উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০৪)
আরাফঃ হ্যালো নিলয়। নবনিকে পাওয়া যাচ্ছে না। তুই তারাতাড়ি আয়। আমি পিছনের ক্লাসটায় আছি। ওয়ারদা আমাকে শুরু থেকে শেষ পযন্ত সব খুলে বলো।
_ভাইয়া আমরা ক্লাস শেষ করে চা খেতে বের হয়েছিলাম।নবনি ওর ফোনটা ক্লাসেই রেখে বের হয়ে গিয়েছিল।আমি সেটা আনতে যাই।এসে আর তাকে পাই না।
_বাসায় খোজ নিয়েছো?
_হ্যা ভাইয়া।ও বাসায় যায় নাই।
নিলয়ঃতুমি এগুলা আরাফকেই কেন বলছো।
আরাফঃদোস্ত।আরাফে চোখে পানি টলটল করছে।
নিলয় আরাফকে জড়িয়ে ধরে।নিলয় আরাফের কানে কানে বলল_
_আরাফ নিজেকে কন্ট্রোল কর।আমরা এখনো জানি না শত্রু কে!শত্রুকে দুবর্লতা বোঝানো যাবে না।
_হুম।
_তুমি বলতে চাচ্ছো নবনির ফোন তোমার কাছে।
_নবনি না নবনিতা ভাবি বল।(আরাফ রেগে)
ওয়ারদাঃনবনিতা হারানের আগে আমাকে সব কিছু বলেছিল।ভাইয়ার ব্যাপারে। আর বললামতো ফোন আমার কাছে।
আরাফ নিলয় চল।
ওয়ারদাঃআমিও যাবো।
আরাফঃহুম।
আরাফ প্রিন্সিপাল রুমে গেল।
_স্যার আমার সিসিটিভি ফুটেজ লাগবে।মিস নবনিতা খানকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
_কিহ।কিন্তু কিভাবে!কি হয়েছে??
_স্যার আমার কাছে এতো সময় নেই।আপনি সিসিক্যামেরা রুম এ চলুন।আমি আসতেসি।
_আচ্ছা।
_নিলয় তুই উনাকে নিয়ে যা।আর সব খুলে বল।আমি আসতেসি।
আরাফ তার বাবাকে কল দিল।
_হ্যালো বাবা।দেশের বাইরে যাওয়ার সব রাস্তা ব্লক করো।
_কেন কি হয়েছে।
_আমি অলরেদি ১ ঘন্টা লেট।বাবা।তোমার বউমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে।যা করার জলদি কর।কোনমতেই কুত্তারবাচ্চাগুলা যাতে দেশের বাইরা না যেতে পারে।ওরা জানেও না ওরা কার কলিজায় আঘাত করেছে।
_আচ্ছা। আমি দেখছি।
_হ্যালো পুলিশ। আরাফাত চৌধুরী বলছি।
_জি স্যার বলুন।
_আমি আপনাকে এরিয়ার ঠিকানা পাঠাচ্ছি। এখানকার সব সিসিটিভি ফুটেজ কালেক্ট করেন।।U Have Just 10 min.. এর থেকে ১ মিনিট ও বেশি লাগলে এই চাকরি আপনি আর পাবেন না।
এইবার নিলয়কে কল দিয়ে
আরাফঃনিলয় সিসিটিভির কি হলো।
নিলয়ঃএখানকার সিসিটিভি নষ্ট।
আরাফঃI new it.(ঠোটে বাকা হাসি)।শত্রু এখানকার সিসিটিভি রাখবে না। তুই এখনি ওখান থেকে বের হ।
বাইরে নিলয় আসার সাথে সাথে গাড়ি টান দিল আরাফ।
_তুই আমাকে প্রেমতো করতে দিলি না।এখন কি বিয়ের আগেই মারবি শালা।
_তোর এই প্রেম প্রেম করে আমি আমার প্রেয়সিকে পেয়েছি।তোর এই প্রেম কি করে না হতে দেই।তুই প্রেম করে বিয়ে করবি। আর তোর মেয়ে আমার ছেলের বউ বানাবো।
_হ্যা।তুই আমার জিবনের ১২ তা বাজিয়েছিশ। এখন তোর ছেলে আমার মেয়েকে জালিয়ে খাবে।না?আর আমি বাবা হয়ে এটা হতে দিবো।কখনই না।আমি এই বিয়েতে রাজী না।
_তোকে আর তোর মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যেয়ে বিয়ে দিবো।একবার নবনিপাখিকে খুজতে দে। না জানি কেমন আসে।
_আমরা কোথায় যাচ্ছি?
_পুলিশ ষ্টেশন। সিসিটিভি দেখতে।আমি জানতাম তুই ওখানে কিছু পাবি না। তাই আমি আগে থেকে প্লান বি রেডি রেখেছিলাম।
_তাহলে আমাকে ওখানে কেন পাঠালি?
_ওই যে তুই বললি। শত্রু আমাদের মাঝে। তাই তোকে পাঠিয়ে শত্রুকেও তোর সাথে পাঠালাম।আর আমি এখানের সব ঠিক করে ফেলেছি।
_আমরা প্রায় এসে পরেছি।
_হুম।
গাড়ি থেকে নেমেই আরাফ দৌড় দিল।পিছনে নিলয়ও।
আরাফঃকাজ হয়ে গিয়েছে?
পুলিশঃহ্যা স্যার।ভার্সিটির আশেপাশের সব এরিয়ার সিসিটিভি ফুটেজ এখানে আসে।
নিলয়ঃআরাফ তোর ফোন বাজছে।
_হ্যা বাবা।বলো।আশেপাশের সব এরিয়া ব্লক করে দেয়া হয়েছে।এম্বুলেন্স ছাড়া আর কোনো গাড়ি যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
_আচ্ছা বাবা।কাজি রেডি রাখো।শীঘ্রই তোমার বউমাকে নিয়ে আসছি।
_আচ্ছা।মাথা থান্ডা রেখে কাজ কর।আল্লাহ হাফেয।
_আল্লাহ হাফেয।
নবনি পিটপিট করে চোখ খুললো।চোখের সামনে সব অন্ধকার লাগছে।হাত পা দড়ি দিয়ে বাধা।সামনে একজন কালো হুডি পরা লোক দাড়িয়ে আছে।
_কে আপনি?আমাকে এখানে কেনো এনেছেন?
_হা হা হা।তুমি যে আমার একমাত্র শত্রুর কলিজা।তাই তোমাকে এখানে আনা হয়েছো।জানো সে এখন পানি ছাড়া মাছের মত ছটপট করছে।হা হা হা।
_কার কথা বলছেন?আপনি?
_আরাফাত।মিস্টার আরাফাত চৌধুরী।
_উনার সাথে আপনার কিসের শত্রুতা।
_ আরাফাত তোমাকে অনেক ভালোবাসে তাই না।তাই তোমাকে ওর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এলাম।
_আপনি কি করে জানলেন উনি আমাকে ভালোবাসে।
_ওয়ারদা বলেছে।
_কিহ!!!ওয়ারদা আপনাকে কেন বলবে??
হুডি পরা লোকটা বলতে লাগলো_
_কারন_ ও আমার হবু স্ত্রী।আজ যখন তুমি ওকে সব বলছিলা তারপরে ওর সাথে আমার কথা হয়।আমি জানতাম না তুমি আফিফার বান্ধুবি।আফিফার মুখে যখন শুনলাম তুমি আরাফ এর ভালোবাসা। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। কারন তোমাকে কাল থেকে পাগলেরমতো খুজছি আমি।তাই দেরি না করে তখনই প্ল্যান করে ফেলি।আর আফিফাকে বলি তোমার ফোন নিয়ে নিতে।আর আফিফা ফোন নিয়ে নেয়। যাতে তোমাকে ট্রেক না করতে পারে।আরাফাত চৌধুরী কখনও এখানে আসতে পারবে না।আর আসতে পারলেও আমি আগে থেকেই সব জেনে যাবো।হা হা হা।কারন আরাফ জানেও না ওর সাথেই আমার গুপ্তচর লুকিয়ে আছে।যে আমাকে সব খবর দিবে।তোমাকে মারার পর ও সেই যন্ত্রণা ভোগ করবে। যেটা আমার বোন করছে এতো বছর যাবত।
_কি হয়েছে আপনার বোনের?
_আমি সিয়াম নিরব জয়। আমার বোন আফিফা নিরব জয়।আরাফাতকে খুব ভালোবাসতো।ওর জন্য এতিম সেজে অনাথশ্রমে পরে থাকতো।আরাফ সপ্তাহে একদিন আসতো।টাকা দিতে। আর সেই একদিন এর জন্য আমার বোন সব বিলাসিতা ছেড়ে পরে থাকতো।তারপর কালকে তুমি আসো আরাফ এর সাথে। আর তোমাদের যাওয়ার পর ও আত্মহত্যা করতে চায়।তখন সে বেচে গেলেও এখন সে কোমায়।তারপর আমি ওর ডায়েরি পাই।যেখানে আমি কালকের ঘটনা লিখা পাই।কিন্তু আমি তোমাকে চিনতে পারি না।আজ আফিফার কারনে তোমাকে পাই।
জানো প্রতিদিন আমার কলিজা মোচড়ে যায়।যখন আমি আমার বোনকে দেখি।কিন্তু আর না। এখন তোমার জন্য ও বুঝবে আপনকে হারানের ব্যাথা।ও কখনো এখানে পৌছাতে পারবে না।
_হা হা হা।
_এই মেয়ে তুমি হাসছো কেন?
_আপনি শত্রুতামি করার আগে শত্রু সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার ছিল।
_মানে!!
_আপনি জানেন না আপনি কি করেছেন।আপনি বিনা দোষে একটা মানুষকে দোষী বানিয়ে ফেলেছেন।কাউকে জোর করে ভালোবাসা যায় না।আর আপনি যাই করুন না কেন।আপনি আমাকে মাটির নিচে পুতে দিলেও আরাফাত চৌধুরী আমাকে খুজে বের করবেই।
_আমি এটা হতে দিব না।তোমার কি মনে হয় আমি এতই কাচা খেলি।কখনই না।তোমাকে এখানে আনতে আমার অনেক কাঠখোড় পোহাতে হয়েছে।আরাফের চোখ ফাকি দেয়া এতো সোজা ছিল না। অনেক প্ল্যান করে তারপর এখানে আসতে পেরেছি।
আমরা কিছুখন পরই সিলেটের জন্য বেরিয়ে পরবো।_ বলে বেরিয়ে গেল।
ওয়ারদাঃআপনারা আমাকে রেখে কেন চলে আসলেন।আর এত ফাস্ট কেউ গাড়ি চালায়।কত কষ্ট করে এখানে আসলাম।
আরাফ বাকা হাসলো।
_তাড়াহুড়ায় বের হয়ে এসেছিলামতো তাই।
_আরাফাত সিসিটিভি ৩বার দেখা হয়ে গিয়েছে।একটা ব্লাক কার এ করেই গিয়েছে।
_হুম তুই ওয়ারদাকে।নিয়ে এই গাড়ী টা খুজ।আমি আলাদা খুজঁছি।
_আচ্ছা ঠিক আছে।
_নিলয় বের হয়ার পর মেসেজ আসলো।কাজ হয়ে গিয়েছে।
_আরাফ মুচকি হাসলো।
চলবে ...
৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন