উপন্যাস       :         অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০২)

সেইদিনের পর অনেক দিন কেটে যায়।মিষ্টি আপুর সাথেও যোগাযোগ কমে আসে।কয়দিন পর দশম শ্রেণির নির্বাচনি পরীক্ষা। আমি তা নিয়ে মহা ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছি।
মাঝে অনেক কিছু ঘটে যায়।আমরা বাসা চেঞ্জ করে ফেলবো সামনে মাসে।আমার মামার বাসায় থাকবো।এখানে ফ্লাট ভাড়া চলে যাচ্ছে অনেক।তাই মামা বলসে তাদের সাথে থাকতে। ৩ মাসে এ তো আমাদের বাসাও ঠিক হয়ে যাবে।তারপর আমরা সেখানে উঠে যাবো।ততদিন এভাবে টাকা নষ্ট করার মানেই হয় না।বক্তব্য আমার একমাত্র মামা।
বিকালে বসে শিট গুলো রিভাইস করছি।তখনই মিষ্টি আপুর আগমন।
মিষ্টিঃকি করিস!!আমার সাথে দেখা করতে আসিস না কেন!!
সিমরানঃসামনে এক্সাম সেটা নিয়েই ব্যস্ত দিন কাটছে।
মিষ্টিঃতুই জানিস আমার বিয়ের ডেট ফাইনাল হয়ে গিয়েছে।সামনে মাসের ২ তারিখে আমার বিয়ে।
সিমরানঃকয় বার বিয়ে করবা!!?তুমি না বিবাহিত!?
মিষ্টিঃআর এ আমার কাবিন করে রেখেছিল 
ফ্যামিলি থেকে।সামনে মাসে একবারে উঠিয়ে দিবে।
সিমরানঃওহ।তুমি জানো আমরাও সামনে মাসে বাসা ছেড়ে দিবো।
মিষ্টিঃকিহ!!তাহলে তোর সাথে দেখা করবো কিভাবে!?
সিমরানঃতুমিও তো চলে যাচ্ছো।তাহলে আমি এখানে থাকলেই কি না। না থাকলেই কি?
মিষ্টিঃতবুও আমি আসলেতো তোকে পাইতাম।এখনতো সেটাও হবে না। 
সিমরানঃকে বলছে হবে না।আমি তোমার শশুড়বাড়িতে যেয়ে দেখা করে আসবো।কষ্ট পেয়ো না।
মিষ্টিঃআর আমিতো তোকে একবার এর জন্যই শশুড়বাড়িতে নিয়ে যাবো।আমার একমাত্র দেবর এর বউ করে। তারপর দুইজনে মিলে শাশুড়ীর উপর রাজত্ব করবো।
সিমরানঃতোমার দেবর এর প্রতি আমার বিন্দু পরিমার ইন্টারেস্ট নাই।এটিটিউড এর ডিব্বা একটা।


মিষ্টিঃঠিক আসে। আমি নাহলে তোমার জন্য বিয়েটা করবো যদি আম্মু আব্বু দেয় আর কি!তারপর দুই ভাইকে একরুমে দিয়ে আমরা দুইজন একসাথে পার্টি করবো।
মিষ্টিঃঠিক আসে।হা হা হা।
মিষ্টি আপু আমার ফোন নিয়ে মহাশয়ের আইডিটা সার্চ দেয়।
মিষ্টিঃদেখ ওর আইডি।
সিমরানঃতুমিই দেখো।
মিষ্টিঃতুই জানিস আফিফ তোর মতো মেয়ে খুব পচ্ছন্দ করে।মাদরাসা থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। ও কিন্তু মাওলানা।আমি আফিফকে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম ও কেমন মেয়ে পচ্ছন্দ করে।আফিফ আমাকে বলেছিল যে মেয়ে মুখ ঢেকে পর্দা করে।বোরখা পড়ে।এমন মেয়েকে বিয়ে করবে।আর তুইতো বোরখা নিকাব সব পড়িস।আফিফ তোর জন্য পারফেক্ট।
মাওলানা কথাটা শোনার পর মনে সফট কর্নার তৈরি হয় লোকটার জন্য।আচ্ছা লোকটা কেমন!!আমি তাকে ভুল বুঝলাম নাতো!!
মিষ্টিঃআমি আসি। তুই থাক।
সিমরানঃআচ্ছা।
মিষ্টি আপু চলে যাওয়ার পর ফোনটা হাতে নিলাম।আফিফ এর আইডিটা সার্চ বারের উর্দ্ধে অবস্থান করছে।মনে শয়তান নাড়া দেয়া শুরু করলো।আমিও শয়তানে উসকানিতে লোকটার আইডিতে ঢুকে পরলাম।প্রোফাইল পিক দেখে এক দফা ক্রাশ নামক আজাইরা বস্তুটাও খেয়ে ফেললাম।ছেলেটার চেহারাটা এত সুন্দর কেন!!Bio তে লিখা 
I love my friends and family.
বাহ!!আচ্ছা এখানে ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি লিখা ভালো বাসার মানুষ এর নামটা লিখা নেই কেন?নেই নাকি কেউ!আর এ আছে যে এটিটিউড হয়তো লুকিয়ে রেখেছে।আচ্ছা আমাকে ভালোবাসলে কি আমার নামটা ও এখানে জোড়া হবে!
_ধ্যাত কি যে ভাবতাসি না আমি।পড়ায় মনোযোগ দেই।
দেখতে দেখতে আমাদের ঘর ছাড়ার দিন এসে পরলো।আর এদিকে মিষ্টি আপুর বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন।আমি এখানে ফার্নিচার গুছানো নিয়ে ব্যস্ত। আমার অবস্থা কাজ এর বুয়ার মতো। চুলগুলোতে ধুলা লেগে আছে।জামাও ময়লা হয়ে আছে।
এমন সময় মিষ্টি আপুর দেবর হলুদের ডালা নিয়ে আসে।আমি একটু উকি দিয়ে দেখি তাকে মিষ্টি আপুর ফ্লাটে ঢুকতে।চুলগুলোতে ফ্যাশনাবেল কাট দিয়েছে।একদম নায়কের মতো সেজে এসেছে।অবশ্যই আমি তাকে যতবারই দেখেছি পরিপাটিই দেখেছি।আমি উনার দেখার আগেই লুকিয়ে পরি।
কিন্তু তাতে বিশেষ একটা লাভ হলো না মিষ্টি আপু আমাকে বাঁশ দেয়ার জন্য এসে পরলো সিমরান সিমরান করতে করতে।
_কি হয়েছে!এমন ডাকাডাকি করছো কেন?!
_আফিস এসেছে।আয় তোর সাথে দেখা করবে।
_আমার সাথে কেন উনি দেখা করতে যাবেন!আজবতো।
_আর এ আমি ওকে তোর কথা বলেছি।চল তোর সাথে পরিচয় করাবো।
_না আমি যাবো না।তুমি যাও।
_চল না।


তখনই মিষ্টি আপুর আম্মু তাকে ডাক দিলেন।
_আচ্ছা। আমি যাচ্ছি তুই আয়।
_আমি এই ফকিন্নি অবস্থায় ওই লোকের সামনে কি করে যাবো!আমার মানসম্মান প্রথম দিনেই পানচার হয়ে যাবে।আমাকে তো দেখে মনে করবে।আমি এই বাসায় কাজ করি। না না। আমি যাবোই না যাই হয়ে যাক না কেন!
আম্মুঃসিমরান ফানিচারগুলো ভ্যানে উঠিয়েছে। তুই সাথে যা।
_লে হালুয়া।
যেখানে বাঘের ভয় দেখানেই সন্ধ্যা হয়।
আমার বোরখাতো মিষ্টি আপুর ফ্লাটে রেখেছিলাম।স্কুল থেকে ফিরে ঘরের এই অবস্থা দেখে ওদের ফ্লাটে রেখেছিলাম যাতে যাওয়ার সময় নিতে পারি।এখন আমার কি হবে।
চোরের মতো ওদের ফ্লাটে ঢুকে কোনো মতো বোরখাটা নিয়ে কেটে পরলাম।মনে হয়না কারো চোখে পরেছি।
আফিফ~
কবের থেকে এসে বসে আছি।মেয়েটার কোনো খবর নাই।ভাবি যে ডাকলো এতো আসলোই না।আমাকে পাত্তা দেয় নাই এই মেয়ে!ভাবা যায়।ভাবি এতো সুনাম করে এই মেয়ের। আর এই মেয়ে এতো ভাব দেখায়।বাহহহ!!ঠিক আসে আমার কি! আমি কেন এর জন্য অপেক্ষা করবো। চলে যাই আমি।
আফিফঃভাবি। আমি চলে যাই।রাতেতো আসবোই হলুদে।
মিষ্টিঃআচ্ছা।দেখা হবে রাতে।তাড়াতাড়ি এসে পরবে কেমন!
আফিফঃআচ্ছা ভাবি।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৩ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন