উপন্যাস       :        বেসামাল প্রেম
লেখিকা        :         জান্নাতুল নাঈমা
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ৯ জুলাই, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল নাঈমার ‘বেসামাল প্রেম’ শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের ৯ জুলাই থেকে লেখা শুরু করেছেন।
বেসামাল প্রেম || জান্নাতুল নাঈমা Bangla Golpo - Bangla Kobita - Kobiyal
বেসামাল প্রেম || জান্নাতুল নাঈমা

২৫ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

বেসামাল প্রেম || জান্নাতুল নাঈমা (পর্ব - ২৬)

ভোরবেলা মাহেরকে ডেকে তুলল সূচনা। চোখ দু'টো খুললেও ওঠে বসল না মাহের। তাই সে নম্র সুরে বলল,
-" আজ আপনার ফার্স্ট ক্লাস আছে না? "
মাথা নাড়াল মাহের। ধীরেসুস্থে ওঠে বসে চিন্তান্বিত কণ্ঠে বলল,
-" সূচনা কয়েকমাস পরই হৈমীর এইচএসসি। আপনি রুদ্রর সাথে কথা বলে ওর বইপত্রগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। "

ইস! বড্ড মায়া হলো সূচনার। মানুষটা বোনকে নিয়ে কতটা দুঃশ্চিতায় ভুগছে। ঘুম ভাঙতেই বোনকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা। সে ভরসা দিল বলল,
-" আপনি চিন্তা করবেন না আমি ভাইয়াকে ফোন দিব আজ। সব খবর নিয়ে, কথা বলে আপনাকে জানাব। এবার ওঠুন আমি কফি বানাই গিয়ে। "
রান্নাঘরে যেতেই দেখল হামিদা সবজি কাটছে। সূচনা অবাক হয়ে বলল,
-" একি মা আপনি ওঠেছেন কেন? আপনার শরীর খারাপ রেস্ট করুন আমি সব করে নিব। "
হামিদা নিজের মতোই সবজি কাটতে লাগল। সূচনার কণ্ঠ তার কর্ণকুহরে পৌঁছেছে কিনা বোঝা গেল না। সূচনা কয়েক পল সময় চুপচাপ শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে রইল। দুরুদুরু বুকে চাপা নিশ্বাস ফেলে মাহেরের জন্য কফি বানিয়ে বলল,
-" উনাকে কফি দিয়ে আসছি আমি। "

মাহেরকে কফি দিয়ে সূচনা এলো রান্নাঘরে। হামিদা সবজি কেটে ধুয়ে এক বাটি মাছের টুকরায় লবণ ছিটাল। সূচনা পাশে দাঁড়িয়ে নরম সুরে বলল,
-" মা আপনাকে চা করে দিই? আপনি খান রান্নাটা আমি করে ফেলি। "
বিয়ের পর থেকে বেশিরভাগ সূচনাই রান্না করে। যেহেতু আজ ভার্সিটিতে তার ক্লাস নেই সেহেতু তারই করার কথা। কিন্তু হামিদা তার সাথে না কথা বলল আর না কোনো কাজে হাত লাগাতে দিল। সূচনা তবুও সরলো না, শাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়েই ওটা, সেটা এগিয়ে দিতে লাগল। এক পর্যায় বিরক্ত হয়ে হামিদা বলল,
-" তোমার উপস্থিতিতে আমি খুশি নই বুঝতে পারছ না? "


আর কিছু বলতে হলো না। চোখদুটো টলমল হয়ে বুক ভার হয়ে গেল সূচনার। ধীরেধীরে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো সে। চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। ওড়নার কোণা দিয়ে সে অশ্রু মুছে মাথা নিচু করে রুমে গেল সে। মাহের তখন ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুল মুছতে ব্যস্ত। সদ্যই গোসল সেরে এসেছে সে। সূচনার এ সময় রান্নাঘরে ভীষণ রকম ব্যস্ত থাকার কথা। তাই তার উপস্থিতি দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকাল মাহের। বলল,
-" ফিরে এলেন যে? "
সূচনা জোরপূর্বক হাসি টেনে অযথা বিছানা ঠিক করতে করতে বলল,
-" মা রান্না করছে। "
তোয়ালে রেখে সেন্ডো গেঞ্জি পড়ল মাহের। সূচনার দিকে সুক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে এগিয়ে এলো। বলল,
-" মায়ের শরীর খারাপ সূচনা, আপনি তাকে রেস্ট করতে বলুন গিয়ে। "
মাথা নিচু করে জবাব দিল সূচনা,
-" বলেছিলাম। "
-" শোনেনি? একে নিয়ে আর পারি না আপনি যান হেল্প করুন। "
মাহের কাভার্ড থেকে শার্ট বের করতে উদ্যত হয়ে আবার পিছনে তাকাল। নত মাথায় ঠাঁই বসে সূচনা। কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে বলল,
-" আপনি কি আমার কথা বুঝতে পারছেন না? "

ভিতরের কান্না গুলো হঠাৎই ওগরে দিল সূচনা। দু'হাতে মুখ ঢেকে ফুপিয়ে কেঁদে দিল সে। মেয়েটা ভীষণ নরম প্রকৃতির। শান্তশিষ্ট, নরম এবং সুন্দর মনের মানুষ সে। সারাজীবন কাছের সবার থেকে স্পেশাল একটা যত্ন পেয়েছে। যত্নটা বেশি হওয়ার কারণ সে মা হারা মেয়ে। জীবনে কখনো মায়ের ভালোবাসা পায়নি। তাই সবাই একটু বেশি আদর, ভালোবাসা দিয়েছে তাকে। এই শাশুড়ি মা, সে কি শুধু শাশুড়ি নাকি? সে তো তার মা। বিয়ে করে এ বাড়ি আসার পর থেকে এ মায়েরও কম ভালোবাসা পায়নি। এই মায়ের ভালোবাসা পাওয়ার লোভেই তো সর্বপ্রথম এই বিয়েটায় রাজি হয়েছিল সে। মাহেরের মতো চমৎকার মানুষটার সঙ্গে তো অনেক করে পরিচয় ঘটেছে। আজ হঠাৎ সেই মায়ের অযত্ন মাখা আচরণ পেয়ে হজম করতে কষ্ট হয় না বুঝি? হচ্ছে তো ভীষণ কষ্ট৷ এই কষ্টের কথা কীভাবে বলবে মাহেরকে? 


আচমকা সূচনায় কান্নায় হতভম্ব হয়ে গেল মাহের। পাশে বসে আহত চোখে তাকাল সে। বলল,
-" কী হয়েছে সূচনা? আপনি ঠিক আছেন? দেখি এদিকে ঘুরুন, অ্যাই মেয়ে কী হয়েছে বলুন আমায়। "
দু'হাতে সূচনার কাঁধ ধরে নিজের দিকে ঘুরালো মাহের। সূচনা সহসা কান্না থামিয়ে দিল। মাথা নাড়িয়ে বলল,
-" কিছু হয়নি কিছু হয়নি। "
দু'হাতে চোখের পানি মুছে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল সে। কিন্তু পারল না ক্ষণেই চোখ দুটো লাল হয়ে টলমল। মাহের রুদ্ধশ্বাস ছাড়ল। দু'হাতের আঁজলে সূচনার কোমল গালদ্বয় চেপে ধরে দৃঢ়স্বরে প্রশ্ন করল,
-" কী হয়েছে? মা কিছু বলেছে? "
সূচনা সমানে মাথা নাড়িয়ে বলল,
-" না না। "

-" সত্যি বলবেন নাকি মা'কে গিয়ে জিজ্ঞেস করব কিছু বলেছে কিনা? "
আঁতকে ওঠল সূচনা। ঘনঘন মাথা নেড়ে বলল,
-" প্লিজ না। "
মাহের আদুরে ঠোঁটে সূচনার ললাট ছুঁয়ে দিল। বলল,
-" তাহলে আপনার এই কান্নার কারণটা শেয়ার করুন। "
-" মা মনে হয় আমার ওপর একটু রেগে আছে। "
মৃদু হাসল মাহের। বলল,
-" তা আছে কিন্তু বিনাদোষে। "
সূচনা নিশ্চুপ হয়ে মাথা নত করে বসে রইল। মাহের পুনরায় তার গালদুটো আগলে ধরে বলল,
-" কী বলল? "
-" আমার উপস্থিতি সে সহ্য করতে পারছে না। "

ঠোঁট কামড়ে কান্না আঁটকালো সূচনা। মাহেরের প্রচণ্ড খারাপ লাগল এবার। কোনো মানে হয়? এই মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে কী লাভ? দু'হাতের বুড়ো আঙুলে চোয়াল বেয়ে চলা অশ্রু মুছে মাহের বলল,
-" রাগ করে বলেছে সত্যি সত্যি বলেনি। মেয়ের রাগ ছেলে বউয়ের ওপর দেখাচ্ছে। আপনি এটা নিয়ে কাঁদবেন না প্লিজ। "
-" যদি আমায় বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে উনি তো আমায় সহ্য করতে পারছেন না। "
অবাক হয়ে মাহের বলল,
-" আশ্চর্য এটা বলবে কেন? আরে বাবা বউ আপনি আমার। বেশি ভাবছেন সেরকম কিছুই বলবে না। ভয় পাচ্ছেন কেন? "
শেষ প্রশ্নটা করে হেসে ফেলল মাহের। ওঠে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকে বলল,
-" মাঝে মাঝে আপনি সত্যি বাচ্চা হয়ে যান একদম অবুঝ। "
অভিমানী মুখে সূচনা ওঠে দাঁড়াল। কাভার্ডের দিকে এগিয়ে গিয়ে কপাট খুলে মাহেরের জন্য শার্ট, কোট বের করে বিছানায় রাখল। মাহের তার কার্যকলাপ দেখে স্থির হয়ে বলল,
-" কী এত ভাবছেন বলুন তো? মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে কী যেন গভীর চিন্তা। "
-" কিছু না। "


ম্লান মুখে কথাটা বলে তাকে পাশ ফিরাতে চাইল সূচনা৷ কিন্তু মাহের চট করে ধরে ফেলল। দু'হাতে কোমর জড়িয়ে মুখোমুখি হলো ওর। সূচনা থতমত খেয়ে গেল। ঢোক গিলে বলল,
-" আমি ঠিক আছি মাহের। "
-" একদম ঠিক নেই আপনি। কী ভাবছেন বলুন? "
মুখ ফস্কে সে বলেই ফেলল,
-" আমার খুব ভয় হচ্ছে আপনাদের হারিয়ে ফেলার।"
-" ভয়টা অযথা। আমরা বিয়ের মতো একটা সম্পর্কে জড়িয়ে আছি আপনি এটা বুঝতে পারছেন না কেন। হঠাৎ এত অবুঝতা কেন? মা একটু রাগ দেখিয়েছে তাই? "
-" জানি না। "
-" জানতে হবে না। আসুন একটু আদর করে দিই। মন ভালো হয়ে যাবে। সারাদিন বসে আমাদের হারানোর ভয় না করে এই মুহুর্তটুকু অনুভব করবেন।"
কথাগুলো বলতে বলতেই কোমরে চেপে রাখা হাতদুটো সন্তর্পণে ওপরে উঠালো মাহের। একহাতে সূচনার গাল স্পর্শ করে অপরহাতে ঘাড় চেপে ধরল। নিজের পুরুষালি ওষ্ঠজোড়ায় অত্যন্ত দরদি ভাবে কোমল অধর চুম্বন করল। নিমিষেই শিউরে ওঠল সূচনার সর্বাঙ্গ। চোখ বেয়ে পড়ল দুফোঁটা নোনাপানি। যা দেখে মাহেরের স্পর্শন গাঢ় হলো। অদ্ভুত এক অনুভূতিতে আবিষ্ট হয়ে মাহেরের পৃষ্ঠদেশ খামচে ধরল সূচনা। 
____________
হৈমীর হাতে একটি নোটপ্যাড আর কলম দিয়ে গম্ভীর মুখে বসে আছে রুদ্র। বলা হয়েছে নিজের প্রয়োজনীয় যা কিছু আছে সবকিছু লিখতে। একটু পর কেনাকাটা করতে বের হবে সে। সময় দিয়েছিল দশমিনিট। অথচ পঁচিশ মিনিট পেরিয়ে গেছে। তার লেখা শেষ হয়নি। পনেরো মিনিট যখন পার হলো রুদ্র জিজ্ঞেস করেছিল,
-" এত সময় লাগছে কেন? কী এত ভাবছ তাড়াতাড়ি  লিখ। "
হৈমী ভেঙচি কেটে উত্তর দিয়েছে,
-" শুনুন সবকিছুতে তাড়াহুড়ো করবেন না। আমাকে দিয়ে বিয়েটা তাড়াহুড়োয় করেছেন বলে ভেবে বসবেন না আমাকে দিয়ে আপনার জীবনের সবকিছুই তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। "
চোখ গরম করে চিবিয়ে চিবিয়ে রুদ্র বলল,
-" যতক্ষণ বকবক করছ ততক্ষণে অনেক কিছু লেখা যেত। "
হৈমী হকচকিয়ে গিয়ে চঞ্চলিত কণ্ঠে বলল,
-" অ্যাই অ্যাই সব সময় মারতে আসবেন এমন ভাব করবেন না। আমি তাড়াহুড়োয় কিছু করতে পারি না। আর দরকারের সময় আমার মাথা কাজ করে না। একটু সময় নিয়ে লিখি। "
একথা শুনে দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে রুদ্র বলল,
-" দরকারে মাথা কাজ করবে কেন? অদরকারী সম্পদ তো তুমি। "
-" কী বললেন আমি কিন্তু শুনেছি। আমি অদরকারী সম্পদ! এত বড়ো অপমান! আপনি জানেন? আমাকে ছাড়া আপনি আব্বু ডাক শুনতে পারবেন না? আমি আপনার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সম্পদ মাথায় রাখবেন। "
এ পর্যায়ে রুদ্র একটা কঠিন ধমক দিল। ব্যস হড়বড় করে সকল প্রয়োজনীয় জিনিসের নাম পড়ে গেল তার। লিখতেও শুরু করল এক এক করে সবটা। 
লেখা শেষে পুরো ফ্ল্যাটে হৈমীকে একা রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে গেল রুদ্র। শুরুতে হৈমী ভয় না পেলেও পরবর্তীতে ভীষণ ভয় পেতে লাগল। তারমধ্য মনে পড়ল রুদ্রর দেয়া সেই শর্তের কথা। রুদ্র তো বাবাই হতে চায় না তাহলে সে কীভাবে প্রয়োজনীয় সম্পদ হবে? রুদ্র বাবা না হলে সে কী করে মা হবে? ছোট্ট বেলা থেকে তার কত শখ মা হবে। সারাজীবন পুতুলদের মা হয়ে, পুতুলকে মেয়ে বানিয়েই কাটিয়ে দিল। এবার তো বিয়ে হয়েছে রক্তে, মাংসে গড়া মানুষদের মা হতেই পারে। রুদ্র যাই বলুক সে পুরুষ মানুষ একবার না একবার ঠিক কাছে আসবে। আর কাছে আসা মানেই তার শর্ত ভাঙা। রুদ্র যদি কাছে এসে তার শর্ত ভাঙে সেও কনসিভ করে রুদ্রর শর্ত ভেঙে দিবে! উফফ দারুণ বুদ্ধি। তাছাড়া টিশার কাছে শুনেছে বিয়ের ক'টা মাস ওর স্বামীও ওকে কাছে টানেনি৷ পরবর্তীতে দিব্যি কাছে টেনে বাচ্চার মা বানিয়ে দিয়েছে। ক'দিন পরই তার কোল আলো করে বাচ্চা আসবে। সকল ভাবনাচিন্তার মাঝেই সে একটি বড়োসড়ো দোয়া করল,
 -" হে আল্লাহ টিশার যেন একটা ছেলে হয়। যাতে আমার মেয়েকে ওর ছেলের কাছে বিয়ে দিতে পারি। বেয়াই হয়েছে জামাই, খালাত বোন হবে বেয়ান। ব্যাপারটা খুবই দারুণ। "


সকালে বাইরে থেকে খাবার এনে খাওয়া হয়েছে। দুপুরেও বাইরের খাবার কিনে বাসায় ফিরল রুদ্র। শহরে একজন বিশ্বস্ত কাজের মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। রুদ্রর একজন কাজের মহিলা বা মেয়ে প্রয়োজন। পেয়েছে কয়েকটা কিন্তু বিশ্বস্ত নয়। যেহেতু বিষয়টাতে হৈমী জড়িয়ে সেহেতু বেশ ভেবেচিন্তেই মেয়ে ঠিক করতে হবে। যা হাবাগোবা বউ তার। একে যে কেউ যে কোনো মুহুর্তে কিনে বেচে দিলেও টের পাবে না৷ তাই নো রিস্ক! পনির, ঝিনুক এক গাড়ি ভর্তি কেনাকাটা করে সব ড্রয়িং রুমে রেখে চলে গেল। রুদ্র ফ্রেশ হয়ে হৈমীকে প্রশ্ন করল,
-" তুমি রান্না পারো? "
হৈমী ভীষণ উৎসুক হয়ে বলল,
-" ভাত পারি, ডিম ভাজি পারি, আর নুডলস, চা, কফিও পারি। "
রুদ্র ভ্রু কুঁচকে বলল,
-" এগুলো চার বছরের বাচ্চারাও পারে৷ আমি জিজ্ঞেস করেছি মানুষকে রেঁধে বেড়ে খাওয়ানোর মতো যোগ্যতা তোমার আছে? "
-" আপনি আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন! "
বিরক্ত হয়ে রুদ্র রুম থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলো। বলে গেল,
-" গোসল করে নিজের পোশাক গুলো পরে নাও। কার্টুনের বেশ দ্রুত ছাড়ো! "
আঁতকে ওঠে হৈমী বলল,
-" আপনি আমাকে কার্টুন বললেন! "


বিকেলের দিকে বেডরুমে হৈমীকে আঁটকে রাখা হলো দু'ঘন্টা। দু'ঘন্টা পর তাকে বদ্ধ ঘর থেকে বের হাওয়ার পারমিশন দিল রুদ্র। হৈমী কতক্ষণ চ্যাঁচামেচি করল, বকাঝকা করল রুদ্রকে। পাশাপাশি ফ্ল্যাট জুড়ে ঘুরাঘুরি করল। এক মিনিটও স্থির হয়ে থাকতে পারে না মেয়েটা। রুদ্র রুমে বসে ফোনে জরুরি কথায় ব্যস্ত। হৈমী তার থেকে খুব একটা পাত্তা এ মুহুর্তে পাচ্ছে না। তাই সেও মহাবিরক্ত হলো। রুম ছেড়ে বেরিয়ে পাশের রুমের খোলা দরজার পানে ক্ষণকাল তাকিয়ে রইল। রজনীগন্ধা ফুলের ঘ্রাণ পাচ্ছে সে। কিন্তু ফুল কি করে এলো? কৌতূহলী হয়ে পাশের রুমটায় পা বাড়াল। আর গিয়ে যা দেখল এতে তার শরীর অদ্ভুত ভাবে কেঁপে ওঠল। হায় হায় এত ফুলশোভিত বিছানা! বাসরঘরের মতো! ও আল্লাহ আজ তার বাসররাত হবে নাকি? হায় হায় হৃৎপিণ্ড তো ছটফটিয়ে ওঠল। সহসা বুকের বা পাশে হাত চেপে ধরল হৈমী। অদ্ভুত এক অনুভূতিতে গলা শুঁকিয়ে গেল তার। ঢোক গিলে বিরবির করে বলল,
-" বেয়াইমশায় থুরি বেয়াই ওরফে স্বামীমশায় আমি কিন্তু একটুও ভয় পাচ্ছি না। "

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে 

২৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:

তরুণ লেখিকা জান্নাতুল নাঈমা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন