উপন্যাস : তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং
লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান |
৪৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৯)
নূর আশমিনকে খাওয়াচ্ছে এমন সময় মেহরাব ছুটে আসে।
মেহরাবঃহাত দাও তো।
নূর চোখ ছোট ছোট করে মেহরাবের দিকে তাকায়।
নূরঃদেখতেই তো পাচ্ছেন আশমিনকে খাওয়াচ্ছি।
মেহরাবঃকতক্ষন লাগবে?
নূরঃএটা বাচ্চা বুঝছেন?বাচ্চা।কোনো মেশিন নয় যে আপনাকে বলে দিবো আর ৫ মিনিট ১০ মিনিট।না জানি কত মিনিট লাগে।আমি কি করে বলবো?
মেহরাবঃআশমিন তাড়াতাড়ি খাও তো।আমার খুব আদর পেয়েছে।আদর করবো তোমার মামনিকে।
আশমিনঃআমাকেও করো।আমি দেখছি মামনি আসার পর থেকে তুমি শুধু মামনিকেই আদর করো আমাকে তো করো না।
মেহরাবঃওহ আচ্ছা!এই বয়সেই জ্বলছো।আর তোমার মামনি আসার পর থেকে তুমি আমাকে ভুলে ওর গা ঘেষে থাকো তা কি হ্যা?আমি নূরকে ১ ঘন্টা পেলে তুমি পাও ৪ ঘন্টা।
আশমিনঃআমার মা মনি না।
মেহরাবঃতো আমার কি?
আশমিনঃতোমার ও মামনি?
মেহরাব রেগে তাকায়।নূর খিল খিল করে হেসে দেয়।
নূরঃযেমন আপনি তেমনই আশমিন।নূর এর হাসি দেখে আশমিনও মিট মিট করে হাসছে।
মেহরাব মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।আর বার বার ঘড়ি দেখছে।নূর আশমিনকে খাওয়াচ্ছে আর মেহরাব এর অস্থিরতা দেখছে।পাক্কা ৩০ মিনিট লেগেছে দুষ্ট আশমিনকে খাওয়াতে।
নূর হাত ধুয়ে এসে মেহরাব এর দিকে এগিয়ে দেয়।মেহরাবের মুখে হাসির ঝলক দেখা যায়।
মেহরাব পকেট থেকে রেশমি চুড়ি বের করে আস্তে আস্তে করে নূর এর হাতে পড়িয়ে দেয়।
নূরঃচুড়ি!?তাও রেশমি চুড়ি?
মেহরাবঃমোটেও আমাকে কিপটা ভাববে না বলে দিলাম।স্বর্নের দেয়ার সামর্থ্য ছিলো তবুও দেই না কারন তোমার হাতে রেশমি চুড়ি ভালো মানাবে।
নূর চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।
নূরঃতার মানে স্বর্নেরটা আমার হাতে মানাবে না?
মেহরাবঃআরে বউ রাগ করো কেন।শুনোনা।স্বর্নেরটা তো আর শব্দ করবে না।কাচেরটা করবে।তাই কাচের রেশমি চুড়ি এনেছি।
নূরঃআর শব্দ করলে কি হবে?
আশমিনকে নিয়ে সারা দিন ব্যস্ত থাকো। আমাকে একটুও সময় দাও না তুমি।ঘুম থেকে উঠে এদিক ওই দিক খুজতে হয় তোমাকে।
এখন থেকে আমার আশে পাশে আশমিনকে নিয়ে ঘুরবে।আর তোমার চুড়ির শব্দ আমাকে তোমার উপস্থিতির জানান দিবে।
নূরঃবাহ!কি বুদ্ধি।
মেহরাব সব গুলো চুড়ি নূর এর হাতে পড়িয়ে দিলো।
নূরঃহাতের মাপ এত পার্ফেক্ট কি করে?মেহের।
মেহরাবঃআমার নূর পাখির হাতের মাপ আমি জানবো না তো কে জানবে?
নূর মেহের এর গালে টুস করে চুমু খেলো।
নূরঃধন্যবাদ। আমার রেশমি চুড়ি অনেক অনেক অনেক পচ্ছন্দ।ভেঙে গেলে ব্যাথা পাবো বলে ছোটকালে কখনো আব্বু কিনে দিতেন না।
মেহরাব কপাল গোছ করে ফেললো।
নূরঃকি হলো?
মেহরাবঃহিসাব করছি।
নূরঃকি হিসাব?
মেহরাবঃএক জোড়া চুড়ির জন্য যদি একটা চুমু পাওয়া যায় তাহলে ১০০ জোড়া চুড়ির জন্য কতগুলো পাবো বউ?
নূর এর মুখ অটোমেটিক হা হয়ে গেলো।
নূরঃ১০০ জোড়া!!!
মেহরাবঃহুম।এত চুড়ি দিয়ে আমি করবো টা কি?আর আপনি এতো টাকা পান কই?ভেজাল করছেন নাকি দেশের সাথে?
মেহরাব চোখ ছোট ছোট করে তাকায়।
মেহরাবঃনিজের জামাইকে কেউ এইভাবে বলে?
হ্যা?ভেজাল করতে হবে কেন আমার? ভুলে গেলে নাকি?আমার বাবার রেখে যাওয়া বিজনেসটা এখনও আসে।
নূরঃওইটা তো আদ্রিতা আপুনি চালায়।
মেহরাবঃআব্বুর রেখে যাওয়া বিজনেস দুইটা।
একটা আসাদ খান আমার নানুর খান ইন্ডাস্ট্রি। আর একটা আমার দাদু আদর চৌধুরীর।চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি।
চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি আপুনি চালায়।আর খান ইন্ডাস্ট্রি আমার আন্ডারে।
চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি তো তাও ৮ ঘন্টা কাজ হয়।আমার ফ্যাক্টরিতে ২৪ ঘন্টা কাজ চলে।
নূরঃইয়া আল্লাহ।ঘুমাইতে দেন না কর্মীদের?
মেহরাবঃবোকার মতো কথা বলো কেন?নাইট ডিউটি দেয় কিছুজন।আর কিছুজন ডে ডিউটি।
৫০ হাজার মানুষের কর্মস্থল এটা।
নূরঃএতো!??
মেহরাবঃএই জন্যই তো তোমাকে সময় দিতে পারতাম না।আব্বুই এটাকে ১০ হাজার পর্যন্ত বয়ে গিয়েছিলেন। আমি সেটা ৫০ এর কোটায় এনেছি।
বেকারত্ব দূরীকরন আর দেশের রপ্তানী খাতের উন্নয়নে অনেক বড় অবদান রাখতে সক্ষম খান ইন্ডাস্ট্রি।
মাঝে মাঝে তো ভাবি আমি না থাকলে এতো গুলো পরিবার রাস্তায় বসবে।রাজনীতি হাত থেকে গেলে এসবও যাবে।কষ্ট করে গড়লেও শত্রুরা ১০ সেকেন্ড ও নিবে না আমার কষ্টের টাকাকে ব্ল্যাক মানি প্রমান করতে।তখন আমার সাথে সাথে এদের জীবনেও খরা নামবে।
আল্লাহর কাছে আমি এদের জন্যই নিজের হায়াত চেয়ে নেই।আমার জীবনে মূল্য অনেক গো পাখি।আমি নিজে চাইলে ও মরতে পারবো না।
নূরঃআল্লাহ আপনাকে আমার হায়াত ও দিয়ে দেন।
মেহরাবঃতোমাকে ছাড়া তো বাচতে ইচ্ছে করে না পাখি।এই দোয়া করো না।
মেহরাব নূরকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে।আশমিন ও মেহরাব নূরের মাঝখানে ঢুকে পড়ে।মেহরাব মুচকি হেসে নূর আর আশমিন এর মাথায় চুমু খায়।
মেহরাবঃআমার দুই দুইটা কলিজা।এক জনকে ছাড়া বাচতে ইচ্ছে করে না।আর একজন আমাকে এতদিন বাচিয়ে রেখেছে।
আশমিন নূর মেহরাবকে ছোট ছোট হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে আছে।এত সুন্দর মূহুর্তে মেহরাবের ফোনের এলার্ম বেজে উঠলো।
নূর বিরক্ত হয়ে মেহরাব এর দিকে তাকালো।
মেহরাবঃসরি যেতে হবে।
নূরঃশান্তি পেলাম না।
মেহরাবঃরাতে দিবো নি শান্তি। এখন যেতে হবে।
মেহরাব আলমারি থেকে কুটি বের করে পাঞ্জাবির ওপর পড়ে নেয়।পারফিউম স্প্রে করে বেড়িয়ে পড়ে।
নূরঃআমার স্বামীকে বিপদ আপদ থেকে রক্ষা কইরো আল্লাহ।
মেহরাব গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।নূর আশমিনের সাথে খেলতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
আদ্রিতা আরিয়ান বাসার কাছাকাছি চলে এসেছে।
আদ্রিতা গভীর ঘুমে।আরিয়ান এক হাত দিয়ে আদ্রিতাকে ধরে রেখে আরেক হাত দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে।আদ্রিতা চোখের পাতা বুঝেই জিজ্ঞেস করে।
আদ্রিতাঃআসি নাই আমরা?
আরিয়ানঃতুমি এতো আনরোমান্টিক কেন আদ্রিতা।বাসায় এসে পড়লাম প্রায়।কই ভাবসিলাম বউকে নিয়ে রোমান্টিক ড্রাইভ এ বের হবো সে কিনা আমি একা ড্রাইভ করতে করতে আসলাম আর সে কি না ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পুরো রাস্তা পার করে দিলো।
আদ্রিতা আড়মোড় ভেঙে চোখ খুললো।
আদ্রিতাঃগাড়ি থামান।থামায়ায়ায়ায়ায়ান।
আরিয়ান সাথে সাথে ব্রেক কষলো।
আরিয়ানঃকি হয়েছে?আর ইউ ফাইন?
আদ্রিতাঃওই দেখেন।
আরিয়ান গাড়ির বাইরে দেখলো একটা ছোট্ট টংয়ের দোকান।
আরিয়ানঃচা খাবেন এখন মহারানী?
আদ্রিতা উপরে নিচে মাথা নাড়ালো।
আরিয়ানঃতোমাকে পালা অনেক কঠিন।এতো জ্বালায় কেউ কাউকে।শশুড় ফাদার আদরে আদরে একদম বানর করে ফেলেছেন।বাসায় যেয়ে পিটাতে হবে তোমাকে।তাহলে ভালো হলেও হতে পারো।
আদ্রিতা রেগে কিছু বলতে যাবে তখনই আরিয়ান আদ্রিতার নাকে কামড় দিয়ে দিলো।
আরিয়ানঃতোমার এই লুকটা আমার অনেক ফেভারিট। এমনই রেগে থেকো ঠিক আছে?আমি আসছি।
আরিয়ান চা নিতে বেড়িয়ে গেলো।
আদ্রিতাঃআমাকে একদমই ভালোবাসে না।আমি নাকি জ্বালাই!আমি!
পচা ব্যাক্তি।
আদ্রিয়ান এর অনেক ঘুম পাচ্ছে। সারা রাত জাগার কারনে আদ্রিয়ান গাড়ির জানালার আয়নায় মাথা ঠিকিয়ে চোখ বন্ধ করতেই ঘুমিয়ে পড়ে।
উঁচু নিচু ঢাল দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে।আদ্রিয়ান এর মাথায় বাড়ি লেগে যেতে পারে দেখে মিরা আদ্রিয়ান এর মাথাটা নিজের কাধে নিলো।তিথি রেগে কিছু বলতে যাবে মিরা মুখ আংগুল দিয়ে চুপ করতে বললো।
তিথিঃতুমি কিন্তু ভুলে যাচ্ছো আদ্রিয়ান আমার স্বামী।ডিভোর্সটা এখনও হয় নাই।
মিরাঃহয় নেই হয়ে যাবে।স্বামীর প্রতি এত টান থাকলে তাকে অন্য মেয়ের পাশে বসতে কেন দিলে?
তিথি কথাটা শুনে থতমত খেলো।
তিথিঃতুমিই তো বললে হাত পা নাড়াও।অবশ্যই মিথ্যেই বলেছিলে তাই না।কারন তুমি রাস্তায় একটুও ঘুমাও নাই।
মিরাঃআমার উপর কোনো মেয়ে পুরোটা চড়ে গেলোও তো আমার স্বামীর ভাগ আমি অন্য কাউকে দিতাম না।এটা শুধু স্বার্থপররাই করতে পারে।যাদের কাছে স্বামী শুধু প্রয়োজন আর চাহিদা পূরনের হাতিয়ার মাত্র।
মূহুর্তেই তিথির চোখ লাল হয়ে যায়।
তিথিঃতোমাকে এই কথা গুলোর জন্য অনেক পস্তাতে হবে।
মিরাঃএই ভয় অন্য কাউকে দেখিও।
ড্রাইভারঃকাছাকাছি এসে পড়েছি ম্যাম।
তিথি আর কথা বাড়ালো না।মাথায় মেহরাব এর চিন্তা ভনভন করছে।তিথি মেহরাবকে ঘিরে চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলো।
মিরা আদ্রিয়ান এর মাথা চেপে ধরে রেখেছে।যাতে পড়ে না যায়।আদ্রিয়ান বেঘোর ঘুমে মিরা ডান বাহু জড়িয়ে ধরেছে।
মিরা মুচকি হাসে।
মিরাঃনা জানি কতদিন পর এমন আশ্রয়স্থল খুজে পেয়েছেন।
আদ্রিয়ান মিরার কানের পাশে বিড় বিড় করে বলে।
আদ্রিয়ানঃবাসা আসলে ডাক দিও।
মিরাঃআপনি ঘুমান নাই?
আদ্রিয়ানঃঘুমিয়েছিলাম তো। তোমরা এমন যুদ্ধ শুরু করলে কি আর কোনো যোদ্ধা ঘুমিয়ে থাকতে পারবে?
মিরাঃচুপচাপ শুনছিলেন আপনি?
আদ্রিয়ানঃঅতীত বর্তমান যেখানে একসাথে সেখানে চুপ থাকাই শ্রেয়।
মিরাঃআপনিই...
আদ্রিয়ানঃমাথা ব্যাথা করছে।কাচা ঘুম ভেঙে দিয়েছো তুমি।
এইবার চুল টেনে দাও।
মিরা আর কিছু বললো না।আদ্রিয়ান এর চুল গুলো আস্তে আস্তে টেনে দিতে লাগলো।আদ্রিয়ান আবেশে আবারো ঘুমিয়ে পড়ে।
রাত ১টায় মেহরাব বাসায় ফিরলো।নূর এতক্ষন দরজার দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিলো।মেহরাব আসতেই উঠে খাবার বাড়তে লাগলো।
মেহরাবঃখুদা নাই পাখি।ঘুমাবো।ভোর বেলা উঠতে হবে আবার।
নূরঃখেয়ে আসছেন?
মেহরাবঃনা।
নূর ভাত বাড়তে লাগলো।
মেহরাবঃদিও না।।পাখি।এখন খেতে গেলে ঘুমাতে আরো দেরি হবে।ফজর নামাযটা আর পড়তে পারবো না।ঘুমাবো।
নূরঃনা খেয়ে ঘুমাবেন নাকি?আমি ও তো খাই নাই।
মেহরাবঃকিহ!তুমি খাও নাই।কেন খাও নাই?দাও প্লেট আমাকে দাও।
মেহরাব প্লেট নিয়ে নূর নূর এর মুখের সামনে লোকমা তুললো।নূর দেরি না করে খেয়ে নেয়।তারপর সেই প্লেটে থেকেই ভাত লোকমা করে মেহরাব এর মুখের সামনে তুলে।মেহরাব চুপচাপ খেয়ে নেয়।
দুজনের খেতে খেতে ১ঃ৩০ বেজে যায়।মেহরাব এর চোখ বুঝে আসছে। সারাদিনের খাটুনির পর শরীর ভেঙে আসছে।নূর সব গুছিয়ে রেখে আসে।আসতে আসতে ২ টা বেজে যায়।
নূরঃঘুমান নাই?
মেহরাব নূর এর হাত ধরে নিজের পাশে আনলো।তারপর জাবড়ে ধরে চোখ বন্ধ করলো।তোমাকে ছাড়া ঘুম আসে না পাখি।এখন ঘুমাতে পারবো।
মেহরাব ২ সেকেন্ডেই ঘুমিয়ে পড়ে।ড্রিম লাইট এর হাল্কা আলোতে মেহরাবকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।নূর মেহরাবে চোখগুলোতে আলতো ভাবে ঠোঁট ছোয়ালো যাতে মেহরাব জেগে না উঠে।মেহরাব হাল্কা নড়ে আবারো ঘুমিয়ে পড়লো।নূর মেহরাব এর হাত ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
রাত ৩টায় কলিংবেলের শব্দে নূর এর ঘুম ভেঙে যায়।নূর উঠে দরজা খুলতে গেলে মেহরাব হাত ধরে বাধা দেয়।
মেহরাবঃআমি দেখছি।এতো রাতে কে আসলো।কাচা ঘুম ভাঙতে।
মেহরাব বিরক্ত হয়ে দরজা খুলতে যায়।নূর মেহরাবের পিছন পিছন যায়।দরজা খুলে আরিয়ানকে দেখে মেহরাব ধুম করে পিঠে কিল বসিয়ে দেয়।
মেহরাবঃশালা!তোরে এতো রাতে আসতে কে বলেছে ?দিলি তো ঘুমটা নষ্ট করে।
আরিয়ানঃবাহ রে।একতো ঘন্টার পর ঘন্টা ড্রাইভ করে আসলাম না জানি কি ইমারজেন্সি ভেবে আর সেখানে আমাকেই মারা হচ্ছে।
তোরে তো আমি।
আরিয়ান মেহরাব এর দিকে এগোতেই মেহরাব দৌড় দিলো।আদ্রিতা মেহরাব এর রুমের দিকে হাটা ধরে আশমিনকে দেখতে।
আরিয়ানঃদাড়া শালা!এইবার দৌড়াচ্ছিস কেন!
আচ্ছে ওয়েট!তোর কবের থেকে ঘুমের প্রতি এত মায়া জন্মালো?
মেহরাব দৌড়াতে দৌড়াতে হাপিয়ে গিয়েছে।
মেহরাবঃবউ সাথে নিয়ে ঘুমালে তো ঘুমের প্রতি মায়া জন্মাবেই।
আরিয়ানঃবউ!বিয়ে করে ফেলেছিস নাকি?আমরা না থাকাতে?
মেহরাবঃহ্যা।
আরিয়ানঃকিহ!!আমার বোন থাকতে তুই বিয়ে করলি কি করে?তুই!
মেহরাবঃকি করবো বল তোর বোন তো আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।আমি আর কতদিনই বা সিংগেল থাকতাম?তাই তো পাতানো বোনকেই বিয়ে করে ফেলেছি।
আরিয়ানঃনেহা!!
মেহরাবঃহ্যা।শালাবাবু।নেহা না এখন থেকে নেহা চৌধুরী হয়ে গিয়েছে ও।
আরিয়ান মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে।নূর বোরখা পড়ে আরিয়ান এর সামনে উপস্থিত হয়।
নূরঃপানি নিন ভাইয়া।
আরিয়ানঃমাথায় ঢালো আমার।
নূর সত্যিই সত্যিই পানি নিয়ে আরিয়ান এর মাথায় ঢেলে দেয়।আরিয়ান পুরো থ হয়ে যায় নেহার কান্ডে।
মেহরাব হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।আরিয়ান হা হয়ে একবার নেহার দিকে আরেক বার মেহরাব এর দিকে তাকাচ্ছে।
নেহাঃকি হলো ভাইয়া?আরো দিবো?
আরিয়ানঃআমি এতক্ষন ভাবছিলাম কোনো মেয়ে মেহরাবের মতো অপদার্থকে কি করে বিয়ে করে!এখন দেখি তোমারও মাথার কয়টা তার ছেড়া আছে।
নেহাঃভাইয়া।এইবার কিন্তু আগুন এনে গরম করে দিবো।
আরিয়ানঃএক কাজ করো মাথায় একটা বাড়ি মারো আমার।হয়তো স্মৃতি হারিয়ে ফেলবো আর নয়তো একদম মরেই যাই।
এইভাবে তোমাদের দুইটার পাল্লায় পড়ে পাগল হয়ে বেচে থাকতে পারবো না আমি
নেহাঃমেহরাব।অনেক হয়েছে এইবার বলে দেই?
মেহরাবঃনা।ও আমাকে অনেক জ্বালিয়েছে এইবার ওর জ্বলার পাল্লা।
নেহাঃনা। আমার ভাইকে আমি জ্বালাতে পারবো না।আপনি জ্বালান যেয়ে আপনার বন্ধুকে।
মেহরাবঃতোমাকে আমার কসম।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৫০ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন