উপন্যাস : তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
লেখিকা : মাধুর্য মাধুরী
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা মাধুর্য মাধুরীর “তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ১৬ই নভেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী |
1111111111111111111111
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ || মাধুর্য মাধুরী (পর্ব - ০১)
আর্যর চোখ-মুখ কুঁচকে এল অপর পাশের কাউচে বসে থাকা সবুজ শাড়ির রোগা-পাতলা শ্যামলা মেয়েটাকে দেখে। বিদেশীদের মতন লম্বা-চওড়া লালচে ফর্সা গায়ের রং নিয়ে সে নাকি বিয়ে করবে ঐ আনস্মার্ট কালো মেয়েকে? আজ-কাল'কার দিনে কোনো কফি হাউজে দেখা করার বদলে যে নিজের হবু বরের সাথে দেখা করতে চেয়েছে নিজের বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে! কি ধরণের চিপ মেন্টালিটি.... আর্যর মাথা ঘুরে ওঠে। তবুও তার বাবা মা এই মেয়ের সাথেই তার বিয়ে দেবেন যেন পণ করেছেন। ঋধিমা, রিমঝিমের মত স্ট্যান্ডার্ড বিজনেসম্যান'দের মেয়েদের ছেড়ে কেন যে উনারা এই লো ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে আরণ্যাকে বেছে নিয়েছেন, তা জানা নেই আর্যর।
আরণ্যা লজ্জা লজ্জা কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে উঠলো,
-'চা নেবেন?'
এটুকু প্রশ্নেই লাল আভা ছেয়ে গেছে তার চোখে-মুখে।
পরক্ষনেই আর্য কাঠ-কাঠ কণ্ঠে জবাব দিল,
-'আমি চা খাই না।'
- 'মাফ করবেন। তাহলে কফি নিয়ে আসি?'
- 'আপাতত আমার চা-কফি কোনোটাই খাওয়ার মুড নেই, এক্সকিউজ মি...'
আর্য সোফা ছেড়ে উঠে চলে গেল, আরণ্যাকে এই মেজাজি মানুষটার প্রতি এক অন্যরকম মুগ্ধতার আবেশে অবাক রেখে।
আরণ্যার বিয়ে আর্যর সাথে ঠিক হওয়ার পর আজ প্রথম আর্য আরণ্যাকে দেখতে এসেছিল। ইতিপূর্বে দেখার সুযোগ থাকলেও, আর্যর এই মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বল্পশিক্ষিত কালো মেয়েটাকে বিয়ে করতে যথেষ্ঠ আপত্তি থাকার কারণেই, সে বাবা-মা'র সাথে নিজের হবু স্ত্রী'কে দেখতে আসেনি। তার হাই স্ট্যান্ডার্ড উচ্চশিক্ষিত বন্ধু-বান্ধবের সামনে আরণ্যাকে কীভাবে প্রেসেন্ট করবে, সেই বিষয়ে চিন্তা করতে করতেই তার অবস্থা রীতিমত শোচনীয়। এছাড়াও ঋধিমার সাথে গত দুই মাস সে রিলেশন কন্টিনিউ করছে। ঋধিমার সাথে বিয়ের পরিকল্পনা না থাকলেও আরণ্যার মতো এতো চিপ কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ডের মেয়ের সাথেও সে আবদ্ধ হতে চায়নি। নিরুপায় আর্য প্রচন্ড রাগে এক লাথিতে সামনে থাকা লোমশ অলীনকে ছিটকে ফেলে দিল। আচমকা লাথিতে অলীন যেন আর্তনাদ করে উঠে দূরে বসে আর্যকে করুন চোখে দেখতে লাগলো। আর্য এবার যেন নিজের ভুলটা কিছুটা হলেও বুঝতে পারলো। অলীনকে এমন করে লাথি মারা তার উচিত হয়নি।
আর্যর বিয়ে ঠিক হওয়ার কথা জানতে পেরে ঋধিমা আর্যর কলার চেপে ধরলো। আর্য যেন আজ অবাকের উপর অবাক হচ্ছে। ঋধিমার হাত এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলো ওর ফর্সা গালে। মুহূর্তেই যেন পাঁচ আঙুলের ছাপ বসে গেলো গালটায়। ঋধিমা গালে হাত চেপে চোখে জল নিয়ে চিৎকার করে উঠলো।
-'হাউ ডেয়ার ইউ আর্য! তুমি আমাকে চড় মারলে? এতো সাহস হয় কীভাবে তোমার? একে তো দেড়-দুই মাস প্রেম করে বিয়ের আশা দিয়ে ব্রেক-আপ করার কথা বলছো! তার উপর চড়?'
-'হোয়াট দ্য হেল ঋধিমা! আমি কবে বলেছি যে, তোমাকে আমি বিয়ে করবো? সম্পর্কটা আমার জন্য যেমন টাইম পাস ছিলো, তেমনি তোমার জন্যেও। আমি কিছু জানি না ভেবেছো?'
আর্যর বাঁকা হাসির সাথে শেষের গা জ্বালানো কথা শুনে দাঁতে দাঁত চেপে ঋধিমা বলে উঠলো,
'কী, কী জানো তুমি? কিসের কথা বলতে চাইছো? টাইম পাসের মত কী করেছি আমি?'
-'রাহুলের কথা আমি জানি না ভেবেছো? তুমি রাহুলের সাথে ব্রেক-আপের পর আমার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলে। ভেবেছিলাম তুমি রাহুলের থেকে সম্পূর্ণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছো। কিন্তু না, গত তিন দিন আগে তুমি রাহুলের সাথে ফের প্যাচ-আপ করেছো। তুমি কী ভেবেছিলে, আমাকে আর রাহুলকে একসাথে হাতের পুতুল বানিয়ে নাচাবে?'
ঋধিমা যেন এবার বেশ বিচলিত কণ্ঠে বলল,
-'প্রুফ, কোনো প্রুফ আছে তোমার কাছে?'
-'প্রুফ ছাড়া এই আর্য চৌধুরী কোনো কথা বলে না।'
ঋধিমার সামনে গ্যালারি ওপেন করে দুইদিন আগের রাহুল, ঋধিমার অন্তরঙ্গ একটা ছবি দেখাতেই,ঋধিমা আর্যর হাত থেকে মোবাইলটা কেড়ে নিতে চাইলো। আর্য এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে মোবাইলটা পকেটে চালান করে দিল।
-'হ্যালো মিস, এই আর্য চৌধুরীর সাথে বেশি বাড়াবাড়ি করার চেষ্টা করবেন না। আর্য কোনো কাঁচা কাজ করে না। আমার ত্রিসীমানায় যেন এই ঋধিমাকে আর দেখা না যায়।'
আর্য ঋধিমাকে পিছনে ফেলে গটগট করে হেঁটে গেলো। ঋধিমা চোখ মুছে বিড়বিড় করলো,
-'এর রিভেঞ্জ আমি অবশ্যই নেবো আর্য চৌধুরী।'
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
০২ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মাধুর্য মাধুরী তার সামাজিক মাধ্যম প্রফাইলে নিজের সম্পর্কে লিখেছেন - “নিজেকে প্রকাশ করতে চাই না। পৃথিবীর সব রহস্যের মধ্যে আমি অধিকতর রহস্যময়।” এছাড়া তার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে তা অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন