উপন্যাস       :         অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

৪ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০৫)

সেদিন এর পর আজ অনেক দিন কেটে গেলো।এই দিন গুলোর প্রতিদিনই আমার আফিফ এর সাথে মেসেজএ কথা হয়েছে।আফিফকে আমি বাহ্যিকভাবে যেমনটা ভেবেছিলাম তিনি মোটেও তেমন না।তার অন্তর্নিহিত গুন দেখে আমি মুগ্ধ।তার কথা গুলোতে কেমন এক নেশা কাজ করে।আমি তার কঠিন মায়ায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি।আসক্ত হয়ে পরেছি আপুর এই বদ দেবরটার প্রতি।কিন্তু এই আসক্তিটাকি শুধু আমার দিক থেকে নাকি তার দিক থেকে ও আছে ঠিক জানা নেই।

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আফিফ এর গুড মনিং মেসেজটা চোখে পড়ে।কিন্তু আজকে মেসেজটা আসলো না।আচ্ছা লোকটা কি উঠলো না ঘুম থেকে! কিন্তু উনিতো খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়ে।আজ এমন কি হলো।আচ্ছা আমি তাহলে মেসেজ দেই আজকে।মেসেজ দিতে যেয়ে দেখি মেসেজ ডিলেভার হচ্ছে না।তারপর আইডিতে ঢুকে দেখি আইডি ডিএক্টিভ করা।আইডি ডিএক্টিভ কেন!এখন তো আমারও কিছু করার নেই।কারন আমার কাছে তার ফোন নাম্বারটা নাই।আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম।কবে সে মেসেজ দিবে।
আফিফ~
আজকে ভাবির বোনটাকে মেসেজ করি নেই। রাগে নিজের আইডিটাও ডিএক্টিভ করে রেখেছি।কালকে ভাবির ফোনে দেখলাম সিমরান এর বিয়ের একটা পিক।আবার ইমুতে রাজ দিয়ে নাম্বার সেভ করা।ভাবিকে জিজ্ঞেস করলাম রাজ কে! ভাবি বললো রাজ নামেই নাকি সিমরান এর নাম্বার সেভ করা।আচ্ছা এর মানে কি সিমরান বিবাহিত!তাইলে আমাকে বললো না কেন! আমি একজন বিবাহিত মেয়ের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়লাম!?এখন আমি এই মায়া কি করে কাটাবো।আর ভুলেও ওর সাথে কথা বলবো না।


সিমরান~
অপেক্ষা করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। লোকটার কোনো খবর নেই। এতোক্ষনে আফিফ এর সাথে সকাল বিকেল ১০০ + কথা হয়ে যেত।কিন্তু এখন!আচ্ছা অভ্যাসটা কি শুধু আমারই।উনার হয়নি বুঝি উনি কি করে আমাকে ছাড়া থাকছেন।আমার আর একটুও ভালো লাগছেনা।আমি মিষ্টি আপুকে কল করলাম।
_হ্যালো।কেমন আসো আপু।
_ভালো রে।তুই কেমন আছিস?
_হুম। অনেক ভালো।কি করো?
_এইতো টিকটক দেখি আফিফ আর আমি মিলে।
_ওহ। আচ্ছা দেখো তাইলে।
বলেই কল কট করে কেটে দিলাম।
_ব্যাটা খবিশ।ভাবির রুমে যেয়ে বসে আছে।বিয়ে করসে ভাই আর উনি সারাদিন আপুর সাথে যেয়ে বসে থাকে। কেন থাকবে!এই অধিকার কে দিলো! আবার টিকটক দেখছে! এক সাথে বসে!!এমন ছেলে আমার লাগবেই না।যে আমার সে শুধুই আমার সে কেনো অন্য কারো সাথে বসতে যাবে!!আমি আর কথাই বলবো না। উনার সাথে একটুও না।আমি এখানে সারাদিন টেনশন করি আর উনি ভাবির সাথে বসে টিকটক দেখছে!
সিমরান এখানে রেগে বোম হয়ে বসে আছে।
আফিফ~
এই মেয়ে আবার ভাবিকে কল দিতে গেলো কেন!সারাদিনতো ভালোই ছিলাম এখনতো আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না।এখনতো উড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করছে।
আফিফ নিজের সাথে না পেরে উঠে আইডি এক্টিভেট করে ফেলে।কিন্তু মেসেজ না দিয়ে আইডিতে ঘুরতে থাকে।সিমরান এতোক্ষন ফোন হাতে নিয়েই বসে ছিল।হুট করেই দেখে আফিফ এর প্রোফাইলের পাশের সবুজ বাতিতে জ্বলে উঠলো।
সিমরান~
_আফিফ এক্টিভ!!এতোক্ষনে মনে পরেছে উনার একটা আইডি আছে।আমার কি আমিতো কথা বলবো না।
আফিফ~
_মেয়েটা কতো খারাপ। এক্টিভ দেখেও আমাকে একটা মেসেজ দিলো না।আচ্ছা ও কি জানে না আমজ আইডি ডিএক্টিভেট করে ছিলাম!আচ্ছা আমি মেসেজ দিয়েই দেখি।
_কি করেন!
টুং করে শব্দ বেজে উঠলো।
মেসেঞ্জার এ যেয়ে দেখি আফিফ এর মেসেজ!রাগ টাগ ভুলে গিয়ে দিলাম রিপ্লাই করে। 
_কিছুনা।
_ওহ!
_কই ছিলেন!সারাদিন?
_একটু ব্যস্ত ছিলাম।আচ্ছা আপনি কি বিবাহিত?
_কিহ!আমি কেন বিবাহিত হতে যাবো?কে বলছে আপনাকে এই সব?
_তার মানে আপনি বিবাহিত না!


_না।
_কিন্তু আমি যে ভাবির ফোনে দেখলাম আপনার বউ এর মতো ছবি।
_সেটাতো আমার কান ফোড়ানির অনুষ্ঠানে সেজে ছিলাম।
_তাইলে ইমুতে রাজ দিয়ে নাম্বার সেভ করা কেন?রাজটা কে?
_আমার আপন ছোট ভাই।
_কিহহহ!
এবার আমি আইডি ডিএক্টিভ হওয়ার কারন খুজে পেলাম।হাসতা হাসতে দম বন্ধকর অবস্থা আমার।উনি পুরোই আহম্মক হয়ে গেলেন।অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামালাম।
_আচ্ছা আপনি কি আপনার ভাবিকে প্রশ্ন করতে পারলেন না?রাজ কে আর ছবিটার কথা।উনি তো সবই জানতো। 
_আমি কি জানি এমন কিছু। 
_You are so boring man.
_আমি বোরিং হলে আপনি একটা ফোরিং।
_কিহ আমি ফোরিং হলে আপনি মেন্ডাক।
_মেন্ডাকা আবার কি!
_মেন্ডাক হলো ব্যাঙ।আপনি একটা ব্যাঙ কারন ব্যাঙ লাফায় বেশি বুঝে কম। আপনি না বুঝেই লাফিয়ে লাফিয়ে ফেসবুক ডিএক্টিভ করে দিলেন।
_আর তুমি ফড়িং।ফড়িং এর মতো সারাক্ষন উড়ু উড়ু করে বেড়াও।
_ভালো আপনার মতো ভাবির রুমে যেয়ে বসে থাকি না তো।
_ভাবি বাসায় একা বোর হয় দেখেই তো আমি যেয়ে এটা ওটা করে ব্যস্ত রাখি।
_ভালো তো। আপনার হবু বউকেও কেউ না কেউ এটা ওটা করে ব্যস্ত রাখবে।
_না না।আমার বউ শুধুই আমার। আর কারো না।তাকে আমিই শুধু সময় দিবো।
_তাইলে মানুষ এর বউকে সময় দেয়া বন্ধ করুন।
_আচ্ছা।আর যাবো না হইসে?
_হুম।
_আচ্ছা লামিয়া আমাকে কল দিচ্ছে।ভাবতেসি ওর প্রপোজালটা এক্সেপ্ট করে ফেলবো। কয়দিন আর সিংগেল থাকবো বলো।
_করেন। কে ধরে রেখেছে।আর আপুটা খুব ভালো। আপনার সাথে মানাবে।
_আচ্ছা। 


সিমরান~
আফিফ অফলাইনে চলে গেলো।আমি কল করলাম ধরলো পযন্ত না। আজবতো রাগ করার কথা আমার করে কে! এটা কেমন কথা।
আফিফ~ 
ভাবলাম জেলাস ফিল করে ভালোবাসি কথাটা বলবে। কিন্তু বললোতো নাই উল্টো ওই মেয়ের কথাই বলে।আমি কঠিন রেগেছি।আর কথাই বলবো না।
সিমরান~
উনি কি বুঝেন না আমি উনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।কেন লামিয়ার কাছে যেতে চাইলো!তার মানে সেও লামিয়া আপুকে ভালোবাসে।ঠিক আসে আমার কি।আমি ও কল দিবো না।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 


চলবে ...


৬ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন