উপন্যাস : তোমায় ঘিরে
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ০৬ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৬ষ্ঠ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০৭)
আরাফঃকিরে বেটা কই তুই?
নিলয়ঃখবরদার বেটা কবি না। আমার এখনো বিয়ে হয় নাই।।তুই প্রেম করস।৷তুই বেটা৷ বুইড়া দামড়া।
আরাফঃহবু বউ সামনে আসে দেখে কিছু বললাম না খালি।এই হিসাব পরে নিবো।আগে বল তুই অসুস্থ বান্ধুরে ফালায়া গেলি কই?!🥺
নিলয়ঃএইসব নাটক নবনি ভাবির সামনে করিস।For your kind information এমন দুই একটা গুলি যে তুই ২/১ মাস পর পরই খাস সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।তো অসুস্থ হওয়ার ভান ভাবির সামনে কর। আর আমাকে একটু ঘুমাইতে দে।শালা সকাল থেকে এইদিক থেকে ওইদিক অইদিক থেকে এই দিক খালি ভাগাইসোত।তারপর তোর শালী ওয়ারদাকেও আমার মাথায় ফালায়া রাখসোত।সে আর এক মাথা ব্যাথা। কবের থেকে ছেড়ে দেন। ছেড়ে দেন করছে।এটারে কি করবো।
আরাফঃওয়ারদাকে তোরে বুঝাইয়া দিলাম।এখন তুই বঝিয়ে পেলাম বন্ডে সিগনেচার করে আমাকে পাঠিয়ে দে।আমার হবু বউ বান্ধুবি বান্ধুবি বলে কান্না কাটি করলে যাতে দেখাতে পারি।
নিলয়ঃমানে ওরে আমি বুঝিয়া নিবো কেন?
আরাফঃদেখ মেয়েটা ভালো আসে খালি একটু ভিতুর ডিম আর কিছু না।ওর ছোট বোন সিয়ামের কাছে ছিল।ওর বোন ছাড়া আর কেউ নেই। মা বাবা অনেক আগেই মারা গেছে।তাই ও সিয়ামের কথা মতো কাজ করেছে।তুই ওর অভিভাবক হলে আমি ও নিশ্চিত থাকবো।যেমই হউক নবনি খুব ভালোবাসে ওকে।তাই আমি মাফ করে দিয়েছি।তুই ও করে দে।
নিলয়ঃতুই এত কিছু কবে জানলি?তুই না অজ্ঞান হয়ে পরেছিলি?নাকি বউ এর আদর নেয়ার জন্য শুয়ে ছিলি।
আরাফঃধুর ব্যাটা। সবাইকে তোর মতো ভাবস নাকি।জ্ঞান আসার পর তোকে দেখি নি।নবনি ও ঘুমিয়ে ছিল।তাই বসে বসে এটা solve করসি। এই আর কি।
নিলয়ঃতা এই ছিল তোর মনে। এই জন্য আমাকে প্রেম করতে দিলি না?
আরাফঃতুই যে ওয়ারদাকে পচ্ছন্দ করিস।সেটাও কিন্তু আমি জানি।(বাকা হেসে)।
নিলয়ঃকিহ!এমন কিছু না।
আরাফঃতাই বুঝি! নবনির গায়েব হওয়ার সাথে যখন ওয়ারদা জড়িত ছিল শুনে তোর মুখে আধার নেমে এসেছিল?
নিলয়ঃবেশি কথা বলছিস কিন্তু! (রেগে)
আরাফঃঠিক আসে। তাহলে ওয়ারদাকে পাঠিয়ে দে। আমি অন্য পাত্র দেখছি।আর নাইলে সিয়ামতো আছেই।
নিলয়ঃকখনো না।আমি থাকতে ও কোথাও যাবে না। আমি এখনি বন্ডে বুঝিয়া পেয়েছি লিখিয়া পাঠাচ্ছি।বলে কট করে কল রেখে দিল।
আরাফ জোরে হেসে দিল।হা হা হা।
নবনি এতক্ষণ বই পরছিল।আরাফ এতো জোরে হাসছে বলে বই থেকে চোখ সরিয়ে তাকালো।
নবনিঃএমন পাগলের মতো হাসছেন কেন?
আরাফঃতোমার বান্ধুবির বিয়ে হতে যাচ্ছে সেই খুশিতে।
নবনিঃওয়ারদার বিয়ে আর আমাকে জানায় নাই।আপনাকে জানালো।wait ওর বিয়েতো সিয়াম এর সাথে হওয়ার কথা ছিল। আর সিয়ামকে না পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তাহলে?
আরাফঃনিলয় এর সাথে বিয়ে হচ্ছে।বলে রিসেপশনিস্টকে কল দিল।
নবনি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আসে।
_হ্যালো। আরাফ চৌধুরী বলছি।কেবিন ২০২ তে আরো একটা Bed পাঠান।
_ওকে স্যার। পাঠাচ্ছি।
নবনিঃআর একটা Bed কেনো?
আরাফঃতা বিয়ের আগে তোমার Bed এ শোবো। আমার বুঝি লজ্জা করবে না।(বলে আরাফ লজ্জা পেতে লাগলো)
নবনিঃবেশরম লোক। আপনার সাথে তো কথা বলাই বেকার।
নাস নবনির পাশে বেড লাগিয়ে গেল।আরাফ আরামসে পা লম্বা করে শুয়ে পরলো।
এর মধ্যে আরাফের বাবা আদর চৌধুরী ও আদরের মা নিলীমা চৌধুরী আসলেন।নবনি সাথে সাথে ওরনা মাথায় দিল।
নবনিঃআসসালামু আলাইকুম Uncle.Anti.
নিলীমা চৌধুরীঃওয়ালাইকুম আসাসালাম।
আদর চৌধুরীঃওয়ালাইকুম আসাসালাম বৌমা।
এখন কেমন আসো?
নবনিঃজি ভালো।
আরাফঃতোমার বউমা ভালোই আসে তা ছেলের খোজ খবর ও নও।
আদর চৌধুরীঃতা তোকেতো ভালোই দেখতেসি। পায়ের উপর পা দিয়া বৈসা আসোত।আর কি খোজ নিবো।😒
আরাফঃকিপ্টামি বাদ দিয়া ভালো হয়ে যাও।যা টাকা কামাইসো আমার পোলাপাইনের গুষ্টি ও সারা জিবন বইসা খাইতে পারবো।
নবনি ভিষণ লজ্জা পেল।
নবনিঃবেশরম লোক।বাবার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে।
আরাফ এর বাবাঃবেয়াদব! কিপ্টামির কি দেখলি?
আরাফঃএই যে কাজী আনতে বলসিলাম।খালি হাতে আসছো।তুমি চাওই না আমার পোলাপাইন তোমার সম্পত্তি ভোগ করুক।এই জন্য বিয়ে দিচ্ছো না।
আদর চৌধুরীঃতুই বললেই কি ড্যাং ড্যাং করে বিয়ে দিয়ে দিবো।কখনোই না।নবনির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল মা তুমি কি শিউর তুমি এটাকেই বিয়ে করবে।আমি এর থেকে ভালো ছেলে খুজে দিবো।
আরাফঃআম্মু তুমি কি শিউর এটাই আমারই বাবা?
নিলীমা চৌধুরীঃফাজিম ছেলে বাবাকে এভাবে বলে?!!
নবনিঃuncle আমি শিউর।বাকিটা বলার আগে আরাফ বলল দেখছো বউ আমাকে কত ভালোবাসে।
আরাফের বাবার মুখ কালো হয়ে গেলো।
নবনিঃচুপ করেন আপনি।
আরাফ বাচ্চাদের মতো মুখে আংগুল দিলো।
নবনিঃuncle আমি শিউর আপনি ছেলে দেখেন। একে আমি বিয়ে করছি না।
আরাফ অসহায় ভাবে তার মায়ের দিকে তাকালো।
নিলীমা চৌধুরীঃএই হচ্ছেটা কি। আমি নবনিকেই আমার ছেলের বউ বানাবো। যার আপত্তি আছে বলতে পারেন।তাকে একবারে বাসা থেকে বের করে দিবো😏
আরাফের বাবা চুপসে গেল।এই মহিলা সব করতে পারে। পরে দেখা যাবে এই বয়সে বউ ছাড়া থাকতে হবে।
নিলীমা চৌধুরীঃচলেন নবনির বাবার সাথে কথা বলতে হবে।
আদর চৌধুরীঃনবনি নিজের খেয়াল রেখো মা।আমরা তোমাকে একবারে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে আসি।
নবনি লজ্জা পেল।
ওরা বেরিয়ে গেল।
আরাফঃনবনি। আমিও আসতাসি তুমি থাকো কেমন!
নবনিঃআপনি কই যান?
আরাফঃকি বউ? এখনি আমাকে ছাড়া থাকতে পারছো না?তুমি বললে কিন্তু তোমার আচলে বেধে থাকতে পারি।
নবনিঃএই যানতো যান।নাহলেই আমিই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করবো।
আরাফ এর সামনে সিয়াম বসে আসে চেয়ারে। হাত পা মুখ বাধা।এটা আরাফের টর্চার সেল।এখানে দোষীদেরকে শাস্তি দেয়া হয়।আরাফ অগ্নিদৃষ্টিতে সিয়ামের দিকে তাকিয়ে আছে।আরাফকে খুব ভয়ংকর দেখাচ্ছে। মাথার রগ গুলো ফুলে গিয়েছে।
আরাফঃখুব শখ না তোর? আমার কলিজায় হাত দিবি!!
আরাফের হাতে প্লাস। সে সিয়ামের দিকে এগোচ্ছে। সিয়াম ছোটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে।আরাফ সিয়ামের মুখ খুলে দিলো।
সিয়ামঃ আমাকে ছেড়ে দাও। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।
আরাফঃতোর মুখ খুলছি যাতে তোর চিৎকারের আওয়াজ আমার কানে যায়।আর আমার আত্মা শান্তি পায় বলেই সিয়ামের পা এর নখ প্লাস দিয়ে টান মারলো।সিয়ামের গগন কাপানো চিৎকার দিলো। আর আরাফ জোরে জোরে হাসতে লাগলো।
আরাফঃএটা নবনির পায়ে ব্যাথা দেয়ার জন্য।ভাব পায়ের ব্যাথার শাস্তি এমন হলে তুই যে হাত ধরে টানলে সেটার শাস্তি কি হবে?
সিয়ামঃনায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।আমাকে মাফ করে দাও।
আরাফঃআরাফ চৌধুরী মাফ করতে জানে না।বলেই হাতে ছুড়ি দিয়ে পোছ মারলো।সিয়ামের জান যাই যাই অবস্থা।আরাফে এই রুপ যে কেউ দেখলে ভয় পেয়ে যাবে।
আরাফঃএই বার ভাব। তুইতো নবনিকে গুলি করেছিলি।এখন কি করবো তোর সাথে।হা হা হা।হা হা হা।
চলবে ...
৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন