইফতির দাদু জরুরি তলব করেছেন।হয়তো কোনো রাস্তা পাওয়া গেছে।সেটাই বলবেন তিনি।তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো তিনি শামীমকে একটা মসজিদের ঠিকানা দিয়েছেন দেখা করার জন্য।যেটা অফিস থেকে পাঁচ মাইল দূরে।আসার সময় পাক-পবিত্র হয়ে সফেদ রঙের পাঞ্জাবি পরে ভালো মত আতর লাগিয়ে আসতে বলেছেন।তার কথা মত আগে বাসায় গিয়ে গোসল করে পাক পবিত্র হয়ে সাদা পাঞ্জাবি পরে আতর লাগিয়ে সেই মসজিদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো শামীম।কি জানি কি বলবে!বুকের মধ্যে দুরুদুরু করছে।তবুও সমাধান তো পেতে হবে।
নাতিকে আনেন নি ইকবাল সাহেব।মানুষ যত কম হবে তত ভালো।এই মসজিদে একসময় ইমামতি করেছেন তিনি এখন যিনি করছেন তিনি ওনার ছাত্র।দুপুরের পর মসজিদে মানুষ থাকে না।এই সময়টাই উপযুক্ত।ইমাম সাহেব এতবছর পর উস্তাদকে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেছেন তাই বাড়ি গিয়েছেন খাতিরদারির আয়োজন করতে।মসজিদে এখন সাদা পাঞ্জাবি পরা দু'জন মানুষ ছাড়া কেউ নেই।তারা একে অপরের মুখোমুখি বসে আছে।শামীম কৌতুহল আঁটকে রাখতে না পেরে প্রশ্ন করলো,'দাদু,আপনি আমাকে এখানে দেখা করতে বলেছেন কেনো?'
ইকবাল সাহেব মুচকি হেসে বললেন,'পৃথিবীতে কোনো কিছুই কারণ ছাড়া হয় না।সবকিছুর পেছনে কোনো না কোনো কারণ থাকে।অনেকসময় সেটা প্রত্যক্ষ আবার অনেকসময় পরোক্ষ।তোমাকে এখানে এভাবে ডাকার কারণও তেমনই।একটা গুপ্তচর জ্বী'ন তোমাকে সর্বক্ষণ ফলো করে।ও চোখে দেখে না তবে কানে শোনে,ঘ্রাণশক্তিও প্রবল।আজকে আমি যা বলব তা কোনোভাবে ও জানতে পারলে অনিষ্ট হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।'
ইকবাল সাহেবের কথা শুনে শামীম ভয়ে তটস্থ।তিনি ওকে অভয় দিয়ে বললেন,'ভয় পেয়ো না।তোমার সমস্যার সমাধান পেয়েছি।'
'কি সমাধান দাদু?'
'তুমি যার ওপর জাদু করতে চেয়েছো সে বিশেষ কেউ সেটা আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম।অনেক সাধনার পর এরকম কাউকে পাওয়া যায়।সামনের অমাবস্যায় ওর বয়স বিশ হবে আর সেদিন ওকে শ'য়তানের উদ্দেশ্যে ব'লি দেওয়া হবে।আর ওকে বলি দিতে পারলেই সব শ'য়তানি ক্ষমতা হাসিল হবে।আর যদি এটা হয় তাহলে আর কিচ্ছু করার থাকবে না।'
'কে করছে এসব?কে ব'লি দেবে?'
'এটা এখন জানা যাবে না।তবে ওর আশেপাশেরই কেউ।'
শামীম আতঙ্কিত স্বরে বলল,'এখন আমাকে কি করতে হবে?'
'এই ব'লি বন্ধ করতে হবে।'
'কিভাবে?'
'এমন এক পরিবার বের করতে হবে যাদের পুরো গোষ্ঠীতে জমজ দুই ভাই ছাড়া আর কোনো ছেলে নেই।কিন্তু কারো সাথে কারো চেহারা মিলবে না।তাদের মধ্যে যার পিঠে একজোড়া লাল তিল আছে তার সাথে যদি আগামী অমাবস্যার আগেই ওই মেয়েটার বিয়ে দেওয়া যায় তাহলেই এই ধ্বংস ঠেকানো সম্ভব।'
শামীম হতাশ গলায় বলল,'এটা কিভাবে সম্ভব?এখন এমন ছেলে পাবো কোথায়?'
'খুঁজতে হবে।তোমার হাতে আর মাত্র আটাশ দিন সময় আছে।'
'আর কোনো উপায় নেই?'
'এটাই শেষ উপায়।'
নিজের কপালে নিজেরই জুতোর বারি মারতে ইচ্ছা করছে ওর।কি দরকার ছিলো এই মেয়ের প্রেমে পড়ার?পড়েছে তাও ভালো কথা কোন ভূতে পেয়েছিলো পাগলামি করে জা'দু করতে যাওয়ার।সাক্ষাৎ অ'পয়া একটা মেয়ে।নিজেও জানে না কতবড় একটা শনি মাথায় নিয়ে নেচে-কুঁদে বেড়াচ্ছে।আর এই শনিরদশা এখন না চাইতেও ওর ঘাড়ে এসে জুটেছে।
হিমানীর রাগ ক্রমেই বাড়ছে।সারাদিনে একটা ফোনও করে নি,ফোন দূরের কথা মেসেজে একবার সরিও বলে নি।ভালোবাসা চুলোয় যাক।আরেকবার ফোন করলেই মুখের ওপর ব্রেকাপ বলে দেবে।ছেলে অভাব পড়ে নি দেশে।এসব ভাবতে ভাবতেই কাঙ্ক্ষিত নাম্বার থেকে ফোন এলো।ভাব দেখিয়ে হিমানী ফোন ধরলো না।আরও দশবার ফোন দিলে বারোতম বারে ধরবে।কিন্তু দুঃখজনক ভাবে আর ফোনই এলো না।এখন গা'লি দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ওর নিজেকে।ভাব না দেখিয়ে ফোনটা রিসিভ করলেই হতো।আবার নিজে থেকে ফোন দেওয়াটাও ইগোতে লাগছে।আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে হিমানী নিজেই ফোন করলো তবে এবার ওপাশ থেকে ফোন ধরলো না।এবার তো আর মেজাজ ধরে না।এত ভাব,দিলো না ফোন।ওর সাথে কথা না বললে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।আজব!
শামীম খোঁজা শুরু করে দিয়েছে এরমধ্যেই।পরিচিত যত মানুষ আছে সবাইকে বলেছে জমজ ভাই দেখলেই যেনো ওকে ইনফর্ম করে।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

 Follow Now Our Google News

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন