উপন্যাস       :         তোমায় ঘিরে
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ             :         
প্রকাশকাল    :         
রচনাকাল     :         ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০৬)

নিলয়ঃ আরাফ হেলিকপ্টার এসে পরেছে।
আরাফ হেলিকপ্টার এ উঠলো।
নিলয়ঃ হাতে ব্যান্ডেজ করে নে।
আরাফঃ দরকার নেই।
নিলয়ঃ রক্ত পরছে।
আরাফ মলিন হাসি দিলো।মোবাইলে নবনির ছবি বের করলো।তারপর সেটার দিকে তাকিয়ে গান ধরলো~
 Dil ibadat kar raha hai 
.... Dharkane mere sun
Tujhko mai kar lu hasil 
.....Lagi hai Ye hi Dhun
Zindigi Ki Shak se lu
.....Kuch hasi pal mai chun
Tujhko mai kar lu hasil 
......Lagi hai yehi dhun
Jo bhi jitne pal jeyu
......Unhe tere sang Jeyu
......Jo bhi kal ho ab mera
Use tere sang jeyu
Jo bhi sase mai varu...
....Unhe tere sang varu 
Chahe jo ho rasta....
....Use Tere sang varu
 Dil ibadat kar raha hai 
.... Dharkane❤️ mere sun
Tujhko mai kar lu hasil 
.....Lagi hai Ye hi Dhun
আরাফের চোখের থেকে অনবরত পানি পরতে লাগলো।
কিছুক্ষনের মধ্যে ওরা এসে পরলো।
হেলিকপ্টার থেকে নিচে সিড়ি ফেলে আরাফ আর নিলয় নিচে নেমে পরলো।
আরাফ পাগলের মতো নবনীকে খুজতে লাগলো।আশেপাশে সব জায়গায় খুজেও নবনিকে পাওয়া যাচ্ছে না।
নিলয় স্টেশনের পাশের পুলিশ ষ্টেশন থেকে সিভিল ড্রেসে পুলিশ আনালো।পুলিশগুলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে হন্য হন্য করে নবনিকে খুজতে লাগলো।
সিয়াম নবনিকে টেনে হেচড়ে টেনে ওঠাচ্ছে।
নবনিকে ট্রেনে উঠানের সময় নবনি আরাফকে দেখতে পায়।আরাফ অন্যদিকে তাকিয়ে ছিল বলে এখনও দেখে নেই।
নবনিঃনবনি অসহায় চোখে আরাফকে দেখতে লাগলো।আরাফ আমি আপনার পিছনে। পেছনে তাকান।
আরাফঃআমার কেনো জানি মনে হচ্ছে তুমি আমার আশেপাশে নবনি পাখি।কিন্তু কই তুমি? 
নবনিঃআল্লাহ আমাকে সাহায্য কর।(লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতুম মিনাযলিমিন।)নবনি মনে প্রাণে দোয়া ইউনুস পড়তে থাকলো।
আল্লাহ হয়তো দোয়া কবুল করলো। সিয়াম এর ফোন আসে।যার জন্য অসাবধানতাবশত নবনির হাত ছেড়ে দিল।নবনি সারা শরিরের শক্তি লাগিয়ে আরাফ এর দিকে ছুটে গেলো।
সিয়াম খেয়াল করলো না।সে ফোনেই কথা বলছিল।
এইদিকে নবনি দৌড়ে এসে আরাফকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।আরাফ পুরো স্তব্ধ হয়ে গেলো।হৃৎপিন্ড ধকধক করছে।
আরাফঃন ব নি(মৃদু শব্দে বলল)।
আরাফ সাথে সাথেই পিছনে ঘুরেই নবনিকে বুকে টেনে নিলো।আরাফে চোখের জলে নবনির কাধ ভিজে যাচ্ছে।নবনি আরাফকে আরো জোরে জড়িয়ে   ধরলো।
আরাফ নবনির কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিল।পাগলের মতো খুজছি তোমাকে নবনি পাখি।আমার পৃথিবী থমকে গিয়েছিল তোমাকে ছাড়া।কেন বার বার হারিয়ে যেতে চাও।এইবার তোমাকে হারালে আমি বাচতাম বলো? নবনিপাখি।
নবনিঃভালোবাসি❤️ আরাফ।
আরাফ হাল্কা কেপে উঠলো। তবু্ও নবনিকে এক বিন্দু পরিমান ছাড়ে নেই।
তারপর নবনির কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে গান ধরলো~
Mujhko de tu  mit Jane 
Ab khud se dil mil Jane 
....Keu hai yeh itna Fasla
Lamhe ye fir na ane
Enko tu na de jane 
Tu mujhpe khud ko de luta 
Tujhe tujse tor lu 
    kahi khud se jor lu 
.......  mere jismo jan pe aa...
Teri khusbu oor  luu...
Zo vi jitne pal jeu..
Unhe tere sang ziu...
Zo vi kal ho ab mera use tere sang jeu..
Dil ibadat kar raha hai 
Dharkane meri sun 
.......tujhko mai karlu hasil lagi hai yehi Dhun
আরাফ মাটিতে ঠলে পরে।নবনি আরাফ বলে চিৎকার করে।


সিয়াম নবনিকে  না দেখতে পেয়ে আশেপাশে খুজে।তখন সে দেখতে পেল নবনি আরাফের কাছে। আরাফের সাথে দেখে সাথে সাথে  গুলি করে।আরাফ সেটা দেখে নবনিকে ঘুড়িয়ে ফেলে। নবনির ভালোবাসি বলার পরই গুলি আরাফের হাতে এসে লাগে।আরাফ ব্যাথায় চোখ মুখ খিচে হাল্কা কেপে উঠে। নবনিকে সেটা বুঝতে দেয় না।নবনি আবেশে চোখ বন্ধ করে ছিল।তাই নবনি কিছুই বুঝতেও পারলো না।আরাফ ঢলে পড়ায় নবনির জ্ঞান আসলো।
নিলয় আর পুলিশরা নবনি চিৎকার শুনে ওদের দিকে ছুটে আসে।একজন পুলিশ সিয়ামকে গ্রেফতার করে। বাকি গুন্ডারা পালাতে শুরু করলে পুলিশরা তাদের ধাওয়া করে।
নবনি আরাফের মাথা কোলে রাখে। আরাফ জ্ঞান হারানোর আগে নিলয়কে বললো ~
আরাফঃনিলয় নবনিকে হাসপাতালে নিয়ে যা।
নবনিঃনিলয় ভাইয়া উনাকে তুলে ধরেন আমাদের তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যেতে হবে।
নিলয় দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।রাস্তায় নবনিও জ্ঞান হারায়।আরাফ এর গুলি হাত ছুয়ে বের হয়ে যায়। তাই বেশি ক্ষতি হয় নেই।কিন্তু অনেক bleeding হওয়ায় রক্ত নিতে হয়।নবনি অবস্থা খুব খারাপ।
নিলয়ঃনবনি কেমন আছে ডাক্তার? 
ডাক্তারঃপা থেকে অনেক রক্ত গিয়েছে।ইনফেকশন হয়ে গেছে মনে হয়।এখন কিছু বলতে পারছি না। 
২ ঘন্টা পর আরাফের জ্ঞান ফেরে।আরাফের জ্ঞান ফেরার সাথে সাথে ক্যানেলা খুলে ফেলে।হাত থেকে গড় গড় করে রক্ত বের হয়।নার্স থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সে ছুটে নবনির কাছে এসে পরে।নবনিকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে ডাক্তার।আরাফ নবনির দিকে তাকিয়ে আসে।বোরখা খুলে ফেলেছে নার্স।আরাফ মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।নবনির চেহারা খুব মলিন দেখাচ্ছে।তারপরও মেয়েটাকে খুব সুন্দর লাগছে আরাফের।নবনির নাকটা লাল হয়ে আছে।
আরাফঃইচ্ছে করছে কামড় দিয়ে দিতে।হা হা হা। 
এই চেহারার প্রেমে পরেইতো আমার এই অবস্থা। আচ্ছা খুব কি দরকার ছিল এত সুন্দর হওয়ার। 
নবনি আস্তে আস্তে কি জানি বলছে।আরাফ নবনির ঠোঁটের কাছে কান নিয়ে গেল~
নবনিঃআরাফ।আরাফ।আপনি   ঠিক আছেন?আরাফ।
আরাফ হাসলো।আস্তে করে নবনির হাতের আংগুল গুলো নিজের আংগুলের মাঝে নিলো। আমি ঠিক আছি নবনিপাখি।
নবনি পিটপিট করে চোখ খুলল।আরাফের চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠলো।নবনি খুব হতাশ দৃষ্টিতে তাকালো।
আরাফে চেহারার অবস্থা খুব খারাপ।চোখ দুটো ছোটো হয়ে গিয়েছে।সকাল থেকে কিছু খায় নেই মনে হয়।সব সময় গুছিয়ে থাকা চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে।অবশ্যই নবনির কপালে লেপটে থাকা উশখুশকো চুলগুলো খুব ভালো লাগছে।নবনি মনে মনে ভেবে নিলো।এরপর থেকে আরাফ এর চুল গুছানো থাকলেও এলোমেলো করে দিবে।ভেবেই খিটখিট করে হেসে দিল।হি হি হি।
আরাফঃএই মেয়ে এভাবে পেত্নির মতো হাসছো কেন?
নবনিঃআপনাকে ছেকাখোর মনে হচ্ছে।আপনার লিজা জান মারা গেল নাকি।এই অবস্থা করে রেখেছেন কেন?
আরাফ হাত দিয়ে চুল ঠিক করে নিল।
আরাফঃহ্যা তাইতো।ইসসস তোমার জন্য ওকে মেসেজ দিতে ভুলে গিয়েছি।দাড়াও এখনি দিচ্ছি।
নবনির হাসি হাসি চেহারা বেলুন ফোটার মতো ঠুস হয়ে গেল।
আরাফঃমেসেজ না দিয়ে ভিডিও কল দেই কেমন?
নবনিঃকিছু বলল না।রাগে ফুসফুস করতে লাগলো।
আরাফঃহ্যালো লিজা। কেমন আসো।
লিজাঃএইতো জান।তোমাকে ছাড়া কেমন থাকি বল।
নবনিঃহ্যা তাইতো।ভাইকে ছাড়া কি বোনেরা ভালো থাকতে পারে।
লিজাঃএই মেয়ে তুমি ওখানে কি করছো।
নবনিঃকেন ননদি। দেখে খুশি হয়নি বুঝি।আসলে তোমার ভাইয়াতো আমাকে ছাড়া থাকতেই পারে না। তোমাকে বলতে ফোন দিয়েছিল আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করছি।তুমি এসো কেমন বলে কলটা কেটে দিলো।
আরাফ চোখ ছোট ছোট করে নবনির দিকে তাকিয়ে আছে।
আরাফঃতা ননদকেতো দাওয়াত করলে।ঠিক আছে ভালো কথা কিন্তু আমাদের বিয়েতে আমাকে দাওয়াত দিবে না?
নবনিঃলজ্জা পেল।ওই সময় রাগে বলে ফেললেও এখন নিজেই নিজের কান্ডে অবাক।
আরাফের নবনির লজ্জা মাখা মুখ দেখতে খুব ভালো লাগছে।তাই সে আরো লজ্জা দেয়ার জন্য বললো 
তা বিয়ের কথা যখন তুমি ভাবসো বাসরের কথা না হয় আমিই ভাবি কি বল?
নবনিঃ মাটি দুই ফাক হয়ে যা।আমি ডুকে পরি।এই লোক বড্ড লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে।
_অনেক কথা বলছেন এখন আমাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
_না এখন যেতে পারবে না তোমার আরো রেস্ট এর দরকার।
এমন সময় ডাক্তার আসলো।
আরাফঃনবনি কেমন আসে।
নবনিঃআরাফ কেমন আসে?
দুইজনই একসাথে বলে ফেলল।
ডাক্তার অবাক হয়ে তাকিয়া আসে।
আরাফঃ Doctor.I ask you something. 
ডাক্তারঃজি।মিস নবনি এখন ঠিক আসে।কিছুদিন হাটতে পারবে না।ঠিকমতো ওষুধ খেলে কিছুদিনের মধে সেরে যাবে।আর আরাফ আপনার Luck ভালো ছিল।গুলি ছুয়ে বের হয়ে গিয়েছে।
আরাফঃনবনির দিকে তাকিয়ে বলল~আমার Luck তো আমার সাথেই থাকে।
আপনাদের ৩ দিন পর ছেড়ে দেয়া হবে।বলে নবনির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো।
আরাফ এর এটা ভালো লাগলো না।সে নিলয়কে কল দিলো।
_কিরে বেটা কই তুই?

চলবে ...


৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন