উপন্যাস : শকুন
লেখিকা : আরশি আয়াত
গ্রন্থ :
প্রকাশকাল :
রচনাকাল : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং
লেখিকা আরশি আয়াতের “শকুন” শিরোনামের এই ধারাবাহিক উপন্যাসটি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া হয়েছে। ‘কবিয়াল’ পাঠকদের জন্য উপন্যাসটি পর্ব আকারেই প্রকাশ করা হলো। লেখিকা অনবদ্য এ উপন্যাসটি ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে লেখা শুরু করেছেন।
![]() |
শকুন || আরশি আয়াত |
২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
শকুন || আরশি আয়াত (পর্ব - ৩)
সন্ধ্যার সময় রুপাকে দেখে হিমানী বলল,'কি রে,তুই!বললি না আসতে পারবি না বাসায় যাবি।'
'ওরে আমার ন্যাকা রে!তোর যত নাটক।বসে থাক।চা নিয়ে আসি।মাথাব্যথা করছে।'
'হুম,যা।'
কথা বলার সময়ই রুপা খেয়াল করলো তাবিজটা নেই হাতে।চমকে উঠলো ও!গেলো কোথায় তাবিজটা?কালই না বেঁধে দিলো!নাকি হিমানী খুলে রেখেছে কোথাও।
এক কাপ চা রুপার হাতে দিয়ে হিমানী বলল,'এখন থেকে সুগার ফ্রী চা খেতে হবে রে।নাহলে মোটা হয়ে যাব।আমি সারাজীবন স্লিম থাকতে চাই।'
'তাহলে শকুনের মাংস খা।'
'ইয়াক থু!'
রুপা হেসে ফেললো।বলল,'তুই না বললি স্লিম থাকতে চাস।'
'হ্যাঁ কিন্তু শকুনের মাংস খেলে স্লিম হওয়া যায়?'
'কি জানি!আমি কোথাও একটা শুনেছি।তাই তোকে বললাম।আমি আবার দরদী কি না!'
'থাক আপনার আর দরদ দেখাতে হবে না।'
এই বলে হাসলো হিমানী সাথে রুপাও।চা শেষ করেই রুপা বলল,'কি রে,মানী!তোর হাতে না কাল একটা তাবিজ বেঁধে দিয়েছিলাম।ওটা কই?'
হিমানী নিজের বাঁ হাতের কব্জিতে খেয়াল করলো।খালি!ভ্রু কুঁচকে বলল,'আমি তো খুলি নি।কোথায় পড়ে গেলো নাকি!'
'সে কি,কত কষ্ট করে তোর জন্য আনালাম।আর তুই ফেলে দিলি!'রুপা আর্তনাদের স্বরে বলল।
'আমি ফেলি নি।ঘরেই কোথাও পড়েছে হয় তো!'
'চল,খুঁজি।'
'আরে এত ব্যস্ত হচ্ছিস কেন?ঘরেই যেহেতু আছে পেয়েই যাব।'
রুপা ধমকের স্বরে বলল,'চুপ কর তুই।আমার সাথে খোঁজ এখনি।'
বান্ধবীর ধমকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও খুঁজতে বসলো হিমানী।কিন্তু পুরো ঘর খুঁজে ফেলার পরও তাবিজ কেন ওটার সুতাও অব্দি পাওয়া গেলো না।রুপা হতাশার স্বরে বলল,'তুই না বললি ঘরেই কোথাও পড়েছে।তো এখন পাওয়া যাচ্ছে না কেন?'
'বুঝতে পারছি না।সকালে বোধহয় মা ঘর ঝাড় দিয়েছিলো।আর তখনই ময়লার সাথে ডাস্টবিনে চলে গেছে মনে হয়।'
হিমানীর কথায় এবার রুপা আরও হতাশ হয়ে পড়ে।শামীম জানতে পারলে কি করবে কে জানে!কি এক ঝামেলায় পড়া গেলো!রুপা হিমানীদের বাসায় আর বসলো না।মাথাব্যথার দোহাই দিয়ে একরকম বিদায় হলো।টেনশনে মাথা আসলেই ব্যাথা করছে।কাল কি জবাব দেবে শামীমকে!
হিমানীর কাছে অদ্ভুত লাগলো রুপার আচরণ।কি হলো মেয়েটার?ওটা তো শুধু একটা নজর কাটানোর তাবিজ ছিলো।হারিয়েছে তো কি হয়েছে!এই তাবিজ খোঁজার চক্করে আজকে রবিনের সাথে ঘোরাঘুরির কথা বলতে তো বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলো।এখন মনে পড়েছে।কি যে করে না মেয়েটা!খানিকটা বিরক্ত হলো হিমানী।
শামীম আজও রাত একটার সময় এসে দাঁড়ালো হিমানীর বাড়ির সামনে।আজ হয়তো কাজ হয়েছে।তবুও নিশ্চিত না রুপার ওপর ভরসা করা যায় না।প্রচন্ড ধড়িবাজ মেয়ে।শামীম সিগারেটে টান দিতে দিতে কিছুক্ষণ পায়চারি করলো আর লক্ষ্য রাখলো হিমানীর ঘরের লাগোয়া বারান্দাটায়।কালকের মত আজও হঠাৎ ঘরের লাইট বন্ধ হয়ে গেলো।শামীম অপেক্ষা করতে লাগলো হিমানীর বেরিয়ে আসার।ঠিক ঠিক মিনিটে পাঁচেকের মধ্যে গেট দিয়ে বেরিয়ে এলো একটি নারী অবয়ব।আলোর স্বল্পতার কারণে মুখ বোঝা যাচ্ছে না কিন্তু গড়নেই বলে দিচ্ছে মেয়েটা হিমানী।শামীম খুশি হয়ে গেলো।হাতের ইশারায় ওর পেছনে পেছনে চলতে বলল।ওরা চলছে আগেপিছে।হিমানীদের অন্ধকার গলিটা পেরুলেই মূল রাস্তা।সেখানেই নিজের মোটর বাইকটা রেখে এসেছে শামীম।মূল রাস্তায় এসে পেছনের দিকে চাইতেই দেখলো কেউ নেই।শামীম অবাক হলো।হিমানীকে পেছনে পড়ে গেলো নাকি!ও এগিয়ে গেলো আবার গলিটার দিকে।হাঁটতে হাঁটতে মাঝ গলিতে এসে পৌঁছালো।মোবাইলের টর্চে চারপাশ ভালোমত তাকিয়েও হিমানীর ছায়াও দেখলো না।কি হলো ব্যাপারটা?কোথায় গেলো মেয়েটা?আবার বাসায় ফিরে গেলো নাকি?নাহ!সেটা কি করে সম্ভব।ও তো এখন সম্মোহিত হয়ে আছে।যা বলা হবে তাই করবে ও।শামীম চিন্তায় পড়ে গেলো।ও হাঁটতে হাঁটতে আবারও চলে গেলো হিমানীদের বাসার সামনে।ওদের গেটের দারোয়ানকে ফোন করেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেলো না!কিছুক্ষণ সেখানেই পায়চারি করে বিশেষ কোনো সুবিধা করতে না পেরে ফিরে যেতো লাগলো।আজও টার্গেট মিস!তাহলে কি তাবিজেই সমস্যা?এটা কি ঠিকঠাক কাজ করছে না?কাল একবার তান্ত্রিকটার কাছে যেতে হবে।শা'লা ভুয়া তাবিজ দিয়েছে।
রুপা সকালে বাসা থেকে বের হলো ভয়ে ভয়ে কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো আজকে শামীম আসে নি।তাহলে কি কালকের মত সন্ধ্যায় আসবে?রুপা ঠিক করলো ও আজকে বিকালেই বাসায় ফিরবে।কোনোমতেই বিকালের পর বাইরে থাকবে না।
সকালে ভোরে ঘুম থেকে উঠে শামীম তান্ত্রিক গুরুপদের আস্তানার দিকে চলল।সকালে মানুষজন থাকে না।তাই ওর জন্যই ভালো।আস্তানার সামনে পৌঁছে শামীম লক্ষ্য করলো জায়গাটা জুড়ে ব্যাপক ভিড়।আজ এত সকালেই মানুষজন চলে এসেছে!আশ্চর্য!শামীম মানুষজন ঠেলেঠুলে ভেতরে আসতেই চোখ চড়কগাছ হয়ে গেছে।তপস্যার স্থানেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করেছে তান্ত্রিক গুরুপদ।জিহ্বা বেরিয়ে এসেছে পুরোপুরি।চোখ বেরিয়ে এসেছে কোটর থেকে।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তার সারা শরীরে বড় কালো পালকে ভরা।যেন মনে হচ্ছে কোনো পাখির পালক।কিছু পালক আশেপাশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।মানুষজন ধারণা করছে এগুলো শকুনের পালক।
আপনার পছন্দের গল্পের নাম কমেন্টে জানান
Follow Now Our Google News
সবার আগে সব পর্ব পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক পেজে।
চলবে ...
৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক/ট্যাপ করুন
লেখক সংক্ষেপ:
তরুণ লেখিকা আরশি আয়াত সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হইবে।
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন