কবিতা          :         সেই সুখ
কবি             :         আবুল হাসান
গ্রন্থ             :         
প্রকাশকাল     :         
রচনাকাল      :         

ক্ষণজন্মা বিখ্যাত কবি আবুল হাসানের “সেই সুখ” শিরোনামের এই কবিতাটি তার ‘রাজা যায় রাজা আসে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কবে নাগাদ এ কবিতাটি লিখেছেন তা এখন অবদি জানা যায়নি। জানতে পারলে অবশ্যই তা কবিয়াল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে। 
সেই সুখ || আবুল হাসান
সেই সুখ || আবুল হাসান

সেই সুখ || আবুল হাসান


সেই সুখ মাছের ভিতরে ছিল,
সেই সুখ মাংসের ভিতরে ছিল,
রাতের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যেতো ছেলেবেলা
সেই সুখ চাঁদের ভিতরে ছিল,
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল !

নারী কোন রমণীকে বলে?
যার চোখ মুখ স্তন ফুটেছে সেই রমণী কি নারী?
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল,
যখন আমরা খুব গলাগলি শুয়ে
অনু অপলাদের স্তন শরীর মুখ উরু থেকে
অকস্মাৎ ঝিনুকের মতো যোনি,
অর্থাৎ নারীকে আমরা যখোন খুঁজেছি
হরিণের মতো হুররে দাঁত দিয়ে ছিঁড়েছি তাদের নখ, অন্ধকারে
সেই সুখ নারীর ভিতরে ছিল।

যখন আমরা শীতে গলাবন্ধে পশমী চাদর জড়িয়েছি
কিশোরীর কামরাঙা কেড়ে নিয়ে দাঁত বসিয়েছি
সেই সুখ পশমী চাদরে ছিল, কামরাঙা কিশোরীতে ছিল !

রঙীন বুদ্বুদ মাছ, তাজা মাংস, সুপেয় মশলার ঘ্রাণ;
চিংড়ি মাছের ঝোল যখোন খেতাম শীতল পাটিতে বসে
সেই সুখ শীতল পাটিতে ছিল।

প্রথম যে কার ঠোঁটে চুমু খাই মনে নেই
প্রথম কোনদিন আমি স্নান করি মনে নেই
কবে কাঁচা আম নুন লঙ্কা দিয়ে খেতে খেতে
দাঁত টক হয়েছিল মনে নেই
মনে নেই কবে যৌবনের প্রথম মিথুন আমি ঘটিয়েছিলাম
মনে নেইৃ
যা কিছু আমার মনে নেই তাই হলো সুখ !
আহ ! সে সুখ...


লেখক সংক্ষেপ:
বিখ্যাত কবি আবুল হাসান ১৯৪৭ সালের ৪ আগস্ট অধুনা বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহন করেন। তার মূল নাম ছিলো আবুল হোসেন মিয়া। কবি জীবনের শুরুতে আসল নামে লিখতেন তিনি। চল্লিশ দশকে বংলা ভাষার একজন বিখ্যাত কবির নাম আবুল হোসেন হওয়ায় তিনি নাম পাল্টে হয়ে যান আবুল হাসান। বৈশিষ্টহীন এই কবি বেচে ছিলেন মাত্র ২৯ বছর। এই স্বল্প সময়ে তিনি রচনা করে গেছেন অসংখ্য কালজয়ী কবিতা। তার সংক্ষিপ্ত কাব্যচর্চায় তিনি উপহার দিয়েছেন ‘রাজা যায় রাজা আসে’, ‘যে তুমি হরণ করাে এবং ‘পৃথক পালঙ্ক’-এর মতাে তিনটি উজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ। পেশাগত সাংবাদিক এই কবি ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর মৃত্যুবরন করেন। 

কবিয়াল
 
কবিয়াল’এ প্রকাশিত প্রতিটি লেখা ও লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত কবিয়াল’র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় কবিয়াল কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। কবিয়াল’এ প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন