উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান - Bangla Golpo - Kobiyal - কবিয়াল
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান

1111111111111111111111

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ০১)

এই মাত্রই বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলো দুটি সুদর্শন যুবক।
_We are back ভাই।দীর্ঘ ৪ বছর পর দেশের মাটিতে পা রাখলাম।ইশশশ এখানের মতো শান্তি আর কোথাও নাই।নিজের দেশতো নিজের দেশই।
_হুম।তা ঠিক।কিন্তু তুই তো পারতি থেকে যেতে। কে বলছিলো আমার সাথে যেতে?তুই কেন গেলি?
_উফফ ভাই। তুমি বুঝোনা। আমি না গেলে তোমাকে কে পাহারা দিতো।আমেরিকার সুন্দর সুন্দর নারীরাতো তোমাকে বশ করে ফেলতো।আর ভাবী আমার স্বামী হারা হয়ে যেত।
_তোর ভাবীর তো স্বামী হারা হওয়ারই শখ জাগছে। বিয়ের পিড়িতে বসার অনেক শখ। আজকে ওর সব শখ মিটাবো।একটু দূরে কি গেলাম ভুলেই গিয়েছে আমাকে।
_আচ্ছা ভাইয়া।ভাবীর যদি বিয়ে ঠিক না হতো তুমি ফিরতে না?
_ফিরবো না কেন?আমারতো ফিরতেই হতো।আমার দুটো ভালোবাসাই  যে এখানে।
_আচ্ছা ভাইয়া এই দুইজন এর মধ্যে তুমি কাকে বেশি ভালোবাসো?
_এক জন আমার রক্তের সাথে মিশে আছে আর একজন আমার প্রতিটা নিশ্বাসে।
_বুঝলাম এই উত্তর আর আমি কখনোই পাবো না।
_হা হা হা।তোকে কখনো আমি জিজ্ঞেস করেছি যে তুই কাকে বেশি ভালোবাসিস। দেশকে নাকি তোর পাত্তা না দেয়া ভালোবাসাকে।
_ভাই।দেশের আগে কিছুই না।আব্বু শিখিয়েছে। ভুলে গেলে।
_হুম।আব্বু আমাদের শিরায় শিরায় বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই তো এতোদিন আমেরিকায় থেকে দেশের প্রতি মায়া ছাড়ি নাই।
_হুম।আর ভাবির প্রতিও।কথাটা বলে চোখ টিপি দিলো।
_বড্ড পেকেছিস রে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তোর যত্তসব পাকনা পাকনা কথা।
ছেলেটার কান মলে দিলো। 
_ভাই।ছাড়ো আমাকে। আমি আদ্রিতা আপুনিকে বলে দিবো সব।কয় দিন পর ২২ বছর এর হয়ে যাবে। আর এখনও ছোট ভাইকে ধরে মারো।আপুনিকে দিয়ে মার খাওয়াবো।
_ভুলিস না আদ্রিতা আমার ১ মিনিট এর হলেও ছোট।
_হুহ।আর তুমিও ভুলো না। আপুনি তোমার থেকে বেশী আমাকে ভালোবাসে।
তখনই একটা ছেলে বাইক নিয়ে আসলো।
_আমি তো গেলাম ভাই।অনেক দিন পর বাইক চালাবো। তুমি যাও গাড়িতে। টা টা।
_সাবধানে যাবি।জোরে চালাবি না।মাইর খাবি কিন্তু। 
_তুমি ঠিকমতোন যাও।বাসায় দেখা হচ্ছে।আমি তোমার আগেই সবার সাথে দেখা করে ফেলবো।তুমি আসো তোমার ঠেলাগাড়িতে।
আদ্রিয়ান চৌধুরী বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরলো।মেহরাব চৌধুরী গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো। 

এতোক্ষন যারা কথা বলছিলো তারা হলো আরাফাত চৌধুরী আর নবনি চৌধুরীর দুই ছেলে আদ্রিয়ান চৌধুরী আর মেহরাব চৌধুরী। আদ্রিয়ান ১৭ বছরে পা দিলো।আর মেহরাব এর কিছুদিন পর ২২ বছর হবে।
মেহরাব গাড়ি চালাতে চালাতে একটা নাম্বারে কল দিলো।অপর পাশে কল ধরতেই মেয়েটা সালাম দিলো।
_আসসালামু আলাইকুম। কে?
_ওয়ালাইকুম আসসালাম।সালাম দিয়ে কি হবে?তুমি তো আমাকে শান্তিতে থাকতে দিলে না।পাখি।
_আপনি!!বাংলাদেশে?
_হ্যা।পাখি।মেহরাব চৌধুরী Is back.তুমি কি ভেবেছো। সবাইকে নিষেধ করলে আমার কাছে তোমার বিয়ের খবর পৌছাবে না।তোমার প্রতিটা নিশ্বাস এর খবর আমি জানি।
_জেনে কোনো লাভ আপনার হচ্ছে না।বিয়েতো হবেই।আজকে হলুদ আর কালকে বিয়ে।এই বিয়ে কেউই আটকাতে পারবে না।কেউই না।
_আমি না থাকলে তোমার কোনো আসে যায় না। তাই না পাখি?
_না।আপনি না থাকলে আমার কোনো কিছু আসবে যাবে না।
_আচ্ছা। 
মেহরান মলিন হাসলো।
তুমি কি বললে? কালকে বিয়ে!!আর এই বিয়ে কেউ আটকাতে পারবে না। তাই তো?
_হুম।
_আমি মরে গেলেও কি এই বিয়ে হবে?
_হ্যা হবে।আপনি মরে গেলেও আমি এই বিয়ে করবো।(রাগের কথাটা বলে ফেললেও বুঝতে পেরে মেয়েটা চুপ হয়ে গেল।)
_হা হা হা।আচ্ছা পাখি। দোয়া করো যাতে আমি মরে যাই।কারন মেহরাব চৌধুরী চোখের সামনে থেকে কেউ তার পাখিকে নিয়ে যাবে এই ইতিহাস কখনো হবে না।আমি বেচে থাকতে তুমি আর কারো হতে পারবে না।
ভালোবাসি মেহরাব চৌধুরীর পাখি

মেহরাব বাকা হেসে গাড়িটা সামনে আসা ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ করলো।সাথে সাথে মেহরাব এর গাড়িটা ছিটকে পাশে থাকা জংগলে যেয়ে পড়লো।
অনেক জোরে ব্লাস্ট এর শব্দ হলো।
ফোনে থাকা মেয়েটা থর থর কাপতে লাগলো।
মেহেএএএএএএর।
আদ্রিয়ান বাসায় এসে পৌছালো।বাসায় ঢুকতেই আদ্রিতা আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।
আদ্রিয়ানঃআপুউউউউউউ।আই মিসড ইউ সব থেকে বেশী।
আদ্রিতা কাদতে কাদতে হেসে দিলো।
আদ্রিতাঃতোর বাংলিশ কি ঠিক হবে না?
আদ্রিয়ানঃনা গো।আদ্রিয়ান চৌধুরী কখনো চেঞ্জ হবে না।হা হা হা। 
আদ্রিতাঃহবি ও না।যা উপরে আম্মু নামাযে বসে আছে।সেই যখন থেকে তোরা প্লেনে উঠলি তখন থেকে আম্মু নামাযে।তার মন নাকি আজ খুব কুডাক দিচ্ছে। মেহরাব ভাই কোথায়?
আদ্রিয়ানঃআসছে ঠেলাগাড়িতে করে।তুমি তো জানোই ভাইয়া আম্মুর মতো আস্তে গাড়ি চালায়।
আদ্রিতাঃআর তুই আব্বুর মতো উড়ে এসেছিস!!এই জন্য আম্মু তোদেরকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে থাকে।
আদ্রিয়ানঃআমি আম্মুর সাথে দেখা করে আসি। আব্বু কি অফিসে?
আদ্রিতাঃনা।আম্মুর সাথেই। আম্মুকে এমন অবস্থায় রেখে কি আর আব্বু কোথাও যাবে।
আমি অফিসে গেলাম। মেহরাব ভাই আসলে কল দিস এসে পরবো।
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা ওকে।
আদ্রিতাঃপাগল ভাই আমার। 
আদ্রিতা হাসতে হাসতে বের হয়ে গেলো।
আদ্রিয়ান নামাজে থাকা নবনির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।
আই মিস ইউ আম্মু।
নবনি মোনাজাত শেষ করে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিয়ানকে। 
নবনিঃআই মিসড ইউ টু বাচ্চা। 
আরাফঃহ্যা। আর আমাকে তো কেউই মিস করে না।বড় ছেলেটাও এসে মাকেই জড়িয়ে ধরবে।

আদ্রিয়ান উঠে যেয়ে আরাফ এর কোলে বসে গেলো।
আদ্রিয়ানঃআম্মু কোলে তো আমি মাথা রেখেছি। আর তোমার কোলে তো আমি বসেই পড়েছি। এইবার বলো আমি কাকে বেশি ভালোবাসি?
আরাফ আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।
আরাফঃতুই তো আমার সিংহ।
আদ্রিয়ানঃহ্যা।আমি তো সিংহ। আর মেহরাব ভাই তোমার বাঘ।তুমি আমার থেকে বেশি মেহরাব ভাইকে ভালোবাসো।
নবনিঃমেহরাবকে কি আর ভালোবাসতে হয়?ও তো সবার ভালোবাসা আদায় করে নেয়।
আদ্রিয়ানঃহা হা হা।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

০২ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন