উপন্যাস        :         নয়নে লাগিল নেশা
লেখিকা         :         মৌসুমি আক্তার মৌ
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল   :         
রচনাকাল     :         ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মৌসুমি আক্তার মৌ'র “নয়নে লাগিল নেশা” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হল। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি তার ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন। এই উপন্যাসে গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
নয়নে লাগিল নেশা || মৌসুমি আক্তার মৌ
নয়নে লাগিল নেশা || মৌসুমি আক্তার মৌ 

১৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

নয়নে লাগিল নেশা || মৌসুমি আক্তার মৌ (পর্ব - ১৫)


"আমি কি ম-রে গেলে তুমি খুশি হবে? নাকি আমার হাত -পা ভে-ঙে পঙ্গু করতে পারলে তুমি খুশি হবে? "
প্রান্তিক এইবার থমথমে মুডে কথাটা বলল।চোখ দু'টো স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে রজনীর মুখবদনে।
রজনীর হাত -পা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে আসছে। কি উত্তর দিবে কিছুই জানা নেই। গলা দিয়ে কোনো স্বর বের হচ্ছেনা। গায়ের সমস্ত বল যেন ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।ভ-য়ে চোখ মুখ আরো শুকিয়ে এল। তার মত এমন বাজে সিসুয়েশন এ --এর আগে পৃথিবীর কেউ পড়েছে কীনা সন্দেহ!রজনী নিচু হয়ে তাকিয়ে আছে।শরীর কাঁপছে থরথর করে।
প্রান্তিক আবার প্রশ্ন করল, "আনসার মি? কোনটা হলে তুমি খুশি হবে? "
রজনীর মুখে কোনো কথা নেই। এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত শক্তি আর সাহস কোনটায় তার নেই।
প্রান্তিক আবার ও বলল, "কি আশ্চর্য! তুমি চুপ আছো ক্যানো? চুপ থাকলে তো হবেনা মিস রজনীগন্ধা। তুমি কি ভেবেছিলে আমাকে মে*রে ফেললে তোমার পিছু নিবনা।আমি ইহকাল পরকাল কোনকালেও তোমার পিছু ছাড়ব না। আল্লাহ আমার আয়ু না শেষ করলে পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যার ক্ষমতা আছে আমাকে মা'রা'র।চাইলে তুমি আমাকে মা*র*তে পারো। এই ছাড়া বৃথা চেষ্টা করে লাভ নেই।আর যদি আমার হাত পা কোনো ভাবে ভেঙে ও যায় হুইল চেয়ারে বসেও তোমার পিছু নিবো।মাইন্ড ইট।"
রজনী এইবার বুঝতে পারল প্রান্তিকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া তার ইহকালেও সম্ভব নয়।আজকের পর সে সিওর হয়ে গিয়েছে প্রান্তিক চৌধুরী যা তা কেউ নয়।সে যতটা ভয়ানক ভেবেছিল তার থেকে বেশী ভয়ানক। প্রান্তিক কোনদিন তার পিছু ছাড়বেনা। জীবনে কি পাপ করেছিল সেটাই ভাবছে। নইলে প্রিয়তাই বা কেনো তার বেষ্ট ফ্রেন্ড হতে যাবে। দুনিয়ায় কি ফ্রেন্ড হবার মত আর কোনো মেয়ে ছিলনা।
প্রান্তিক কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে আবার প্রশ্ন করল, "কি সমস্যা তোমার? আমাকে বিয়ে করতে চাও না তুমি? চুপ থাকলে খুব খারাপ হবে রজনী।আর আমার হাত থেকে বাঁচতে মিথ্যা বলবেনা। আমি তোমাকে কিছুই বলব না। জাস্ট সত্য কথা বলবা। আমার দিকে তাকাও। আমার চোখে চোখে রেখে বলো।"
প্রান্তিকের চাপা কন্ঠস্বর ছিল ভয়ানক।রজনী বুঝতে পারল প্রান্তিক রেগে আছে। ভয়ার্ত চোখ দুটো নিয়ে প্রান্তিকের দিকে তাকাল। প্রান্তিকের চোখ দু'টো রক্ত জবার ন্যায় লাল হয়ে গিয়েছে। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে উত্তর দিল, " না।"
প্রান্তিকের মাথায় আগুন ধরে গেল।দুনিয়ার সব মেয়ে যার জন্য পা-গ-ল এই একটা মেয়ে কেনো তাকে ঘৃনা করে।বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বসে থাকা জোরে লাথি মারল। সাথে সাথে পা কে'টে গেল।পা দিয়ে গড়িয়ে পড়ল র*ক্ত।হুংকার ছেড়ে বলল,
"তুই আমাকে বিয়ে করবি না ? আমার অপরাধ কী? আমাকে বিয়ে করবিনা যখন তাহলে আমার সামনে নাচতেছিলি কেনো? আমি কি বলেছিলাম আমার সামনে এসে নাচানাচি করতে। ওইভাবে হাসছিলি কেনো? আমার নয়নে নেশা লাগালি কেনো? কেনো এত কিছু করলি? আমার ইমোশন নিয়ে খেলা করছিস তুই।আমি চাইলেই তোকে তুলে নিয়ে বিয়ে করতে পারতাম। কিন্তু আমি তোকে ভালবাসার চাইতেও সম্মান করি বেশী। তোকে দেখার পর বুঝি ভালবাসা পবিত্র। সম্মান বেশী জরুরী। মুখে যায় বলি বাজে নজর তোর দিকে আমার আসেনা।জীবনে অনেক মেয়ে আমার গায়ে পড়ে মিশতে চেয়েছে তাদের আমি ভাল নজরে দেখিনি। তারা যে উদ্দেশ্য এসেছে আমিও ওই নজরেই দেখেছি। কিন্তু তুই আলাদা। তুই মানেই ফুল। যে ফুলের সুবাসে আমি মাতোয়ারা।"
প্রান্তিকের তুই তুকারি দেখে রজনী আরো ভয় পেয়ে গেল।রজনী দেখল প্রান্তিকের কপালের দুই পাশের শিরা ভেষে উঠেছে চোয়াল শক্ত করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষণ নিরবতায় কাটল।প্রান্তিক ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে নিজের মাথা ঠান্ডা করার চেষ্টা করল। রজনীর দিকে এইবার শান্ত চোখে তাকাল।ভেতরে রাগ তবুও চোখের দৃষ্টি শান্ত করে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল, "আমি তোমার কোন ক্লাসমেট এর পেছনে ঘুরছি। প্লিজ আনসার মি!আই থিংক তুমি সব সময় আমার বিষয়ে নেগেটিভ কিছু ভাবছো।তোমার এই ভুল ভাঙা উচিৎ। ভয় পেওনা। আই আম সরি। আমি রিয়্যাক্ট করে ফেলেছি। বাট বলো তোমার কোন ক্লাস মেটের পিছে ঘুরছি।"
রজনী চুপ করে রইলো। প্রান্তিক আবার ও শান্ত মেজাজে বলল, " কি ভাবছো আমি তুই তুকারি করেছি। রিয়্যাক্ট দেখিয়েছি বলে রাগ করেছো। আমিই বকবো, আমিই রাগ করব, আমিই শাষন করব আবার আমিই ভালবাসব। কিন্তু ছেড়ে যাবোনা মাইন্ড ইট। এইবার বলো কোন ক্লাসমেটের পিছে ঘুরছি।"
"আ' অদ্রিতা।"
"হু ইজ অদ্রিতা?"
"ক্লাস মেটের নাম,যার পিছে ঘুরছেন।"
"এই নামে তো কোনো মেয়েকেই চিনিনা।তোমাকে কে বলেছে আমি তার পিছে ঘুরছি?"
"ওরাই বলাবলি করছিলো।"
প্রান্তিকের খেয়াল হল সে যে দোকান থেকে সিগারেট কেনে।দোকানের উপরের তলায় দুইটা মেয়ে তাকে দেখে ফিসফিস করে।গতকাল ই সে শুনেছে এই অদ্রিতা নাম।একটা মেয়ে বলছিলো অদ্রিতা তোর হিরো এসছে।বাই এনি চান্স এই মেয়েই রজনীর ক্লাসমেট নয়তো।
প্রান্তিক আগে অনেক মেয়ের সাথে টাইম পাশ করেছে।সে নিজে কারো কাছে যায়নি।কেউ এলে কিছুদিন কথা বলেছে মন টানেনি বাদ দিয়েছে।রজনীকে দেখার পর কোনো মেয়ে তাকে ফোন দিলেই অপরাধবোধ কাজ করে। ভ-য় করে যদি রজনী জেনে যায়।অজানা ভ-য়ে প্রান্তিকের বুক কাঁপে। রজনী তাকে ভুল বুঝবে এই ভ*য় টায় প্রান্তিকের জীবনে প্রথম পাওয়া কোনো ভ*য়।প্রান্তিক রজনীর ধরে উঠালো।হাত ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যেতে যেতে বলল, " চলো অদ্রিতার বাড়ি। আমার বউ এর কাছে আমাকে খারাপ বানিয়ে সংসারে আ' গু' ন লাগানো।আদ্রিতার জীবনে আ'গু' ন লাগিয়ে দিবো আজ। আজকের পর যে মেয়ে আমার নাম মুখে উচ্চারণ করবে সেই মেয়ের খবর আছে।"

আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

১৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


মৌসুমি আক্তার মৌ’র গল্প ও উপন্যাস:



লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মৌসুমি আক্তার মৌ-এর নড়াইলের ছোট্ট শহরে জন্ম আর সেখানেই বেড়ে ওঠা। তিনি নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে এম.এম. কলেজ থেকে এমবিএ করছেন। এর পাশাপাশি তিনি হেল্থ এন্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং-এ সরকারি চাকরি করছেন নিজ জেলাতেই। লেখিকার ছোটোবেলা থেকেই গল্প, উপন্যাসের বই পড়ার প্রতি প্রবল নেশা ছিল। পরিবার থেকে একাডেমিক বইয়ের বাহিরে অন্য কোনো বই অনুমোদন না থাকায় বন্ধুদের নিকট থেকে বইসংগ্রহ করে পড়তেন। তাঁদের ভয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তেন, এমনকি পাঠ্য বইয়ের ভাঁজে বই নিয়েও পড়তেন। আর বই পড়ার এই নেশা বা প্রেম থেকেই লেখালেখির প্রতি ঝোঁক সৃষ্টি হয়। ফেসবুকে অসংখ্য গল্প, উপন্যাসের পাশাপাশি ছাপাবই ও ইবুক সেক্টরেও তিনি কাজ করছেন। লেখিকার প্রথম বই "তুমি নামক প্রিয় অসুখ" ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়। বইটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল।

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন