উপন্যাস       :        আদিল মির্জা'স বিলাভড
লেখিকা        :         নাবিলা ইষ্ক
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ ইং

লেখিকা নাবিলা ইষ্ক-র “আদিল মির্জা'স বিলাভড” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৫ সালের ১৭ই অক্টোবর থেকে লেখা শুরু করেছেন।

আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক
আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক

আদিল মির্জা'স বিলাভড || নাবিলা ইষ্ক (পর্ব - ৮)

ক'দিন ধরে রোযার জীবন আবার আগের মতো চলছে। যেন হঠাৎ করে তার জীবনে আগমন নেয়া আদিল মির্জার নজর তার ওপর কখনো পড়েইনি। সবই তার ক্ষুদ্র কল্পনা ছিলো মাত্র! মুষড়ে থাকা হৃদয় শান্ত হয়ে গিয়েছে। মাথার ভেতরের ওলট-পালট, বাজে রকমের চিন্তাভাবনা গুলো সরেছে। হালকা লাগছে বেশ। চিন্তামুক্ত মানুষ অনেকটা মুক্ত পাখির মতন হয়। রোযা এখন পাখি। আকাশে উড়ে বেড়ানো স্বাধীন পাখি। দমবন্ধ অনুভূতি থেকে পালাতে পেরে কিছুটা চঞ্চল হয়েছে মন। হৃদিকে অনেক সময় দিচ্ছে। ওর আবদার গুলো বিনা সংকোচে পূরণ করার চেষ্টা করছে। যেমন —স্কুল থেকে ফিরেই হৃদি কার্টুন দেখতে চাইলে, আধঘন্টার মতো কার্টুন দেখতে দিয়েছে। তারপর গোসল করিয়ে দুপুরের খাবার খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়েছে।

হৃদি যখন ঘুমোয় ওসময়টায় রোযা পছন্দের বই পড়ে। ফ্যান্টাসি ধাঁচের উপন্যাস পড়তে তার ভালো লাগে। এখন যেটা সে পড়ছে, এটা ফ্যান্টাসি জনরার। ভ্যাম্পায়ারের জগত নিয়ে এতো চমৎকার বই রোযা আগে পড়েনি। খুব মন দিয়ে পড়ছিল বলেই সময়ের কথা খেয়াল থাকল না। আশপাশ ভুলে বসল। হঠাৎ অনুভব করল কারো অস্তিত্ব। পাশে ফিরে তাকাতেই আশ্চর্য হলো। হৃদি পুতুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ। কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে জানা নেই। কতক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছে বাচ্চাটা? বই রেখে দ্রুতো উঠে দাঁড়াল রোযা। কোলে তুলে নিয়ে চিন্তিত হয়ে সমানে জিজ্ঞেস করে গেলো -

‘কখন উঠলে, সোনা? কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়েছিলে? ডাকোনি কেনো, হুম?’

হৃদি হাসল। দু-হাতে রোযার গলা জড়িয়ে বলল -

‘ডিস্টার্ব করতে চাইনি।’

রোযা আহত হয় এমনভাবে চেয়ে বলে -

‘প্রসঙ্গ যখন আমার হৃদি সোনার তখন আমি কখনোই ডিস্টার্বড ফিল করতে পারি না, কখনোই না। পারবোও না। বোঝা গেলো?’

হৃদি খিলখিল করে হাসল। আরও গাঢ় করে আঁকড়ে ধরল রোযার গলা -

‘হুম। দ্যান আই ওয়ান্ট টু ডিস্টার্ব ইউ ফর মাই হৌল লাইফ।’

রোযা থমকায়, বিচলিত হয়। আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে ছোটো শরীরটা। ভেতরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সে আশা রাখছে আর দুটো বছর পেরুলে মেয়েটা সামান্য বুঝতে শিখবে। তখন এমন আবেগিক অনুভূতি মুছে যাবে। হয়তোবা তখন রোযা সরে এলে দুঃখ পাবে না। দু-দিন বাদে আর মনে রাখবে না। এমন ভাবতেও কেমন যেন দমবন্ধ হয়ে আসে রোযার। তার এতো আদুরে, মিষ্টি হৃদির সাথে কোনো একসময় আর দেখা হবে না, কথা হবে না — তা কল্পনায় আনলেও অসহায় হয়ে ওঠে হৃদয়।

ঘড়ির কাঁটা তখন ছয়টা পেরিয়েছে। সূর্য ডুবছে, অন্ধকার হয়ে এসেছে বাইরেটা। হৃদিকে নিজ হাতে নাস্তা করিয়ে পড়তে বসিয়েছে রোযা৷ মেয়েটা কার ব্রেইন পেয়েছে কে জানে! ভীষণ শার্প! পড়াশোনায় বড্ড চতুর। একবার পড়লে অনেককিছু মনে রাখতে পারে৷ অথচ ছোটোবেলায় তাকে তার বাবা এক শব্দ তিনবার পড়ালেও মনে রাখতে পারতো না সে। ভুলে যেতো দেখে বারবার পড়তে হতো। এমনও হয়েছে শতবার পড়েও পরিক্ষার রুমে গিয়ে মুখস্ত পড়া ভুলে গিয়েছে। আর এই বাচ্চাকে দেখো!

হৃদি তখনো ভীষণ মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। ঘণ্টাখানেক ধরে চেয়ারে বসেই পড়ছিল। কোনোরকমের বায়না করেনি। হঠাৎ কী হলো কে জানে! চেয়ার থেকে নেমে এসে দাঁড়াল রোযার সামনে। কোলে চড়ে তারপর নাকি ও বাকি পড়াশোনা করবে! রোযা অসহায় হয়, আনন্দও পায়৷ দু-হাতে তুলে নিয়ে কোলে বসাল। তার হাতে দুপুরের ফ্যান্টাসি জনরার বইটা। বেশ মোটাতাজা বই। সবে রোযা দুশো পৃষ্ঠায় আছে। চারশো পৃষ্ঠা বাকি। হৃদিকে পড়ানোর ফাঁকেফাঁকে একটু একটু করে পড়ছিল। ওসময় মরিয়ম বেগম এলেন ট্রে হাতে। দুধ-জুস এনেছেন। দুধ হৃদির জন্য, জুস রোযার জন্য। তবে দুধ হৃদি খেতে পছন্দ করে না। ভীষণ অপছন্দীয় বলা যায়। রোযাকে ভীষণ কসরত করতে হয় এক গ্লাস দুধ খাওয়াতে। আজও ব্যতিক্রম নয়।

‘খাবো, এক শর্তে।’

রোযা অসহায় মুখ করে বলল -

‘শুনি তবে।’
‘তুমি আমার জন্য ডিনার বানাবে। বলো, বলো বানাবে। নাহলে কিন্তু আমি রাতেও খাবো না, এখন মিল্কও খাবো না।’

এমন বায়না আজ নতুন নয়। আগেও করেছে, রোযা বাধ্য হয়ে নিজ হাতে রেঁধে খাইয়েছেও। অথচ এই বাড়িতে সুনামধন্য শেফ আছে, সেই রাঁধে। যার হাতের রান্না অমৃত! খেলে পেট ভরবে, মন নয়। অথচ এই বাচ্চার নাকি তার হাতের রান্না পছন্দ! যেখানে রোযা বরাবরই রান্নাবান্নায় সাধারণ। হৃদি দু-হাতে রোযার কোমর জড়িয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদোকাঁদো মুখে ফের আবদার করল -

‘স্নো-হোয়াইট ওন্ট ইউ কুক ফর মি? সি আম সাচ আ সুইট গার্ল।’

রোযা ফিক করে হেসে ফেলল। হৃদির টানটান নাকের ব্রিজে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে ওর কোমরে কাতুকুতু দিতে চেয়ে মজার ছলে প্রশ্ন করল,

‘কে বলেছে তুমি সুইট গার্ল?’

হৃদি হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছিল। হাসার ফাঁকে বলল -

‘মাই ড্যাডি।’

রোযা কথা বাড়াল না। কাতুকুতু দেয়া বন্ধ করল। হেসে একদম দুর্বল হয়ে গেছে মেয়েটা। চোখের কোণে জল জমেছে। রোযা ওর চোখ দুটো মুছিয়ে কোল থেকে নামাল। রাত ঘনিয়ে আসছে। এসময়টা তার ফেরার সময়। এখন রাঁধতে বসলে সে বাসায় ফিরবে কখন? আজও বুঝি দেরি হবে?

‘কী খেতে চায় আমার প্রিন্সেস?’

হৃদি মিনমিন করে, ‘এগ ফ্রাইড রাইস উইদ চিকেন নাগেটস।’

রোযা বড়ো করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আজ তার ফিরতে দেরি হবেই। রান্নাবান্না শেষ করে ওকে খাইয়ে ফিরতে ফিরতে রাতের কটা বাজবে কে জানে! অসহায় সে এখুনি কল করে বাসায় জানাতে ব্যস্ত হলো। বাসায় জানিয়ে হৃদিকে নিয়ে নামল নিচে। সিঁড়ি বেয়ে নামলেই বাম সাইডে বড়ো লিভিংরুম। ডান সাইডে কিচেন। হৃদিকে লিভিংরুমের সোফায় বসিয়ে টেলিভিশন চালু করে দিলো। ছাড়ল ওর পছন্দের ডিজনি মুভি। এরপর সে এলো রান্নাঘরের দিকে।

রান্নাঘরটা বিশাল বড়ো আর আধুনিকতার ছোঁয়া। মরিয়ম বেগম সহ আরও দুজন উপস্থিত রয়েছেন ইতোমধ্যে। একজন বয়স্ক মহিলা, বয়স আনুমানিক চল্লিশ। উনার নাম শাপলা। অন্যজনের নাম সম্ভবত নীরা। বয়স কম। এই বাইশ হবে। মরিয়ম বেগমের বড়ো মেয়ে। সাহায্যের জন্য মাঝেমধ্যে আসে মায়ের সাথে। শাপলা বেগম কুকিং অ্যাপ্রোনটা এগিয়ে দিলে রোযা চটপট তা পরে নিলো। কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মরিয়ম বেগম কাছাকাছি থেকে সাহায্য করছেন। শাপলা বেগমের যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। তিনি বিদায় নিয়ে চলে গেলেনরোযার আর কোথাও খেয়াল ছিলো না। হঠাৎ হৃদির বিরক্ত হওয়া কণ্ঠ ভেসে এলো -

‘উফ, ইউ আর সো অ্যানোয়িং। গেট লস্ট! জাস্ট গেট লস্ট।’

তুলোর মতন নরম, নিষ্পাপ হৃদিকে দেখে অভ্যস্ত রোযা একরকম ভুলেই বসেছিল এই মেয়ের মেজাজ মোটেও ভালো না। অল্পতেই বিরক্ত হওয়া, রেগে যাওয়ার মতো সমস্যা আছে। প্থম-প্রথম যখন সে ওর ন্যানি হিসেবে এসেছিল তখন তো কতো ছোটো ছিলো! অথচ তখুনি ওর মেজাজের সামনে রোযাকে বাজেভাবে পড়তে হয়েছে। এই মেয়েকে সামলাতে, ওর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করতেই দু-মাসের মতো লেগেছিল। এখন তো একেবারে মেজাজের পাহাড় করে রেখেছে। কাউকেই তেমন একটা সহ্য করতে পারে না। রোযার মনে হয়, হৃদি একেবারে আদিল মির্জার মেজাজ পেয়েছে। আদিল মির্জাকে হাতেগোনা যে-কবার দেখেছে বেশিরভাগ সময়তেই হয় কাউকে মারছিল, নাহলে কাউকে ধমকাচ্ছিল। তার র ক্ত আর কেমন হবে? নিশ্চিত বাবার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে দিন বা দিন।

এখন কাকে ধমকাচ্ছে? ভাবতে ভাবতে রোযা দ্রুতো কদমে রান্নাঘর ছাড়ল। পেছনে মরিয়ম বেগমও ছুটেছেন যখন পাশে মেয়েকে পেলেন না। হৃদি চোখমুখ কুঁচকে তাকিয়ে আছে নীরার দিকে। নীরা দাঁড়িয়ে আছে হতভম্ব হয়ে। অপমানিত বোধ করছে সম্ভবত। কেমন ঠোঁট কাঁপছে মেয়েটার। চোখ দুটোও ছলছল করছে। রোযা দ্রুতো এগুলো -

‘কী হয়েছে?’

নীরাকে মরিয়ম বেগম সরিয়ে আনলেন দ্রুতো। কার দোষ জানার প্রয়োজনবোধও করলেন না। ছটফটে গলায় মাফ চাইলেন -

‘ও বুঝতে পারেনি। ওর হয়ে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’

রোযা কাছে গেলো হৃদির। মাথা ছুঁয়ে প্রশ্ন করল -

‘বিরক্ত হয়েছো?’
‘হু। স্নো-হোয়াইট আই টল্ড হার টু শাট-আপ। কিন্তু ও শুনল না। কথা বলেই যাচ্ছে, প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। ভালো লাগে না।’

মরিয়ম বেগম আতঙ্কে নীল হয়ে গেলেন। কোনোরকমে মাফ চেয়ে আজকের জন্য মেয়েকে নিয়ে বেরুতে উতলা হলেন। রোযা আর থামাল না। দুয়ারে তখন বডিগার্ড দাঁড়িয়ে ছিল। নামটা ঠিক জানা নেই রোযার। ভদ্রলোক গম্ভীরমুখে মরিয়ম বেগমের উদ্দেশ্যে বললেন -

‘উনাকে আর আনবেন না।’

মরিয়ম বেগম মাথা দোয়ালেন সমানে। মুখেও জানালেন, আনবেন না। তখন ভয়ে নীরাও সামান্য কাঁপছিল। রোযা অসহায় হয়ে তাকাল আসল কালপ্রিটের দিকে। কালপ্রিট কেমন মিষ্টি, অবলা হাসছে হাসছে রোযার দিকে চেয়ে।

‘আমার ক্ষুধা লেগেছে। আর কতক্ষণ!’

রোযা ঘড়ির দিক তাকাল। আশ্চর্য হয়ে গেলো মুহূর্তে! রাতের বারোটা কীভাবে বাজল? এতো দ্রুতো সময় চলে যাচ্ছে কেনো? ভাগ্যিস সন্ধ্যায় নাস্তা করিয়েছিল বাচ্চাটাকে। নাহলে এতক্ষণ কীভাবে না খেয়ে থাকতো? রোযা তাড়া দিয়ে বলল -

‘আর কিছুক্ষণ প্রিন্সেস। তুমি মুভি দেখো, হুঁ?’

হৃদি মাথা দোলাল। রোযা যেতেই হাই ছাড়ল। ঘুমে চোখ দুটো ছোটো ছোটো হয়ে এসেছে। সোফায় শুয়ে পড়ল। শুতেই কেমন চোখ বুজে গেলো। মুহুর্তে সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

———

নীরবে, নিস্তব্ধতায় রোযার রান্না প্রায় শেষ। এখন একটা প্লেটে এগ ফ্রাইড রাইস পরিবেশন করছে হৃদির জন্য। ওকে খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়ে সে ফিরবে। পকেটে ফোনটা ভাইব্রেট হয়ে যাচ্ছে। বাসার থেকে বোধহয় কল দিচ্ছে। আপাতত রোযার কল রিসিভ করার সময় নেই। প্রায় শেষ প্লেট গোছানো এমন সময় পেছন থেকে গভীর স্বরে প্রশ্ন এলো -

‘হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?’

ওই কণ্ঠে রোযা থমকাল। ক্ষণিকের জন্য চমকালেও পরমুহূর্তেই নিজেকে সামলে নিলো। ফিরল দৃষ্টি নুইয়ে রেখেই। চোখের সামনে চকচকে একজোড়া সাদা জুতো। জুতোয় বাজ পাখির ট্যাটু। সেখানে জ্বলজ্বল করছে দু-ফোটা তাজা লাল র ক্ত! রোযা ঢোক গিলল ওই দৃশ্যে। ভয়ে ভেতরটা ধড়ফড় করলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চেয়েও পারল না যখন ওমন বিশালদেহী, ভয়ংকর দুটো কুকুর দেখতে পেলো। আদিল মির্জার দু-পাশে তিতান আর থোর। ওদের লিশ আদিলের হাতে। রোযা দ্রুতো দু-কদম পিছিয়ে স্বাভাবিকহবার ভণিতা ধরে বলল -

'আসসালামু আলাইকুম, স্যার। প্রিন্সেস আমার হাতে এগ ফ্রাইড রাইস উইদ চিকেন নাগাটস খেতে চেয়েছে। আমি তাই রান্না করলাম।’

শান্ত খুব সন্তপর্ণে এলেনের হাত টেনে সরে যেতে চাইল কেমন! এলেন বসের হুকুম ব্যতীত সরল না, নড়লও না। ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকল দৃষ্টি নামিয়ে। শান্ত চোখ রাঙাল তবে নিজেও বাধ্য ছেলের মতো দাঁড়িয়ে থাকল। আদিল আপদমস্তক রোযাকেই দেখছিল। মাথা নুইয়ে রাখায় খানিক অসন্তুষ্ট হলো। আদেশ করল -

‘মাথা তোলো।’

রোযার হৃৎপিণ্ড দুর্বল ভাবে কাঁপছে। কুকুর দুটোকে সে আগেও দেখেছে। তবে দূর থেকে। এমন কাছ থেকে নয়! নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চাওয়া সে মাথা তুলল। তখনো দৃষ্টি নামানো। ভুলেও তাকাল না। কুকুর দুটো হঠাৎ করে ঘেউঘেউ করে উঠতেই রোযা ভয়ে সমানে পিছিয়ে গেলো কয়েক কদম। পিঠ স্পর্শ করল কিচেন বার। আদিল কুকুর দুটোর লিশ বাড়িয়ে ধরে শান্ত-এলেনের উদ্দেশ্যে বলল -

‘ওদের নিয়ে যা।’

শান্ত আর এলেন কুকুর দুটোকে নিয়ে বেরিয়ে গেছে। রেখে গেছে নীরবতা, পিনপতন নিস্তব্ধতা। রোযা শান্ত হয়েছে কুকুর দুটোকে চলে যেতে দেখে। অথচ পরমুহূর্তেই সামনের জুতো জোড়ার মালিককে এগিয়ে আসতে দেখে ফের অশান্ত হলো।

‘মিস রোজ - আ….’

রোযা সৈনিকের মতো সোজা হয়ে দ্রুতো বলল, ‘জি স্যার।’

‘যখন আমি কথা বলব, তখন উত্তর দিতে হবে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে।’

রোযা সংকোচে ভেতরে ভেতরে মিইয়ে গেলেও সাবলীলভাবে দৃষ্টি তুলে তাকাতেই একজোড়া গাঢ়, ধূসর চোখে দৃষ্টিবদ্ধ হলো। ফের অস্বস্তিতে আঁটসাঁট হলো মন। খেয়াল করল কতটা কাছে এসে দাঁড়িয়েছে লোকটা। রোযা সমুদ্রের মতন ওমন গভীর চোখে চেয়ে থাকতে বাধ্য হয়। জবাবে নির্ভয়ে বলে -

‘জি স্যার।’

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


 Follow Now Our Google News



চলবে ...

৯ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা নাবিলা ইষ্ক সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন