উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান 

২৪তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২৫)

নবনিঃ ভয় লাগছে?
আরাফঃ আরাফ চৌধুরী ভয় পায় না।
নবনিঃ হা হা হা। ইয়া ডার হোনা চাহিয়ে
আরাফ নবনির ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। নবনির নিশ্বাস আটকে আসছে তাও আরাফ ছাড়ছে না। অনেক্ষন পর আরাফ নবনিকে ছাড়লো।নবনি জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো। আর একটুর জন্য শ্বাসরোধ করে মারা যেতো।
আরাফঃ শাস্তি যখন নিতেই পারো না আমাকে খেপাও কেনো নবনি পাখি।
নবনিঃ এটা কেমন শাস্তি?
আরাফঃ এটা আমার মিষ্টি মিষ্টি শাস্তি।বলে আরাফ উঠে যেয়ে গেট আটকে দিলো।এখন তোমার কি হবে নবনি পাখি?
নবনিঃ নায়ায়ায়।
আরাফঃ হ্যা।অনেক শখ অন্য জন্যের সুনাম করার তোমার এই ঠোঁটই আজকে খেয়ে ফেলবো।
নবনিঃ আপনি ঠোঁট খেলে আমি আপনাকেই খেয়ে ফেলবো
আরাফঃ তাই নাকি বউ। আমিও চাই তুমি আমাকে খাও।
আরাফ নবনিকে কোলে তুলে বারান্দায় নিয়ে গেল।বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস বয়ে বেড়াচ্ছে। আরাফ নবনিকে নামিয়ে দেয়। নবনি আরাফকে নিজ থেকে জড়িয়ে ধরে। আরাফ ও নবনিকে বুকে মাঝে আবদ্ধ করে নেয়।
নবনিঃ আরাফ পাখি। ভালোবাসি। অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি। 
আরাফ নবনির কপালে চুমু দিলো।নবনি আরাফ এর কানে কাছে ঠোঁট নিয়ে গেল।আরাফ নবনির কোমর চেপে ধরে। 
নবনিঃআপনি তো বুড়ো হয়ে গেছেন।আরাফ পাখি।আপনি যে বাবা হতে চলেছেন।
আরাফ নবনির কথায় থম মেরে গেলো।
নবনিঃআমার প্রেগনেন্সির তিন মাস চলছে।
আরাফ নবনিকে কোলে নিয়ে সারা ঘর ঘুড়তে লাগলো।
আরাফঃ ইয়েএএএএএএএএএএ।আমি বাবা হবো। ইয়েএএএএএএএএএএএএ। আমার নবনি পাখিও মা হবে। আমি আমার মেয়ের সাথে খেলবো। আমার নবনি পাখির মতো কিউট আর একটা পাখি লাগবে। যার জীবনে প্রথম পুরুষ আমি হবো।যে তার মায়ের মতো আমার সবটা জুড়ে রাজত্ব করবে।
নবনিঃআরাফ থামুন। আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।
আরাফ নবনিকে বিছানায় নামিয়ে নবনির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।নবনি পেটে হাত বুলিয়ে কথা বলছে।
আরাফঃবুঝছো ছোট পাখি। তুমি একদম তোমার আম্মুর মতো কিউট হবা। কিন্তু ব্যবহার কিন্তু আমার মতো করবে।একদম আমার ফটোকপি।তোমার আম্মু আমাকে একটুও ভালোবাসে না।তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসবা।
নবনিঃআরাফ।বাবুরা এখন ও শুনতে পারছে না।আপনি পাগলামো করছেন কেন?
আরাফঃতুমি জানো শুনতে পারছে না।অবশ্যই শুনতে পারছে।আর তুমি বাবুরা বললে কেন?
নবনিঃআমার মনে হচ্ছে জমজ বাবু হবে।একটা মেয়ে আর একটা ছেলে।
আরাফঃআমি এতো ভালো ছক্কা মারলাম যে জমজ হবে বাহ বাহ! বাহ বাহ!
নবনিঃ😒
আরাফঃআচ্ছা ঠিক আসে। আমিও দোয়া করি যে আমার নবনি পাখির ইচ্ছেটাই পূরণ হয়।
নবনি আরাফ এর চুলগুলো সরিয়ে কপালে চুমু আকলো।


সকালবেলা~
আরাফ নবনির বুকে মাথা রেখে গভীর ঘুমে আছে।নবনির ঘুম অনেক আগেই ভেঙে গিয়েছে।কিন্তু আরাফ এর শান্তির ঘুমটা নষ্ট করলো না।আরাফ এর চোখের নিচের অংশ কালো হয়ে গিয়েছে।দাড়িগুলো অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে আরাফ এই কয়েকমাস নিজের কোনো যত্ন নেয় নাই।অনেক দিন পর হয়তো শান্তিতে ঘুমিয়েছে।নবনি আরাফ কপালে গালে চুমু একে দিলো।আরাফ এর ঘুম ভেঙে যায়।নবনি গালে কিস করতে যায় আরাফ গালের ঠোঁট এগিয়ে দেয়।নবনি গালের জায়গায় ঠোঁটে কিস করে ফেলে।
আরাফঃহা হা হা।
নবনিঃআপনি এত দুষ্টু কেন আরাফ।আমার ছেলেমেয়ে দুষ্ট হলে সব আপনার দোষ।
আরাফঃআমার ছেলে মেয়ে দুষ্ট হলে আমি পালবো। সেটা কোনো সমস্যা নাই।তুমি খালি বছর বাচ্চাকাচ্চা দিয়ে যাবা।পালার দায়িত্ব আমার। আমার কিপটা বাবা সম্পত্তি গুলো ভাগ বণ্টন করে শেষ করতে হবে না।
নবনি কিছু বলতে নিলে দরজায় কেউ নক করে। 
আরাফঃকে?
মেহরাবঃআমি। খেতে আসেন আপনারা।
নবনিঃজ্বি আসছি।
আরাফঃহাড্ডি একটা। অলটাইম জ্বালায়। 
নবনিঃহি হি হি।
নবনি বড় করে ঘোমটা পরে রুম থেকে বের হলো।ডাইনিং এ অনেক খাবার এর আয়োজন করা হয়েছে।আরাফ ও এসে খেতে বসলো।আরাফ দেখলো নবনি আরাফ আর মেহরাব ছাড়াও একটা মেয়ে বসে আছে সামনে।মেয়েটা অসম্ভব সুন্দরী। 
আরাফঃইনি কে?
মেহরাবঃপরি।
আরাফ পরি নামটা শুনতেই উঠে যেতে চায় নবনি হাত ধরে বসায়।
নবনিঃএমন কইরেন না।ও কষ্ট পাবে।আমরাতো চলেই যাবো।
পরিঃকেমন আছেন আরাফ?
আরাফঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো বলে খেতে শুরু করে। 
মেহরাবঃনবনিতা। খাচ্ছো না কেন?অন্য কিছু খাবে?কি খেতে ইচ্ছে করছে?এই সময় বেশি করে খেতে হয় বুঝছো।
আরাফ এর এই আদিখ্যেতা ভালো লাগলো না।সে উঠে চলে গেলো।নবনি বুঝতে পারলো আরাফ রাগ করেছে।কিন্তু সে তো কিছু করে নেই।তার কি দোষ।
নবনিঃমেহরাব খাবারটা রুমে পাঠিয়ে দিন। বলে সেও আরাফ এর পিছনে পিছনে গেলো।
মেহরাব নবনির অবহেলায় খুব কষ্ট পায়।তার খাওয়া হলো না সে উঠে চলে গেলো।যাওয়ার সময় সার্ভেন্টকে বলে গেলো খাবার নবনির রুমে দিয়ে আসতে।
মেহরাব ছাদে গেলো।অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। মেহরাব বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে।সেদিকে তার খেয়াল নেই।


মেহরাবঃএমনটা কেন হয় আল্লাহ যাদের আমরা ভালোবাসি তাদের কাছে আমাদের ভালোবাসা তুচ্ছতম। আমি তো শুধু নবনিকে ভালো রাখতে চাই। ওর ভালো থাকা আরাফ এর সাথে হলে তাই সই।কিন্তু আমারতো কষ্ট হয়।খুব কষ্ট হয় নবনিকে অন্য কারো সাথে দেখলে।আমার কলিজাটা ছিড়া যায় যখন সে আরাফ এর বুকে মাথা রাখে।কেন হলো আমার সাথে এমন। ও যদি আমার নাই হবে তাহলে কেন আমার মনে ওর জন্য ভালোবাসা দিলে।কেন দিলে?মেহরাব এর চোখের পানি বৃষ্টির সাথে বয়ে যাচ্ছে।
ভালোবাসা সুন্দর কিন্তু তখন যখন তুমি সঠিক মানুষকে ভালোবাসো।ভুল মানুষ তোমাকে সারাজীবন কষ্টই দিয়ে যাবে।আমরা সবসময় ভুল মানুষকেই ভালোবাসাটা উজাড় করে দেই।যার জন্য বুকটা খালি হয়ে যায় থেকে যায় শুধুই হাহাকার।অপ্রাপ্তি। 
আরাফ রুমে যেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে।নবনি আরাফকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।আরাফ নবনির হাতে হাত রাখে। 
আরাফঃভয় করে নবনি।তোমাকে হারিয়ে ফেললে আমি বাচতে পারবো না।
নবনিঃআমি কোথাও হারাবো না।আরাফ।সবসময় আপনার কাছেই থাকবো।
নবনি আরাফকে খাওয়ায় দিচ্ছে।আরাফ খাবার এর সাথে নবনির হাতের আংগুল চেটে চেটে চেটে খাচ্ছে।নবনি বার বার চোখ পাকিয়ে তাকাচ্ছে কিন্তু তাতে কোনো লাভ  হচ্ছে না।আরাফ নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মেহরাব এসেছিলো নবনিকে দেখতে আরাফ নবনিকে এভাবে দেখে সে মলিন হেসে চলে গেল।
খাওয়া শেষে নবনি ছাদের দিকে দৌড় লাগালো।আরাফ ও পিছনে পিছনে গেলো।
আরাফঃভিজবেনা। খবর দার। জ্বর চলে আসবে।
নবনিঃএকটু ভিজলে কিছু হবে না।
নবনি বৃষ্টিতে বাচ্চাদের লাফাচ্ছে আর আরাফ শক্ত করে হাত ধরে রেখেছে যাতে পিছলে পরে না যায়।আরাফ নবনিকে এতোটা খুশি প্রথম দেখলো।
আরাফঃনবনিইইইই পাখি।এতো খুশি কেন?
নবনিঃআমি মা হবো আরাফ।আপনার বাচ্চার মা হবো আমি।আজকে আমার অনেক অনেক খুশির দিন।
আরাফঃহা হা হা।Congratulation MRs Nobonita Chowdhury. 
নবনি আরাফের চারদিকে ঘুড়তে লাগলো।তারপর গান ধরলো।
Tomhe bolna pasand hai
Mujhe bolte huya tom
Tomhe hasna pasand hai 
Mujhe haste huye tum
Bas itna hi farak hai 
Tere meri pasand mai
Tumhe sab kuch pasand hai
or mujhe pasan ho tummmmmmm
আরাফ পরের টুকু গাইলো~
Tumko barish pasand hai 
Mujhko barish mai tum..
Tumko barish pasand hai 
Mujhko barish mai tum
আরাফ নবনির আংগুল ধরে ঘুড়ালো।


নবনি~
Har din  mil ne hamse savan ka badal ban kar ana....
নবনি আরাফ এর পায়ের পাতায় পা রেখে দাড়ালো।
আরাফ~
ham hai dewaane tere tuvi pagal ban kar ana
o Tumhe vigna accha lagta hai
Mujhe vigti huyi tum
নবনি~
To fir barish ke har mousam ne mere sath hi rehna tum..
আরাফ~
ki dekh mohabbat meri 
Khuda vi  wo hairan hai
নবনি~
Ho gayi dua jo mukammal
Ki  barish mai tummm
আরাফ নবনি একসাথে~
Tomko barish pasand hai 
Mujhe barish mai tum..
নবনি আর আরাফ দুইজনই আজকে অনেক খুশি।তাদের নতুন জীবনের সুচনা হতে চলেছে।বাবা মা এর জীবন।😇🥰]

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


২৬তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন