উপন্যাস       :        তোমায় ঘিরে - ২
লেখিকা        :         জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরানের “তোমায় ঘিরে - ২” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। লেখিকা এটি “তোমায় ঘিরে” উপন্যাসের দ্বিতীয় সিজন হিসেবে লিখেছেন। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বরের ২৯ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান Bangla Golpo - Kobiyal - Love Story
তোমায় ঘিরে - ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান


৪৭ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

তোমায় ঘিরে- ২ || জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান (পর্ব - ৪৮)

আদ্রিয়ান এর কথাগুলো শুনে মিরা অনেক্ষন চুপটি মেরে ছিলো বলে আদ্রিয়ান ও আর কথা বাড়ালো না।সেও চুপ করে আকাশে থাকা চাঁদটাকে মন দিয়ে দেখছে।

মিরা পাশে ঘুরে এক ধ্যানে মনোযোগ সহকারে আদ্রিয়ানকে দেখছে।ছেলেটা খুব একটা ফর্সাও না আবার তেমন শ্যামলাও না।যাই গায়ের রং হউক না কেন মানিয়েছে বেশ।গালের দাড়ি গুলো অযত্নে বড় হয়ে গেছে।চোখগুলো ছোট ছোট।পাপড়িগুলো খুব ঘন। ঠোঁটটা হাল্কা গোলাপি।এলোমেলো চুলগুলো লাল হয়ে গিয়েছে।অনেকদিন হলো তেল দেয়া হয় না।গালটা শুকিয়ে গিয়েছে।৩বছর আগের আদ্রিয়ান আর এখনের আদ্রিয়ান এর মধ্যে বিশাল একটা তফাৎ।

মা বাবা একদম বটগাছের মতো।যাদের নেই সেই সন্তানের মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর একটাও নেই।
আদ্রিয়ানঃকি দেখেন?
মিরাঃএটাই যে আপনি ভালো নেই।
আদ্রিয়ান হা হা করে হেসে দিলো।

মিরা উঠে বসে আদ্রিয়ান এর মাথাটা নিজের কোলে রাখলো।নবনিকে খুব করে মনে পড়ে গেলো।যখন আদ্রিয়ান খুব কষ্ট পেতো ঠিক তখন নবনিও আদ্রিয়ান এর মাথাটা নিজের কোলে তুলে নিতো।আদ্রিয়ান সব কষ্ট যেন তখন নিমিষেই হাওয়ায় মিশে যেতো।


আর আরাফতো খুব জ্বলতো মা ছেলের ভালোবাসা দেখে।ঠিক তখনই বলে উঠতো আমাকে তো কেউ ভালোইবাসে না।সব ছেলেমেয়ে শুধু তাদের মাকেই ভালোবাসে।আদ্রিয়ান তখন উঠে যেয়ে আরাফের কোলে বসে গলা জড়িয়ে ধরে বলতো তুমি আছো বলেই তো আমরা আছি।তুমি আমাদের সব থেকে বড় আশ্রয়স্থল।তোমাকে ছাড়া এক দিনও ভালো থাকতে পারবো না আব্বু।

আরাফ তখন আদ্রিয়ান এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতো দুনিয়া অনেক কঠিন মাই বয়।তোমাকে এখানে টিকে থাকার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।আর আমি তোমার মা না থাকলেও এমন কেউ অবশ্যই থাকবে যে তোমাকে আমাদের দুইজনের সমান ভালোবাসা ফিরিয়ে দিবে।ওই মানুষটাকে কখনো কষ্ট দিবে না। ওকে?

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলতো আমি এত কিছু বুঝি না তোমরা সবসময় থাকবে।
নবনিঃআরাফ। আমাদের ৩ ছেলে মেয়ের মতো আদ্রিয়ান সব থেকে সহজ সরল।ওকে নিয়ে আমার সব থেকে বেশি ভয় হয়।

আরাফঃআমার ছেলে আমার মতো।সহজ সরল বটে কিন্তু বোকা নয় তাই না?
আদ্রিয়ান মা বাবা দুইজনকেই জড়িয়ে ধরতো।
অন্যমনস্ক হয়ে পড়া আদ্রিয়ান এর ধ্যান ভাংলো মিরার বলো একটা লাইন শুনে।
মিরাঃঅনেক ভালোবাসি আপনাকে ক্যাপ্টেন আদ্রিয়ান। 
আদ্রিয়ান উপরে ভেসে থাকা মিরার চেহারাটা দেখলো।

মেয়েটা উপরে নিজেকে যতটাই রুক্ষ দেখায় না কেন ভেতর থেকে অনেক বোকা।বোকা না হলেই কেউ এমন একটা ছেলেকে ভালোবাসার কথা বলে যার মন অন্য কোথাও আটকে আছে।

মিরা আদ্রিয়ান এর যে গালটায় চড় মেরেছিলো সেই গালটায় হাত বুলিয়ে দেয়।
মিরাঃঅনেক ব্যাথা পেয়েছেন?ইশ লাল হয়ে গিয়েছে।অনেক জোরে মেরে ফেলেছি তাই না।আই এম সরি।আর মারবো না সত্যিই।
মিরার চোখ গুলো ছলছল করছে।চোখ থেকে গড়িয়ে এক ফোটা পানি আদ্রিয়ান এর চোখের পাতায় পড়লো।


আদ্রিয়ান হাত দিয়ে মিরার চোখের পানি মুছে দিলো।
আদ্রিয়ানঃআপনার পরিবারে কে কে আছে?মিরা।
মিরাঃতুমি করে বলবেন।কি আপনি তুমি শুরু করলেন?
আদ্রিয়ানঃসরি।
মিরাঃভেরি গুড।মিরার সাথে সংসার করতে হলে সরি ঠোঁটের আগায় থাকা দরকার।
আদ্রিয়ান হা হা করে হেসে দিলো।
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা আপনি এত জেদী রাগী কেন বলুন তো?
মিরাঃআব্বু আল্লাদ করে করে এমন বানিয়ে ফেলেছেন।
আদ্রিয়ানঃআর এত আল্লাদ কেন?

মিরাঃআম্মু জন্ম দেয়ার পরপরই চলে গেলেন।মা জিনিস চোখেই দেখি নাই আমি।নানুর বাসার কেউ আমাকে পচ্ছন্দ করেন না।আমাকে জন্ম দিতে যেয়েই নাকি আম্মুকে চলে যেতে হলো।আব্বু আর উনাদের সাথে সর্ম্পক রাখেন নাই।আমার দাদুর বাসায় ও এই কথা উঠতো।বড় হয়ে এই কথাগুলো শুনলে আমি কষ্ট পাবো বলে আব্বু আমাকে নিয়ে কানাডা চলে আসেন।আমি তখন ৮ বছরের ছিলাম।১২ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি এতটুকুই জানতাম। 

কিন্তু এর পর জানতে পারলাম আব্বু আম্মুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বলে দাদা দাদী আম্মুকে দেখতে পারতেন না।প্রেগন্যান্ট থাকাকালীন তাকে দিয়ে অনেক কাজ করাতেন।আম্মু আব্বুকে এগুলো কিছুই জানাতো না।শুধু উনাদের মন জয় করে চলার চেষ্ট করতেন।উনার এই চাপা স্বভাবের জন্য আমাকে জন্ম দেয়ার সময় উনি দুর্বল হয়ে পড়েন।আর মারা যান।আব্বু এসব আম্মু যাওয়ার পরপর জানতে পারেন।মা বাবাকে ছেড়ে যাবেন ভেবে সবকিছু জেনেও না জানার ভান করে চলতেন।যাতে আমি অন্তত দাদা দাদীর মায়াটা পাই।কিন্তু আমার দাদা দাদীর কাছে আমিও বোঝা হয়ে দাড়ালাম তারা আব্বুকে বিয়ে দিতে চাইতো কিন্তু আব্বু আমার জন্য মানা করে দিতেন।এমনটা চলতে চলতে আমি ৮ বছরে হইলাম।তখন আমি একটু একটু বুঝতে শিখি।আমার দাদা দাদী বার বার বলতেন আমার মা আমার জন্য মারা যায়।আমি দুনিয়ায় না আসলে আমার মাকে যেতে হতো না।


একদিন রুম বন্ধ করে খুব কান্না করি আমি।আব্বু এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমি সব বলে দেই।আব্বু সেইদিনই এক জামায় আমাকে নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেন।আর কখনো বাংলাদেশে আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফেরা হয় নাই আমাদের।আমার ছোট্ট মনে তখন একটা কথাই বাসা বাধে।বাংলাদেশ এর মানুষ ভালো না।দেশটাও ভালো না।এখানে সব পচা লোকেরা থাকে।আমার আম্মুর চাপা স্বভাবের কথা জানতে পারার পর থেকে আমি হয়ে উঠি প্রতিবাদী।কোনো প্রকার অন্যায় আমি সহ্য করি না।

আব্বু আমাকে কখনো শাসন করেন নাই।অন্যায় করলে বোঝাতেন।কিন্তু অনেক আদর করেন।এখনো আব্বু বিয়ে করে নাই।আমার দুনিয়া পুরোটা আব্বু আর আব্বুর আমি।
দাদী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাদের শেষ বারের মতো দেখতে চান।আব্বু কোনো মতেই রাজী ছিলেন নাই।কিন্তু আমার তো আসতেই হতো আপনার খোজে।তাই আমি জেদ ধরে চলে আসি এখানে।

দাদী আমার কাছে খুব করে ক্ষমা চান।কিন্তু আপনিই বলে ক্ষমা চাইলেই কি আমি আমার মাকে ফিরে পাবো?
আদ্রিয়ানঃআপনি কি জানেন আপনিও আপনার মায়ের মতো খুব চাপা স্বভাবের?
মিরাঃএকদমই না।

আদ্রিয়ানঃএকদম। এই যে এতো কিছু আপনার মনের ভেতর আপনার বাবাকে বলেছেন কখনো?
মিরাঃনা।
আদ্রিয়ানঃআমাকে যে ভালোবাসতে কখনো বলেছেন?
মিরাঃনা।
আদ্রিয়ান বাকা হাসলো।

মিরাঃএকদম এই ভাবে হাসবেন না।আপনার এই হাসি সহ্য হয় না আমার।
আদ্রিয়ানঃও আচ্ছা।একটু আগেই তো খুব ভালোবাসতেন এখনই আবার পল্টি খাচ্ছেন?
মিরাঃধ্যাত।আমার কথায় আমাকেই ফাসায়।
আদ্রিয়ানঃহা হা হা।

মিরা আদ্রিয়ান এর কপালে চুমু খেলো।আদ্রিয়ান শক খেল।হাসি বন্ধ হয়ে গেলো।
মিরাঃহা হা হা। এই বার হাসেন।
আদ্রিয়ানঃআপনার মধ্যে বাংগালী মেয়েদের কোনো গুনই নেই দেখছি।
মিরা ভেংচি কাটলো।

আদ্রিয়ান বুঝতে পারলো মিরা মাইন্ড করে গাল ফুলিয়ে রেখেছে।আদ্রিয়ান একটানে মিরাকে নিজের  বুকে নিয়ে আসলো।
আদ্রিয়ানঃকপাল করে বিদেশি হবু বউ জুটলো বুঝি।
আমিও কিন্তু বিদেশি ছেলে।


আচ্ছা ওয়েট।আপনি তো উত্তর দেন নাই।বিয়ে করবেন তো আমাকে ম্যাম?
মিরা লজ্জায় কুকড়ে আদ্রিয়ান এর বুকে মুখ লুকালো।
আদ্রিয়ানঃআয় হায়!বিদেশি হবু বউয়ের মধ্যে দেখি একটু একটু বাংগালী ভাব ও আছে।
মিরা ধুম করে আদ্রিয়ান এর পিঠে কিল বসিয়ে দিলো।
আদ্রিয়ানঃআহ!!একটু আগেই বললেন আর মারবেন না।তাও মারছেন?
মিরাঃঘুম পাচ্ছে।ঘুমাতে দিন তো।
আদ্রিয়ানঃওকে।

মিরা ঘুমিয়ে পড়ে।আদ্রিয়ান রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে।জংগলে এভাবে নিশ্চিন্তে ঘুমানো একদমই সেফ না। ওই দিকে মিরা বিন্দাস ঘুম দিচ্ছে।
আদ্রিয়ানঃআসলেই বাবার আল্লাদী মেয়েটা।কষ্ট কি জিনিস একদমই টের পায় না।
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই তিথির ঘুম ভেঙে যায়।ঘুম থেকে উঠে নিজেকে মিরার রুমে আবিষ্কার করে তিথি।মাথাটা ভন ভন করছে।রাতের কোনো কিছুই মনে পড়ছে না।
ফোনটা বেযে উঠলো।ওই পাশ থেকে মেহরাব এর কন্ঠ ভেসে আসলো।
মেহরাবের গলা শুনতেই তিথি ব্যাকুল হয়ে পড়লো।
তিথিঃহ্যা।ভাইয়া।

মেহরাবঃবাসায় একটা প্রবলেম হয়েছে।তাড়াতাড়ি এসো তোমরা।
তিথিঃকি সমস্যা?
মেহরাবঃফোনে বলতে পারবো না।আসো তোমরা রাখি।
মেহরাব কথা শেষ হতেই কল কেটে দিলো।
তিথি দেরি না করেই ব্যাগ গুছিয়ে নিলো।
আদ্রিতা এখনো গভীর ঘুমে আরিয়ান অনেকক্ষন যাবত ওঠাচ্ছে।কিন্তু আদ্রিতা সারা বছরের ঘুম এখন  ঘুমাচ্ছে।

আরিয়ানঃমহারানী উঠেন।বাসায় যেতে হবে তো।আশমিন অপেক্ষা করছে।
আদ্রিতাঃসারা রাত ঘুমাতে দেন নাই।এইবার তো দিন।নেহা দেখে নিবে আশমিনকে।একটু ঘুমাতে দিন।
আরিয়ানঃমেহরাব কল করেছে।এমারজেন্সি ডেকেছে বাসায়।না জানি কি হলো।
আদ্রিতার এইবার টনক নড়লো।
আদ্রিতাঃকি বলছেন? আগে বলবেন না?সবসময় এমন করেন।ধুর।
আদ্রিতা উঠে রেডি হতে চলে গেলো।
আরিয়ানঃযাক বাবা।আমি তো কবের থেকেই উঠাচ্ছি।

শশুড় ফাদার এই  কোন মেয়ে দিয়ে গেলেন আমাকে।ধুর!
আদ্রিয়ান এর জন্য পায়চারী করছে তিথি।আদ্রিয়ান মিরা একসাথে ফিরলো।তিথির খুব রাগ হলো তবুও কিছু বললো না।আগে মেহরাবকে দেখতে হবে।পরে এদের ব্যাপারটা দেখবে।
আদ্রিয়ানঃএখন তো জিজ্ঞেস করবে কই ছিলাম সারা রাত আমরা।
আদ্রিয়ান এর আশায় পানি ঢেলে তিথি বললো।
তিথিঃমেহরাব ভাইয়া কল দিয়েছিলো।বাসায় যেতে হবে।
আদ্রিয়ান মিরার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলো।কারন মেহরাবের সাথে আদ্রিয়ান এর আগেই কথা হয়েছে।আর চারজন মিলে একটা প্ল্যান ও করছে।এখন সব কিছু সেই অনুযায়ী হলেই হলো।


আদ্রিয়ানঃমিরা রেডি হয়ে নাও।আমরা একসাথে যাবো তিনজন।
মিরাঃআমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।১০ মিনিট।
আদ্রিয়ানঃওকে।
মিরা চলে যেতেই তিথি আদ্রিয়ান এর কলার চেপে ধরলো।
তিথিঃকি করছিস হা?ওর সাথে এতো কি?
আদ্রিয়ান এক সেকেন্ডর জন্য ভুলেই গেলো তিথি কি করেছে।বেহায়া মন ভাবতে লাগলো সব মিথ্যে।

তিথিঃযা ইচ্ছে কর।আমার কি!আমি আজকেই তোকে তালাক দিয়ে দিবো।
আদ্রিয়ান তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো।
আদ্রিয়ানঃএই জন্যই মিরাকে বিয়ে করার সিধান্ত নিলাম।আমি জানতাম তোকে সামনে দেখলে আমি আবারো দিন দুনিয়া ভুলে যাবো।কিন্তু আমার ভুললে চলবে না তুই আমার ভাতিজীর হত্যাকারী। আমার ভাবীর আর ভাই এর কষ্টের কারন।
খেলা তো এখন শুরু হবে।
(মনে মনে)

আদ্রিয়ান গাড়িতে অপেক্ষা করছে তিথি আর মিরার।তিথি এসে আদ্রিয়ান এর পাশে বসে গেলো।মিরা আদ্রিয়ান এর পাশে তিথিকে দেখে রেগে বোম হয়ে গেলো।আদ্রিয়ান অসহায় মুখে ওর দিকে তাকাচ্ছে।কারন এখন তিথিকে কিছু বললেই সব প্ল্যান নষ্ট হয়ে যাবে।
মিরাঃআদ্রিয়ান একটু বাইরে আসবেন।আদ্রিয়ান দেরী না করে বের হয়ে গেলো গাড়ি থেকে।তখনই একটা লোক গাড়িতে ঢুকে পড়লো।তিথি অবাক হয়ে গেলো।
তিথিঃএটা কে?


মিরাঃঅনেক বড় পথ পাড়ি দিতে হবে।আদ্রিয়ান এতটা ড্রাইভ করলে অসুস্থ হয়ে যাবে।তাই আমার গাড়ির ড্রাইভার আংকেল ড্রাইভ করব।আমি আর আদ্রিয়ান পিছনে বসবো।
আদ্রিয়ান এর দিকে তাকাতেই আদ্রিয়ান পিছনে যেয়ে বসলো।
তিথিঃতুই সামনে আয় আমি বসি পেছনে।
আদ্রিয়ানঃমিরার সাথে বসবি? ৭ থেকে ৮ ঘন্টা?

মিরাঃআমার আবার ঘুমে হাত পা চালানোর অভ্যাস আছে।সারা রাত তো ঘুমাই নাই।গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়তেই পারি।
কথাটা বলে লাজুক হাসি দিলো।তিথি গা পুড়ে গেলো মিরাকে লজ্জা পেতে দেখে।আদ্রিয়ান বেচারা আহম্মক হয়ে গেলো।
আদ্রিয়ানঃসারারাত আমি নিজে পাহাড়া দিয়ে ঘুম পাড়ালাম। এখন বলে ঘুমাতে পার নাই।কি মেয়েরে বাবা!(মনে মনে)
তিথিঃথাক।তুমি আর আদ্রিয়ানই বসো।

মিরাঃআচ্ছা।
মিরা টুস করে গাড়িতে ঢুকে আদ্রিয়ান এর গা ঘেষে বসে পড়লো।তিথি গাড়ির ফ্রন্ট গ্লাসে সব দেখছে।
তিথিঃগাড়ি স্টার্ট দেন।
না জানি মেহরাব কেন ডাকলেন?বাসায় সব ঠিক আছে তো।উনি ঠিক আছেন তো।আমার আসাই উচিত হয় নাই। ধ্যাত।
আদ্রিয়ানঃবাসায় গেলে নতুন অধ্যায় শুরু হবে।তোমায় ঘিরে পাগলামী গুলো শেষ হতে যাচ্ছে তিথিপাখি।

মিরা আদ্রিয়ান এর হাতের পাচ আংগুলের মাঝে আংগুল গুজে দিলো।আদ্রিয়ান চোখ দিয়ে তিথি দেখে ফেলবে ইশারা করছে।মিরা ঘুমের ভান দেখিয়ে আদ্রিয়ান এর কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নিলো।

তিথি ঘুরে ওদের একসাথে দেখেও কিছু বললো না।


তিথিঃতুই ও মিরাকে ভালোবেসেছিস আদ্রিয়ান। যাক ভালোই হলো।আমি তো সবসময় চেয়েছি তুই ভালো থাক।কারন একমাত্র তুই আমাকে সত্যিই সত্যিই ভালোবেসেছিস।কিন্তু আমি কি করবো বল।আমার মন তো মেহরাবের কাছে পড়ে আছে।
আমি আর মেহরাব এক হয়ে গেলে তুই আর মিরা ও এক হয়ে যাস।আমরা খুশি খুশি থাকবো সবাই।
গাড়ি চলতে শুরু করলো।

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪৯ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস সিমরান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে তিনি নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আমার মতো। আমি কারো মতো না। আমি আমিতেই পারফেক্ট। যারা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করতে পারবে, তারাই আমার আপন।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন