উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
২৫তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ২৬)
আরাফঃঅনেক হয়েছে নবনি। এখন ঘরে চলো।
নবনিঃআর একটু।
আরাফ চোখ গরম করে তাকালো।
নবনিঃএভাবে তাকাচ্ছেন কেন?সাহস বেশি বেড়ে গেসে।
আরাফঃদুই বাচ্চার বাপের সাহস থাকাটাই স্বাভাবিক। বলেই নবনিকে রুমে নিয়ে গেলো।
নবনিঃবাচ্চারা এখনো আসে নেই।
আরাফঃকে বলসে আসে নেই।তোমার পেটে আসছে মানেই এসে পরেছে।আর আমিই বাবা ও হয়ে গিয়েছি।এখন৷ যাও গোসল করে এসো।
নবনি বের হলে আরাফ নবনির মাথার চুলগুলো মুছে দেয়।
নবনিঃআপনি ও গোসল করে আসেন। ঠান্ডা লেগে যাবে।
কে শুনে কার কথা আরাফ নবনিকে নিয়েই ব্যস্ত।এক বার চুল মুছছে তো আর এক বার হাত পায়ে লোশন দিচ্ছে।
নবনি আরাফকে ঠেলে ওয়াশরুমে পাঠালো।তারপর চা বানিয়ে নিয়ে আসলো।রুমে এসে দেখে আরাফ কম্বলের নিচে ঢুকে আছে।
নবনিঃগরম গরম চা খেয়ে নিন।ভালো লাগবে।
আরাফ নবনিকেও কম্বলের নিচে নিয়ে নিলো।নবনি চা খাচ্ছে।আরাফ ওর কাপটা টা টেনে নিয়ে নিলো।
নবনিঃনিয়ে নিলেন কেন?😒
আরাফঃতুমি আমারটা চিনি কম দিয়েছো।তাই তোমারটা খেয়ে।দেখবো।ঠিক আসে কি না।বলেই আরাফ নবনির কাপে চুমুক দিলো।
নবনিঃকই দেখি।আমি তো দুইটা কাপ এই সেম চিনি দিয়েছি। ~নবনি আরাফ এর কাপে চুমুক দিলো।ঠিকই তো আসে।
আরাফঃওহ ঠিক আসে।আচ্ছা তাহলে দাও।এই নাও তোমারটা। আরাফ নবনির থেকে নিজের কাপটা নিয়ে যেই স্থানে নবনি চুমুক দিয়েছিল।সেই স্থানে চুমুক দেয়।
নবনিঃআজিব তো।
আরাফঃহা হা হা।
পরি দরজায় নক করলো।
পরিঃআসতে পারি?
আরাফ কিছুই বললো না।
নবনিঃএসো।পরি।
আরাফঃ😒
নবনিঃ😐
পরিঃi m sorry। আরাফ আমি যা করেছি তার জন্য অনুতপ্ত। আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না?
আরাফঃঅনুতপ্ত হলে আমাদেরকে বাসায় পৌছানোর ব্যবস্থা করেন।
পরিঃআপনাকে ভাইয়া নিয়ে এসেছে।তাই আমি এখানে কিছুই করতে পারবো না।
আরাফঃআমাকে মেহরাব আনলেও নবনিকে তুমি এনেছো।ওকেতো তুমি দিয়ে আসতে পারবা।
পরিঃনবনি ভাইয়ার পারমিশন ছাড়া এক চুল পরিমান নড়তে পারবে না।
আরাফ এবার রেগে গেলো।
আরাফঃফাজলামী করছো? আমার স্ত্রী কোথায় আসবে যাবে সেটা তোমার ভাইয়া ডিসাইড করবে?
মেহরাবঃনা।আমার সে অধিকার নেই।
সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে মেহরাব দাঁড়িয়ে আছে।
পরিঃকিন্তু ভাইয়া নবনি ভাবি!
মেহরাবঃনবনি প্রেগনেন্ট।এরপর ও তাকে এখানে বেধে রাখার কোনো মানে হয় না।
পরিঃনবনি প্রেগন্যান্ট!!
আরাফঃআমাদের পৃথিবীতে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।মেহরাব।
আজকে রাতেই আপনাদের দিয়ে আসবো।বলেই মেহরাব পরিকে নিয়ে বের হয়ে যায়।
রাত ১১ টা~
পরি ফ্লোরে বসে আছে।
পরিঃনবনি প্রেগন্যান্ট।!!!আমি হেরে গেলাম!!!আমার ভালোবাসা হেরে গেলো।আমি আর আরাফকে পাবো না।নায়ায়ায়ায়ায়া।আমি এমনটা হতে দিবো না।আমি ভাইয়ার মতো না যে নিজের ভালোবাসাকে হেরে যাবো।।আমি এটা অর্জন করেই ছাড়বো।
পরি আরাফ নবনির রুমে যায়। নবনি বারান্দায় হাটা চলা করছে। আরাফ ঘুম।পরি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নবনিকে ছাদে নিয়ে যায়।
নবনিঃকই নিয়ে যাচ্ছো পরি। আরাফকে তো বলতে দিবা।
পরিঃসারপ্রাইজ আছে চলো।
মেহরাব ছাদেই ছিল। পরি নবনিকে আসতে দেখে লুকিয়ে পরে।
পরি নবনিকে ছাদ থেকে ধাক্কা দেয়।নবনি পরে যেতে নিলে মেহরাব ধরে ফেলে।
মেহরাবঃনবনি। ঠিক আছো?
নবনিঃহুম।
মেহরাবঃকি করছিলে পরি?কেন করছিলে!
পরিঃকেন বাচালে?আমি তোমার মতো না। আমি হারবো না।তোমার যোগ্যতা নাই থাকতে পারে নিজের ভালোবাসাকে পাওয়ার। আমার আছে।অবশ্যই আছে।আমি ওকে মেরে আরাফকে সারাজীবন এর জন্য জ্বীন রাজ্য রেখে দিবো।
মেহরাবঃজোর করে ভালোবাসা হয় না।পরি। তুমি ওকে মেরে ফেললেও আরাফ তোমাকে ভালোবাসবে না।বোঝার চেষ্টা করো।
পরি নিজের রূপে এসে পরে। সে মেহরাবকে এক ধাক্কায় দূরে ফেলে দেয়।
মেহরাবঃআমি জানি ভাইয়া।তুমি অনেক ভালো।তুমি আমার থেকেও শক্তিশালী হলেও তুমি আমাকে কখনো আঘাত করবে না।
পরি তার চোখ দিয়ে তীর্যক রশ্মি নিক্ষেপ করে।রশ্মি নবনির পেটে যেয়ে পরতেই নবনি চিৎকার করে উঠে।
নবনিঃআরায়ায়ায়ায়ায়ায়াফ।নবনির চিৎকারে আরাফ এর ঘুম ভেঙে যায় সে ছাদের দিকে দৌড়ে আসে।আরাফ এসে দেখে নবনি পেটে হাত দিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।আর মেহরাব পরির গলা টিপে শূণে তুলে রেখেছে।
আরাফ নবনির দিকে ছুটে গেল।
আরাফঃনবনি। কি হয়েছে?তোমার!!!
নবনিঃআমার পেট ব্যাথা করছে।খুব ব্যাথা করছে।আমি!!
এদিকে~
পরিঃভাইয়া কি করছো তুমি।ওই মেয়ের জন্য আমার গায়ে হাত তুলছো?!!
মেহরাব এর নীল চোখ গুলো রাগে লাল হয়ে গেছে।
মেহরাবঃআমি নবনিকে ছাড়তে পারলে ওর জন্য তোকে আঘাতও করতে পারি।কি দোষ করছিল ওর বাচ্চা।কেন নিষ্পাপ বাচ্চার উপর হামলা করলি?
পরিঃওর বাচ্চার দোষ একটাই ও নবনির গভে এসেছে।আমার গর্ভে আসলে আজকে ওকে অকালে মরতে হতো না।
আরাফ নবনি কথাটা শুনে ফেলে।
নবনিঃআরায়ায়ায়ায়াফ আমার বাবুদের বাচান।ওরা না থাকলে আমিও মরে যাবো।বাচান ওদের।নবনির চোখের পানি আরাফ এর মনকে ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে।সে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
নবনির আর্তনাদ আরো একজনকে আঘাত করছে।সে হলো মেহরাব।তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে।
মেহরাবঃনা। নবনির বাবুদের কিছুই হবে না।আমি হতে দিবো না।
মেহরাব চোখ বন্ধ করে সূরা পরতে লাগলো।এদিকে পরি মেহরাব এর হাত থাকা ছাড়া পেয়ে নবনির দিকে আগুনের গোলা নিক্ষেপ করে।আরাফ নবনির সামনে এসে পরে।ফলে আগুন এর গোলা আরাফ এর শরীরকে জ্বালিয়ে দিতে এগিয়ে যায়। তার আগেই মেহরাব সামনে এসে পরে মেহরাব এর সারা গায়ে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়।
মেহরাব এর শরির পুরোটা জ্বলার আগেই মেহরাব নবনির দিকে নীল রশ্মি নিক্ষেপ করে রশ্মিটা নবনির পেটে পরতেই নবনির ব্যাথার উপশম ঘটে।
মেহরাবঃভালোবাসি নবনিতা।আমার অস্তিত্ব পুরোটা ছিল তোমায় ঘিরে।আল্লাহ আমাকে পৃথিবীতে আবার পাঠালে আমি আল্লাহর কাছে চেয়ে নিবো তখন ও আমার সবটা হউক তোমায় ঘিরে। নবনিতাকে ভালো রেখো আরাফ।
মেহরাব এর শরীর পুরে ছাই হয়ে হাওয়ায় মিশে গেলো।
পরিঃভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।নায়ায়ায়ায়া।আমি এটা কি করলাম।আমি আমার ভাইকে কি করে মেরে ফেললাম।ভাইয়ায়ায়ায়া।মা বাবা যাওয়ার পর তুমি আমার অভিভাবক ছিলা।কেন করলা আমার সাথে এমন।কেন চলে গেলে আমাকে ছেড়ে।আমাকে যে তুমি একা করে দিলে।কেন??কেন তুমি সবসময় নিজের আগে অন্যের কথা কেন ভাবো ভাইয়া।তুমি এতো ভালো কেন হলে?!!
নবনি আরাফকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো।মেহরাব এর নিঃর্স্বাথ ভালোবাসা নবনি আরাফকে সারা জীবনের জন্য ঋনী করে গেলো।মেহরাব প্রমান করে দিলো প্রাপ্তিই ভালোবাসা নয়। কিছু অপ্রাপ্তিতেও শান্তি রয়েছে।যেখানে পরি নিজের ভালোবাসাকে অর্জন করতে এতকিছু করে ও আরাফ এর কাছে ঘৃণার পাত্রী হলো সেখানে মেহরাব কিছু না করেও নবনির চোখে সম্মানিত পুরুষ হিসেবে মর্যাদা পেল।
আরাফঃ পরি। তোমার ভাই প্রমান করে গেলো কাউকে ভালোবাসা মানেই তাকে হাসিল করে নেয়া না।কাউকে ভালোবাসা মানে তাকে ভালো রাখা।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
২৭তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন