উপন্যাস : অধ্যায়টা তুমিময়
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “অধ্যায়টা তুমিময়” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
1111111111111111111111111111111
১১ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
অধ্যায়টা তুমিময় || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ১২)
সিমরান আহসান এর বাসা থেকে আসার ২ দিন পর সজীব আহসান আর দিয়া আহসান বাসায় গ্রাম থেকে বাসায় ফিরে।আহসান তার মা বাবার সাথে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সেদিন সারাদিন আর সিমরান এর সাথে যোগাযোগ হয় নি।
রাতের বেলা নিজের রুমে এসে ভিডিও কল দেয়।
আহসানঃকি হয়েছে? মন খারাপ কেন?
সিমরানঃখুদা লাগছে।
আহসানঃতো খাও নাই কেন?
সিমরানঃআপনি খেয়েছেন?
আহসানঃনা রাতেরটা খায় নেই।
সিমরানঃদুপুরে খেয়েছিলেন?
আহসানঃহুম।তুমি খেয়েছিলে?
সিমরানঃনা।
আহসানঃকিহ!এখন রাত ৯ টা বাজে। তুমি এখনও না খেয়ে আছো।কেন?
সিমরানঃআপনি আজকে মেসেজ দেন নেই কেন?
আহসানঃব্যাস্ত ছিলাম। মা বাবা আসছে। এজন্য না খেয়ে থাকবে?
সিমরানঃআমি আপনার খাওয়ার পরই খাই।
আহসানঃকিহ!!
আহসান খুব খুশি হয়ে গেলো।চেহারায় হাসি চিকচিক করছে।
সিমরানঃআমি খাই নাই বলে এতো খুশি?
আহসানঃতুমি আমার জন্য খাও নাই??আমার জন্য অপেক্ষা করো তুমি!??
সিমরানঃহুম।প্রতিদিনই তো করি। আপনি খেতে বসলেই খাই। তার আগে অপেক্ষা করি।
আহসান এখন দাত বের করে হাসছে।
সিমরানঃকি হলো?আমাকে ও বলেন আমিও হাসি।
আহসানঃখুশি খুশি লাগছে।আমার জীবনেও এমন কেউ আসলো যে আমার জন্য অপেক্ষা করবে।এমন কাউকে পাওয়া খুব কঠিন জানো। আমি ভাবীকে কখনো দেখি নাই ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করতে। আম্মু ও করে না।তুমি করো।You are so special মেরি জান
সিমরানঃআমার আম্মু করে আব্বুর জন্য অপেক্ষা। তাই আমি ও করি।আমি জানতাম না এটা আপনার কাছে এতো ভালো লাগবে।আমিতো এইভাবেই করতাম।
আহসানঃআচ্ছা।এখন থেকে আমিও করবো।একসাথে খাবো। আর নাহয় তোমার অপেক্ষা করবো।
সিমরানঃঅপেক্ষাতো ছেলেরা করে। মেয়েরা না।
আহসানঃউহুম।সব কিছু সমান সমান।
সিমরানঃআপনি আমাকে এতো ভালো কেন বাসেন?
আহসানঃতুমি কেনো বাসো?
সিমরানঃজানিনা তো।
আহসানঃআমি ও জানি না।শুধু জানি
সিমরানঃকি?
আহসানঃআই লাভ ইউ সো মাচ।
সিমরানঃআই লাভ ইউ টু মাচ।
আহসানঃআই লাভ ইউ মোর।
সিমরানঃআই লাভ ইউ লট।
আহসানঃআই লাভ ইউ বিগ বিগ মাচ।
সিমরানঃআই লাভ ইউ মোর মাচ।
আহসানঃইউ আর লাভড বাই মি।
সিমরানঃহি হি হি।হেরে গেলাম।
আহসানঃহা হা হা।
সিমরানঃখেয়ে নেন।রাত হয়েছে।
আহসানঃহ্যা।একটু পর খাই এখন না।
সিমরানঃআচ্ছা।
আহসানঃকিন্তু তুমি এখন খাবে। বলো কি খাবে?
সিমরানঃক্ষুদা নাই।
আহসানঃদাঁড়াও আমি অর্ডার করছি।এখনই এসে পরবে।
সিমরানঃনা।
আহসানঃহ্যা।
আহসান অর্ডার করে দিলেন ফুড পানডা তে।কথা বলতে বলতে খাবার এসেও পরলো।
আহসানঃএসে পরেছে নিয়ে আসো যাও।
সিমরান নিয়ে এসে বক্স খুললো।
সিমরানঃখাসির কাচ্চি?
আহসানঃহুম। সুলতান ডাইন এর খুব মজা। খেয়ে বলো কেমন?
সিমরানঃহুম।
আহসানঃযাও যাও হাত ধুয়ে আসো।
সিমরানঃহুম।
হাত ধুয়ে এসে সিমরান খেতে শুরু করলো।
সিমরানঃখুব মজা তো।
আহসানঃযাক। তোমার পচ্ছন্দ হয়েছে এটাই অনেক। ঠিক মতন খাও।পেট ভরে।
সিমরানঃহুম।আপনি খা
আহসানঃশিসসসস।একটা ও কথা না।চুপ চাপ খাও।
সিমরানঃহুম।
আহসানঃআস্তে আস্তে করে খাও।পুরোটা খাবে।হাড্ডি দেখে খাও।
সিমরানঃআচ্ছা।
আহসানঃহুম। মাংস ঠিক আছে? আমি বলে দিয়েছিলাম সব কিছু ঠিক মতন দিতে। না দিলে ওদের খবরই আছে।
সিমরানঃনা না ঠিক আছে।অনেক দিয়েছে খেতে পারছি না।
আহসানঃখেতে হবে।খেয়ে গোলুমোলু হতে হবে।
সিমরানঃআমি এতো কষ্ট করে স্লিম আছি। আপনি আমাকে মোটা বানিয়ে ফেলবেন।
আহসানঃখেয়েও স্লিম থাকা যায়।
সিমরানঃহ্যা।বলছে।আমার খাওয়া শেষ।
আহসানঃপুরো টা খেয়েছো?
সিমরানঃহুম।
আহসানঃকই দেখি?
সিমরানঃযা আমি তো মিথ্যা বলেছিলাম।[মনে মনে]
আহসানঃকই দেখাও।
সিমরানঃহাত ধুয়ে আসি।
আহসানঃআচ্ছা শুনো।ভালো করে হাত ধুবে।আর কুলি করবে।মাংস যাতে দাতে লেগে না থাকে। আর হ্যা বেশি করে পানি খাবে।ঢোক মেপে খাবে না।
সিমরানঃআমি কি বাচ্চা?
আহসানঃহুম।তুমি আমার জান পাখি। এখন যাও।জলদি।
সিমরানঃআচ্ছা।
সিমরান হাত ধুয়ে আসে।
আহসানঃঠিক মতন খেয়েছো?
সিমরানঃহুম।
আহসানঃপেট ভরছে?
সিমরামঃহুম।ধন্যবাদ।
আহসানঃভালোবাসি। উম্মাহ।
সিমরান লজ্জা পেয়ে কল রেখে দিলো।
ছোট্ট করে মেসেজ দিয়ে দিলো।
এইবার আপনিও খেয়ে নিন।
আহসান আচ্ছা বলে মেসেজ পাঠালো।
খাওয়া দাওয়া করে এসে আহসান নিজের রুমে শুয়ে আছে তখন আকাশ আসে।
আকাশঃওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ডটা দে তো।
আহসান হেসেই বললো ভাইয়া তুমি কিন্তু ৩ মাস ধরে বিল দাও না।
আকাশ হুট করে রেগে গেলো।
আকাশঃওহ খোটা দিচ্ছিস?বিল দেই না বলে?
আহসানঃনা ভাইয়া।তুমি তো জানোই আমি চাকরি করি না। টিউশন করে চলতে আমার হাত টান হয়ে যায়।তাই বললাম বিলটা দিয়ে দিও।
আকাশ একটু আগেই অফিস থেকে এসেছে।আসার পর মিষ্টি আকাশ আহসান এর মা দিয়া আহসান এর নামে অনেক কথা বলেছে।দিয়া আহসান আর মিষ্টির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকে।মিষ্টি কাজ করতে পচ্ছন্দ করে না।দিয়া আহসান মিষ্টিকে কোনো কাজ এর কথা বললে সে খুব রেগে যায়।উনাকে কিছু না বললেও আকাশকে অনেক কিছুই বলে যে মিষ্টিকে এই বাসায় চাকর এর মতো খাটাতে এনেছে। আরো অনেক গালাগালি।
আকাশ মা আর স্ত্রী কাউকেই কিছু বলতে পারে না।একটু আগে এগুলো নিয়ে ঝগড়া হয়েছে তার মিষ্টির সাথে তাই মেজাজটা বিগড়ে ছিলো।আহসান মিষ্টির ক্লাসমেট ছিলো।আহসানই আকাশকে মিষ্টির ছবি দেখায়।তারপর তাদের বিয়ে হও।আকাশ এখন এসবের জন্য আহসানকে দায়ী মনে করে।
আকাশ আহসান এর উপর খুব রেগে যায়।
আকাশঃমুখে মুখে কথা বলিস। বেয়াদব হয়েছিস?
আহসানঃআমি কই বেয়াদবি করলাম?
আকাশঃএকটা থাপ্পড় দিবো।
আকাশ এর গলার আওয়াজ শুনে দিয়া আহসান আফিফ এর রুমে চলে আসে।
দিয়া আহসানঃকি হয়েছে?
আহসানঃকিছু না মা। তুমি যাও।
দিয়া আহসানঃকেন যাবো?বল আমাকে কি হয়েছে?
আকাশঃও ছোট ছেলেকে বলায় খুব লাগছে তোর? আমার বউকে কেনো সারাদিন বলতে থাকিস?মা হয়ে আমার নতুন সংসারে আগুন লাগাতে লজ্জা করে না?
দিয়া আহসানঃকি বলছিস?আমি মিষ্টিকে কি বললাম?
আহসানঃভাইয়া মার সাথে এভাবে কথা বলছো কেন?
আকাশঃতুই চুপ থাক। সারাদিন বাসায় থেকে কি করিস?মিষ্টির সাথে যে তোর মায়ে লেগে পরে থাকে তখনতো তোর মুখ ফুটে না।এখন কেন কথা বলছিস?
আহসানঃমা কি বলসে ভাবীকে? অন্যায় হলে তো বলবো?মা তোমার আমার সাথে যেভাবে কথা বলে ঠিম সেভাবে ভাবীর সাথে ও বলে।মা তো এমন কিছু করে নাই যে
আকাশঃচুপ কর।আমার বউ কেন রান্নাঘরে যাবে?ওকে কি আমি রান্না করতে এনেছি?তোরা ওকে দিয়ে কেন রান্না করাবি।
দিয়া আহসানঃএটা কেমন কথা?মিষ্টি এই বাড়ির বউ। ও তো কাপড় ধোয়া ঘর মোছা এগুলো করে না।শুধু রান্নাটাই করে।
আকাশঃনা করবে না।
মিষ্টি আকাশ এর পিছনে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছে।
আহসান এর এটা দেখে মাথা গরম হয়ে গেলো।মা ছেলের মধ্যে ঝগড়া লাগিয়ে কি করে কেউ এমন খুশি হতে পারে।
আহসানঃভাইয়া তুমি কি জানো ভাবীর মা মাকে কল দিয়ে অনেক কথা শোনায়।আমরা নাকি তাদের কাছে হোন্ডা দাবী করেছিলাম। তুমি লোভে পড়ে ভাবিকে বিয়ে করেছো।
আকাশঃএগুলো কবে হলো?তুই আমাকে বলিস নাই কেনো?
আহসানঃঅশান্তি করতে চাই নাই তাই বলি নাই।মা আমাকে বারন করে যে তোমার সংসার এ আগুন লাগবে তাই।কিন্তু আজকে আমি চুপ থাকতে পারলাম না।
আকাশঃএগুলো আমি শুনছি?তোমার মা কেন আমার মাকে অপমান করবে। এই সাহস তাকে কে দিলো?
আহসান আর কিছু বলতে যাবে তখনই মিষ্টি বলে উঠলো
হ্যা। আমার মা আমি ভালো না।আর তোমার ভাই যে সিমরান এর শুয়েছে।সেটা কি তোমাকে বলেছে
দিয়া আহসানঃমিষ্টি মুখ সামলে কথা বলো।আমার ছেলে এমন না।
আকাশঃএগুলো তুমি কি বলছো?তোমার বোন সিমরান?
মিষ্টিঃআমার বোন না। ও আমার কিছুই হয় না।তোমার ভাইয়ের প্রেমিকা সে।
আহসানঃভাবিইইই।
আকাশঃখবরদার চেচাবি না ওর উপর।
দিয়া আহসানঃতুই আহসান এর জায়গায় এই মেয়ে বিশ্বাস করছিস?
মিষ্টিঃমুখ সামলে কথা বলবেন।আমি এই মেয়ে না আপনার ছেলের স্ত্রী। পাচ জন এর সামনে আমাকে বিয়ে করে এনেছেন।আপনার ছেলের মতো মা বাবা গ্রামে গিয়েছে এই সুযোগে একটা মেয়ের সাথে বিছানা শেয়ার করার মতো চরিত্রহীন না।
আর এ আমি তো সিমরানকে ভালো মনে করেছিলাম।কিন্তু ও এতো খারাপ।ব্যা*শা
আহসানঃখবরদার মিষ্টিইইই।আর একটা কথাও বলবি না।সিমরান এর নামে। না হয় আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।আমি ভুলে যাবো তুই আমার ভাইয়ের স্ত্রী।
আকাশঃআর আমিও ভুলে যাবো তুই আমার ভাই।
দিয়া আহসানঃসিমরান খারাপ হতে পারে কিন্তু আমার ছেলে না।আহসান সত্যিই করে বল।তোর সিমরান এর সাথে কি সর্ম্পক।
আহসানঃভালোবাসি আমিই।ভালোবাসিই আমি সিমরানকে। আর তার নামে একটা শব্দও আমি শুনতে পারবো না।
আকাশ আহসান কে বটি দিয়ে মারতে আসে।মিষ্টি দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে।সজিব আহসান বাসায় নেই।দিয়া আহসান আটকাতে পারে না।আকাশ রাগে আহসান এর পায়ে বটি দিয়ে একটা কোপ দেয়।তারপর ইচ্ছা মতো মুখে ঘুষি মারে। আহসান এর মুখ থেকে রক্ত পড়তে থাকে।
দিয়া আহসানঃআহসান তুই কিছু বলছিস না কেন?ওকে আটকা। চুপ চাপ মার কেন খাচ্ছিস?
আহসানঃকেমন প্রতিবাদ করি মা।ভাইয়া আমার ভাই হয়।উনার গায়ে হাত উঠানোর থেকে মরে যাওয়া ভালো।
আকাশ এর এতোখনে জ্ঞান ফিরে। রাগে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।আকাশ এর হাত থেকে বটি পরে যায়।আকাশ বের হয়ে যায়।পিছনে ফিরে তাকায় না।
দিয়া আহসান কাদতে থাকে। আহসান এর অবস্থা অনেক খারাপ।তখনই সজীব আহসান বাসায় এসে। এই অবস্থা দেখেন। তিনি আহসান কে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
চলবে ...
১৩ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন