উপন্যাস       :         প্রেমাতাল
লেখিকা        :         মৌরি মরিয়ম
গ্রন্থ               :         
প্রকাশকাল    :         
রচনাকাল     :         ১০ নভেম্বর, ২০২২ ইং

লেখিকা মৌরি মরিয়মের “প্রেমাতাল” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশিত হবে। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে লেখা শুরু করেছেন।
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম
প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম Ebook



২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন

প্রেমাতাল || মৌরি মরিয়ম (পর্ব - ৩)

সারাপথ ভালই টুকটাক গল্প হয়েছিল ওদের। কিন্তু গল্প করতে করতে তিতির কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লো। মুগ্ধ অবাক হয়ে ভাবলো একটা মানুষ কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারে! তিতির কিছু একটা জিজ্ঞেস করেছিল তার উত্তর দিয়ে খেয়াল করলো তিতির ঘুমাচ্ছে! খুব হাসি পাচ্ছিল মুগ্ধর। কিন্তু মেয়েটা বেশ! সহজ সরল, কিন্তু ভীষণ সাহসী। মুখটাও খুব মিষ্টি। অন্ধকার আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে। ভোরের হালকা আলো এসে পড়েছিল তিতিরের মুখে। সত্যি অনেকদিন পর কোন মেয়েকে দেখে এতটা ভাল লাগছে। কাল রাতে যখন প্রথম দেখেছিল তখন কিন্তু কিছুই ফিল হয়নি। অন্যসব মেয়েদের মতই মনে হয়েছে কিন্তু এখন অন্যরকম লাগছে কেন জানি! হঠাৎ দোলার ফিসফিসানো গলা পাওয়া গেল,

-"হুম! ভাইয়া প্রেম কিন্তু এভাবেই হয়।"

মুগ্ধ আস্তে আস্তে বলল,

-"উফ তোরা না, এমনসব কথাবার্তা বলিস। যা ভাগ এখান থেকে।"

-"তাই? তাহলে ওর দিকে ওভাবে তাকিয়ে ছিলে কেন? অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছো দেখলাম। ভাল লেগে গেল বুঝি!"

-"হুম! প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখলে ট্রাভেলারদের ভাল লাগে।"

-"প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মানে?"

-"তাকিয়ে দেখ ওর দিকে। তোদের মত এত রংচঙ মাখেনি, একদম ন্যাচারাল। আর তার উপর ভোরের আলো কিভাবে ভরিয়ে দিয়েছে ওকে দেখ।"

-"ওহ বাবা! আমি একটু সাজি বলে এভাবে বলতে পারলে ভাইয়া?"

-"তো এত আটা ময়দা মাখলে কি বলবো?"

-"হুহ!"

দোলা চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আচমকা তিতিরের মাথাটা মুগ্ধর কাধে পড়লো। মুগ্ধ অবাক হয়ে দেখলো তিতিরের মাথাটা ওর কাধে একটু বাকা হয়ে আছে। একটু নিচু হয়ে বসলো যাতে তিতিরের কষ্ট না হয়। তাতে তিতিরও আরাম করে মাথাটা রাখতে পারলো। মিষ্টি একটা ঘ্রাণ এল ওর চুলের ভেতর থেকে। অদ্ভুত এক অনুভূতি হলো মুগ্ধর। মনে হলো মেয়েটা যদি সারাজীবন এভাবে ওর কাধে শোয়, ব্যাপারটা মন্দ হয়না। কিন্তু মেয়েটা তো বড্ড বাচ্চা।

এভাবে প্রায় আধাঘণ্টা পার হয়ে গেল। মুগ্ধ কখনো বাসে ঘুমাতে পারে না। তাই পুরো বাস যখন ঘুমে বিভোর তখনও একা একা জেগে। হঠাৎ বাসটা নড়ে উঠলো। বোধহয় স্পিয়াদ ব্রেকার পার করলো। আর তিতিরের ঘুম ভেঙে গেল। চোখ মেলে দেখে মুগ্ধর কাধে শুয়ে আছে! লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি সরে গেল। বলল,

-"সরি। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাইনি।"

মুগ্ধ হেসে বলল,

-"ইটস ওকে।"

তারপর থেকে কেমন যেন একটা জড়তা কাজ করছিল। কিছুই বলতে পারেনি আর। কিছুক্ষণ পর মুগ্ধ বলল,

-"প্লিজ বি নরমাল, আমি কিছু মনে করিনি।"

তিতির তাকালো। ছেলেটার চোখের মধ্যে যেন কিছু আছে। কিন্তু কি সেটা!"

যখন বাস বান্দরবান পৌঁছল, ঘিড়িতে তখন ভোর টা। বান্দরবান ঢোকার মুখেই তিতির অবাক হয়ে দেখতে লাগলো আসেপাশের সব গাছপালা অনেক নিচে নিচে। যে রাস্তায় ওদের বাস চলছে রা অনেক উঁচুতে। আর ওদের বাস ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে। অদ্ভুত এক রোমাঞ্চ বোধ করলো তিতির। পাহাড়ী রাস্তায় এই প্রথম। হঠাৎ বাসটা বায়ে মোড় নিল। রাস্তার বাম পাশে একটা সার্কেল শেপের খাদ! আর তা পেরোতেই বান্দরবান বাসস্ট্যান্ড! বাসস্ট্যান্ডের উল্টোপাশে বড় একটা পাহাড়কে দেখতে দেয়ালের মত লাগছিল। সব মিলিয়ে বান্দরবানের ওকে এভাবে বরণ করে নেয়াটা ভালই লাগলো তিতিরের। বরণই তো, তো টিভিতে দেখেছিল বান্দরবান কে। এই বাসস্ট্যান্ড টাও দেখেছিল। সাধারণ মফস্বলের বাসস্ট্যান্ডের মতই মনে হয়েছিল। কিন্তু এটা আদৌ সাধারণ না।

গ্রুপের ২৮ জন মেম্বারের ফ্রেশ হওয়া আর চেঞ্জ করার জন্য সাধারণ একটা হোটেলে টা রুম বুক করা ছিল। সব মিলিয়ে জন মেয়ে আর ২২ জন ছেলে। একটা রুম মেয়েদেরকে দেয়া হলো আর বাকি টা ছেলেরা ভাগাভাগি করে ইউজ করলো। সবাইকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য সময় দেয়া হলো মাত্র ঘন্টা। তিতির সেদিন মাত্র মিনিটে গোসল করেছিল। বাসায় থাকলে এই সময়ের মধ্যে জীবনেও গোসল করতে পারতো না।

ব্লু জিন্সের উপর ফুল স্লিভ হোয়াইট লেডিস শার্ট পড়লো তিতির। তার উপর ব্ল্যাক হুডি। চুলগুলোকে উপরে উঠিয়ে একটা ঝুটি করলো। তারপর ব্যাগ থেকে ওর প্রিয় ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট কেডস টা বের করে পড়ে ব্যাগপ্যাকটা গুছিয়ে নিল। তারপর সেটাকে কাধে নিতে নিতে রুম থেকে বের হতেই দেখতে পেল মুগ্ধকে। হোটেলের লম্বা প্যাসেজটা শেষ হয়েছে যেখানে সেখানটার দেয়াল বারান্দার মত খোলা। ওখানেই মুগ্ধ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল। কথা বলা শেষ হতেই ডাকলো মুগ্ধ,

-"এই তিতির?"

তিতির মুগ্ধর কাছে গেল। মুগ্ধ বলল,

-"বাহ, একদম ট্রেকার লুক!"

তিতিরে হাসলো। মুগ্ধ বলল,

-"মেয়েরা এত তাড়াতাড়ি রেডি হতে পারে বলে আমার জানা ছিলনা।"

-"রেডি হতে অবশ্যই টাইম লাগতে পারে। মেয়েদের দোষ দেয়া যায়না। কিন্তু এখানে তো আর আমি বিয়ে খেতে যাচ্ছিনা যে সাজুগুজু করবো আর লেট হবে। আমি জাস্ট শাওয়ার নিয়েছি। ঘুরতে এসে আর কিছুর প্রয়োজন দেখছিনা।"

-"তোমাকে যতটা ছোট ভেবেছিলাম ততটা ছোট কিন্তু তুমি নও।"

-"ছোট ভেবেছিলেন? কেন?"

-"তুমি আমার থেকে তো অনেক ছোটই, আর দেখতেও তুমি ছোট, তাই আর কি! বাট তুমি ম্যাচিওর।"

তিতির হেসে বলল,

-"আজকাল মেয়েরা ১৪,১৫ বছর বয়সে ম্যাচিওর হয়ে যায়।"

-"তাই নাকি? তা হতে পারে অবশ্য।"

মুগ্ধই আবার বলল,

-"বাই দ্যা ওয়ে, শুনেছিলে তো বলা হয়েছিল ফ্রেশ হয়ে হোটেলের রেস্টুরেন্টে নাস্তা করে নিতে?"

-"হ্যা"

-"চলো নাস্তা করে আসি। আমি আবার একা খেতে পারিনা, তাই সঙ্গী খুঁজছিলাম আই মিন সাফির জন্য অপেক্ষা করছিলাম, অন্যদের কাউকে তো চিনিনা। কিন্তু ওর কোন খবর নেই, তুমি যখন চলে এসেছো ভালই হলো তুমিও একা।"

-"কিন্তু সবার তো হয়নি। সবাই একসাথে খেতে যাবেনা?"

-"আরে নাহ! যার আগে হবে সে আগে খেয়ে নেবে তাতে চাপ কম থাকবে, এজন্যই তো রেস্টুরেন্ট ঠিক করে রেখেছে আগে থেকে।"

-"ওহ, ঠিকাছে তাহলে চলুন"

দুজনেই চুপচাপ খাচ্ছিল। হঠাৎ মুগ্ধ খেতে খেতেই বলল,

-"বাঁশ কুরুইল খেয়েছো কখনো?"

-"সেটা আবার কি?"

-"বাঁশ।"

বলেই মুগ্ধ হেসে দিল। তিতির অবাক হয়ে চেয়ে রইল। বলল,

-"বাঁশ আবার কিভাবে খায়?"

-"বাঁশ যখন খুব কচি থাকে তখন ওটাকে মাটির হাড়ি দিয়ে ঢেকে রাখে। তারপর ওই কচি বাঁশ কুচি করে কেটে চিংড়িমাছ অথবা মুরগী দিয়ে রান্না করে। পৃথিবীর অন্যতম সুস্বাদু খাবার। গ্রামঞ্চলে মানুষ খায় তবে কম। কিন্তু পাহাড়িদের এটা নিত্যখাবার।"

-"ওহ! বাট বাঁশ কিভাবে ভাল লাগতে পারে আমি বুঝতে পারছি না।"

-"এখানে কয়েকটা রেস্টুরেন্টে রান্না করে তবে এখন পাওয়া যাবে না। দুপুরে হয়। থানচি বাজার থেকে বাঁশ কুরুইল কিনে নিবনে। তারপর রান্না করে খাওয়াব। তখন দেখো কেমন লাগে!"

-"আপনি রান্না করতে পারেন?"

-"না পারার কি হলো? ব্যাচেলর তো।"

-"ওহ!"

মুগ্ধর খাওয়া শেষ। উঠে হাত ধুতে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যে তিতিরেরও খাওয়া শেষ হয়ে গেল। ওরা হোটেলের বাইরে গেল। হাঁটতে হাঁটতে তিতির বলল,

-"ব্যাচেলর তো বুঝলাম কিন্তু ফ্যামিলি? আই মিন বাবা মা?"

-"ওহ, ওনারা চিটাগাং থাকে।"

-"আপনাদের বাড়ি চিটাগাং ?"

-"না না। বাবার পোস্টিং ওখানে।"

-"ওহ। আপনার ভাইবোন নেই?"

-"একটা ছোট বোন আর একটা ছোটভাই। বাবা মায়ের সাথে থাকে। ভাই স্কুলে আর বোন কলেজে পড়ে। তোমার?"

-"বড় ভাই একটা।"

-"ওহ!"

-"আর আপনি ঢাকায় কোথায় থাকেন?"

-"ধানমন্ডি।"

-"ধানমন্ডি? কত নাম্বারে?"

-"১১/, তুমিও কি ধানমন্ডিতে নাকি?"

তিতির হেসে ফেলল,

-"আমার বাসাও ১১/ তে। আপনার কত নাম্বার বাসা?"

-"৩১২"

-"হোয়াট কো-ইন্সিডেন্স!"

মুগ্ধ হেসে বলল,

-"তুমিও কি ৩১২ তে?"

-"নাহ। ৩১০ নাম্বার টা আমাদের বাসা।"

মুগ্ধ এবার হো হো করে হেসে দিল। তারপর বলল,

-"এত কাছাকাছি থাকি আর পরিচয় হলো কিনা এই পাহাড়ে এসে!"

তিতিরও হাসছিল।

-"আপনি ওখানে কতদিন ধরে থাকেন?"

-" বছর ধরে। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার পর থেকে। তুমি?"

-"ছোটবেলা থেকেই।"

-"ওহ।"

-"আচ্ছা, আপনি কি এধনের ট্রিপে আগেও এসেছেন?"

-"আমি টিওবি' সব ট্রিপে থাকি।"

-"টিওবি?"

-"ওহ! ট্রাভেলারস অফ বাংলাদেশ।"

-"ওহ।"

-"তবে সাফিদের সাথে ছোটখাটো ট্রিপে গিয়েছি। বড় ট্রিপে এই প্রথম।"

-"মানে? টিওবি আর সাফি ভাইরা কি আলাদা?"

-"আলাদা বলতে সাফি অথরিটির কেউনা। বাট প্রায়ই এরকম ট্যুর এরেঞ্জ করে। গ্রুপে ইভেন্ট খুলে। গ্রুপের মেম্বাররাও ভালই এটেন্ড করে।"

তার মানে এটা কোন অফিসিয়াল ট্যুর না। তিতিরের মনের মধ্যে এবার একটু ভয় ঢুকলো। মুগ্ধ বলল,

-"ভয় পাচ্ছো?"

তিতির ভাঙবে তবু মচকাবে না টাইপ মেয়ে তাই বলল,

-"ভয়ের কি আছে?"

-"ভয় পেতেই পারো। যেহেতু তুমি ভেবেছিলে এটা টিওবি' অফিসিয়াল ট্যুর!"

তিতির অবাক! হায়রে! এই ছেলে কি মনের মধ্যে ঢুকে ওর ভালনাটাও পড়ে ফেলল নাকি!

-"হ্যা তা ভেবেছিলাম কিন্তু তার সাথে ভয় পাওয়ার কি সম্পর্ক?"

-"না মানে, ওদের অভিজ্ঞতা তো আর টিওবি' অথরিটির মত না। আর সাফির ট্যুরগুলো খুব অল্প খরচে হয় আর মনের মত ঘোরা যায় ঠিকই তবে ম্যানেজমেন্টে কিছু কিছু প্রব্লেম থাকে। একটা মানুষের পক্ষে এতদিক সামলানো ডিফিকাল্টও বটে। তবে এবার তো সাথে দোলা আছে। হোপফুলি আগের গুলো থেকে এটা বেটার হবে।"

তিতিরের বুকটা দুরুদুরু করতে লাগলো। জীবনে পাহাড়ে আসেনি , ঘুরাঘুরি বলতে ফ্যামিলি ট্যুরে কক্সবাজার আর ফ্রেন্ডদের সাথে সিলেট। এছাড়া ঢাকার বাইরে কোথাও তো তেমন যাওয়া হয়নি। কি যে আছে কপালে! বলল,

-"আমরা হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে এসেছি। চলুন ফিরে যাওয়া যাক।"

-" হ্যা, চলো।"

ওদের দুটো জিপ ঠিক করা ছিল। বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার কথা আরো ১০ মিনিট পরে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখলো ওদের ঠিক করা জিপ দুটো নেই। লোকজনকে জিজ্ঞেস করতেই বলল সেখান থেকে কোন জিপ এখনো ছাড়েনি আজ। ওরা নিশ্চিন্তে হোটেলে গেল। হয়তো হোটেলের সামনে থেকে ছাড়বে। কিন্তু হোটেলের সামনে কোন জিপ দেখা গেলনা। হোটেলের ম্যানেজার কে জিজ্ঞেস করতেই বলল দুটো জিপ তো প্রায় ঘন্টা আগে ছেড়ে গেছে।

মাথায় বাজ পড়লো মুগ্ধ তিতিরের। সাথে সাথে মুগ্ধ ফোন করলো সাফি কে। সাফির মোবাইল বন্ধ। তিতির বলল,

-"মোবাইল বন্ধ কেন?"

-"বন্ধ না। নেটওয়ার্ক প্রব্লেম হবে। ঘন্টা আগে ছাড়লে তো এখন ওরা পাহাড়ে। ওকে বলেছিলাম শহরের বাইরে এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক থাকে না, অন্য সিম যেন নিয়ে নেয়।"

-"কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছি না। যে টাইমে জিপ ছাড়ার কথা সেটা হতে তো আরো মিনিট বাকি। এত আগে কেন ছাড়লো! আর যদি ছাড়েই তবে দেখবে না সব মেম্বার্স আছে কিনা?"

-"তোমাকে বলেছিলাম না ওদের ম্যানেজমেন্টে প্রব্লেম আছে।"

-"যাই হোক, এখন কি করবো?"

-"ঢাকা ফিরে যাবে?"

-"নো ওয়ে!!! একবার যখন ঠিক করেছি নাফাখুম যাব। না যেতে পারলে আমি পাগল হয়ে যাব।"

-"কিন্তু জেদ করাটা আই থিংক ঠিক হবেনা। অনেক দূরের রাস্তা।"

-"এখন বাসায় ফিরলে বাবা আমাকে আর কখনো একধরনের ট্রিপে যেতে দেবে না। বাবা চাইছিল না এবারও, ভাইয়া রাজী করিয়েছে। আমি ফিরে যাবনা।"

পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ ভাবছিল কি করা যায়। এরমধ্যেই তিতির বলল,

-"আচ্ছা আমরা দুজন একটা জিপ ভাড়া করে চলে যাই?"

-"সেটা সম্ভব না। থানচির জিপভাড়া / হাজার টাকা। অত টাকা আমার কাছে নেই। ট্রিপের টাকা তো পুরোটাই দিয়ে দিয়েছি রেজিস্ট্রেশনের সময়। আর ওরা থানচি পৌঁছানোর আগে আমরা ওদের কানেক্ট করতে পারবো না কারন, রাস্তার নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবেনা।"

তিতির অবাক হয়ে বলল,

-"ভাড়া এত বেশি?"

-"হ্যা, অনেক দূর না? তার উপর পাহাড়ী রাস্তা। আর ভাড়া সিস্টেম আপ-ডাউন। তুমি ফিরে না আসলেও ভাড়া দিতে হবে।

-"আমার কাছে হাজার টাকার মত আছে।"

-"আমার কাছে / হাজার হবে। কিন্তু তাতেও জিপ পাওয়া যাবে না।"

তিতির টেনশনে পড়ে গেল। বাসায় ১০ দিনের আগে ফিরবে না এটা কনফার্ম। আর নাফাখুম ওকে যেতেই হবে। কিন্তু কি করবে এখন? মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে দেখলো খুব সিরিয়াসলি কিছু চিন্তা করছে।


 আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান 

সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।


চলবে ...

৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন


লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা মৌরি মরিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। তবে জানতে পারলে অবশ্যই কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে। 

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন