উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৩২তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৩৩)

সকালে আরাফ এর চোখ আগে খোলে।নবনি অনেক রাত করে ঘুমায় তাই এখনো গভীর ঘুমে।আরাফ উঠে নিজের মাথা নবনির কোলেই আবিষ্কার করে।নবনি বসেই শুয়ে আছে।
আরাফঃধ্যাত।আমিও না। কি দরকার ছিলো এভাবে ঘুমানের। নবনি এভাবে সারারাত ঘুমাতে পারে নেই মনে হয়।
আরাফ আস্তে আস্তে উঠে নবনিকে ঠিকমতন শুইয়ে দেয়।তারপর নবনির জন্য নাস্তা বানাতে চলে যায়।
নবনি চোখ খুলে আরাফকে পায় না।নবনি ভাবে হয়তো আরাফ অফিসে চলে গিয়েছে।যেই পা মাটিতে রাখতে যায় দেখে পায়ে সুন্দর করে আলতা দেয়া।
নবনিঃএটা কে করলো। পায়ে আলতা আসলো কি করে!!
আরাফঃগুড মর্নিং নবনি পাখি।
নবনিঃযাক তাহলে আপনার মনে পরেছে আমি নবনিতা নয় আপনার নবনি পাখি।
আরাফঃহা হা হা।তুমিইতো সবসময় আমার নবনি 
পাখিই ছিলা।একটু রেগে গিয়েছিলাম এই আর কি।
আরাফ নবনির পেটে কিস করলো।
আরাফঃগুড মনিং মাই প্রিন্স এন্ড প্রিন্সেস।
নবনিঃঅফিস বাদ দিয়ে বাবুর্চীর হওয়ার ইচ্ছে জেগে গেলো নাকি!!!!
আরাফঃবউ এর জন্য বাবুর্চী না হলাম তো কি হলাম।তাই এখন থেকে এই ডিপার্টমেন্ট আমার। 
নবনিঃতা তো ঠিক আসে। কিন্তু পা ধরতে গেলেন কেন!!আলতা দিলেন যে!!
আরাফঃআমার আলতা খুব ভালো লাগে বউ।তাই তোমার পায়ে পরিয়ে দিলাম। জেগে থাকলে তো দিতে না করতে তাই ঘুমে দিয়ে দিয়েছি।
নবনিঃআরাফ কেউ মানবে না যে আপনি আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন।আপনার মধ্যে সব লক্ষন বাংগালি ছেলের। 
আরাফঃআমি সেখানে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলাম।জন্ম কিন্তু বাংলাদেশেই।আর আমি আমার দেশ আর এর সংস্কৃতিকে বড্ড ভালোবাসি।
নবনিঃইয়েস মাই এক্স আর্মি অফিসার। এখন খেতে শুরু করেন।
আরাফঃহ্যা। আসো।আমি খাওয়ায় দিবো।
নবনিঃহ্যা।আমাকে বদ অভ্যাস করান। তারপর অফিস গেলে আমি সারাদিন মিস করবো।
_আপাতত ৩ মাস মিস করতে হবে না।আমি বাসায় থেকেই সব কাজ করবো।এখন ভূমিকম্প হয়ে গেলেও তোমাকে ছেড়ে আর কোথাও যাচ্ছি না।
নবনিঃহি হি হি।


আরাফ খাওয়া শেষে প্লেট রাখতে গেলো।নবনি উঠে ওয়াশরুমে যায়।আসার সময় নবনির পা স্লিপ করে।
নবনিঃআরায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াফ।
আরাফ নবনির চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে যা দেখলো আরাফ এর চোখ বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। 
আরাফঃনবনিইইইইই।
নবনি ফ্লোরে পরেও পরে নেই।অদৃশ্য শক্তি নবনির পেট ফ্লোরে লাগার আগেই আটকে ফেলে।নবনির পেট ফ্লোর ছুইছুই।আরাফ নবনিকে ধরে বিছানায় বসালো।সারা রুম নীল ধোঁয়ায় ভরে গেলো।
আরাফঃএটা কি ছিল!!?
নবনিঃএটাইতো বলার ছিল আপনাকে!
আরাফঃকোনটা?
নবনিঃওইদিন সিয়াম আমার পেট এ গুলি মারতে নিলে অদৃশ্য শক্তি সিয়ামে হাত ঘুড়িয়ে তিশার দিকে করে দেয়।আর আমার জায়গায় তিশার গুলি লাগে।
আরাফঃwhat!! 
নবনিঃহ্যা।
আরাফঃHows that possible!!? 
নবনিঃI dont know!!
আরাফ নবনি কিছু একটা ভাবতে লাগলো।তারপ্র একসাথেই বলে উঠলো মেহরাব!!
নবনিঃওইদিন আমার কেন জানি মনে হয়েছিল যে মেহরাব এগুলোর পিছনে আছে।আজকেও মনে হচ্ছে মে মেহরাব।কিন্তু আপনার কেনো মনে হলো!!
আয়াফঃকারন~রুম নীল ধোয়ায় ভরা ছিল।আর মেহরাব এর চোখগুলো নীল ছিল।আর তোমার মনে আছে তোমাকে বাচাতে মেহরাব নীল গোলা ছুড়ে মেরেছিল। যেটা তোমার পেটে লাগায় ব্যাথা কমে গিয়েছিল!!সবকিছু রিলেটেড মনে হচ্ছে।
নবনিঃতার মানে সেদিনই না এখনো মেহরাব বেবিদেরকে প্রটেক্ট করছে!!
আরাফঃI also think that.
নবনিঃভাল্লাগেনা মিস্ট্রি। এটাকে সলভ করেন As soon as possible. 
আরাফঃআমারতো অনেক ভাল্লাগছে।মেহরাব নামক হাড্ডিটা আবার গলায় এসে আটকালো।
নবনিঃআপনি মরা জ্বীনকে নিয়ে জেলাস ফিল করছেন!!লাইক সিরিয়াসলি!!
আরাফঃআমার বাচ্চাদের আমি প্রটেক্ট করবো। ওই জ্বিন এর ভুত করবে কেন!!
নবনিঃউপকারির ভাত নাই!!
আরাফঃতোমার অনেক ভাল্লাগছে না!!
নবনিঃআজিব তো আমার কেনো ভালো লাগবে।আমার এইসব মিস্ট্রি টাইপের গল্প ভালো লাগে না।আমার আবার ধৈর্য্য কম।আপনি না আর্মিতে ছিলেন এটাকে সলভ করেন।শুনেছি আমির লোকেরা খুব বুদ্ধিমান হয়।
আরাফঃwhat do you mean by শুনেছি।আমি যথেষ্ট বুদ্ধিমান। চোখে পড়ে না!!
নবনিঃতাইলে আমি একটা ঘুম দেই। আপনি কাজে লেগে পড়েন।ঘুম থেকে উঠে যেন দেখি আয়ায়ায়ায়া
আরাফঃকি হইসে!!!


নবনিঃআয়ায়ায়া।
আরাফঃকি হইসে। পেট ব্যাথা করছে।পেট ধরে চেচাচ্ছো কেন!!
নবনিঃকিক মারসে!! 
আরাফঃকে কি কিক মারসে!? কার এত বড় সাহস!!??
নবনি আরাফ এর হাতে পেটে রাখলো। 
নবনিঃআপনার বাবুরা কিক মারছে।
আরাফঃকই মারে না তো। যত সব মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছো আমার বাবুদের। তারা অনেক লক্ষী।
নবনিঃআর এ মারবে ওয়েট করেন।
দশমিনিট ওয়েট করে ও বাবুরা কিক মারে নাই।
নবনিঃকত দুষ্ট হইসে এরা!একদম আপনার মতো। 
আরাফঃদুষ্ট আমি না দুষ্টু তুমি!! যারা এখনো দুনিয়াতেই আসে নাই এরা আবার নাকি কিক মারে। যত্তসব আজিরা কথা।
নবনিঃঠিক আসে। গেলাম আমি ঘুমাইতে।
নবনি ঘুমাতে গেলে আরাফ ডাক্টারকে কল করে।
ডাক্টারঃহ্যা।আরাফাত চৌধুরী বলেন।
আরাফঃDoctor. নবনি বলছে বেবি নাকি কিক দিচ্ছে।আচ্ছা প্রেগন্যান্সিতে কি মা পাগল টাগল হয়ে যায় নাকি!!ও এমন হাবিজাবি কথা বলছে কেন!!
ডাক্টারঃও হাবিজাবি বলছে না।আপনিই কিছু বুঝতে পারছেন না।বেবিরা এখন বড় হয়ে গিয়েছে।তারা পেটে নড়াচড়া করবে।তখন তার হাত পা ফিল করতে পারবেন আপনারা।এটাকেই কিক মারা বলে।
আরাফঃকিহহহ!!
ডাক্টারঃজ্বীহ।
আরাফঃআচ্ছা রাখি। Doctor. আপনার সাথে পরে কথা বলছি।
আরাফ নবনির পেটে হাত রেখে বসে থাকে।অনেকক্ষন পর ও ফিল করতে পারে।
আরাফঃনবনিইইইইইই।
নবনি লাফ মেরে উঠে যায়।মাত্রি চোখ লেগে ছিল বেচারির।
নবনিঃকি হইসে!!
আরাফঃবাবুরা কিক মেরেছে।কিক মেরেছে ওরা!!
নবনিঃ😑
নবনিঃমনটা চাচ্ছে আপনাকে কিক মেরে অফিসে পাঠিয়ে দেই।বদলোক।
আরাফঃআজকে তুমি যা মন চায় করো। সাত খুন মাফ। আমি বেবিদের ফিল করতে পারছি।
নবনিঃপাগল ছেলে।
আরাফ সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে চলে গেলো।আর নবনি আবারো ঘুমে তলিয়ে গেলো।
আদর চৌধুরীঃকি হয়েছে হতচ্ছারা।মিষ্টি নিয়ে ঘুরছিস কেন!
আরাফঃবাবা।তুমি কি আকিকা করো নাই?!!
আদর চৌধুরীঃএটা কেমন কথা!! আকিকা না করলে নাম কি করে রাখলাম!!
আরাফঃওহ আমার নাম রেখেছো!?
আদর চৌধুরীঃহ্যা।রাখবো না কেন!!?
আরাফঃতাইলে ডাকো না কেন!???হতচ্ছারা হতচ্ছড়া কি!!?
আদর চৌধুরীঃতোর নাম!!
বলে হো হো করে হেসে দিলেন।
আরাফঃমায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।তুমি কি দেখে এই লোককে বিয়ে করলে।সামান্য আমার নামটাও মনে রাখতে পারে না।
নিলীমা চৌধুরীঃতুমি আবার আমার ছেলের পিছনে লেগেছো!!
আরাফঃআমাকে যে এই নামে ডাকে। আমার ছেলেমেয়েতো বাবা না ডেকে হতচ্ছড়া হতচ্ছড়া ডাকবে।
আদর চৌধুরীঃহা হা হা।


আরাফ মুখে মিষ্টি ঢুকিয়ে দিলো।আদর চৌধুরীর হাসি বন্ধ হয়ে গেলো।উনি মিষ্টি চিবাতে লাগলেন।
আরাফঃগুড বয়।বলে তার মায়ের মুখে মিষ্টি পুরে দিয়ে হাটা ধরলো।
আদর চৌধুরীঃএমনেই বলি হতচ্ছড়া!!কোনো কাজ এর ঠিক নেই।অল টাইম বিশৃংখল অবস্থায় থাকে।ছন্ন ছন্ন ভাব।বললো ও না কিসের মিষ্টি। 
আরাফ ফিরে এসে ওর বাবার কানে বলে শুনবা কিসে মিষ্টি? 
আদর চৌধুরীঃহুম।
আরাফঃবলবো না টপ সিকরেট।
আরাফ কথাটা বলে কেটে পরলো।আর আদর চৌধুরী সমানে বকে যাচ্ছে।নিলীমা চৌধুরী ও আস্তে করে ওই খান থেকে প্রস্থান করলেন।
আদর চৌধুরীঃএকবার আসুক আমার দাদুভাই আর দিদি ভাই।সব কয়টাকে দেখে নিবো।আমার দাদুভাই হবে এই দেশের প্রধানমন্ত্রী দেখে নিস তোরা।বাপতো রাজনীতিকে পাত্তা না দিয়ে হতচ্ছাড়ার মতো ঘুরেছে।আমার দাদুভাই একদম নবনি মার মতো দায়িত্বশীল হবে।তোমরাতো বুঝলা না। আমার দাদুভাই ঠিকই বুঝবে।
এখানে আরাফ তার বাবার কথাগুলো শুনে মুচকি মুচকি হাসছে।
আরাফঃআমার এভাবে সময় নষ্ট করলে হবে না।আমার ভাবতা হবে মেহরাব এর বিষয়টা।
আরাফ ভাবতে লাগলো মেহরাব এর রহস্যটা!!

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৩৪তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন