গল্প : বাবা
গল্পকার : শাহাদাত রাসএল
গ্রন্থ : জীবন এক সুস্বাদু হেমলক
প্রকাশকাল :
রচনাকাল :
তরুণ লেখক শাহাদাত রাসএল'র “বাবা” শিরোনামের এই ছোট গল্পটি তার 'জীবন এক সুস্বাদু হেমলক' গল্পগ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে। তবে এ গল্পটি রচনার সময়-কাল ও অবস্থান এখন অবদি জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে।
![]() |
বাবা || শাহাদাত রাসএল |
বাবা || শাহাদাত রাসএল
গ্রাম থেকে বাবাটা এলো শহরে। হাতে একটা টিফিনবক্সে খেজুরের রসের শিন্নি। মায়ের হাতের রান্না।
ছেলের অফিস খুঁজতে খুঁজতে ঠিকানা খুঁজে বের করলেও অফিসের গেইটের কাছে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে এলো। সে বুঝতে পারছিলোনা যে রিসিপশনে ছেলের নাম কি বলে পরিচয় দেবে। বাবু, শিহাব, সায়েম, সায়েম আহমেদ শিহাব নাকি সায়েম স্যার? মানে এইসব বড় বড় অফিসের নিয়মকানুন কি সেটা বাবাটা জানতো না। গাইয়া বাবাটা জানতো না যে ভদ্রপল্লির আচরণ কেমন হওয়া উচিত। আবার এমন কোন বিব্রতকর নামেও ছেলেকে ডাকতে চাইলোনা যা শুনলে ছেলে বিব্রতবোধ করে।
বাবাটা ফিরে যাচ্ছিলো। আমার সাথে রেলস্টেশনে দেখা। বেকায়দার সময়ে স্টেশনে এসেছে ফিরতি ট্রেন খুঁজতে। ট্রেন ছাড়তে আরো দুই ঘন্টা বাকি৷ বাবাটার সাথে কিছুটা কথা হলো। পরিচয় হলো। তারপর সে আমার সামনে তার পলিব্যাগে প্যাচানো টিফিনবক্সটা মেলে ধরে বললো, "বাবা তুমি এই শিন্নিটুক খাইবা? অনেক বেলা হইছে ফিরত নিতে নিতে নষ্ট হইয়া যাইবো। তুমি খাও। আমি গিয়া বাবুর মায়রে কইমুনে যে বাবু খাইছে। বোঝোতো মায়ের মন। বাবু খায়নাই শুনলে দুঃখ পাইবো"
আমি চুপচাপ স্টেশনের ওয়েটিং বেঞ্চে বসেই শিন্নি খেতে শুরু করলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে খাচ্ছি। বাবাটার দিকে তাকাতে সাহস হচ্ছেনা। আচমকা চোখ থেকে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো শিন্নির বাটিতে। আমি কিছুটা থমকে গেলাম। তারপরই মাথায় এলো 'ব্যাপার না, আমি খাবারের সাথে লবন বেশি খাই'।
লেখক সংক্ষেপ :
কবিয়াল
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন